নারীদের চাকুরী করার ব্যপারে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি

প্রশ্নঃ

আসসালামুআলাইকুম। আমি একজন সরকারি চাকরীজীবী। অল্প কিছুদিন হইছে আমার বিয়ে হইছে। আমার স্বামী আমাকে চাকরী করাবেন না। আমি ও ব্যক্তিগতভাবে মেয়েদের চাকরির পক্ষে না। তাই স্বামীর কথা মেনে নিতে আমার কোনো আপত্তি নাই। বরং আমি আল্লাহর কাছে এমনই চাইতাম। কিন্তু আমার মা বাবা আমার চাকুরী ছাড়াতে চান না। এ ব্যাপারে তারা আমার উপর অসন্তুষ্ট। সবসময় কষ্ট পান। তাদের কোনো ছেলে সন্তান নাই। আমার পড়াশুনা, চাকরির জন্যে অনেক কষ্ট করছেন। এজন্যে এটা তারা মানতে পারছেন না৷ আমার বাবা আলিয়া মাদরাসার একজন সহকারী শিক্ষক। আমার প্রশ্ন হল, এমতাবস্থায় যদি আমি চাকরি ছেড়ে দেই আর তারা কষ্ট পেয়ে নিশ্বাস নেন আমাকে অভিশাপ দেন তাহলে সেটা আল্লাহর কাছে কতটুক গ্রহনযোগ্যতা পাবে? আমার কি করা উচিত? চাকরি ছাড়লে কি পিতামাতার হক নষ্ট করা হবে? মেয়েদের বিয়ের পড়ে পিতামাতার প্রতি কি কি হক আছে জানালে উপকৃত হতাম।


উত্তরঃ

মহিলারা ঘরের অভ্যন্তরে অবস্থান করবে, এটা’ই ইসলামের নির্দেশনা। সে অনুসারে ‘চাকরি না করার সিদ্ধান্তটি যথার্থ এবং সঠিক।
সুতরাং এ সিদ্ধান্তের উপর অটল থেকে আপনি আপনার পিতা মাতাকে বুঝানোর চেষ্টা করুন । আপনি যেভাবে দ্বীনের বুঝ পেয়েছেন, তাদেরকে সেভাবে দাওয়াত দিতে থাকুন। পরকালীন জীবনের কথা বলতে থাকুন, দুনিয়ার তুলনায় আখেরাতের জিন্দেগি প্রাধান্য দেয়ার বিষয়টি বুঝাতে থাকুন, সাথে সাথে আল্লাহ তা’য়ালার কাছে দোয়া করতে থাকুন।
এরপরও পিতা মাতার মন রক্ষার্থে পরিস্থিতি যদি এমন হয়ে দাঁড়ায় যে, আপনাকে চাকরী করতে’ই হবে, তখন তাদেরকে সান্তনার জন্য আপনার স্বামীর অনুমতিক্রমে সাময়িকভাবে এমন একটা চাকরি করতে পারেন, যেখানে পর্দাসহ দ্বীনের অন্যান্য বিধানগুলো লঙ্ঘিত হবে না। (তবে আমাদের দেশে মেয়েদের জন্য বিশেষভাবে সরকারি চাকরির এমন পরিবেশ খুব’ই কম) সাথে সাথে পিতা মাতাকে বুঝানো অব্যাহত রাখতে হবে এবং পরিস্থিতি ঠিক হয়ে গেলে আপনি চাকুরি ছেড়ে আপন সংসার এবং ইবাদতের দিকে মনোযোগী হতে পারেন।
তবে চাকুরীর ক্ষেত্রে যদি এমন কোন পরিবেশ পাওয়া না যায়, যেখানে ‘পর্দাসহ দ্বীনের সকল বিধানগুলো’ ঠিক থাকবে, তাহলে দ্বীনের বিধান লঙ্ঘন করে চাকরি করা আপনার জন্য কোনোভাবে’ই জায়েয হবে না। বরং এক্ষেত্রে চাকরি ছেড়ে দিতে হবে, চাকরি ছেড়ে দিলে পিতা মাতার হক নষ্ট হবে না।
মেয়ে যদি সচ্ছল হয় এবং তার নিজস্ব সম্পদ থাকে, আর পিতা-মাতা অসচ্ছল, গরিব হয় এবং অভাবী হয়, সেক্ষেত্রে মেয়ে, মেয়ের জামাই উভয়েরই সামর্থ্য অনুযায়ী পিতা-মাতার ভরণপোষণ দেওয়া ও তাদের দেখভাল করা জরুরী।
আল্লাহ তাআলা সর্বজ্ঞ।

------------------ 
উত্তর লিখেছেনঃ মুফতি Zubair Hasan Bin Kabir

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ডাউনলোড করুন মাকতাবায়ে শামেলা লেটেস্ট ভার্শন (মোবাইল এবং পিসির জন্য)

রুকইয়াহ আশ-শারইয়্যাহ (ডাউনলোড)

দুধ সম্পর্ক সাব্যস্ত হওয়ার জন্য কতবার দুধ পান করা আবশ্যক?