সুদ: কিছু প্রশ্ন, কিছু কথা!

* কৈফিয়ত! naseehah গ্রুপে এক বোন প্রশ্ন করেছিলেন সুদী ব্যাংকে চাকুরি করা ভাড়াটিয়ার দেয়া অর্থ গ্রহণ করা বৈধ কি না! আমি তার উত্তর দিয়েছিলাম। কিন্তু সে উত্তর অনেকেরই মনপুত হয় নি। কেও কেও আপত্তি করেছিলেন, কেও বা উদ্বিগ্ন হয়েছিলেন। কথা দিয়েছিলাম, এটা নিয়ে লিখব। কিন্তু নানা ব্যস্ততায় সুযোগ তেমন মেলে নি। যারা লেখাটা পড়বেন, আশা করি মাঝপথ থেকে ফিরে যাবেন না। এটাও ইলম। ইলম অর্জনের যে ফজীলত রয়েছে, তা পাওয়ার আশা করতেই পারি।

এক - সুদ নিয়ে কিছু আয়াত:



-ٱلَّذِينَ يَأْكُلُونَ ٱلرِّبَوٰا۟ لَا يَقُومُونَ إِلَّا كَمَا يَقُومُ ٱلَّذِى يَتَخَبَّطُهُ ٱلشَّيْطَٰنُ مِنَ ٱلْمَسِّۚ ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمْ قَالُوٓا۟ إِنَّمَا ٱلْبَيْعُ مِثْلُ ٱلرِّبَوٰا۟ۗ وَأَحَلَّ ٱللَّهُ ٱلْبَيْعَ وَحَرَّمَ ٱلرِّبَوٰا۟ۚ فَمَن جَآءَهُۥ مَوْعِظَةٌ مِّن رَّبِّهِۦ فَٱنتَهَىٰ فَلَهُۥ مَا سَلَفَ وَأَمْرُهُۥٓ إِلَى ٱللَّهِۖ وَمَنْ عَادَ فَأُو۟لَٰٓئِكَ أَصْحَٰبُ ٱلنَّارِۖ هُمْ فِيهَا خَٰلِدُونَ

যারা সুদ খায়, তারা কিয়ামতে দন্ডায়মান হবে, যেভাবে দন্ডায়মান হয় ঐ ব্যক্তি, যাকে শয়তান আসর করে মোহাবিষ্ট করে দেয়। তাদের এ অবস্থার কারণ এই যে, তারা বলেছেঃ ক্রয়-বিক্রয় ও তো সুদ নেয়ারই মত! অথচ আল্লা’হ তা’আলা ক্রয়-বিক্রয় বৈধ করেছেন এবং সুদ হারাম করেছেন। অতঃপর যার কাছে তার পালনকর্তার পক্ষ থেকে উপদেশ এসেছে এবং সে বিরত হয়েছে, পূর্বে যা হয়ে গেছে, তা তার। তার ব্যাপার আল্লাহর উপর নির্ভরশীল। আর যারা পুনরায় সুদ নেয়, তারাই দোযখে যাবে। তারা সেখানে চিরকাল অবস্থান করবে। -(Sura-Baqarah 2:275)


يَمْحَقُ ٱللَّهُ ٱلرِّبَوٰا۟ وَيُرْبِى ٱلصَّدَقَٰتِۗ وَٱللَّهُ لَا يُحِبُّ كُلَّ كَفَّارٍ أَثِيمٍ

আল্লাহ তা’আলা সুদকে নিশ্চিহ্ন করেন এবং দান খয়রাতকে বর্ধিত করেন। আল্লাহ পছন্দ করেন না কোন অবিশ্বাসী পাপীকে। -(Sura-Baqarah 2:276)


يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ ٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ وَذَرُوا۟ مَا بَقِىَ مِنَ ٱلرِّبَوٰٓا۟ إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ

হে ঈমানদারগণ, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সুদের যে সমস্ত বকেয়া আছে, তা পরিত্যাগ কর, যদি তোমরা ঈমানদার হয়ে থাক। - (Sura-Baqarah 2:278)



فَإِن لَّمْ تَفْعَلُوا۟ فَأْذَنُوا۟ بِحَرْبٍ مِّنَ ٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦۖ وَإِن تُبْتُمْ فَلَكُمْ رُءُوسُ أَمْوَٰلِكُمْ لَا تَظْلِمُونَ وَلَا تُظْلَمُونَ

অতঃপর যদি তোমরা পরিত্যাগ না কর, তবে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের সাথে যুদ্ধ করতে প্রস্তুত হয়ে যাও। কিন্তু যদি তোমরা তওবা কর, তবে তোমরা নিজের মূলধন পেয়ে যাবে। তোমরা কারও প্রতি অত্যাচার করো না এবং কেউ তোমাদের প্রতি অত্যাচার করবে না। - (Al-Baqarah 2:279)


দুই- আয়াত ও হাদিস এর আলোকে সুদের ভয়াবহতা:


১- আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূল সা. সুদখোরের সাথে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। (বাকারা-২৭৯)

২- রাসূল সা. সুদের কারবারে জড়িত, ১- সুদদাতা ২-সুদগ্রহীতা ৩-সুদের সাক্ষী ৪-সুদ যে লিখে সবার উপর লানত করেছেন। (মুসলিম- ১৫৯৮)

৩- রাসূল সা. বলেন তোমরা ৭ টা ধ্বংসাত্মক বিষয় থেকে বেচে থাকো। তারমধ্যে তিনি সুদের কথা উল্লেখ করেন। (বুখারী-২৭৭৬)

৪ - সূদের গোণাহের ৭৩ টি, (কোন বর্ণনায় ৭২/৭০) স্তর রয়েছে। আর সর্বনিম্ন হচ্ছে, মায়ের সাথে জেনা করার সমান গোণাহ অর্জিত হয়। (ইবনে মাজা- ২২৭৪ -সহীহ)
বলার অপেক্ষা রাখে না, এটাই যদি সর্বনিম্ন স্তর হয়, তাহলে বাকীগুলো কত ভয়ংকর ব্যাপার। শিউরে ওঠার মত।

৬- সুদখোরের ঠিকানা জাহান্নাম। (বাকারা -২৭৫)

৭- সুদ ও হারাম মাল যারা ভক্ষণ করবে, হারাম অর্থ দ্বারা যারা কাপড় পরিধান করবে। তাদের দুয়া সাধারণত কবুল হয় না। (মুসলিম ১০১৫)


তিন- সুদের ব্যাপারে কিছু মৌলিক নীতিমালা জানা জরুরী


১- সুদের অর্থে মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হয় না। এই অর্থ অন্যায়ভাবে আদায় করা। যেমন চুরি ডাকাতি করে উপার্জিত অর্থে মালিকানা অর্জিত হয় না। ইসলামের দৃষ্টিতে, এইসকল সম্পদ হস্তগত হয়ে থাকলে তা ফিরিয়ে দিতে বাধ্য।

২- উপার্জিত সম্পদের অধিকাংশ যদি হালাল হয়, আর আংশিক হারাম হয় তাহলে "অন্যের'' জন্যে এই সম্পদ হালাল বলে গণ্য হবে। তবে হারাম সম্পদ যে অর্জন করছে তার তো অবশ্যই গোণাহ হবে।


(আলআশবাহ ওয়ান নাযাইর ৩/২৩৪; আদ্দুররুল মুখতার ৫/৯৮; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৪০০; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৬/৩৬০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩৪২; ইতরুল হিদায়া ৬৮)


এই দুটি মূলনীতি বুঝতে পারলে, অনেক আপত্তি এমনিতেই দূর হয়ে যায়। যেমন, অনেকে আপত্তি করেছেন। বাংলাদেশ সরকার ও কোম্পানিগুলো লোন নেয় ব্যাংক থেকে। ইত্যাদি..


চার- কিছু প্রশ্ন ও কিছু আপত্তি



প্রশ্ন- বিভিন্ন বাড়ি ও ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান লোন নেয় সুদসহ। তাইলে তো কোন বাড়িতেই থাকা যাবে না। কোন কোম্পানির পণ্য কেনা যাবে না।

উত্তর- একটা কোম্পানি যদি হারাম অর্থ প্রবেশ করায়, সেটা খুব বেশি হলে মূল পুঁজির আংশিক হয়। পুরো টাকা তো হারাম থেকে উপার্জিত নয়। সুতরাং এসব কোম্পানির থেকে প্রোডাক্ট কেনার ক্ষেত্রে হারাম বলা যাবে না। তাছাড়া, কোম্পানি যদি সুদের শর্তে লোন নিয়ে থাকে, তবে তার ঋণ নেয়া অর্থ তো হারাম নয়। কিন্তু সুদের লেনদেন করায় তার মারাত্মক গোণাহ হবে।


প্রশ্ন- আমরা ডাক্তারি করতে গিয়ে সম্মানি নেই। এখন আমরা তো জানি না কার উপার্জন কী? তাহলে টাকা নেয়া কি জায়েজ হবে?

উত্তর- কারো সম্পদের ব্যাপারে হারাম অবগতি না থাকলে সেটা গ্রহণে নিষেধ নেই। সুতরাং, ডাক্তারি করতে গিয়ে যে কোন ব্যক্তি থেকে অর্থ নেয়া যাবে। তবে যদি অবগত থাকে, অমুক ব্যক্তির সব অথবা অধিকাংশ ইনকাম হারাম। তাহলে জানতে হবে তার দেয়া উক্ত অর্থ কি হারাম থেকে কিনা? হারাম অর্থের হলে নেয়া যাবে না।


* এক ভাই প্রশ্ন করেছেন, // কিছু টা বেশি ই কট্টর হয়ে গেল। আরে husband হারাম কামাইয়া আনলেও যদি তা স্ত্রির জন্ন হালাল হয়, যে হারাম কামাইব অর সাস্তি হবে। তাইলে ব্যাংকার কামাইলে সাস্তি তার হবে। সবাই কেন তার ভাগ নিবে?//


উত্তর- স্ত্রী ও নাবালেগ সন্তানের ভরণপোষণ এর দায়িত্ব স্বামী ও পিতার হাতে। তিনি হারাম সম্পদ অর্জন করে থাকলে বিধান হচ্ছে, স্ত্রী নিজের অর্থ থেকে খরচ করবে। যদি তার অর্থ না থাকে, তবে কেবল যা না হলেই নয় পরিমাণ অর্থ স্বামীর থেকে নিতে পারবে। সুতরাং ঢালাওভাবে স্ত্রীর জন্যেও জায়েজ নয়।


* আরেক ভাই লিখেছেন //এইটা কেমন ফতোয়া হোল। তাহলে তো দেখা যায় ৯০ ভাগ বাড়িওয়ালা, দোকানদারের টাকা হারাম। //

উত্তর- এখানে দ্বিতীয় মূলনীতি প্রয়োগ করলেই উত্তর পেয়ে যাবেন। বাড়িওয়ালার দায়িত্ব হচ্ছে ভাড়াটিয়ার আয়ের উৎস সম্পর্কে জেনে নেয়া। তারপরেও বাড়িওয়ালা উপার্জিত সকল সম্পত্তি তো হারাম নয়। আংশিক হারাম হলে, অন্যের জন্যে তার সাথে লেনদেন করা বৈধ। তবে না করা উত্তম।


islamqa এর ফতোয়া ও কিছু কথা!



islamqa(.info) থেকে ফতোয়া দেয়া হয়েছে, সুদ দ্বারা অর্জিত অর্থে মালিকানা আসে। সুতরাং কেও সুদের টাকা হাদিয়া দিলে সেটা নেয়া জায়েজ। তারা দলীল দিয়েছেন, রাসূল সা. ইহুদিদের দাওয়াত খেয়েছেন। আর সেসময়ে ইহুদীরা সুদের কারবার করত।

একটু খেয়াল করলেই দলীলের অস্পষ্টতা বুঝতে পারবেন। এখানে "ইহুদীরা সুদের কারবার করত", মুসলিমদেরও অনেকেই করে। তাই বলে মুসলিমদের সব উপার্জন কি সুদ থেকে? অথবা ইহুদীদের উপার্জন একমাত্র উপায় কি সুদ ছিল? রাসূল সা. কে তারা সুদের অর্থ থেকেই খাইয়েছিল, এরকম কোন বর্ণনা কি রয়েছে?


দ্বিতীয়ত, অমুসলিমদের সাথে সুদের লেনদেন এর ব্যাপারে ইমাম ও উলামাদের দুটি মত রয়েছে। বিশাল সংখ্যক উলামাগণ এর মতে, অমুসলিমরা সুদ খেলে তারা মালিক হবে। সুতরাং তাদের থেকে কেও সুদের মাল দ্বারা হাদিয়া বা কিছু পেলে তা নিতে পারবে। এর বিপরীতে শায়খ বিন বাজ রহ. সহ অনেক আলেমের মত হচ্ছে, সুদের সম্পদের ক্ষেত্রে মুসলিম অমুসলিমে কোন পার্থক্য নেই।
এ থেকেও বোঝা যায়, রাসূল সা. ইহুদিদের খাবার খেয়েছিলেন, এটা দ্বারা সর্বোচ্চ অমুসলিমদের ব্যাপারটা প্রমাণিত হয়। কিন্তু এই ঘটনাকে ভিত্তি করে, "মুসলিমরাও সুদের অর্থে মালিক হয়", বলার সুযোগ নেই।

islamqa এর ফতোয়ার সম্পূর্ণ বিপরীত ফতোয়া দিয়েছেন, শায়খ বিন বাজ রাহ.।
মাজমুয়ু ফাতাওয়ে বিন বাজ, যেটা সংকলন করেছেন ড. মোহাম্মদ বিন সাদ। এই কিতাবের ১৩ নং খন্ড 'কিতাবুল বুয়ু' সংলগ্ন। এখানে বেশ কয়েকটি ফতোয়াতে (যেমন, ২৩৭, ২৬২, ২৭০, ২৭১ ও ২৭৩ পৃষ্ঠা দ্রষ্টব্য) শায়খ বলেছেন, "সুদের অর্থ ওয়ারিস সূত্রে পেলে সেটা নিতে পারবে না। হাদিয়া পেলেও তা নিতে পারবে না।"

বলা বাহুল্য, এটাই উম্মাহর সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য ফতওয়া। বলতে গেলে এযাবতকালের সব আলেমগণই এতে একমত।


একটি হাদিস দ্বারা প্রমাণ


‘আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবূ বাকর (রাঃ)-এর একজন ক্রীতদাস ছিল। সে প্রতিদিন তার উপর ধার্য কর আদায় করত। আর আবূ বাকর (রাঃ) তার দেওয়া কর হতে আহার করতেন। একদিন সে কিছু খাবার জিনিস এনে দিল। তা হতে তিনি আহার করলেন। তারপর গোলাম বলল, আপনি জানেন কি ওটা কিভাবে উপার্জিত করা হয়েছে যা আপনি খেয়েছেন? তিনি বললেন, বলত কিভাবে? গোলাম উত্তরে বলল, আমি জাহিলী যুগে এক ব্যক্তির ভবিষ্যৎ গণনা করে দিয়েছিলাম। কিন্তু ভবিষ্যৎ গণনা করা আমার ভালভাবে জানা ছিল না। তথাপি প্রতারণা করে তা করেছিলাম। আমার সাথে তার দেখা হলে গণনার বিনিময়ে এ দব্যাদি সে আমাকে হাদীয়া দিল যা হতে আপনি আহার করলেন। আবূ বাকর (রাঃ) এটা শুনামাত্র মুখের ভিতর হাত ঢুকিয়ে দিলেন এবং পেটের ভিতর যা কিছু ছিল সবই বমি করে দিলেন।


সহীহ লিল বুখারী- (ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৬১, আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৫৬, তাওহিদ প্রকাশনীঃ ৩৮৪২)


খেয়াল করে দেখুন, যদি ব্যাপারটা এমন হত "গোলাম কীভাবে উপার্জন করেছে সেটা দেখা আমার দায়িত্ব না অথবা গোলামের জন্যে হারাম হতে পারে, আমার জন্যে জায়েজ" তাহলে আবু বকর রা. সেটা বমি করে বের করে দিলেন কেন? এতে স্পষ্ট হয়, মূলগত হারাম বস্তু (শূকর, মদ, সুদ, ইত্যাদি) মালিকানা বদলালে সেটা হালাল হয়ে যায় না।


সবশেষে একটি কথা উল্লেখ করছি,


ধরুন, কারো টন্সিলে ক্যান্সার হলো। (আল্লাহ মাফ করুন) বেশিরভাগ ডাক্তার বললেন, এটা কেটে ফেলে দিতে। কারণ টন্সিল ফেলে দিলে তেমন ক্ষতি হবে না। একজন ডাক্তার বলল, 'আপনি টন্সিল রেখে দিতে পারেন'! ক্যান্সারের ভয়াবহতা যার জানা আছে, সে কি টন্সিল রেখে দিবে ঐ একজন ডাক্তারের কথায়?


এত বিস্তারিত বিবরণের পরেও যদি সন্দেহ থেকে যায় আপনার মনে। তাহলে এদুটো হাদিস লক্ষণীয়..

১- রাসূল সা. লানত করেছেন, যারা নানা তাল বাহানা ও যুক্তি দেখিয়ে সুদের কারবার করে। হাদিসে এটাও এসেছে, বনী ইসরাইল ধ্বংস হওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে, তারা নানা বাহানায় হারামকে হালাল মনে করে খেত।

ইবতালুল হিল, লিইবনে বাত্তা- ৫৬- এরওয়াউল গালিল- ১৫৩৫ (হাসান)

সহীহ বুখারীতে আছে, রাসূল সা. ইহুদীদের এই হীলার (হারামকে অগ্রহণযোগ্য ছুতোয় হালাল বানানো) কারণে লানত করেছেন।

বুখারী- ৩৪৬০


২- রাসূল সা. সন্দেহজনক বস্তু থেকে বেচে থাকতে বলেছেন।

১-/ নু‘মান ইবনু বশীর (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছি যে, ‘হালাল স্পষ্ট এবং হারামও স্পষ্ট। আর এ দু’য়ের মাঝে রয়েছে বহু সন্দেহজনক বিষয়- যা অনেকেই জানে না। যে ব্যক্তি সেই সন্দেহজনক বিষয়সমূহ হতে বেঁচে থাকবে, সে তার দ্বীন ও মর্যাদা রক্ষা করতে পারবে। আর যে সন্দেহজনক বিষয়সমূহে লিপ্ত হয়ে পড়ে, তার উদাহরণ সে রাখালের ন্যায়, যে তার পশু বাদশাহ্ সংরক্ষিত চারণভূমির আশেপাশে চরায়, অচিরেই সেগুলোর সেখানে ঢুকে পড়ার আশংকা রয়েছে। জেনে রাখ যে, প্রত্যেক বাদশাহরই একটি সংরক্ষিত এলাকা রয়েছে। আরো জেনে রাখ যে, আল্লাহর যমীনে তাঁর সংরক্ষিত এলাকা হলো তাঁর নিষিদ্ধ কাজসমূহ। জেনে রাখ, শরীরের মধ্যে একটি গোশতের টুকরো আছে, তা যখন ঠিক হয়ে যায়, গোটা শরীরই তখন ঠিক হয়ে যায়। আর তা যখন খারাপ হয়ে যায়, গোটা শরীরই তখন খারাপ হয়ে যায়। জেনে রাখ, সে গোশতের টুকরোটি হল অন্তর।

(বুখারী-৫২ ও ২০৫১; মুসলিম ২২/২০ হাঃ ১৫৯৯, আহমাদ ১৮৩৯৬, ১৮৪০২)


২-/ হযরত হাসান বিন আলী রা. বলেন, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-
" دَعْ مَا يَرِيبُكَ إِلَى مَا لَا يَرِيبُكَ،
‘যে বস্তু তোমাকে সন্দেহে ফেলে দেয় সেটা ছেড়ে ঐটা গ্রহণ করো যা তোমাকে সন্দেহে ফেলে না’

(তিরমিযি- ২৫১৮) -সহীহ




দীর্ঘ আলোচনায় হয়ত ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। তদুপরি, আলোচনাটাকে সংক্ষেপই বলব। ইসলামি ব্যাংকিং এর রুপরেখা নিয়ে অনেক বই আছে। কিছু কিছু অনূদিতও হয়েছে। যারা সুদের মহামারী দেখে হতাশ, তারা বইগুলো পড়লে বুঝতে পারবেন সহীহ নিয়মে ইসলামি ব্যাংক তৈরি করা মোটেও কঠিন কিছু না। । কেবল সুদের চকচকে টাকার হাতছানি থেকে কর্মকর্তাদের নির্লোভ মানসিকতা আর সদিচ্ছার অভাবের কারণেই বিশুদ্ধ ইসলামি ব্যাংক আজ গড়ে উঠে নি।

---------
লিখেছেন- মুহতারাম মুফতি আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ
সোর্সঃ https://web.facebook.com/notes/abdullah-al-mahmud/সুদ-কিছু-প্রশ্ন-কিছু-কথা/1852387411709668/

এই সপ্তাহে সর্বাধিক পঠিত

ডাউনলোড করুন মাকতাবায়ে শামেলা লেটেস্ট ভার্শন (মোবাইল এবং পিসির জন্য)

রুকইয়াহ আশ-শারইয়্যাহ (ডাউনলোড)

ইসতিখারার সুন্নত তরিকা + pdf