নামাজের মাঝে করা আমাদের যতো ভুল
দ্বিতীয় রাকাতের রুকুতে যেতেই ধুপধাপ আওয়াজ করে দৌড়তে দৌড়তে একজন মুসুল্লি
এসে আমার পাশে নামাজে দাড়ালো। সালাম ফিরানোর পর তাকিয়ে দেখি পরিচিত এক বড়
ভাই। একই গ্রামে আমাদের বাড়ি হওয়ায় দেখা সাক্ষাতে কথাবার্তাও হয় তার সাথে।
আমি গ্রামে এসেছি মাত্র আজকে। এবার এখনও তার সাথে আলাপ হয় নি। সালাম ফিরিয়ে
বারান্দায় গিয়ে আমি বাকি নামাজটা আদায় করলাম।
মসজিদ থেকে বের হবার সময় পেছন থেকে সালামের আওয়াজ শুনে পা চালানো বন্ধ করে দাড়িয়ে গেলাম। মুখ ঘুরিয়ে দেখি সেই ভাই হাসি মুখে এসে সালাম দিয়ে মুসাফাহর জন্য হাত বাড়িয়ে দিলেন। আমি সালামের উত্তর দিতে না দিতেই তিনি বললেন,
:কবে আসলেন ভাই?
: এই তো আজকে এলাম।
: আপনার সাথে আমার কিছু কথা আছে।
: জি বলতে পারেন।
: অনেকদিন ধরে একটা জিনিস নিয়ে আল্লাহর কাছে দুআ করে যাচ্ছি। দুআ তো আর কবুল হচ্ছে না। শুনেছি ফরজ নামাজের পর দুআ করলে নাকি দ্রুত কবুল হয়। কিন্তু আমার তো কিছুতেই কিছু হচ্ছে না।
তার কথা শুনে মনে পড়ে গেলো কিছুক্ষণ আগেই তিনি দৌড়তে দৌড়তে এসে নামাজের কাতারে শরীক হয়েছিলেন। হাঁটতে হাঁটতেই তাকে বললাম, ভাই, নামাজের পর দুআ কবুল হয় কথা সত্য। হাদিসেও এটা উল্লেখ হয়েছে। তবে বিষয় হলো, নামাজটা তো আগে ঠিকঠাক মতো হতে হবে। নামাজেই যদি হাজারটা ভুল থাকে তবে সেই নামাজের পর দোআ কবুল হওয়ার আশা করাটাও তো বোকামি।
আমার কথাটা শেষ হলে দেখলাম তার কপালে ভ্রুকুঞ্চন দেখা দিলো। তিনি বললেন, আমি তো ঠিকঠাকভাবেই নামাজ পড়ি। যথাসাধ্য জামাতের সাথে মসজিদে এসে পড়ার চেষ্টা করি।
বললাম, এটা অবশ্যই প্রশংসনীয় যে আপনি নামাজ মসজিদে এসে পড়ার চেষ্টা করেন। তার মানে এই না আপনি সব কিছু ঠিকঠাকভাবে করছেন। আমার আজকের দেখাতেই তো এমন কয়েকটি বিষয় দেখতে পেলাম, যা ছিল ভুল।
তিনি বেশ কৌতুহলী হয়ে এবার আমার দিকে তাকালেন। তার চোখেমুখে অবিশ্বাসের ছাপ।
:বলেন কি? সত্যি নাকি! কি কি দেখলেন বলেন তো ভাই।
কথা বলতে বলতে আমরা মসজিদের গেট পেরিয়ে আরো কিছুদূর চলে এসেছি। সামনেই ইট-বাঁধানো পুকুর ঘাট। সেখানেই গিয়ে বসলাম। কথাগুলো হেঁটেহেঁটে বলার চাইতে বসেবসে বললেই বেশি সস্থির সাথে বলা যাবে।
: প্রথমত আপনি আপনার নিজের দিকে তাকিয়ে দেখুন। আপনি এই পুকুরে গোসল করে একটা সেন্টু গেঞ্জি আর লুঙি পরেই নামাজ পড়তে চলে এসেছেন মসজিদে। আচ্ছা বলেন তো, এই সাজে কি আপনি বাজারঘাটে বা কোন গণ্যমান্য ব্যক্তির সাথে সাক্ষাত করার জন্য যেতে পারবেন?
: না ভাই। এটা কীভাবে সম্ভব! লোকে তো আমাকে পাগল বলবে পরে। তাছাড়া এটা তো শরমেরও কথা ।
: জি ঠিক ধরেছেন। তাহলে বলেন, যেই আল্লাহ তাআলা সকল ক্ষমতার অধিকারী, সকল কিছুর অধিপতি তার সামনে আপনি হাজিরা দিতে যাচ্ছেন এমন পোশাকে, যে পোশাকে আপনি লোকজনের সমাগমস্থলে বা বাজারঘাটে কিংবা গণ্যমান্য কারো কাছে যেতে ইতস্ততবোধ করেন, এটা কী উচিত? অথচ কুরআনুল কারীমে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, হে আদম সন্তানেরা! তোমরা প্রত্যেক নামাযের সময় সাজসজ্জা গ্রহণ করে নাও।¹
: আসলে ভাই এভাবে তো কখনও ভেবে দেখি নি আগে। আমি তো প্রতিদিনই গোসল করে ভেজা কাপড় ঘাটে রেখে এভাবেই গেঞ্জি গায়ে খালি মাথায় মসজিদে চলে আসি নামাজ পড়তে। এখন থেকে আরও সচেতন হতে হবে।
: তবে আপনি ভুল বুঝবেন না আবার। এভাবে নামাজ পড়লে যে হবে না তা কিন্তু নয়। যেমন কেউ যদি মাঠে বা কারখানায় কাজ করতে যায় আর নামাজের সময় হয়ে যায় তবে সেখানেই গায়ের পবিত্র পোশাকেই নামাজ পড়ে নিতে পারে। এটা দোষণীয় নয়। তবে সুযোগ থাকা সত্ত্বেও শুধু অলসতার কারণে পরিপাটি হওয়া ছাড়া এভাবে নামাজ পড়াটা অপছন্দনীয়।
এরপর আপনি যখন জামাতে শরীক হয়েছেন তখন দ্বিতীয় রাকাত চলছিলো। আপনি যখন মসজিদে এসেছেন তখন ইমাম সাহেব রুকুতে চলে গেছেন। আপনি রাকাত ধরার জন্য ধুপধাপ শব্দে দৌড়ে এলেন। অথচ সাহাবী আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত একটি হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন তোমরা নামাজ পড়তে আসবে তখন খুব ধীরস্থীরে ও শান্তভাবে আসবে। এরপর যতো রাকাত পাবে তা পড়ে নাও। আর যা হাতছাড়া হবে তা পরে আদায় করে নাও।²
কারণ হলো, এভাবে দৌড়ে এলে নামাজে খুশুখুযু ও মনোযোগ থাকে না। দৌড়ানোর কারণে মুসুল্লি হাপাতে থাকে। আপনার ক্ষেত্রেও এটা হয়েছে। এমনটা করা মোটেই উচিত নয়। বরং ধীরস্থীরভাবে এসে জামাতে শরীক হবেন।
তারপর দেখলাম আপনি ছুটে যাওয়া রাকাত আদায় করার জন্য ইমাম সাহেব ডান দিকে সালাম ফেরানোর সাথেসাথে দাড়িয়ে গেলেন। এটাও অনুচিত কাজ হয়েছে। বরং নিয়ম হলো, ইমামের দুইদিকে সালাম ফেরানো শেষ হলে তারপর মাসবুক ব্যক্তি তার ছুটে যাওয়া নামাজটা আদায় করার জন্য দাড়াবে।
এরপর দেখলাম, আপনি সালাম ফিরানো শেষ করে দুই হাত তু্লে শুধু মুখে একটা মোছা দিলেন। এটা কী করলেন আপনি? এটাকে কি মুনাজাত বলে? কোন প্রার্থণা নাই কিছুই নাই কেবলই দুই হাতকে মুখে স্পর্শ করা। এর দ্বারা ফায়দা কী! অনেককেই এটা করতে দেখি। সালামটা ফিরিয়েই দুই হাতকে মুখের সাথে মোছা দেয়। ব্যাস তার দুআ শেষ। আপনি তো কোন কিছু চাইলেনই না তাহলে আল্লাহ কী কবুল করবেন? অথচ এই সময়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। হাদীসে যেসব সময়ে দুআ কবুল হওয়ার কথা এসেছে তার মধ্যে এটা অন্যতম।
সাহাবী আবু উমামা বলেছেন, একবার নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করা হলো, কোন সময়ে দুআ বেশি কবুল হয়? তিনি বললেন, শেষ রাত্রের দোআ এবং ফরজ নামাজের পরে করা দোআ।³ এই সময়টাতে তাই মনভরে দোআ করা উচিত। চাই হাত তুলে হোক বা না তুলে।
আমার কথার মাঝখানেই তিনি বলে উঠলেন, আসলে ভাই আমরা গ্রামে থাকি। পড়াশোনাও খুব বেশি করি নি। অনেক কিছুই আমাদের অজানা। টুকটাক ওয়াজ-মাহফিলে গেলেও সেখানে এসব দরকারি বিষয়গুলো কমই আলোচনা হয়। সুরে সুরে নানারকম গালগল্প আর কিচ্ছা-কাহিনী বলেই বক্তারা সময় পার করে দেন। অথচ এগুলো নিয়ে আলোচনা করার দরকার ছিল আগে। সমাজের অনেক লোকই এসব ভুল করে থাকে। তারা জানেই না যে সঠিক কোনটা আর ভুল কোনটা।
আমি বললাম, জি ভাই। এটা আসলেও দুঃখজনক। তবে আমি আপনাকে জানিয়ে দিচ্ছি। এমন আরও বেশ কিছু বিষয় আছে যেগুলোতে অনেকেই ভুল করেন। এগুলো কমন ভুল। প্রচুর মানুষ এতে লিপ্ত। একটা একটা করে আমি আপনাকে বলছি।
প্রথম হলো, আমরা অনেকেই নিয়ত করি না, পড়ি। নিয়ত করা আর নিয়ত পড়া তো একজিনিস না। ভাবি নামাজের শুরুতে মুখে আরবি নিয়ত পড়ে নেওয়া জরুরি। অথচ এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। নিয়ত মানে তো হলো কসদ বিল কলব তথা অন্তরের সঙ্কল্প। মনে কোন কিছুর ইচ্ছা করা। মুখে উচ্চারণের সাথে এর বিন্দুমাত্র সম্পর্ক নেই। নিয়ত করা, মানে নামাজ পড়ার ইচ্ছা পোষণ করাটা ফরজ। এটা না হলে নামাজই হবে না। কিন্তু নিয়ত পড়া, মানে মুখে মুখে অর্থ না জেনে-বুঝে মন্ত্রের মতো কিছু আরবি বাক্য আওড়ানো ফরজ নয়। এমনকি সুন্নতও নয়। অনেকেই এই দুইটা বিষয়ের পার্থক্য করতে না পেরে একটাকে অন্যটার সাথে গুলিয়ে ফেলেন।
সমস্যাটা হয় কি জানেন? এই ধারণাটা পোষণ করার কারণে আমরা বেশ কয়েকদিক দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হই। প্রথমত একটা জরুরি নয় বিষয়কে জরুরি বানিয়ে দেই। দ্বিতীয়ত ইমাম সাহেব নামাজ শুরু করার পর অনেকে এটা পড়তে পড়তে ইমাম সাহেব সূরা ফাতেহা পড়া শুরু করে দেন। ফলে বেচারাকে তাকবীরে উলা প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হতে হয়। অথচ হাদীসে তাকবীরে উলার সাথে নামাজ আদায়কে অনেক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এক হাদীসে আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে চল্লিশদিন তাকবীরে উলার সাথে জামাতে নামাজ আদায় করবে তার জন্য দু'টি মুক্তিনামা লেখা হবে। জাহান্নাম থেকে মুক্তি ও নেফাক থেকে মুক্তি।⁴
তো দেখা যায় এই মুখে নিয়তের চক্করে পড়ে অনেকে তাকবীরে উলা মিস করেন। তৃতীয়ত অনেক ভাই মসজিদে এসে ইমামকে রুকুতে দেখতে পান। তখন নামাজের কাতারে দাড়িয়ে তিনি তাকবীরে তাহরীমা বলে সরাসরি রুকুতে না গিয়ে আগে মুখে মুখস্ত আরবি নিয়তটা পড়তে যান। এটা পড়া শেষ হতে হতে ইমাম সাহেব রুকু থেকে উঠে যান। ফলে তাকে একটা রাকাত হারাতে হয়। এই ভুল বিষয়টা সম্পর্কে সচেতন থাকলে কিন্তু তাকে এসব সমস্যার সম্মুখীন হতে হতো না।
ও, আরেকটা মনে পড়লো। অনেককেই দেখি তারা জায়নামাজে দাড়িয়ে ইন্নি ওয়াজ্জাহতু ওয়াজহিয়া লিল্লাযি... দোআটা পড়েন। তারা ভাবেন এটা জায়নামাজের দোআ। কী অদ্ভুত! আলাদা যে জায়নামাজ আমরা বর্তমানে ব্যবহার করি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যুগে তো এর অস্তিত্বই ছিল না। তখন মুসল্লা বলতে নামাজের জায়গাকে বোঝানো হতো। নামাজ পড়ার জন্য আলাদা কোন কাপড়ের খণ্ডকে নয়। সুতরাং জায়নামাজের আলাদা দোআ আসাটা তো আশ্চর্যজনক। বরং হাদীসে এই দোআটি নামাজ শুরুর পর সানার স্থলে পড়ার কথা বর্ণিত হয়েছে।⁵ মানে আপনি চাইলে তাকবীরে তাহরীমার পর সুবহানাল্লাহুম্মা ওয়াবিহামদিকাও পড়তে পারেন আবার চাইলে ইন্নিওয়াজ্জাহতু-ও পড়তে পারেন। দুটোরই সুযোগ রয়েছে।
আরো দুইটা মারাত্মক ভুলের কথা আপনাকে বলি। ভুলগুলো এমন যে এর কারণে নামাজ বাতিল হয়ে যায়। অথচ অনেকে বিষয়গুলো জানেই না। ফলে তাদের দ্বারা কখনও কখনও এই ভুলগুলো হয়ে যায় এবং কষ্টের নামাজ নষ্টের খাতায় চলে যায়।
প্রথম হলো তাকবীরে তাহরীমা না বলা। আপনি দেখবেন অনেকে যখন জামাতের সাথে নামাজ পড়তে আসে তখন ইমাম আল্লাহু আকবার বলে নামাজ শুরু করলে সে শুধু দুইহাত উপরে তুলেই হাত বেঁধে ফেলে। মুখে আর তাকবীর বলে না। অধিকাংশ সময়ই এটা অন্যমনস্কতা ও বেখেয়ালির কারণে হয়। হয়তো ইকামাত চলাকালীন সে কিছু একটা ভাবছিল বা কোন চিন্তায় মগ্ন ছিলো। তো এই নিমগ্নতার ভেতর দিয়েই তাকবীর বলা ছাড়া হাত বেঁধে ফেলে। অথচ হাত বাঁধা হলো সুন্নত আর তাকবীর বলা হলো ফরজ। হাত না বাঁধলেও নামাজ হয়ে যাবে কিন্তু তাকবীরে তাহরীমা না বললে নামাজ বাতিল বলে গণ্য হবে।
আবার অনেকে তাকবীরে তাহরীমা বলেন ঠিকই তবে আল্লাহর আলিফে লম্বা টান দিয়ে আ-আ-আল্লাহু আকবার বলেন। অথবা আকবারের বাতে লম্বা টান দিয়ে আকবাআ-আ-আর বলেন। এগুলো নামাজকে নষ্ট করে দেবার জন্য যথেষ্ট। কারণ এর মাধ্যমে আল্লাহু আকবারের অর্থের মধ্যে বড়ো ধরনের বিকৃতি চলে আসে।
কথাগুলো শেষ করতেই বাড়ি থেকে ফোন এলো। আম্মা খাবার সামনে রেখে অপেক্ষা করছেন। তাই আর দেরি করা সম্ভব হলো না। তার থেকে বিদায় নিয়ে বাড়ির পথে হাঁটা ধরলাম।
প্রিয় পাঠক, উপরে বলা গল্পটা পুরোই একটা কল্পনা। নামাজে আমরা যেসব বিষয়ে ভুল করে থাকি সচরাচর সেসব নিয়ে ভিন্ন ধাঁচে কিছু লেখার কথা অনেক দিন ধরেই ভাবছিলাম। সেদিন মসজিদে আসরের নামাজ পড়ার সময় এমন করে লেখাটা সাজানোর চিন্তা মাথায় এলো। এগুলো চিন্তা করতে করতে যখন ধ্যান ফিরে পেলাম তখন দেখি আমি শেষ বৈঠকে। আত্তাহিইয়্যাতু শেষ করে দরুদ পড়ছিলাম তখন। বুঝলাম, এটা ছিল নেক সুরতে শয়তানের ধোঁকা। সে-ই আমাকে নামাজের ভেতর ভিন্ন চিন্তায় মশগুল করে দিলো। তাই দরূদ শেষে খুব কায়মনোবাক্যে দোআ মাসূরাটা পড়লাম,
আল্লাহুম্মা ইন্নি যলামতু নাফসি যুলমান কাসীরা... হে আমার রব, আমি নিজের উপর যুলুম করে ফেলেছি। অনেক বেশি যুলুম। তুমি ছাড়া আর কেউ অপরাধ ক্ষমাকারী নাই। সুতরাং আমাকে তোমার পক্ষ হতে ক্ষমা করে দাও। এবং তুমি আমার উপর রহম করো। নিশ্চয়ই তুমি অতি ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।
আশা করি, একজন পাঠকও যদি এই লেখা থেকে নিজের নামাজে করা কোন ভুলের বিষয়ে জানতে পেরে সংশোধিত হয় তবে রব্বে কারীম তার করুণায় বারিধারায় আমাকে সিক্ত করবেন। আমার এই অপরাধকে ক্ষমার চাদরে আবৃত করে দিবেন। কারণ তিনি ক্ষমা করতে ভালোবাসেন।
পুনশ্চ: লেখাটি উপকারী মনে হলে শেয়ার করুন। কারো উপকার হবে মনে করলে (মূল লেখায়) তাকে মেনশন করুন। অন্যের নামাজ সুন্দর ও বিশুদ্ধ হতে ভূমিকা রাখুন।
[প্রমাণপঞ্জি:
① সূরা আরাফ, আয়াত: ৩১
② মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং: ১০১০৩
③ সুনানে তিরমিজি, হাদীস নং: ৩৪৯৯
④ সুনানে তিরমিজি, হাদীস নং: ২৪১
⑤ আলমুজামুল কাবীর, হাদীস নং: ৯২৮]
----------------
লিখেছেনঃ আবদুল্লাহ আল মাসউদ
মসজিদ থেকে বের হবার সময় পেছন থেকে সালামের আওয়াজ শুনে পা চালানো বন্ধ করে দাড়িয়ে গেলাম। মুখ ঘুরিয়ে দেখি সেই ভাই হাসি মুখে এসে সালাম দিয়ে মুসাফাহর জন্য হাত বাড়িয়ে দিলেন। আমি সালামের উত্তর দিতে না দিতেই তিনি বললেন,
:কবে আসলেন ভাই?
: এই তো আজকে এলাম।
: আপনার সাথে আমার কিছু কথা আছে।
: জি বলতে পারেন।
: অনেকদিন ধরে একটা জিনিস নিয়ে আল্লাহর কাছে দুআ করে যাচ্ছি। দুআ তো আর কবুল হচ্ছে না। শুনেছি ফরজ নামাজের পর দুআ করলে নাকি দ্রুত কবুল হয়। কিন্তু আমার তো কিছুতেই কিছু হচ্ছে না।
তার কথা শুনে মনে পড়ে গেলো কিছুক্ষণ আগেই তিনি দৌড়তে দৌড়তে এসে নামাজের কাতারে শরীক হয়েছিলেন। হাঁটতে হাঁটতেই তাকে বললাম, ভাই, নামাজের পর দুআ কবুল হয় কথা সত্য। হাদিসেও এটা উল্লেখ হয়েছে। তবে বিষয় হলো, নামাজটা তো আগে ঠিকঠাক মতো হতে হবে। নামাজেই যদি হাজারটা ভুল থাকে তবে সেই নামাজের পর দোআ কবুল হওয়ার আশা করাটাও তো বোকামি।
আমার কথাটা শেষ হলে দেখলাম তার কপালে ভ্রুকুঞ্চন দেখা দিলো। তিনি বললেন, আমি তো ঠিকঠাকভাবেই নামাজ পড়ি। যথাসাধ্য জামাতের সাথে মসজিদে এসে পড়ার চেষ্টা করি।
বললাম, এটা অবশ্যই প্রশংসনীয় যে আপনি নামাজ মসজিদে এসে পড়ার চেষ্টা করেন। তার মানে এই না আপনি সব কিছু ঠিকঠাকভাবে করছেন। আমার আজকের দেখাতেই তো এমন কয়েকটি বিষয় দেখতে পেলাম, যা ছিল ভুল।
তিনি বেশ কৌতুহলী হয়ে এবার আমার দিকে তাকালেন। তার চোখেমুখে অবিশ্বাসের ছাপ।
:বলেন কি? সত্যি নাকি! কি কি দেখলেন বলেন তো ভাই।
কথা বলতে বলতে আমরা মসজিদের গেট পেরিয়ে আরো কিছুদূর চলে এসেছি। সামনেই ইট-বাঁধানো পুকুর ঘাট। সেখানেই গিয়ে বসলাম। কথাগুলো হেঁটেহেঁটে বলার চাইতে বসেবসে বললেই বেশি সস্থির সাথে বলা যাবে।
: প্রথমত আপনি আপনার নিজের দিকে তাকিয়ে দেখুন। আপনি এই পুকুরে গোসল করে একটা সেন্টু গেঞ্জি আর লুঙি পরেই নামাজ পড়তে চলে এসেছেন মসজিদে। আচ্ছা বলেন তো, এই সাজে কি আপনি বাজারঘাটে বা কোন গণ্যমান্য ব্যক্তির সাথে সাক্ষাত করার জন্য যেতে পারবেন?
: না ভাই। এটা কীভাবে সম্ভব! লোকে তো আমাকে পাগল বলবে পরে। তাছাড়া এটা তো শরমেরও কথা ।
: জি ঠিক ধরেছেন। তাহলে বলেন, যেই আল্লাহ তাআলা সকল ক্ষমতার অধিকারী, সকল কিছুর অধিপতি তার সামনে আপনি হাজিরা দিতে যাচ্ছেন এমন পোশাকে, যে পোশাকে আপনি লোকজনের সমাগমস্থলে বা বাজারঘাটে কিংবা গণ্যমান্য কারো কাছে যেতে ইতস্ততবোধ করেন, এটা কী উচিত? অথচ কুরআনুল কারীমে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, হে আদম সন্তানেরা! তোমরা প্রত্যেক নামাযের সময় সাজসজ্জা গ্রহণ করে নাও।¹
: আসলে ভাই এভাবে তো কখনও ভেবে দেখি নি আগে। আমি তো প্রতিদিনই গোসল করে ভেজা কাপড় ঘাটে রেখে এভাবেই গেঞ্জি গায়ে খালি মাথায় মসজিদে চলে আসি নামাজ পড়তে। এখন থেকে আরও সচেতন হতে হবে।
: তবে আপনি ভুল বুঝবেন না আবার। এভাবে নামাজ পড়লে যে হবে না তা কিন্তু নয়। যেমন কেউ যদি মাঠে বা কারখানায় কাজ করতে যায় আর নামাজের সময় হয়ে যায় তবে সেখানেই গায়ের পবিত্র পোশাকেই নামাজ পড়ে নিতে পারে। এটা দোষণীয় নয়। তবে সুযোগ থাকা সত্ত্বেও শুধু অলসতার কারণে পরিপাটি হওয়া ছাড়া এভাবে নামাজ পড়াটা অপছন্দনীয়।
এরপর আপনি যখন জামাতে শরীক হয়েছেন তখন দ্বিতীয় রাকাত চলছিলো। আপনি যখন মসজিদে এসেছেন তখন ইমাম সাহেব রুকুতে চলে গেছেন। আপনি রাকাত ধরার জন্য ধুপধাপ শব্দে দৌড়ে এলেন। অথচ সাহাবী আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত একটি হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন তোমরা নামাজ পড়তে আসবে তখন খুব ধীরস্থীরে ও শান্তভাবে আসবে। এরপর যতো রাকাত পাবে তা পড়ে নাও। আর যা হাতছাড়া হবে তা পরে আদায় করে নাও।²
কারণ হলো, এভাবে দৌড়ে এলে নামাজে খুশুখুযু ও মনোযোগ থাকে না। দৌড়ানোর কারণে মুসুল্লি হাপাতে থাকে। আপনার ক্ষেত্রেও এটা হয়েছে। এমনটা করা মোটেই উচিত নয়। বরং ধীরস্থীরভাবে এসে জামাতে শরীক হবেন।
তারপর দেখলাম আপনি ছুটে যাওয়া রাকাত আদায় করার জন্য ইমাম সাহেব ডান দিকে সালাম ফেরানোর সাথেসাথে দাড়িয়ে গেলেন। এটাও অনুচিত কাজ হয়েছে। বরং নিয়ম হলো, ইমামের দুইদিকে সালাম ফেরানো শেষ হলে তারপর মাসবুক ব্যক্তি তার ছুটে যাওয়া নামাজটা আদায় করার জন্য দাড়াবে।
এরপর দেখলাম, আপনি সালাম ফিরানো শেষ করে দুই হাত তু্লে শুধু মুখে একটা মোছা দিলেন। এটা কী করলেন আপনি? এটাকে কি মুনাজাত বলে? কোন প্রার্থণা নাই কিছুই নাই কেবলই দুই হাতকে মুখে স্পর্শ করা। এর দ্বারা ফায়দা কী! অনেককেই এটা করতে দেখি। সালামটা ফিরিয়েই দুই হাতকে মুখের সাথে মোছা দেয়। ব্যাস তার দুআ শেষ। আপনি তো কোন কিছু চাইলেনই না তাহলে আল্লাহ কী কবুল করবেন? অথচ এই সময়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। হাদীসে যেসব সময়ে দুআ কবুল হওয়ার কথা এসেছে তার মধ্যে এটা অন্যতম।
সাহাবী আবু উমামা বলেছেন, একবার নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করা হলো, কোন সময়ে দুআ বেশি কবুল হয়? তিনি বললেন, শেষ রাত্রের দোআ এবং ফরজ নামাজের পরে করা দোআ।³ এই সময়টাতে তাই মনভরে দোআ করা উচিত। চাই হাত তুলে হোক বা না তুলে।
আমার কথার মাঝখানেই তিনি বলে উঠলেন, আসলে ভাই আমরা গ্রামে থাকি। পড়াশোনাও খুব বেশি করি নি। অনেক কিছুই আমাদের অজানা। টুকটাক ওয়াজ-মাহফিলে গেলেও সেখানে এসব দরকারি বিষয়গুলো কমই আলোচনা হয়। সুরে সুরে নানারকম গালগল্প আর কিচ্ছা-কাহিনী বলেই বক্তারা সময় পার করে দেন। অথচ এগুলো নিয়ে আলোচনা করার দরকার ছিল আগে। সমাজের অনেক লোকই এসব ভুল করে থাকে। তারা জানেই না যে সঠিক কোনটা আর ভুল কোনটা।
আমি বললাম, জি ভাই। এটা আসলেও দুঃখজনক। তবে আমি আপনাকে জানিয়ে দিচ্ছি। এমন আরও বেশ কিছু বিষয় আছে যেগুলোতে অনেকেই ভুল করেন। এগুলো কমন ভুল। প্রচুর মানুষ এতে লিপ্ত। একটা একটা করে আমি আপনাকে বলছি।
প্রথম হলো, আমরা অনেকেই নিয়ত করি না, পড়ি। নিয়ত করা আর নিয়ত পড়া তো একজিনিস না। ভাবি নামাজের শুরুতে মুখে আরবি নিয়ত পড়ে নেওয়া জরুরি। অথচ এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। নিয়ত মানে তো হলো কসদ বিল কলব তথা অন্তরের সঙ্কল্প। মনে কোন কিছুর ইচ্ছা করা। মুখে উচ্চারণের সাথে এর বিন্দুমাত্র সম্পর্ক নেই। নিয়ত করা, মানে নামাজ পড়ার ইচ্ছা পোষণ করাটা ফরজ। এটা না হলে নামাজই হবে না। কিন্তু নিয়ত পড়া, মানে মুখে মুখে অর্থ না জেনে-বুঝে মন্ত্রের মতো কিছু আরবি বাক্য আওড়ানো ফরজ নয়। এমনকি সুন্নতও নয়। অনেকেই এই দুইটা বিষয়ের পার্থক্য করতে না পেরে একটাকে অন্যটার সাথে গুলিয়ে ফেলেন।
সমস্যাটা হয় কি জানেন? এই ধারণাটা পোষণ করার কারণে আমরা বেশ কয়েকদিক দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হই। প্রথমত একটা জরুরি নয় বিষয়কে জরুরি বানিয়ে দেই। দ্বিতীয়ত ইমাম সাহেব নামাজ শুরু করার পর অনেকে এটা পড়তে পড়তে ইমাম সাহেব সূরা ফাতেহা পড়া শুরু করে দেন। ফলে বেচারাকে তাকবীরে উলা প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হতে হয়। অথচ হাদীসে তাকবীরে উলার সাথে নামাজ আদায়কে অনেক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এক হাদীসে আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে চল্লিশদিন তাকবীরে উলার সাথে জামাতে নামাজ আদায় করবে তার জন্য দু'টি মুক্তিনামা লেখা হবে। জাহান্নাম থেকে মুক্তি ও নেফাক থেকে মুক্তি।⁴
তো দেখা যায় এই মুখে নিয়তের চক্করে পড়ে অনেকে তাকবীরে উলা মিস করেন। তৃতীয়ত অনেক ভাই মসজিদে এসে ইমামকে রুকুতে দেখতে পান। তখন নামাজের কাতারে দাড়িয়ে তিনি তাকবীরে তাহরীমা বলে সরাসরি রুকুতে না গিয়ে আগে মুখে মুখস্ত আরবি নিয়তটা পড়তে যান। এটা পড়া শেষ হতে হতে ইমাম সাহেব রুকু থেকে উঠে যান। ফলে তাকে একটা রাকাত হারাতে হয়। এই ভুল বিষয়টা সম্পর্কে সচেতন থাকলে কিন্তু তাকে এসব সমস্যার সম্মুখীন হতে হতো না।
ও, আরেকটা মনে পড়লো। অনেককেই দেখি তারা জায়নামাজে দাড়িয়ে ইন্নি ওয়াজ্জাহতু ওয়াজহিয়া লিল্লাযি... দোআটা পড়েন। তারা ভাবেন এটা জায়নামাজের দোআ। কী অদ্ভুত! আলাদা যে জায়নামাজ আমরা বর্তমানে ব্যবহার করি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যুগে তো এর অস্তিত্বই ছিল না। তখন মুসল্লা বলতে নামাজের জায়গাকে বোঝানো হতো। নামাজ পড়ার জন্য আলাদা কোন কাপড়ের খণ্ডকে নয়। সুতরাং জায়নামাজের আলাদা দোআ আসাটা তো আশ্চর্যজনক। বরং হাদীসে এই দোআটি নামাজ শুরুর পর সানার স্থলে পড়ার কথা বর্ণিত হয়েছে।⁵ মানে আপনি চাইলে তাকবীরে তাহরীমার পর সুবহানাল্লাহুম্মা ওয়াবিহামদিকাও পড়তে পারেন আবার চাইলে ইন্নিওয়াজ্জাহতু-ও পড়তে পারেন। দুটোরই সুযোগ রয়েছে।
আরো দুইটা মারাত্মক ভুলের কথা আপনাকে বলি। ভুলগুলো এমন যে এর কারণে নামাজ বাতিল হয়ে যায়। অথচ অনেকে বিষয়গুলো জানেই না। ফলে তাদের দ্বারা কখনও কখনও এই ভুলগুলো হয়ে যায় এবং কষ্টের নামাজ নষ্টের খাতায় চলে যায়।
প্রথম হলো তাকবীরে তাহরীমা না বলা। আপনি দেখবেন অনেকে যখন জামাতের সাথে নামাজ পড়তে আসে তখন ইমাম আল্লাহু আকবার বলে নামাজ শুরু করলে সে শুধু দুইহাত উপরে তুলেই হাত বেঁধে ফেলে। মুখে আর তাকবীর বলে না। অধিকাংশ সময়ই এটা অন্যমনস্কতা ও বেখেয়ালির কারণে হয়। হয়তো ইকামাত চলাকালীন সে কিছু একটা ভাবছিল বা কোন চিন্তায় মগ্ন ছিলো। তো এই নিমগ্নতার ভেতর দিয়েই তাকবীর বলা ছাড়া হাত বেঁধে ফেলে। অথচ হাত বাঁধা হলো সুন্নত আর তাকবীর বলা হলো ফরজ। হাত না বাঁধলেও নামাজ হয়ে যাবে কিন্তু তাকবীরে তাহরীমা না বললে নামাজ বাতিল বলে গণ্য হবে।
আবার অনেকে তাকবীরে তাহরীমা বলেন ঠিকই তবে আল্লাহর আলিফে লম্বা টান দিয়ে আ-আ-আল্লাহু আকবার বলেন। অথবা আকবারের বাতে লম্বা টান দিয়ে আকবাআ-আ-আর বলেন। এগুলো নামাজকে নষ্ট করে দেবার জন্য যথেষ্ট। কারণ এর মাধ্যমে আল্লাহু আকবারের অর্থের মধ্যে বড়ো ধরনের বিকৃতি চলে আসে।
কথাগুলো শেষ করতেই বাড়ি থেকে ফোন এলো। আম্মা খাবার সামনে রেখে অপেক্ষা করছেন। তাই আর দেরি করা সম্ভব হলো না। তার থেকে বিদায় নিয়ে বাড়ির পথে হাঁটা ধরলাম।
প্রিয় পাঠক, উপরে বলা গল্পটা পুরোই একটা কল্পনা। নামাজে আমরা যেসব বিষয়ে ভুল করে থাকি সচরাচর সেসব নিয়ে ভিন্ন ধাঁচে কিছু লেখার কথা অনেক দিন ধরেই ভাবছিলাম। সেদিন মসজিদে আসরের নামাজ পড়ার সময় এমন করে লেখাটা সাজানোর চিন্তা মাথায় এলো। এগুলো চিন্তা করতে করতে যখন ধ্যান ফিরে পেলাম তখন দেখি আমি শেষ বৈঠকে। আত্তাহিইয়্যাতু শেষ করে দরুদ পড়ছিলাম তখন। বুঝলাম, এটা ছিল নেক সুরতে শয়তানের ধোঁকা। সে-ই আমাকে নামাজের ভেতর ভিন্ন চিন্তায় মশগুল করে দিলো। তাই দরূদ শেষে খুব কায়মনোবাক্যে দোআ মাসূরাটা পড়লাম,
আল্লাহুম্মা ইন্নি যলামতু নাফসি যুলমান কাসীরা... হে আমার রব, আমি নিজের উপর যুলুম করে ফেলেছি। অনেক বেশি যুলুম। তুমি ছাড়া আর কেউ অপরাধ ক্ষমাকারী নাই। সুতরাং আমাকে তোমার পক্ষ হতে ক্ষমা করে দাও। এবং তুমি আমার উপর রহম করো। নিশ্চয়ই তুমি অতি ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।
আশা করি, একজন পাঠকও যদি এই লেখা থেকে নিজের নামাজে করা কোন ভুলের বিষয়ে জানতে পেরে সংশোধিত হয় তবে রব্বে কারীম তার করুণায় বারিধারায় আমাকে সিক্ত করবেন। আমার এই অপরাধকে ক্ষমার চাদরে আবৃত করে দিবেন। কারণ তিনি ক্ষমা করতে ভালোবাসেন।
পুনশ্চ: লেখাটি উপকারী মনে হলে শেয়ার করুন। কারো উপকার হবে মনে করলে (মূল লেখায়) তাকে মেনশন করুন। অন্যের নামাজ সুন্দর ও বিশুদ্ধ হতে ভূমিকা রাখুন।
[প্রমাণপঞ্জি:
① সূরা আরাফ, আয়াত: ৩১
② মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং: ১০১০৩
③ সুনানে তিরমিজি, হাদীস নং: ৩৪৯৯
④ সুনানে তিরমিজি, হাদীস নং: ২৪১
⑤ আলমুজামুল কাবীর, হাদীস নং: ৯২৮]
----------------
লিখেছেনঃ আবদুল্লাহ আল মাসউদ