শিয়া প্রসঙ্গঃ হক্ক-তাকফির এর মাসআলা

অনেকেই ধুপ করে প্রশ্ন করে বসেন যে “শিয়াদের বা অমুক অমুক দের কাফের কেন বলেন?”
তারা নিজেরা কোন পর্যায়ে ইসলাম পালন করেন সে প্রসঙ্গে না যাই, তাদের ঐ কথার মূল উদ্দেশ্য থাকে- নিজেকে মুসলিম দাবি করা গোষ্ঠিকে কেন কাফের বলা! 

রাসূল(সা) “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” বলা ব্যক্তিকে মুসলিম মানার নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু একই সাথে তো কুরআন-হাদিস থেকে এমন সব কারণও উল্লেখ পাওয়া যায় যেগুলা ঈমান থেকে বের হবার লক্ষণ,কারণ নির্দেশ করে। অতিরিক্ত উদারতা দেখাতে গিয়ে সেগুলাকে কেন ভুলে থাকা? কবিরা গুনাহের কারণে একদল তাকফির করে থাকে, নামায না পড়লে কাফের ইত্যাদি বলে থাকে- তারা খারেজী, হত্যাযোগ্য ফেরকা(তাদের আরো অনেক লক্ষণ আছে)। কিন্তু আরেকটী ফেরকা আছে- মুরজিয়া; যারা ঈমানের পরিবর্তনকে স্বীকার করেনা। তাদের মতে কেউ একবার ঈমান আনার দাবি করলে সে মৃত্যুর আগ পর্যন্তই মুসলিম থাকে, আমল যাই হোক! সেটাও যে খারেজীদের মতই জাহান্নামী আকিদা তাও জেনে রাখা উচিত, উদারতা দেখানোর আগে সেই ভয় করা উচিত।
যেমন- নামায পড়ার পদ্ধতি আছে,ফযীলাত আছে। আবার কি কি করলে তা বরবাদ হয় তাও নির্ধারিত করা আছে,অন্যান্য ইবাদতের ক্ষেত্রেও তাই।যদি শুধু নিজেকে মুসলিম দাবি করা, “আল্লাহ্‌-রাসূল মানি” দাবি করার মধ্যেই সব হয়ে যেত তাহলে একদিকে প্রবৃত্তিপূজারীদের জন্য দরজা খুলে যেত।
সালফে সালেহীন এর উলামা-স্কলার-ফকীহরা যদি ঈমানের সীমান্তগুলা উল্লেখ না করতেন, কাফের হওয়া দলের নাম উল্লেখ না করতেন তাহলে ইচ্ছামত আল্লাহ্‌র যাত-সিফাত এর ব্যাপারে হানিকর কথা/আকিদা রেখে, রাসূল(সা) এর শানে জঘন্য অপমান করে,উম্মুল মু’মিনীন(রা) গণ ও সাহাবাদের নামে জঘন্য কথা বলে, ইসলাম এর বাইরে থেকে জঘন্য সব প্রথা এনে চালু করে আবার দিনশেষে উচ্চ আওয়াযে নিজেকে “কালিমাওয়ালা” দাবি করে যেত।
ঈমান হেফাজতের কোন উসুল,মূলনীতি থাকত না।
এই কারণে উলামায়ে কিরাম তাকফির এর ব্যাপারে আলোচনা করেছেন, যাতে মানুষ জানতে পারে কি করলে সে তাকফির থেকে বেরিয়ে যেতে পারে। সেই সব শর্তের আলোচনার ভিত্তিতেই তাকফির করা।
অনেকে বলেছেন এরকমও ,শিয়াদের শুধু বাতিল ফেরকা বললেই তাও হয়। কিন্তু কথা হল ,শিয়াদের পক্ষ থেকেই এমন আচরণ,মতবাদ এসেছে যাতে দুই দিকের এক দিকে যেতে হয় এবং কুরআন ও সুন্নাহ মেনে কাফের বলা ছাড়া উপায় থাকেনা। 

কেউ বলেন, শিয়াদের শুধু মুনাফিক বললেও তো হয়। মুনাফিকের বহু বৈশিষ্ট্যের একটি শিয়াদের তাকিয়ার মাসআলা(নিজের মতকে সুবিধা আদায়,ভয় ইত্যাদি কারণে গোপন করা) এর মাধ্যমে হয়ে যায়, যেহেতু মুনাফিকরাও মুখে এক অন্তরে আরেক। কিন্তু এও কিন্তু অনস্বীকার্য যে,মুনাফিকদের অনেকেই ইসলাম এক্কেবারেই গ্রহণ করেনি, শুধু দুনিয়াবি লাভ,ভয় ইত্যাদি কারণে মুসলিম সেজেছে।বাস্তবে কাফেরই ছিল।
একটা সময় এসব কাফেরকে কাফের বলা জরুরি হয়ে যায়, যখন সে তার প্রকাশ্য কুফরি কাজকে ইসলাম দাবি করে। না হলে তার কুফরি বক্তব্য,কাজকে ইসলাম এর অংশ বলে মেনে নেয়ার সামিল হয়ে যায়। একারণেই ইমা আবু হানিফা(র) বলেছেন, কাফেরকে যে কাফের বললনা সেও কাফের।
কেউ কেউ ভাবেন যে, শিয়াদের বা কাদিয়ানি, প্রকাশ্য মাজারপূজারী, গায়রুল্লাহকে সিজদাকারী – এদের কাফের বলার অর্থ এদের উপরে হামলার বৈধতা দেয়া। কিন্তু তাদের এও জানা উচিত যে ইসলামী শরিয়াতে হামলা,ক্কিতাল ইত্যাদি ভিন্ন পর্যায়ে। কেউ কাফের হলেই তাকে সঙ্গে সঙ্গে হামলা,আক্রমণ করার অনুমতি নাই যদি না তা সুস্পষ্ট শর্তে উন্নীত হয়।

আল্লাহ্‌ আমাদের ঈমানের হিফাযত করেন ও শিরক-কুফর থেকে, প্রকৃত মুসলিমদের তাকফির করা থেকে হিফাযত করুন।

-----------------
~ The Rafidologist: এসো শিয়া চিনি

মন্তব্যসমূহ

এই সপ্তাহে সর্বাধিক পঠিত

ডাউনলোড করুন মাকতাবায়ে শামেলা লেটেস্ট ভার্শন (মোবাইল এবং পিসির জন্য)

রুকইয়াহ আশ-শারইয়্যাহ (ডাউনলোড)

ইসতিখারার সুন্নত তরিকা + pdf