আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাতের আক্বীদা সাব্যস্তে মুতাকাদ্দিমীন ও মুতাআখখিরীন উলামাদের পার্থক্য কেন?
আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাতের জমহুর সালাফগন ইলমে কালাম পন্থী তথা আক্বল ও যুক্তি দিয়ে দিয়ে আক্বীদাহ সাব্যস্ত কারীদের বেশ কঠোরভাবে সমালোচনা করেছেন। আসলে সালাফুস সালেহীন (রহিমাহুমুল্লাহ) দের সমালোচনার আন্দায ও কার সমালোচনা করছেন এটি অনেকের কাছে স্পষ্ট হয়না। অনেকে আবার গুলিয়ে ফেলে যে, উক্ত সমালোচনাটি মূলত আশআরী ও মাতূরীদি আক্বীদাহ পোষণ কারী আলেমদেরকেই করা হচ্ছে। যেখানে অনেক সালাফগনদের সময় আশআরী ও মাতূরীদি নামক কোন ফিরকাই ছিলনা।
এক আলেম সাহেব তো লিখেও ফেলেছেন- ইমাম শাফেয়ী রহঃ আশআরীদের ভ্রান্ত বলেছেন!!! অথচ ইমাম শাফেয়ীর সময় এই দলের কোন অস্তিত্বই ছিলনা!
এই জন্য কিছু ওজাহাত করা জরুরী মনে করে এই বিষয়ে কিছু লিখছি।
এতে কোন সন্দেহ নেই যে, সালাফদের অধিকাংশ আলেমগন ইলমে কালাম ও যুক্তি দিয়ে দ্বীন বুঝা ও বুঝানোকে কঠিনভাবে সমালোচনা করেছেন। কেননা অধিকাংশ বাতিল ফিরক্বাহর আক্বীদাগত পদস্খলন ও বিচ্যুতি ঘটেছে নিজের আক্বল প্রসূত জ্ঞান ও দর্শনের মাধ্যমে কুরআন ও সুন্নাহ বুঝতে গিয়ে।
এই জন্যে মুতাকাদ্দিমীন উলামাগন এর চরম বিরোধী ছিলেন।
আক্বল পূজারী ও যুক্তিবাদীদের অসার যুক্তির কবলে যখন সাধারণ মানুষ ভ্রান্ত আক্বীদাহ পোষণ করা শুরু করছিল। এবং আহলুস সুন্নাহর ইমামদের রক্ষণশীল আচরণে যখন মানুষ কাঙ্খিত জবাব না পেয়ে বিভ্রান্তিতে জড়িয়ে পড়ছিলো ঠিক তখন বিপন্ন আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাতের প্রতিষ্ঠিত আক্বীদাহ যে কুরআন ও সুন্নাহ থেকেই নির্গত ও হকপন্থী তথা ফিরক্বাতুন নাজিয়াদের আক্বীদাহ তা সাব্যস্ত করতে ইলমে কালামের এক নতুন রুপ প্রদান করেছেন আশ'আরী ও মাতূরীদিরা। যদিও এক্ষেত্রে আসারী ও হাম্বলী আক্বীদাহর আলেমগন বেশ কঠোর অবস্থান নিয়েছিলেন।
কিন্তু তবুও উভয়ের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এক ও অভিন্ন ছিল যদিও আহলুস সুন্নাহর আক্বীদাহ প্রতিষ্ঠায় তাদের কর্মপন্থা ভিন্ন ছিল। এবং কালাম পন্থীদের তথা আশআরী ও মাতূরীদিও উদ্দেশ্য ছিল সালাফদের আক্বীদাহকে তায়ীদ (শক্তিশালী) করা,তাদের বিরোধিতা করা মোটেও তাদের উদ্দেশ্য ছিলনা।
এই জন্যেই দেখা যায় আসারী, আশআরী ও মাতূরীদি সকলের প্রতিপক্ষও এক ছিল। তথা - মু'তাযিলা, জাহমিয়া, মুয়াত্ত্বিলাহ মুজাসসামিয়া, মুরজিয়া, রাফেযিয়া, ক্বাদরিয়া, নাসেবীয়া, খারেজিয়া ইত্যাদি।
প্রতিপক্ষ এক হলেও উল্লেখিত তিন জামাতই প্রত্যেকের অবস্থান ও উসূল মুতাবেক এসব বাতিল ফিরক্বার খন্ডন করেছেন। তাদের ব্যাপারে শক্ত কলম ধরেছেন। তাদের সাথে সরাসরি তর্ক যুদ্ধে অবতরণ করেছেন। অনেককেই আবার জুলুম ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে।
আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাতের কালামপন্থী উলামায়ে কেরামদের মাঝে আশআরীরাই সর্বাগ্রে, কিন্তু মাতূরীদি উলামায়েকেরাম এক্ষেত্রে ইলমুল কালাম ও সালাফদের আক্বীদাহর সবচেয়ে বেশি সংমিশ্রণ ঘটিয়েছেন।
মাতূরীদিদের মৌলিক কিতাব পড়লেও বিষয়টি সুস্পষ্ট হয়। যেহেতু মাতূরীদি ইমামদের দাবী এটি ইমাম আবূ হানীফার আক্বীদাহ কেই সুবিস্তর ধারণ ও উপস্থাপন করে থাকে। একারণে দেখা যায় অনেক আক্বীদাহর ক্ষেত্রেই আশআরী উলামাদের মাঝে মাতূরীদিদের কিছু সুক্ষ্ম পার্থক্য রয়েছে।
কিন্তু সত্য কথা এটাই যে, ইতিহাস বলে যুগ যুগ ধরে যত আলেম -উলামা, মুজাহিদ, মুহাক্কিক-মুদাক্কিক্ব, মুয়াররিখ (ঐতিহাসিক), মুফাসসির, মুহাদ্দিস, মুবাল্লিগ ও দাঈ, মুতাসাওউইফ ও সলেহীন (নেককার-বুজুর্গ),ক্বারী, মুবাহিস ও মুতাকাল্লিম, নাহু- সরফ ও বালাগাত শাস্ত্রের পন্ডিত, এবং রাষ্ট্র প্রধান এসেছে তাদের অধিকাংশই হচ্ছে কালামপন্থী তথা আশআরী ও মাতূরীদিরা। দিবালোকের মত সুস্পষ্ট ও সত্য এটি কারো অস্বীকার করারও সুযোগ নেই।
[আত তাহরীর ওয়াত তানউইর ৩/১৬৬, ২৯/৩৫৩; আল ক্বওলুত তামাম বি ইসবাতিত তাফউইদঃ৪১৮; আল মিহাজুল ক্বাউইমঃ২৯২; হাশিয়াতুল আত্ত্বার আলা শারহি জালালুদ্দিন ২/৪৬২; ই'তেক্বাদু আহলিস সুন্নাতি ওয়াল জামাআতিঃ২৬ ; মিরক্বাতুল মাফাতীহ ২/১৩৪-১৩৬; আল বুরহান ফী উলূমিল কুরআন ২/২০৯]
এই জন্যেই ইমামুল হারামাইন আল জুয়াইনী রহঃ বলেন-
لو بقي الناس على ما كانوا عليه لم نؤمر بالاشتغال بعلم الكلام، أما الآن فقد كثرت البدع فلا سبيل إلى ترك أمواج الفتن تلتطم
'যদি উম্মত পূর্ববর্তী সালাফদের আবস্থায় বহাল থাকতেন তবে আমরা ইলমে কালামের প্রতি মনোনিবেশ করার বিশ্বাসী হতাম না। কিন্তু এখনকার প্রেক্ষাপট ভিন্ন, এখন বিদআতের সয়লাভ হয়ে গিয়েছে। তাই ফিতনার ঢেউয়ের গতিবেগ রোধকল্পে এছাড়া আর কোন পথ নেই।'
[মিরক্বাতুল মাফাতীহ ২/১৩৪]
এবং ইলমুল কালাম কেন সালাফরা পরিহার করেছেন ও খালাফ তথা পরবর্তীরা আঁকড়ে ধরেছেন এর একটি কারণ বলতে গিয়ে ইমাম গাযালী তার 'ইলজামুল আওয়াম' কিতাবে বলেন-
لما كان زمان السلف الأول زمان سكون القلب، بالغوا في الكف عن التأويل خيفة من تحريك الدواعي وتشويش القلوب، فمن خالفهم في ذلك الزمان فهو الذي حرك الفتنة وألقى الشكوك في القلوب، مع الاستغناء عنه، فباء بالإثم. أما الآن فقد فشا ذلك، فالعذر في إظهار شيء من ذلك، رجاء لإماطة الأوهام الباطلة عن القلوب أظهر، واللوم عن قائله أقل.
"সালাফদের ১ম যুগে তাদের অন্তর দ্বীনের ব্যাপারে প্রশান্ত ছিল। তারা (মুতাশাবিহ আয়াত ও হাদীসের ক্ষেত্রে) তাবীল করা থেকে নিজেদের গুটিয়ে রাখতেন অসার দাবী করা ও অন্তরের বক্রতার ভয়ে। সে যামানায় যারাই তাদের (এই কর্মপন্থার) বিরোধিতা করেছে সেই ফিতনাকে তৎপর করেছে এবং অন্তরে সন্দেহের বীজ নিক্ষেপ করেছে যদিও তাদের এই কাজের তখন তেমন প্রয়োজন ছিলনা। এভাবে তারা গুনাহে আবর্তিত হয়েছে।
কিন্তু এখন ফিতনার সয়লাব হয়ে গেছে, এই জন্যেই ঐ ফিতনা রুখতে ওযর স্বরুপ এ বিষয়ে কিছু প্রকাশ করতে হচ্ছে যেন মানুষের অন্তরে জমে থাকা ভ্রান্ত ধ্যান- ধারণা দূরীভূত করা যায়।
এমন ভ্রান্তির দাবীদারদের কিছুটা হলেও সংশোধন করা যায়।"
ইমাম ইবনু হাজার আল আসক্বালানী (রহঃ)ও একই কথা বলেন-
أكثر السلف لعدم ظهور أهل البدع في أزمنتهم يفوضون علمها – آيات الصفات – إلى الله تعالى مع تنزيهه سبحانه عن ظاهرها الذي لا يليق بجلال ذاته، وأكثر الخلف يؤولونها بحملها على محامل تليق بذلك الجلال الأقدس والكمال الأنفس، لاضطرارهم إلى ذلك لكثرة أهل الزيغ والبدع في أزمنتهم.
"অধিকাংশ সালাফরা তাদের যামানায় বিদআতের ব্যপক আকার ধারণ না করায় আল্লাহর সিফাতের বাহ্যিক আয়াত সমূহকে তার দিকে তানযীহের সাথে তাফবীয করতেন (অর্থাৎ যেভাবে আছে সেভাবেই বিশ্বাস করতেন মাখলূকের সাথে কোন ধরনের সাদৃশ্য, ধরণ, অবস্থা, প্রকৃতির কল্পনা ছাড়াই ) যা তার মহান সত্ত্বার ক্ষেত্রে উপযুক্ত নয়।
তবে খালাফ তথা পরবর্তী উলামাগনের অধিকাংশই তাদের যামানায় ভ্রান্ত মতবাদ ও বিদআত অতি মাত্রায় ছড়িয়ে যাওয়ায় অত্যন্ত প্রয়োজন মনে করে সেসব সিফাত সমূহকে আল্লাহর মহা পবিত্র ও পূর্ণ সত্ত্বার সাথে উপযুক্ত বলে বিবেচিত হওয়ার সম্ভাব্য উক্তি দ্বারা তাবীল করতেন।"
[মিরক্বাতুল মাফাতীহ ১/১৩৪]
ইমাম মুল্লা আলী আল ক্বারী রহঃ বলেন-
ولم يريدوا بذلك مخالفة السلف الصالح - معاذ الله أن يظن بهم ذلك - وإنما دعت الضرورة في أزمنتهم لذلك، لكثرة المجسمة والجهمية وغيرها من فرق الضلال، واستيلائهم على عقول العامة، فقصدوا بذلك ردعهم وبطلان قولهم، ومن ثم اعتذر كثير منهم وقالوا: لو كنا على ما كان عليه السلف الصالح من صفاء العقائد وعدم المبطلين في زمنهم لم نخض في تأويل شيء من ذلك
"তারা এর দ্বারা (আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাতের কালাম পন্থী উলামাগন ইলমুল কালাম ও তাবীল দ্বারা) সালফে সালেহীনদের বিরোধিতা করার ইচ্ছা পোষণ করেননি। তাদের ব্যাপারে এ ধরনে কু-ধারণা থেকে আল্লাহর পানাহ চাচ্ছি। মূলত তারা তাদের যামানার প্রেক্ষাপটে অতি প্রয়োজনে এদিকে মনোনিবেশ করেন। কেননা সে সময় মুজাসসিমা (দেহবাদি), জাহমিয়া (আল্লাহর সিফাত অস্বীকার কারী) ও অন্যান্য ভ্রান্ত ফিরক্বাহ অতিমাত্রায় মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছিলো।
এবং তাদের এসব ভ্রান্ত আক্বীদাহ সাধারণ জনগনের মাঝে আধিপত্য বিস্তার করেছিলো। ফলত তারা (কালাম পন্থী উলামায়েকেরাম) তাদের অসার দাবী খন্ডনে এই পন্থা বাছাই করলেন। এবং তাদের অনেকেই এই ব্যাপারে নিজেদের ওজর পেশ করে বলেছেন-
যদি আমরা সালাফুস সালেহদের যামানার মত বাতিল ফিরক্বা মুক্ত ও বিশুদ্ধ আক্বীদাহর অনুসারী হতে পারতাম তাহলে আমরা এক্ষেত্রে এভাবে তাবীল করার ঝামেলায় নিজেদের জড়াতাম না।"
[মিরক্বাতুল মাফাতীহ ২/১৩৬]
‘ইলমুল কালাম’-এর আলোচ্য বিষয়:
‘ইলমুল কালাম’ বা আক্বায়িদী জ্ঞানের আলোচ্য বিষয় সম্পর্কে তিনটি মতামত পরিলক্ষিত হয়। যথা:
১। অধিকাংশ উলামায়ে কেরামদের নিকট ইলমুল কালামের আলোচ্য বিষয় হল ‘মালূম’ বা জ্ঞাত বিষয়। এ হিসেবে যে, এর সাথে দ্বীনী আক্বায়েদ প্রমাণ করার নিকটবর্তী বা দূরবর্তী সম্পর্ক রয়েছে।
২। হযরত কাযী আরমাভী রহঃ'র মতে-
ইলমুল কালামের আলোচ্য বিষয় হল, ‘যাতুন লিল্লাহ’ বা মহান আল্লাহর সত্ত্বা। কেননা ‘ইলমুল কালাম’ শাস্ত্রে মহান আল্লাহ তা'আলার সত্তাগত গুনাবলী সম্পর্কে এবং মহান আল্লাহ তা'আলার ইহ ও পরকালীন কার্যাবলী ও আহকাম সম্পর্কে আলোচনা করা হয়।
৩। হযরত ইমাম গাযযালী রহিমাহুল্লাহর মতে ‘ইলমুল কালাম’-এর আলোচ্য বিষয় হল-
الشيئ الموجود
‘আশশাইউল মাওজূদ’ বা বিদ্যমান কিছু। এ হিসেবে যে, এর সাথে দ্বীনী আক্বায়েদ প্রমাণ করার সম্পর্ক রয়েছে।
ইলমুল কালামের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য:
‘ইলমুল কালাম’-উনার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে: ‘আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামায়াত’- এর আক্বীদাহ অনুযায়ী আক্বায়েদের বিষয় (মাসয়ালা) গুলো দলীল-প্রমাণ দ্বারা হক্ব বলে ছাবিত করা। বাতিল ৭২টি ফিরক্বার অযৌক্তিক ও খোঁড়া দলীলগুলোকে খন্ডন করা। মানুষকে সঠিক আক্বায়িদ সম্পর্কে বিশুদ্ধ জ্ঞান দান করা। আর সঠিক আক্বায়েদ অনুযায়ী নিজের ঈমানকে মুনাফিকী, কুফরী ও শিরকী থেকে এবং আমলকে ফাসিকী থেকে হিফাযত করা।
‘ইলমুলা কালাম’ এর প্রকারভেদ:
‘ইলমুল কালাম’ দু’প্রকার। যথা-
১। ‘কালামুল ক্বুদামা বা প্রাচীন ইলমুল কালাম।
২। ‘কালামুল মুতায়াখখিরীন’ বা পরবর্তীগণের রচিত ইলমুল কালাম।
১. কালামুল ক্বুদামাঃ
যে সমস্ত কিতাবের দ্বারা দর্শনের সংমিশ্রন ব্যতীত শুধু পবিত্র কুরআন কারীম, হাদীস , ইজমায়ে উম্মাহ্ ও সহীহ ক্বিয়াস থেকে দলীল প্রমানাদির আলোকে দ্বীনী আক্বায়েদ জানা যায়, তাকে ‘কালামুল কুদামা’ বা প্রাচীন ইলমুল কালাম বলে। ‘কালামুল কুদামা’ সম্পর্কে বহু কিতাব রচিত হয়েছে। যেমন:
(ক) ইমামুল আ’যম হযরত আবূ হানীফা রহঃ কর্তৃক লিখিত ‘আল ফিক্বহুল আকবর’।
(খ) ইমাম আবূ জা’ফর ত্বাহাবী আল হানাফী রহঃ কর্তৃক লিখিত ‘আক্বীদাতুত্ ত্বাহাবী’।
(গ) আল্লামা নাসাফী রহঃ কর্তৃক লিখিত ‘বাহরুল কালাম’।
(ঘ) আল্লামা আবূ মাশকূর সুলামী রহঃ কর্তৃক লিখিত ‘কিতাবুত তাওহীদ’।
২. কালামুল মুতায়াখ্খিরীন
যে সমস্ত কিতাবের দ্বারা দর্শনের সংমিশ্রনসহ নক্বলী ও আক্বলী দলীল-প্রমানাদীর আলোকে দ্বীনী আক্বায়েদ জানা যায়, তাকে কালামুল মুতায়াখখিরীন বা পরবর্তীগণের রচিত ইলমুল কালাম বলে। কালামুল মুতায়াখখিরীন সম্পর্কে অনেক কিতাব রচিত হয়েছে। যেমনঃ
(ক) আল্লামা কাযী ইযদুদ্দীন আব্দুর রহমান ইবনে আহমদ রহঃ কর্তৃক লিখিত ‘আল মাওয়াক্বিফ’।
(খ) আল্লামা কাযী বাইযাবী রহঃ কর্তৃক লিখিত ‘তাওয়াবি’ ও ‘তাহযীব’।
(গ) আল্লামা আবূ হাফ্স উমর আন নাসাফী হানাফী রহঃ কর্তৃক লিখিত ’আল আক্কায়িদুন নাসাফিয়্যাহ’।
(ঘ) আল্লামা সা’দুদ্দীন তাফতাযানী শাফিয়ী রহঃ কর্তৃক লিখিত 'শরহুল আক্বায়িদিন আন নাসাফিয়্যাহ, আল মাক্বাছিদ ও শরহুল মাক্বাছিদ।
(ঙ) আল্লামা সাইফুদ্দীন আমিদী রহঃ
কর্তৃক লিখিত 'আল ইহকাম ফী উসূলিল আহকাম' ও 'গয়াতুল মারাম ফী ইলমিল কালাম'।
(চ) আল্লামা ইমাম ফখরুদ্দীন রাযী রহঃ
কর্তৃক লিখিত 'তাসীসুত তাক্বদীস', 'মুহসিলু আফকারিল মুতাকাদ্দিমীন ওয়াল মুতাআখখিরীন ', 'মা'আলেমু উসূলিদ দ্বীন', ও 'আল আরবাঈনা ফী উসূলিদ দ্বীন ' ইত্যাদি।
[আল মিলালি ওয়ান নিহালঃ১৮; ইলমুল কালামঃ৩৫]
মোটকথা ইলমুল কালামের ব্যাপারে অধিকাংশ সালাফদের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি আপন অবস্থানে সহীহ এতে ফিতনা থেকে অন্তত মুক্তি পাওয়া যাবে।
কিন্তু বাতিল ফিরক্বার অযৌক্তিক ভ্রান্তি খন্ডনে আহলুস সুন্নাহর কালামপন্থী উলামাদের উসূল প্রয়োগিক কর্মপন্থার কোন বিকল্প নেই।
তাই এই শাস্ত্রের প্রতি একেবারে জুলুমও যাতে না হয়ে যায় আবার এর মাধ্যমে সালাফদের বিরোধিতাও যেন না করা হয় সে ব্যাপারে বিশেষ দৃষ্টি সজাগ রাখতে হবে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন