পোস্টগুলি

এপ্রিল, ২০১৮ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

শবে বরাত; ফাযায়েল, মাসায়েল, কুসংস্কার এবং কিছু কথা...

ছবি
শবে বরাত সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা আমার শাবান ও শবে বরাত গ্রন্থে রয়েছে। ফেসবুকের পাঠকদের সুবিধার্থে  বিভিন্ন পর্বে ভাগ করে  এ সংক্রান্ত কয়েকটি পোস্ট দিয়েছিলাম। দীর্ঘ একটি নোট দেওয়ার অাবদার করেছিলেন অনেক ভাই। তাদের আবদার রক্ষার্থে এটি দেওয়া হল।  বাকি বিস্তারিত অালোচনা পড়ুন ' শাবান ও শবে বরাত' গ্রন্থে। আল্লাহ তাআলা শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উম্মতকে একটি মধ্যপন্থি উম্মত বানিয়েছেন। কোরআনে কারীমে ইরশাদ হয়েছে-‘এভাবেই আমি তোমাদেরকে এক মধ্যপন্থী উম্মত বানিয়েছি, যাতে তোমরা অন্যান্য লোক সম্পর্কে সাক্ষী হও এবং রাসূল হন তোমাদের পক্ষে সাক্ষী।’ (সূরা বাক্বারা, আয়াত: ১৪২) অর্থাৎ অন্যান্য উম্মতের তুলনায় এই উম্মতকে সর্বাপেক্ষা মধ্যপন্থী ও ভারসাম্যপূর্ণ উম্মত বানিয়েছেন। তাই এ উম্মতকে এমন বাস্তবসম্মত বিধানাবলী দেওয়া হয়েছে, যা কিয়ামত পর্যন্ত মানবতার সঠিক দিক-নির্দেশনা করতে সক্ষম। অন্যান্য উম্মতের মতো মুসলমানদেরকে এমন বিধান দেয়া হয় নি, যা অতি কঠিন কিংবা অতি শিথিল। আবার এই উম্মত বিশ্বাস কিংবা কর্মে অথবা ইবাদতে মোটকথা সর্বক্ষেত্রেই ভারসাম্যপূর্ণ। তারা পূর্

যিলহজ মাসের মাসয়ালা মাসায়েল

যিলহজ্ব শব্দটির আরবী উচ্চারণ যুলহিজ্জাহ। বাংলায় ‘যিলহজ্ব’ উচ্চারণে প্রসিদ্ধ। এই মাস ‘আশহুরে হুরুম’ তথা সম্মানিত চার মাসের অন্তর্ভুক্ত। এই পূর্ণ মাস, বিশেষত প্রথম দশ দিন অত্যন্ত ফযীলতপূর্ণ। ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ দুটি আমল হজ্ব ও কুরবানী এ মাসেই আদায় করা হয়। যিলহজ্ব মাসের প্রথম দশকের মাহাত্ম্য ও গুরুত্ব অপরিসীম। কেননা আল্লাহ তাআলা এই দশকের রাত্রীর শপথ করেছেন কুরআনে কারীমে। ইরশাদ হয়েছে, وَ الْفَجْرِۙ وَ لَیَالٍ عَشْرٍ ‘শপথ ফযরের, শপথ দশ রাত্রির’। সূরা ফাজর (৮৯) : ১-২ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. ও মুজাহিদ রাহ.সহ অনেক সাহাবী, তাবেঈ ও মুফাসসির বলেন, এখানে ‘দশ রাত্রি’ দ্বারা যিলহজ্বের প্রথম দশ রাতকেই বুঝানো হয়েছে। তাফসীরে ইবনে কাসীর ৪/৫৩৫ 👍 প্রথম দশ দিনের ফজীলত ১/ হযরত ইবনে আব্বাস বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, مَا مِنْ أَيَّامٍ الْعَمَلُ الصَّالِحُ فِيهَا أَحَبُّ إِلَى اللَّهِ مِنْ هَذِهِ الْأَيَّامِ يَعْنِي أَيَّامَ الْعَشْرِ، قَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ، وَلَا الْجِهَادُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ؟ قَالَ: وَلَا الْجِهَادُ فِي سَبِيلِ الل

ভাগে বা অংশীদারিত্বে কুরবানি বৈধ

গতকাল সন্ধ্যায় শুরু হয়েছে পবিত্র যিলহজ মাস । আর কিছু দিন পরেই কুরবানি । কুরবানির বিভিন্ন মাসায়েলের মধ্যে একটি মাসআলা হলো, উট, গরু ও মহিষ সর্বোচ্চ সাত জন মিলে কুরবানি দেয়া যায়। এটা বৈধ । কিন্তু আমাদের সমাজের এক শ্রেণির লোক যারা নিজেদের হাদীসের অনুসারী দাবী করে । বাস্তবতা হলো, হাদীসের উপর নয়; বরং হাদীস নিজেদের মনগড়া ব্যাখ্যা করে ঐ ব্যাখ্যাটাকে মানা তাদের অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য । . ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ আন্দোলন’ যার আমির জনাব আসাদুল্লাহ আল গালিব সাহেব । তাদের দাবী হলো, ‘অংশীদারিত্বে বা ভাগে কুরবানি দেয়া এটি প্রচলিত একটি প্রথা। ভাগে কুরবানি দিলে কুরবানি হবে না । ভাগে কুরবানি করার যে সকল হাদীস রয়েছে, তা নাকি সফরের সাথে সম্পৃক্ত । কেউ সফরে গেলে ভাগে কুরবানি করার অনুমতি আছে । মুকিম অবস্থায় ভাগে কুরবানি করার কোনো অবকাশ নেই । এ বক্তব্য তারা তাদের মাসিক ‘আত-তাহরীক’ পত্রিকায় ছেপেছেন । সেই সাথে গালিব সাহেব তার নিজের লেখা বইয়েও এমন ভ্রান্ত কথা লিখেছেন । . এ হলো তাদের ভ্রান্ত দাবী । ভ্রান্ত মতবাদ । মনগড়া ব্যাখ্যা । এভাবে নিজেদের মন কর্তৃক গড়া ব্যাখ্যা করে তারা সেই ব্যাখ্যার উপর সাধারণ মানুষদের আহ্ববান

শুক্রবারে নফল রোজা রাখা কি মাকরুহ?

প্রশ্নঃ আসসালামু আলাইকুম, সম্মানিত শায়েখ, আমি শুনেছি শুক্রবারে নফল রোজা রাখা মাকরুহ। আমি এব্যাপারে জানতে চাই। উত্তরঃ ওয়ালাইকুমুস সালাম। শুধু শুক্রবার বা শুধু শনিবার রোযা রাখার ক্ষেত্রে খাস করে নেওয়া হলে মাকরূহে তানজিহী। হারাম বা মাকরূহে তাহরিমী নয় এটাই হানাফি মাযহাব সহ অন্যান্য মাযহাবের মুফতা বিহী (ফতোয়া যোগ্য) সিদ্ধান্ত।এবং ইমাম আবূ হানীফা ও ইমাম মালেকের মত মুতাবেক্ব কেউ যদি শুধু শুক্রবার কিংবা শুধু শনিবার রোজা রাখে তাতে সমস্যা নেই এটা জায়েয। কিন্ত এক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে জুমুয়ার দিনকেই যেন খাস না করা হয়। তবে কেউ যদি জুমার আগে ও পরের দিন একসাথে ২টি মিলিয়ে রোজা রাখে কিংবা কারো অভ্যাসগত, বিশেষ নিয়ত বা মান্নতের রোজা,কিংবা ইয়াওমে আরাফাহ বা কাজার রোজা জুমুয়ার দিনেই পড়ে যায় তাহলে সে রোজা রাখতে পারবে এ ব্যাপারে কারো কোন মতভেদ নেই। [সূত্রঃ ই'লাউস সুনান ৯/১০১;হাশিয়ায়ে ত্বহতাবী আলা মারাকিল ফালাহ-৩১৫; ফাতহুল মুলহিম ৩/১৫৪;ফতহুল বারী ৪/২৭৫] * সহীহ হাদিস ভিত্তিক দলিলঃ عن أبي هريرة رضي الله عنه قال سمعت النبي صلى الله عليه و سلم يقول ( لا يصومن أحدكم يوم الجمعة إلا يوما قبله أو بعده

মৃত এর জন্য কোরআন পড়া

আলী বিন মুসা হাদ্দাদ (রহঃ) বলেন, আমি, ইবনে কুদামা (রহঃ) এবং ঈমাম আহমদ বিন হাম্বল (রহঃ) এক দাফন কার্যে গিয়েছিলাম।। দাফন-কাজ শেষ হতে আমরা দেখলাম এক ক্ষীণদৃষ্টির বা অন্ধ লোক কবরের কাছে (মৃতের জন্য) কোরআন পড়ছে।। তাকে ঈমাম আহমদ বিন হাম্বল (রহঃ) বললেন- কবরের পাশে মৃতের জন্য কোরআন পড়া বিদ'আত।। তখন ইবনে কুদামা (রহঃ) বলেন- আপনি (আহমদ) মুবাশশির হালবী সম্পর্কে কি বলেন?? ঈমাম আহমদ (রহঃ) তিনি তো নির্ভরযোগ্য।। এবার ঈমাম আহমদ (রহঃ) জিজ্ঞেস করলেন- আপনি তার থেকে কোনো রেওয়ায়াত লিখেছেন কী?? তখন ইবনে কুদামা (রহঃ) বলেন- হ্যাঁ, মুবাশশির হালবী শুনেছেন আব্দুর রহমান ইবনে আলা ইবনে লাজলাজ থেকে তিনি তার পিতা সাহাবী আলা ইবনে লাজলাজ (রাঃ) থেকে শুনেছেন- তিনি (সাহাবী) তার দাফনের পর তার মাথার কাছে সূরা বাকারার শুরুর ও শেষের আয়াতগুলো পড়ার জন্য অসিয়ত করেছেন, এবং এমনটি করতে হযরত ইবনে উমর (রাঃ)-ও অসিয়ত করে গেছেন।। তখন ঈমাম আহমদ (রহঃ) তখন-ই আরেকজনকে বললেন- "যাও গিয়ে ঐ অন্ধকে কোরআন থেকে পড়তে বলো" কিতাবুর রূহ - ১১ পৃষ্ঠা লেখক- আল্লামা ইবনুল কাইয়্যিম (রহঃ) ----- উপরোক্ত বর্ণনাটি হাদিসের গ্রন্থাদিতে পাওয়া যায়

নারী: উত্তরাধিকার এবং অধিকার প্রসঙ্গ

নারী: বঞ্চনা যার সর্বত্র সঙ্গী আমার রক্তসম্পর্কীয় এক আত্মীয়া, যিনি বয়সের ভারে প্রায় ন্যুব্জ, আমার দেখা পেয়ে কথার ডালি খুলে বসলেন। এই কথা সেই কথার পর জিজ্ঞেস করলেন, 'আচ্ছা বলো তো, আমি যদি আমার বাবার রেখে যাওয়া সম্পদ থেকে প্রাপ্য ওয়ারেসি সম্পত্তি নিয়ে নেই তাহলে ভাইদের সাথে আমার সব ধরনের সম্পর্ক চিরজীবনের জন্য শেষ হয়ে যাবে কথাটা কতোটুকু সত্য?' আমি আগে থেকে জানতাম ভাইদের সাথে উত্তরাধিকার সম্পত্তি নিয়ে তার কিছুটা মনোমালিন্য চলছে। তার ছেলেদের কথা হলো, 'মা তুমি তোমার পাওনা অংশ নিয়ে নাও। আমাদের সংসারের টানাটানির গ্লানি কিছু হলেও তো কমবে। যেখানে নিজেদেরই চলে না, সেখানে তোমার এতো বদান্যতা দেখানোর তো কোন মানে হয় না। তাছাড়া তুমি তো কারো থেকে করুণা ভিক্ষা করছো না। নিজের পাওনা সম্পদ উসুল করে নিতে চাচ্ছো। এতে এতো সংকোচ আর লজ্জার কী আছে!' আমি বুঝে নিলাম তিনি কেন প্রশ্নটা করলেন। আগে থেকেও কিছুকিছু জানতাম ব্যাপারটা। অনেক জায়গাতেই এমন ধারনা প্রচলিত আছে যে, বোনরা তাদের ওয়ারেসি সম্পত্তির ভাগ বুঝে নিয়ে গেলে বাপের বাড়ির সাথে তার সব ধরনের সম্পর্ক শেষ হয়ে যায়। ভাইদের সাথে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন ছিন

তাহক্বীকঃ আমরা ছোট জিহাদ থেকে বড় জিহাদের দিকে ফিরে এলাম

ছোট জিহাদ থেকে বড় জিহাদের দিকে ফিরে এলাম رجعنا من الجهاد الاصغر الى الجهاد الاكبر এখানে বড় জিহাদ দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে নফসের সাথে জিহাদ আর ছোট জিহাদ দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে কাফেরদের সাথে জিহাদ। জিহাদের প্রসঙ্গ আসলেই অনেক ভাইকে উক্ত কথাটি নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর হাদিস হিসেবে পেশ করতে শুনা যায়। কারো কারো কথা থেকে অনুমিত হয়, জিহাদ ছেড়ে শুধু তাসাওউফে লেগে থাকাই শ্রেয়। ‌এটাই যেন হাদীসটির উদ্দেশ্য। অথচ কথাটি বাস্তবে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর হাদিস কি না, আর হাদিস হলেও এর উদ্দেশ্যটা কি? এর ব্যাখ্যা কি? আমরা এগুলো তাহকিক করি না। এ বিষয়ে কিছু আলোচনা করার জন্যই এই লেখার আয়োজন। প্রথম কথা হলো, হাদিসের প্রসিদ্ধ কোনো গ্রন্থে উক্ত হাদিসটি পাওয়া যায় না। তবে ইমাম বাইহাকি রহ. তার ‌‘আয- যুহদুল কাবির’ গ্রন্থে (পৃ. ১৬৫) উল্লেখ করেন যে, হযরত জাবির রাহ. থেকে বর্ণিত, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে একদল মুজাহিদ আসলে তিনি বললেন, তোমাদের আগমন শুভ হয়েছে। তোমরা ছোট জিহাদ থেকে বড় জিহাদের দিকে ফিরে এসেছে। জিজ্ঞাসা করা হলো বড় জিহাদ কোনটি? উত্তরে বললেন, কুপ্রবৃত্তির সা

মেয়েদের জন্য অভিভাবকের অনুমতি ছাড়া বিয়ে

প্রসঙ্গ : মেয়েদের জন্য অভিভাবকের অনুমতি ছাড়া বিয়ে  মুফতিয়ে আজম বাংলাদেশ মুফতি আব্দুস সালাম চাটগামী (হাফিজাহুল্লাহ)-এর ফতোয়া ইমাম আবু হানিফা, ইমাম আবু ইউসুফ এবং ইমাম মুহাম্মাদ রহ. (তার শেষ ফায়সালা অনুসারে) বলেন, স্বাধীন ও সুস্থ জ্ঞানসম্পন্ন কোনো কোনো প্রাপ্তবয়স্কা নারী—চাই সে কুমারী হোক কিংবা বিবাহিত হোক, তালাকপ্রাপ্তা হোক বা বিধবা হোক—অভিভাবকের অনুমতি ছাড়া সমকক্ষ পরিবারে বিয়ে করতে পারবে। তবে অভিভাবকের তত্ত্বাবধানে এবং সম্মতিতে বিয়ে হওয়া সুন্নত এবং উত্তম। কিন্তু কোনো কারণবশত যদি অভিভাবকের তত্ত্বাবধানে বিয়ে সম্ভাবিত না হয় তাহলে জ্ঞানসম্পন্ন ও প্রাপ্তবয়স্কা নারী তাদের অনুমতি ব্যতীত ইহকালীন ও পরকালীন কোনো কল্যাণের বিবেচনায় একাকী বিয়ে করে নিতে পারে। তার এ বিয়ে শরিয়াহর দৃষ্টিতে বৈধ বলে বিবেচিত হবে। এ ধরনের বিয়ের দুটো দিক রয়েছে। ১. বিয়ে যদি সমকক্ষ কোনো পরিবারে হয় তাহলে এ ক্ষেত্রে অভিভাবকের উচিত, উক্ত বিয়ের বিরোধিতা না করে সম্মতি প্রকাশ করার মাধ্যমে তার অনুমোদন দেওয়া। মেয়ের ভুলের কারণে বিষয়টি ঘোলাটে করা সমীচীন নয়। কারণ, এসব ক্ষেত্রে অভিভাবকের আপত্তি করার কোনো অধিকার নেই। অধিকন্তু এ