ইমাম আবু হানিফা রহ.-এর ওপর কিছু অপবাদের খণ্ডন
আমিও আগেও একবার বলেছিলাম "অজ্ঞতার ঔষধ আছে, সেটা হল জ্ঞানীদের থেকে জেনে নেয়া, পড়াশুনা করা" কিন্তু "গোঁয়ার্তুমি-জেদ-অহংকার এগুলো হচ্ছে মানসিক রোগ, এর নিরাময় হচ্ছে হিদায়াত"
--------------------
আমার এক পরিচিত ভাই আছে, দোয়া করি আল্লাহ উনাকে অতিস্বত্তর তার রোগ থেকে মুক্তি দিন।।
--------------------
আমার এক পরিচিত ভাই আছে, দোয়া করি আল্লাহ উনাকে অতিস্বত্তর তার রোগ থেকে মুক্তি দিন।।
তার "ঈমাম আবু হানিফা (রহঃ) এবং হানাফী মাযহাব" সম্পর্কে এলার্জী আছে!! তিনি জোশে হুশ হারিয়ে লিখলেন-
"ঈমাম আবু হানাফি রহিঃ এর বেশিরভাগ মতকে সর্বপ্রথম তাঁর প্রিয় এবং প্রধান দুই ছাত্র ঈমাম মুহাম্মদ ও ঈমাম ইউসুফ রহিঃ এর অস্বীকার।এই দুইজনকে আবু হানিফা রহিঃ এর ডান ও বাম হাত বলা হতো।"
"ঈমাম আবু হানাফি রহিঃ এর বেশিরভাগ মতকে সর্বপ্রথম তাঁর প্রিয় এবং প্রধান দুই ছাত্র ঈমাম মুহাম্মদ ও ঈমাম ইউসুফ রহিঃ এর অস্বীকার।এই দুইজনকে আবু হানিফা রহিঃ এর ডান ও বাম হাত বলা হতো।"
জবাব হলঃ এটা একটা পাগলের প্রলাপ ছাড়া কিছুই না।। তার ২ ছাত্র মোটেও "অস্বীকার" করে নি।। বরং "ইখতিলাফ" করেছে।। ইখতিলাফ একটি শরীয়ত সিদ্ধ বিষয়।। দলিলের প্রমান এবং শরীয়তের বুঝ অনুযায়ী ইখতিলাফ হতেই পারে!!
কোরআনে সূরা আম্বিয়া এর ৭৮-৭৯ আয়াতে হযরত দাউদ (আঃ) এবং তার পুত্র হযরত সূলায়মান (আঃ) এর ঘটনা উল্লেখ আছে, যেখানে একটি বিচারকে কেন্দ্র করে পিতা-পুত্র ভিন্ন ফায়সালা দিয়েছিল, অথচ উভয়-ই আল্লাহর নবী।। আল্লাহ রক্ষা করেছেন সেই সময় এই বিভ্রান্ত ভাইয়েরা ছিলেন না, থাকলে উনারা কি দাউদ (আঃ) এর নবুয়্যতকে অস্বিকার করতেন এই বলে যে "উনি কিসের নবী যার ফায়সালা তার ছেলেই মানে না!!"
ইখতিলাফ করার জন্য যদি ঈমাম আবু হানিফার (রহঃ) বাতিল হন, এখন কি আরেক নবীর ইখতিলাফের জন্য দাউদ (আঃ) কেও উনারা বাতিল আখ্যা দিবেন??
-----------------------------------------------
ঐ ভাই আবার জোশে হুশ হারাইলেন এবং বললেন-
"আবু হানাফি কর্তৃক স্বহস্তে লিখিত কোন কিতাব দুনিয়ার বুকে নাই। যা অন্য তিন ঈমামের আছে। বরং ঈমাম আবু হানিফা রহিঃ তার মতকে লিপিবদ্ধ করতে নিষেধ করেছেন।"
কোরআনে সূরা আম্বিয়া এর ৭৮-৭৯ আয়াতে হযরত দাউদ (আঃ) এবং তার পুত্র হযরত সূলায়মান (আঃ) এর ঘটনা উল্লেখ আছে, যেখানে একটি বিচারকে কেন্দ্র করে পিতা-পুত্র ভিন্ন ফায়সালা দিয়েছিল, অথচ উভয়-ই আল্লাহর নবী।। আল্লাহ রক্ষা করেছেন সেই সময় এই বিভ্রান্ত ভাইয়েরা ছিলেন না, থাকলে উনারা কি দাউদ (আঃ) এর নবুয়্যতকে অস্বিকার করতেন এই বলে যে "উনি কিসের নবী যার ফায়সালা তার ছেলেই মানে না!!"
ইখতিলাফ করার জন্য যদি ঈমাম আবু হানিফার (রহঃ) বাতিল হন, এখন কি আরেক নবীর ইখতিলাফের জন্য দাউদ (আঃ) কেও উনারা বাতিল আখ্যা দিবেন??
-----------------------------------------------
ঐ ভাই আবার জোশে হুশ হারাইলেন এবং বললেন-
"আবু হানাফি কর্তৃক স্বহস্তে লিখিত কোন কিতাব দুনিয়ার বুকে নাই। যা অন্য তিন ঈমামের আছে। বরং ঈমাম আবু হানিফা রহিঃ তার মতকে লিপিবদ্ধ করতে নিষেধ করেছেন।"
জবাব হলঃ (ক)"স্বহস্তে" লিখিত কিতাব থাকাই যদি শর্ত হয় তাহলে হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এর নিজের-ও লিখিত কোন কিতাব নাই, সাহাবী ৪ খলিফার-ও লিখিত কোন কিতাব নাই।। এজন্য কি আমরা তাদের থেকে কোন জ্ঞান পাই নি??!!
ঈমাম আবু হানিফা (রহঃ) এর ছাত্র ঈমাম মুহাম্মদ (রহঃ) এর কিতাব সমূহ, ঈমাম আবু ইউসুফ (রহঃ) এর কিতাব সমূহ রয়েছে সেখানেই ঈমাম আবু হানিফা (রহঃ) এর মত কর্ম উল্লেখ রয়েছে।। এগুলো থেকেই হানাফী ফিক্বহের অনেক মতামত এসেছে।।
(খ) "ঈমাম আবু হানিফা (রহঃ) নিজের মত লিখতে নিষেধ করেছেন" করাটাই স্বাভাবিক!! কারণ উনি চাইতেন মানুষ উনার চেয়েও বেশী দ্বীন নিয়ে পড়াশোনা করুন।। কিন্তু আমরা উনার পর্যায়ে পৌঁছতে পারি নি বিধায় উনাকে বিশেষজ্ঞ মেনে নিয়ে উনার মত বা উনার দেখানো রাস্তা মোতাবেক দ্বীনের রাস্তায় আগাচ্ছি।।
আর রাসূলুল্লাহ (সঃ) নিজেও তার কথা লিপিবদ্ধ করতে নিষেধ করেছেন-
< لا تَكْتُبُوا عَنِّي وَمَنْ كَتَبَ عَنِّي غَيْرَ الْقُرْآنِ فَلْيَمْحُهُ وَحَدِّثُوا عَنِّي وَلا حَرَجَ وَمَنْ كَذَبَ عَلَيَّ [متعمدا] فَلْيَتَبَوَّأْ مَقْعَدَهُ مِنْ النَّارِ >
‘তোমরা আমার কাছ থেকে কিছু লিখবে না। যদি কেউ কুরআন ছাড়া আর কিছু লিখে থাক তাহলে তা মুছে ফেলবে। তোমরা আমার হাদীস মৌখিকভাবে বর্ণনা কর, তাতে কোনো অসুবিধা নেই। যে ব্যক্তি আমার ব্যাপারে (ইচ্ছা করে) মিথ্যা কথা বলবে, সে ব্যক্তি অবশ্যই জাহান্নামের বাসিন্দা হবে।’’ (সহীহ মুসলিম- ৪/২২৯৮)
তো রাসূল(সঃ) এর নিষেধাজ্ঞা স্বত্তেও ঠিক যেই কারণে ঈমাম বোখারী (রহঃ), ঈমাম মুসলিম (রহঃ) সহ সকল ঈমাম গন হাদিস লিপিবদ্ধ করেছেন, হানাফী ফিক্বহের ঈমাম গন আর উপায় না পেয়ে উনার মত লিপিবদ্ধ করেছেন।। যদি ঈমাম আবু হানিফা (রহঃ) এর মত লিখে রাখা পাপ হয়, তাহলে উনাদের মত বিভ্রান্তদের ভাষায় রাসূল (সঃ) এর হাদিস লিখে ঈমাম বোখারী (রহঃ) মুসলিম (রহঃ) বিশাল বড় পাপ করেছেন!! রাসূল(সঃ) এর হুকুম অমান্য করেছেন (নাউযুবিল্লাহ)।।
---------------------------------------------------
এবার আমার পেরেশান ভাই বলে উঠলেন-
"আবু হানাফি রহিঃ এর মৃত্যুর বহু বছর পর তাঁর নামে অনেক কিতাব রচিত হয়েছে। এবং সেই সকল কিতাবে এই রকম কোন রেফারেন্স নেই, যাতে বলা হয়েছে যে ঈমাম আবু হানাফি রহিঃ বলেছেন বা করেছেন।"
---------------------------------------------------
এবার আমার পেরেশান ভাই বলে উঠলেন-
"আবু হানাফি রহিঃ এর মৃত্যুর বহু বছর পর তাঁর নামে অনেক কিতাব রচিত হয়েছে। এবং সেই সকল কিতাবে এই রকম কোন রেফারেন্স নেই, যাতে বলা হয়েছে যে ঈমাম আবু হানাফি রহিঃ বলেছেন বা করেছেন।"
জবাব হলঃ উনি যেহেতু ঈমাম মুহাম্মদ (রহঃ) এর কিতাব সমূহ, ঈমাম আবু ইউসুফ (রহঃ) এর কিতাব সমূহ পড়েন নাই সেজন্য জানেন না।। সেসব কিতাবেই ঈমাম আবু হানিফা কি বলেছেন, কি করেছেন সেগুলোর উল্লেখ আছে, রেফারেন্স সহ।। এমনকি জামে তিরমিযী তে "মোজা ও জুতার উপর মাসেহ" এর অধ্যায়ে ৯৯ নং হাদিসের পরবর্তী আলোচনায় ঈমাম তিরমিযী (রহঃ) সনদ সহ ঈমাম আবু হানিফা (রহঃ) এর এই বিষয়ে কি আমল ছিল অর্থাৎ তিনি কি করেছেন সেটার উল্লেখ করেছেন।।
এরকম-ই ঈমাম আবু হানিফা (রহঃ) এর মত এবং কাজ উনার ছাত্রদের কিতাব ছাড়াও হাদিসের বড় বড় প্রাচীন কিতাব গুলোতে পাওয়া যায়।।
এটা হচ্ছে আমার এইসব বিভ্রান্ত ভাইদের "নিজে জানি না" কে "এরকম কিছু নাই" বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা।। বাথটাবে নীলতিমি খুজতে গিয়ে না পেয়ে 'নীলতিমি বলে কিছু নাই' দাবীর মত ব্যাপার।।
-----------------------------------------
আসুন সকলে দোয়া করি, আল্লাহ যেন এইসব বিভ্রান্ত ভাইদের মানসিক রোগ গুলো দূর করে দেন।।
-----------------------------------------
আসুন সকলে দোয়া করি, আল্লাহ যেন এইসব বিভ্রান্ত ভাইদের মানসিক রোগ গুলো দূর করে দেন।।
আল্লাহ সকলকে সহিহ বুঝ দান করুন।।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন