পোস্টগুলি

জানুয়ারী, ২০১৮ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

অনাহূত ভাবনা (ওয়াসওয়াসা রোগ) ও তার প্রতিকার

১. অনাহূত চিন্তা-ভাবনার চিকিৎসা হল ভ্রুক্ষেপ না করা হযরত থানভী রাহ. এক মালফূযে একটি ব্যাপক প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। মানুষের মনে বিভিন্ন মন্দ ভাবনা আসে। কখনও এমনসব অবাঞ্ছিত চিন্তাও তার মনে উদয় হয় যে, ঈমান সম্পর্কেই সন্দেহ সৃষ্টি হয়ে যায়। সম্ভবত এমন কোনো মানুষ নেই, যার মনে এ ধরনের চিন্তা কখনই আসে না। সবার মনেই তা আসে এবং এর কারণে মানুষ পেরেশান হয়। বিশেষত যে ব্যক্তি দ্বীনের পথে চলার ইচ্ছা করেছে এবং চলতে আরম্ভ করেছে তার মনে এ ধরনের চিন্তা খুব বেশি আসে। অন্যদিকে দ্বীনদারীর দিকে যাদের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই, সারা দিন দুনিয়াবী কাজকর্মে মগ্ন, গুনাহর কাজে লিপ্ত তাদের মনে এই সব চিন্তা আসে না। এগুলো তাদের মনেই আসে যারা আল্লাহর রাস্তায় চলতে আরম্ভ করেছে। কোনো কোনো চিন্তা তো এতই ভয়াবহ যে, মানুষ তার ঈমানের ব্যাপারেও আশংকায় পড়ে যায়। কখনও আল্লাহ তাআলা সম্পর্কে প্রশ্ন-সংশয় আসে, কখনও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে, কখনও কুরআন মজীদ ও হাদীস শরীফ সম্পর্কে, কখনও বা শরীয়তের বিধিবিধান সম্পর্কে। এ সময় সঠিক নির্দেশনা না পেলে গোমরাহীর মধ্যে পড়ে যাওয়ার আশংকা থা

এস্তেগফারঃ বিয়ে ও রিযক লাভ এবং পেরেশানী ও ডিপ্রেশন থেকে মুক্তির উপায়

আমি তখন জালালাইন জামাতের ছাত্র। জালালাইন (একটি তাফসীরগ্রন্থ) এর দারসে আমাদের উস্তাদে মুহতারাম মুফতী শাফিকুল ইসলাম একটি ঘটনা শেয়ার করলেন তার নিজের জীবন থেকে। দীর্ঘদিন তার সন্তান হয় না। (তিনি সময়টা বলেছিলেন সম্ভবত ১৭ বছর) একদিন তিনি হাদিসে পেলেন এস্তেগফার এর ফজীলত। আমল শুরু করলেন। দীর্ঘকাল পর যখন স্বামী স্ত্রী প্রায় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিলেন সকল চেষতা-প্রচেষ্টার পর, তাদের হয়ত সন্তান হবেই না। তখন এই আমলের বরকতে তাদের কোলজুড়ে সন্তান এলো। আমি আমার ব্যক্তিজীবনের নানা পেরেশানি ও মুসিবত থেকে মুক্তি পেয়েছি এই এস্তেগফার এর সুবাদেই। এতো গেলো একজন গোণাহগারের জীবনের কথা। এবার শুনুন সোনালি যুগের (সাহাবী ও তাবেয়ীনদের যুগ) এর একটি ঘটনা। একবার হাসান বসরী রাহ. এর কাছে এক ব্যক্তি জানালো “ আমার ফসলে খরা লেগেছে। আমাকে আমল দিন” হাসান বসরী তাকে বললেন এস্তেগফার করো। কিছুক্ষণ পর আরেক ব্যক্তি এসে অভিযোগ পেশ করল “আমি গরীব। আমাকে রিজক এর আমল দিন” হাসান রহ. তাকেও বলেলন এস্তেগফার করো। এমনিভাবে অপর এক ব্যক্তি এসে সন্তান হও্য়ার আমল চাইলে তিনি বললেন, এস্তেগফার করো।” উপস্থিত ছাত্ররা জিজ্ঞেস করল, “সবাইকে এক পরামর্

আকিদাতুত ত্বহাবীর ব্যাখ্যাকার ইবনে আবিল ইয: হানাফী না কি হাশাবী?

ছবি
[বর্তমানে  ইবনে আবিল ইযের  আকিদাতুত ত্বহাবীর  ব্যাখ্যাগ্রন্থটি ব্যাপকভাবে প্রচারের চেষ্টা করা হচ্ছে। যেমন, সালাফী আলেম আব্দুল্লাহ শাহেদ মাদানী এর বাংলা অনুবাদ করে অনলাইনে প্রচার করছেন। সুতরাং এই কিতাবের বাস্তবতা ও এর লেখক সম্পর্কে প্রচলিত ধারণাগুলো সুস্পষ্ট করা আবশ্যক। আকিদাতুত ত্বহাবীর উপর দরসের নিয়ত ব্যক্ত করেছিলাম কিছু দিন আগে। উক্ত দরসের প্রয়োজনে আজকের আলোচনাটি লেখা। যারা উক্ত দরস দেখবেন, আশা করি বিষয়টি তাদের উপকারে আসবে।  ] সৌদি আরবের কল্যাণে কাররামিয়াদের ভ্রান্ত দেহবাদী আকিদাগুলো সালাফী মতবাদের মোড়কে ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। পেট্র-ডলারের সহায়তায় তারা এক্ষেত্রে অনেকটা অগ্রসর। সালাফীদের ভ্রান্ত আকিদা সম্পর্কে বেশ কিছু প্রবন্ধ লেখার সুযোগ হয়েছে আল-হামদুলিল্লাহ। আমাদের আইডিয়ার ওয়েবসাইটে লেখাগুলো পাবেন। সালাফী মতবাদ প্রচারের ক্ষেত্রে তারা বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে থাকে। এর মধ্যে একটি বিশেষ কৌশল হল, বিভিন্ন ইমামের আকিদার কিতাব ব্যাখ্যার নামে নিজেদের ভ্রান্ত আকিদা ছড়িয়ে দেয়া। উদাহরণ হিসেবে ইমাম ত্বহাবীর আকিদাতুত ত্বহাবীর কথা বলা যায়। একটু খোজ নিলে দেখবেন, প্রায় প্র

নামাজের মাঝে করা আমাদের যতো ভুল

দ্বিতীয় রাকাতের রুকুতে যেতেই ধুপধাপ আওয়াজ করে দৌড়তে দৌড়তে একজন মুসুল্লি এসে আমার পাশে নামাজে দাড়ালো। সালাম ফিরানোর পর তাকিয়ে দেখি পরিচিত এক বড় ভাই। একই গ্রামে আমাদের বাড়ি হওয়ায় দেখা সাক্ষাতে কথাবার্তাও হয় তার সাথে। আমি গ্রামে এসেছি মাত্র আজকে। এবার এখনও তার সাথে আলাপ হয় নি। সালাম ফিরিয়ে বারান্দায় গিয়ে আমি বাকি নামাজটা আদায় করলাম। মসজিদ থেকে বের হবার সময় পেছন থেকে সালামের আওয়াজ শুনে পা চালানো বন্ধ করে দাড়িয়ে গেলাম। মুখ ঘুরিয়ে দেখি সেই ভাই হাসি মুখে এসে সালাম দিয়ে মুসাফাহর জন্য হাত বাড়িয়ে দিলেন। আমি সালামের উত্তর দিতে না দিতেই তিনি বললেন, :কবে আসলেন ভাই? : এই তো আজকে এলাম। : আপনার সাথে আমার কিছু কথা আছে। : জি বলতে পারেন। : অনেকদিন ধরে একটা জিনিস নিয়ে আল্লাহর কাছে দুআ করে যাচ্ছি। দুআ তো আর কবুল হচ্ছে না। শুনেছি ফরজ নামাজের পর দুআ করলে নাকি দ্রুত কবুল হয়। কিন্তু আমার তো কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। তার কথা শুনে মনে পড়ে গেলো কিছুক্ষণ আগেই তিনি দৌড়তে দৌড়তে এসে নামাজের কাতারে শরীক হয়েছিলেন। হাঁটতে হাঁটতেই তাকে বললাম, ভাই, নামাজের পর দুআ কবুল হয় কথা সত্য। হাদিসেও এটা উল্লেখ হয়ে