গর্দান মাসাহ করা মুস্তাহাব, বিদআত নয়
শরঈ হুজ্জত ও দলিল নির্ভর কোন আমলকে বেদায়াত বলা এবং কোন বেদায়াত আমলকে শরিয়তের অন্তর্ভুক্ত করা শরিয়তের দৃষ্টিতে নিন্দনিয়। আজকে এমনই একটি বিষয় নিয়ে লিখবো, ইনশাআল্লাহ । যা হুজ্জতের ভিত্তিতে মুস্তাহাব কিন্তু আমাদের আহলে হাদীস ভায়েরা মানহাজ টিকাতে গিয়ে বার বার একে বেদায়াত বলে আসছে। এই বিষয় নিয়েই কিছুদিন আগে আহলে হাদীস আলেম আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ সাহেব ও হানাফী আলেম মাওলানা Lutfor Farazi সাহেব এর সাথে অনেক কিছু হয়ে গিয়েছে। আহলে হাদীসের অন্য একজন আলেম মুজাফফর বিন মুহসিন সাহেব এ বিষয়ে নিজের মানহাযকে টিকাতে গিয়ে শায়খ ডঃ ইলিয়াস ফয়সাল সাহেবের "নাবিজীর নামাজ" কিতাবের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দিয়েছে যে এ কিতাবে নাকি জাল হাদীস আছে। এগুলো সব আহলে হাদীসে এ বিশিষ্ঠ আলেমদের মিথাচার এবং তাদের অন্ধ ভক্তদের হাঙ্গামা। বিষয়টি হল "ওযুতে গর্দান মাসেহ করা মুস্তাহাব"। আরো আশ্চর্যের ব্যাপার হল ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল রাহঃ গর্দান মাসেহ করতেন। আমরা সামনে তা উল্লেখ করবো ।
ওযুতে গর্দান মাসেহ করা মুস্তাহাব
*********************************
মুস্তাহাব হতে হলে হুজ্জতের প্রয়োজন হয়। আমি সেগুলো একটু পরে আলোচনা করবো। আগে বলে নেই যে আহলে হাদীস ভায়েরা কিসের উপর ভিত্তি করে এ আমলকে বেদায়াত বলেন। তা হল ইমাম নবী রাহ এর একটি বিচ্ছিন্ন মত-
ইমাম নববী রহ. শরহুল মুহাজ্জাব কিতাবে বলেছেন যে, مَسْحُ الرَّقَبَةِ بِدْعَةٌ، وَأَنَّ حَدِيثَهُ مَوْضُوعٌ গর্দান মাসেহ করা বিদআত এবং এ ব্যাপারে বর্ণিত হাদীসগুলো মাউযু বা বানোয়াট।
*********************************
মুস্তাহাব হতে হলে হুজ্জতের প্রয়োজন হয়। আমি সেগুলো একটু পরে আলোচনা করবো। আগে বলে নেই যে আহলে হাদীস ভায়েরা কিসের উপর ভিত্তি করে এ আমলকে বেদায়াত বলেন। তা হল ইমাম নবী রাহ এর একটি বিচ্ছিন্ন মত-
ইমাম নববী রহ. শরহুল মুহাজ্জাব কিতাবে বলেছেন যে, مَسْحُ الرَّقَبَةِ بِدْعَةٌ، وَأَنَّ حَدِيثَهُ مَوْضُوعٌ গর্দান মাসেহ করা বিদআত এবং এ ব্যাপারে বর্ণিত হাদীসগুলো মাউযু বা বানোয়াট।
ইমাম নববী রাহ এর এ কথাই আহলে হাদীসদের মানহায হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। যদিও ইমাম নববী রাহ এর এ কথার জবাব দিয়েছেন আমাদের অনেক বড় বড় সালাফগন। এর মধ্যে রয়েছে মোল্লা আলী কারী রাহঃ , ইমাম বাগাবী রাহঃ, আল্লামা শাওকানি রহাঃ সহ অনেকে। এ ব্যাপারে সামনে কিছু হুজ্জত পেশ করতে যাচ্ছি এবং সাথে সাথে সালাফদের মত।
১ম দলিলঃ
======
فَإِنَّ عَلِيَّ بْنَ ثَابِتٍ , وَعَبْدَ الرَّحْمَنِ حَدَّثَانَا عَنِ الْمَسْعُودِيِّ، عَنِ الْقَاسِمِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ مُوسَى بْنِ طَلْحَةَ , قَالَ: ্রمَنْ مَسَحَ قَفَاهُ مَعَ رَأْسِهِ وُقِيَ الْغُلَّ يَوْمَ الْقِيَامَةِগ্ধ (كِتَابُ الطَّهُورِ لِأَبِي عُبَيْدٍ الْقَاسِمِ بْنِ سَلَّامٍ الْخُزَاعِيِّ)
হযরত মুসা বিন তালহা রহ. বলেন: যে ব্যক্তি মাথার সাথে তার গর্দান মাসেহ করবে সে কিয়ামতের দিন (গলায়) বেড়ী পরানো থেকে রেহাই পাবে। (কিতাবুত তুহুর লিআবি উবায়েদ-৩৬৮, পৃষ্ঠা-৩৭৪)। হাফেজ ইবনে হাজার রহ.ও তালখীছুল হাবীরে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। (তালখীছুল হাবীর-৯৮ নং হাদীসের আলোচনায়)
======
فَإِنَّ عَلِيَّ بْنَ ثَابِتٍ , وَعَبْدَ الرَّحْمَنِ حَدَّثَانَا عَنِ الْمَسْعُودِيِّ، عَنِ الْقَاسِمِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ مُوسَى بْنِ طَلْحَةَ , قَالَ: ্রمَنْ مَسَحَ قَفَاهُ مَعَ رَأْسِهِ وُقِيَ الْغُلَّ يَوْمَ الْقِيَامَةِগ্ধ (كِتَابُ الطَّهُورِ لِأَبِي عُبَيْدٍ الْقَاسِمِ بْنِ سَلَّامٍ الْخُزَاعِيِّ)
হযরত মুসা বিন তালহা রহ. বলেন: যে ব্যক্তি মাথার সাথে তার গর্দান মাসেহ করবে সে কিয়ামতের দিন (গলায়) বেড়ী পরানো থেকে রেহাই পাবে। (কিতাবুত তুহুর লিআবি উবায়েদ-৩৬৮, পৃষ্ঠা-৩৭৪)। হাফেজ ইবনে হাজার রহ.ও তালখীছুল হাবীরে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। (তালখীছুল হাবীর-৯৮ নং হাদীসের আলোচনায়)
সনদের আলোচনাঃ
------------------
সনদ হিসেবে হাসান। উল্লিখিত হাদীসের রাবীগণ সকলেই নির্ভরযোগ্য। কেবল মাসউদীকে নিয়ে এতটুকু আপত্তি পাওয়া যায় যে, শেষ বয়সে তাঁর স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে গিয়েছিলো। কিন্তু উক্ত অভিযোগ এ কারণে ক্ষতিকর হবে না যে, আবু হাতিমের বর্ণনানুযায়ী তাঁর মৃত্যুর এক বা দুই বছর পূর্বে স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে গিয়েছিলো। আর তাঁর মৃত্যুর দুই বছর পূর্বে আব্দুর রহমান বিন মাহদী তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করেছিলেন; কিন্তু তখন তাঁকে কিছুই জিজ্ঞেস করেননি। (তাহজীবুত তাহজীব: ৩৯১৯)। তাহলে বুঝা যায়, আব্দুর রহমান তাঁর থেকে বর্ণনা করেছেন স্মৃতিশক্তি দুর্বল হওয়ার পূর্বেই। সুতরাং এ বর্ণনায় কোন সমস্যা নেই।
------------------
সনদ হিসেবে হাসান। উল্লিখিত হাদীসের রাবীগণ সকলেই নির্ভরযোগ্য। কেবল মাসউদীকে নিয়ে এতটুকু আপত্তি পাওয়া যায় যে, শেষ বয়সে তাঁর স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে গিয়েছিলো। কিন্তু উক্ত অভিযোগ এ কারণে ক্ষতিকর হবে না যে, আবু হাতিমের বর্ণনানুযায়ী তাঁর মৃত্যুর এক বা দুই বছর পূর্বে স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে গিয়েছিলো। আর তাঁর মৃত্যুর দুই বছর পূর্বে আব্দুর রহমান বিন মাহদী তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করেছিলেন; কিন্তু তখন তাঁকে কিছুই জিজ্ঞেস করেননি। (তাহজীবুত তাহজীব: ৩৯১৯)। তাহলে বুঝা যায়, আব্দুর রহমান তাঁর থেকে বর্ণনা করেছেন স্মৃতিশক্তি দুর্বল হওয়ার পূর্বেই। সুতরাং এ বর্ণনায় কোন সমস্যা নেই।
২য় দলিল
======
হযরত আবু উবায়েদ এ হাদীসটি আরও একটি সনদে বর্ণনা করেছেন যা নিচে প্রদত্ব হলো-
حَدَّثَنَا مُحَمَّدٌ، قَالَ: أَخْبَرَنَا أَبُو عُبَيْدٍ قَالَ: ثنا حَجَّاجٌ، عَنِ الْمَسْعُودِيِّ، عَنِ الْقَاسِمِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَنَّهُ قَالَ مِثْلَ ذَلِكَ (তালখীছুল হাবীর, হাদীস নং-৩৬৯)
======
হযরত আবু উবায়েদ এ হাদীসটি আরও একটি সনদে বর্ণনা করেছেন যা নিচে প্রদত্ব হলো-
حَدَّثَنَا مُحَمَّدٌ، قَالَ: أَخْبَرَنَا أَبُو عُبَيْدٍ قَالَ: ثنا حَجَّاجٌ، عَنِ الْمَسْعُودِيِّ، عَنِ الْقَاسِمِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَنَّهُ قَالَ مِثْلَ ذَلِكَ (তালখীছুল হাবীর, হাদীস নং-৩৬৯)
সনদের আলোচনা
------------------
ইবনে হাজার রহ. তালখীছুল হাবীর-৯৮ নং হাদীসের ব্যাখ্যায় বলেন: قُلْتُ : فَيَحْتَمِلُ أَنْ يُقَالَ : هَذَا وَإِنْ كَانَ مَوْقُوفًا فَلَهُ حُكْمُ الرَّفْعِ ، لِأَنَّ هَذَا لَا يُقَالُ مِنْ قِبَلِ الرَّأْيِ ، فَهُوَ عَلَى هَذَا مُرْسَلٌ এ হাদীসটি যদিও মাওকুফ তবু মারফু’র হুকুম রাখে। কারণ, এটা এমন একটি বিষয় যা বুদ্ধি-বিবেক খাটিয়ে বলা যায় না (বরং রসূলুল্লাহ স. থেকে জেনেই বলতে হয়)। এতদসত্ত্বেও (সাহাবার নাম নাম উল্লেখ না থাকায়) হাদীসটি মুরসাল। ইবনে হাজার রহ. শরহু নুখবাতিল ফিকারে বলেন, ثقةٌ (নির্ভরযোগ্য) রাবীদের মুরসাল বর্ণনার পক্ষে কোন সমার্থক বর্ণনা পাওয়া গেলে চার ইমামের নিকটেই তা দলীল হিসেবে গ্রহণযোগ্য। (সারসংক্ষেপ: শরহু নুখবাতিল ফিকার: ৫০-৫১)
------------------
ইবনে হাজার রহ. তালখীছুল হাবীর-৯৮ নং হাদীসের ব্যাখ্যায় বলেন: قُلْتُ : فَيَحْتَمِلُ أَنْ يُقَالَ : هَذَا وَإِنْ كَانَ مَوْقُوفًا فَلَهُ حُكْمُ الرَّفْعِ ، لِأَنَّ هَذَا لَا يُقَالُ مِنْ قِبَلِ الرَّأْيِ ، فَهُوَ عَلَى هَذَا مُرْسَلٌ এ হাদীসটি যদিও মাওকুফ তবু মারফু’র হুকুম রাখে। কারণ, এটা এমন একটি বিষয় যা বুদ্ধি-বিবেক খাটিয়ে বলা যায় না (বরং রসূলুল্লাহ স. থেকে জেনেই বলতে হয়)। এতদসত্ত্বেও (সাহাবার নাম নাম উল্লেখ না থাকায়) হাদীসটি মুরসাল। ইবনে হাজার রহ. শরহু নুখবাতিল ফিকারে বলেন, ثقةٌ (নির্ভরযোগ্য) রাবীদের মুরসাল বর্ণনার পক্ষে কোন সমার্থক বর্ণনা পাওয়া গেলে চার ইমামের নিকটেই তা দলীল হিসেবে গ্রহণযোগ্য। (সারসংক্ষেপ: শরহু নুখবাতিল ফিকার: ৫০-৫১)
৩য় দলিলঃ
=======
وَأَخْبَرَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ أَخْبَرَنَا أَبُو الْقَاسِمِ بْنُ عَمْرٍو حَدَّثَنَا أَبُو حَصِينٍ حَدَّثَنَا يَحْيَى حَدَّثَنَا أَبُو إِسْرَائِيلَ عَنْ فُضَيْلِ بْنِ عَمْرٍو عَنْ مُجَاهِدٍ عَنِ ابْنِ عُمَرَ : أَنَّهُ كَانَ إِذَا مَسَحَ رَأْسَهُ مَسَحَ قَفَاهُ مَعَ رَأْسِهِ. هَذَا مَوْقُوفٌ وَالْمُسْنَدُ فِى إِسْنَادِهِ ضَعْفٌ وَاللَّهُ أَعْلَمُ
হযরত ইবনে উমার রা. থেকে বর্ণিত: তিনি যখন মাথা মাসেহ করতেন তখন মাথার সাথে গর্দানও মাসেহ করতেন। (সুনানে বাইহাকী: ২৮২)
=======
وَأَخْبَرَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ أَخْبَرَنَا أَبُو الْقَاسِمِ بْنُ عَمْرٍو حَدَّثَنَا أَبُو حَصِينٍ حَدَّثَنَا يَحْيَى حَدَّثَنَا أَبُو إِسْرَائِيلَ عَنْ فُضَيْلِ بْنِ عَمْرٍو عَنْ مُجَاهِدٍ عَنِ ابْنِ عُمَرَ : أَنَّهُ كَانَ إِذَا مَسَحَ رَأْسَهُ مَسَحَ قَفَاهُ مَعَ رَأْسِهِ. هَذَا مَوْقُوفٌ وَالْمُسْنَدُ فِى إِسْنَادِهِ ضَعْفٌ وَاللَّهُ أَعْلَمُ
হযরত ইবনে উমার রা. থেকে বর্ণিত: তিনি যখন মাথা মাসেহ করতেন তখন মাথার সাথে গর্দানও মাসেহ করতেন। (সুনানে বাইহাকী: ২৮২)
সনদের আলোচনাঃ
------------------
মাওকুফ হিসেবে গ্রহণযোগ্য। ইমাম বাইহাকী রহ. এ হাদীসটিকে মুসনাদ তথা মারফু’ হিসেবে জঈফ বলেছেন; তবে মাউকুফ হিসেবে কোন আপত্তি করেননি। যার অর্থ হল মাউকুফ হিসেবে এটা অগ্রহণযোগ্য নয়।
------------------
মাওকুফ হিসেবে গ্রহণযোগ্য। ইমাম বাইহাকী রহ. এ হাদীসটিকে মুসনাদ তথা মারফু’ হিসেবে জঈফ বলেছেন; তবে মাউকুফ হিসেবে কোন আপত্তি করেননি। যার অর্থ হল মাউকুফ হিসেবে এটা অগ্রহণযোগ্য নয়।
৪র্থ দলিল
======
حَدَّثنا إبراهيم بن سَعِيد، قَال: حَدَّثنا مُحَمد بْنُ حُجْر، قَالَ: حَدَّثني سَعِيد بْنُ عَبد الْجَبَّارِ بْنِ وَائِلِ بْنِ حُجْر، عَن أَبيهِ، عَن أُمِّهِ عَنْ وَائِلِ بْنِ حُجْر، رَضِي اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ شَهِدْتُ النَّبِيّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيه وَسَلَّم وَأُتِيَ بِإِنَاءٍ فِيهِ مَاءٌ فَأَكْفَأَهُ عَلَى يَمِينِهِ ثَلاثًا .....ثُمَّ مَسَحَ عَلَى رَأْسِهِ ثَلاثًا وَظَاهِرَ أُذُنَيْهِ ثَلاثًا وَظَاهِرَ رَقَبَتِهِ
হযরত ওয়াইল বিন হুজ্র রা. বলেন, আমি দেখেছি যে, রসূলুল্লাহ স.-এর জন্য পানির পাত্র আনা হলো। তিনি তা থেকে তিনবার ডান হাতের উপর ঢাললেন। ....অতঃপর মাথা, কান ও গর্দানের উপরিভাগ তিনবার করে মাসেহ করলেন। (মুসনাদে বাঝ্ঝার-৪৪৮৮)।
======
حَدَّثنا إبراهيم بن سَعِيد، قَال: حَدَّثنا مُحَمد بْنُ حُجْر، قَالَ: حَدَّثني سَعِيد بْنُ عَبد الْجَبَّارِ بْنِ وَائِلِ بْنِ حُجْر، عَن أَبيهِ، عَن أُمِّهِ عَنْ وَائِلِ بْنِ حُجْر، رَضِي اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ شَهِدْتُ النَّبِيّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيه وَسَلَّم وَأُتِيَ بِإِنَاءٍ فِيهِ مَاءٌ فَأَكْفَأَهُ عَلَى يَمِينِهِ ثَلاثًا .....ثُمَّ مَسَحَ عَلَى رَأْسِهِ ثَلاثًا وَظَاهِرَ أُذُنَيْهِ ثَلاثًا وَظَاهِرَ رَقَبَتِهِ
হযরত ওয়াইল বিন হুজ্র রা. বলেন, আমি দেখেছি যে, রসূলুল্লাহ স.-এর জন্য পানির পাত্র আনা হলো। তিনি তা থেকে তিনবার ডান হাতের উপর ঢাললেন। ....অতঃপর মাথা, কান ও গর্দানের উপরিভাগ তিনবার করে মাসেহ করলেন। (মুসনাদে বাঝ্ঝার-৪৪৮৮)।
সনদের আলোচনাঃ
------------------
জঈফ।
------------------
জঈফ।
৫ম দলিলঃ
=======
عَنْ فُلَيْحِ بْنِ سُلَيْمَانَ عَنْ نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: "مَنْ تَوَضَّأَ وَمَسَحَ بِيَدَيْهِ عَلَى عُنُقِهِ وُقِيَ الْغُلَّ يَوْمَ الْقِيَامَةِ" وَقَالَ هَذَا إنْ شَاءَ اللَّهُ حَدِيثٌ صَحِيحٌ. قُلْتُ: بَيْنَ ابْنِ فَارِسٍ وَفُلَيْحٍ مَفَازَةٌ فَيُنْظَرُ فِيهَا.
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমার রা. বলেন, রসূলুল্লাহ স. ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি অযু করলো আর উভয় হাত দ্বারা আপন গরদান মাসেহ করলো তাকে কিয়ামতের দিন (গলায়) বেড়ী পরানো থেকে রেহাই দেয়া হবে। (আল্লামা রুইয়ানী বলেন, ইংশাআল্লাহ হাদীসটি সহীহ। (তালখীছুল হাবির: ৯৮ নম্বর হাদীসের আলোচনায়)
=======
عَنْ فُلَيْحِ بْنِ سُلَيْمَانَ عَنْ نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: "مَنْ تَوَضَّأَ وَمَسَحَ بِيَدَيْهِ عَلَى عُنُقِهِ وُقِيَ الْغُلَّ يَوْمَ الْقِيَامَةِ" وَقَالَ هَذَا إنْ شَاءَ اللَّهُ حَدِيثٌ صَحِيحٌ. قُلْتُ: بَيْنَ ابْنِ فَارِسٍ وَفُلَيْحٍ مَفَازَةٌ فَيُنْظَرُ فِيهَا.
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমার রা. বলেন, রসূলুল্লাহ স. ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি অযু করলো আর উভয় হাত দ্বারা আপন গরদান মাসেহ করলো তাকে কিয়ামতের দিন (গলায়) বেড়ী পরানো থেকে রেহাই দেয়া হবে। (আল্লামা রুইয়ানী বলেন, ইংশাআল্লাহ হাদীসটি সহীহ। (তালখীছুল হাবির: ৯৮ নম্বর হাদীসের আলোচনায়)
সনদের আলোচনাঃ
------------------
সনদ জানা যায়নি। হাফেজ ইবনে হাজার রহ বলেন ইবনে ফারেস এবং ফুলইহ-এর মধ্যে দীর্ঘ দুরত্ব রয়েছে তাই বিশুদ্ধতার বিষয়টি আরও ভাবা উচিত।
------------------
সনদ জানা যায়নি। হাফেজ ইবনে হাজার রহ বলেন ইবনে ফারেস এবং ফুলইহ-এর মধ্যে দীর্ঘ দুরত্ব রয়েছে তাই বিশুদ্ধতার বিষয়টি আরও ভাবা উচিত।
উপরোক্ত ৫টি হাদীসের মধ্যে প্রথম দুটি মুরসাল রেওয়াত। আর সহীহ মুরসাল রেওয়াত ইমাম আবু হানিফা , ইমাম মালেক রাহঃ এর নিকট হুজ্জত। আর ইমাম শাফী রাহঃ এর কাছে শর্ত সাপেক্ষে হুজ্জত। আর তার শর্ত হল মুরসাল রেওয়াতের সাথে অন্য রেওয়ায়েত থাকা জরুরী। আর প্রথম মুরসাল রেওয়াতের সাহেদ হিসেবে আমরা আরো ৪ টি রেওয়েত বর্ণনা করেছি। আর অন্য হাদীসের সনদগুলো স্বতন্ত্রভাবে দুর্বল হলেও পারস্পারিক সমর্থনের কারণে সম্মিলিতভাবে যে শক্তি সৃষ্টি হয়েছে মুহাদ্দিসীনে কিরাম সেটাকে হাসান লিগায়রিহী বলে থাকেন। যেমনটি বলেছেন শায়খ আব্দুল হক রহ. মিশকাত শরীফের ভুমিকায়। (মুকাদ্দামায়ে মেশকাত,পৃষ্ঠা- ৫ ও ৬)।
ইমাম নববী রাহঃ এর মত বনাম অন্যান্ন সালাফদের মতঃ
++++++++++++++++++++++++++++++++++
ইমাম নববী রহ. শরহুল মুহাজ্জাব কিতাবে বলেছেন যে, مَسْحُ الرَّقَبَةِ بِدْعَةٌ، وَأَنَّ حَدِيثَهُ مَوْضُوعٌ গর্দান মাসেহ করা বিদআত এবং এ ব্যাপারে বর্ণিত হাদীসগুলো মাউযু বা বানোয়াট। দলীল বিহীন কারও কথা না মানার দাবীদারগণ অনেকেই বিনাবাক্যে ইমাম নববী রহ.-এর এ উক্তি মনে-প্রানে মেনে নিলেও বিশিষ্ট গায়রে মুকাল্লিদ আলেম আল্লামা শাওকানীসহ যুগশ্রেষ্ঠ বহু মুহাদ্দিস এর কঠোর সমালোচনা করেছেন।
++++++++++++++++++++++++++++++++++
ইমাম নববী রহ. শরহুল মুহাজ্জাব কিতাবে বলেছেন যে, مَسْحُ الرَّقَبَةِ بِدْعَةٌ، وَأَنَّ حَدِيثَهُ مَوْضُوعٌ গর্দান মাসেহ করা বিদআত এবং এ ব্যাপারে বর্ণিত হাদীসগুলো মাউযু বা বানোয়াট। দলীল বিহীন কারও কথা না মানার দাবীদারগণ অনেকেই বিনাবাক্যে ইমাম নববী রহ.-এর এ উক্তি মনে-প্রানে মেনে নিলেও বিশিষ্ট গায়রে মুকাল্লিদ আলেম আল্লামা শাওকানীসহ যুগশ্রেষ্ঠ বহু মুহাদ্দিস এর কঠোর সমালোচনা করেছেন।
আল্লামা শাওকানী রহ.
----------------------
আল্লামা শাওকানী রহ. গর্দান মাসেহ করার কিছু দলীল বর্ণনা করে বলেন,
وَبِجَمِيعِ هَذَا تُعْلَمُ أَنَّ قَوْلَ النَّوَوِيِّ مَسْحُ الرَّقَبَةِ بِدْعَةٌ، وَأَنَّ حَدِيثَهُ مَوْضُوعٌ مُجَازَفَةً، وَأَعْجَبُ مِنْ هَذَا قَوْلُهُ: وَلَمْ يَذْكُرْهُ الشَّافِعِيُّ وَلَا جُمْهُورُ الْأَصْحَابِ، وَإِنَّمَا قَالَهُ ابْنُ الْقَاصِّ وَطَائِفَةٌ يَسِيرَةٌ فَإِنَّهُ قَالَ الرُّويَانِيُّ مِنْ أَصْحَابِ الشَّافِعِيِّ فِي كِتَابِهِ الْمَعْرُوفِ بِالْبَحْرِ مَا لَفْظُهُ: قَالَ أَصْحَابُنَا: وَهُوَ سُنَّةٌ، وَتَعَقَّبَ النَّوَوِيُّ أَيْضًا ابْنَ الرِّفْعَةِ بِأَنَّ الْبَغَوِيّ وَهُوَ مِنْ أَئِمَّةِ الْحَدِيثِ قَدْ قَالَ بِاسْتِحْبَابِهِ، قَالَ: وَلَا مَأْخَذَ لِاسْتِحْبَابِهِ إلَّا خَبَرٌ أَوْ أَثَرٌ لِأَنَّ هَذَا لَا مَجَالَ لِلْقِيَاسِ فِيهِ (نيل الاوطار-١/۲۰۷)
অনুবাদ : এসব কিছু থেকে জানা যায় যে, ‘গর্দান মাসেহ করা বিদআত এবং এ ব্যাপারে বর্ণিত হাদীসগুলো মাউযু বা বানোয়াট’ বলে ইমাম নববী রহ. যে মন্তব্য করেছেন তা মনগড়া। আরও আশ্চর্যের বিষয় হলো তাঁর এ মন্তব্য যে, ‘ইমাম শাফেঈ এবং তাঁর অনুসারীগণ কেউ গর্দান মাসেহ করার কথা বলেননি’। অথচ ইবনুল কাছ এবং সল্প সংখ্যক একটি দল গর্দান মাসেহ করার কথা বলেছেন। শাফেঈ মাজহাবের ইমাম রুইয়ানী আল বাহ্র নামক কিতাবে বলেন, আমাদর সাথীগণ বলেন, গর্দান মাসেহ করা সুন্নাত।
ইমাম শাওকানী আরও বলেন, ইবনুর রফআহ রহ.ও এ বিষয়ে ইমাম নববীর পিছু ধাওয়া করে বলেন, হাদীসের প্রসিদ্ধ ইমাম বাগাবী রহ. গর্দান মাসেহ করা মুস্তাহাব বলেছেন। আর এ কথার ভিত্তি হতে পারে কেবল হাদীস বা আছার। কারণ এরকম বিষয়ে বিবেক খাটিয়ে কিছু বলা যায় না। (নাইলুল আওতার-১/২০৭)
----------------------
আল্লামা শাওকানী রহ. গর্দান মাসেহ করার কিছু দলীল বর্ণনা করে বলেন,
وَبِجَمِيعِ هَذَا تُعْلَمُ أَنَّ قَوْلَ النَّوَوِيِّ مَسْحُ الرَّقَبَةِ بِدْعَةٌ، وَأَنَّ حَدِيثَهُ مَوْضُوعٌ مُجَازَفَةً، وَأَعْجَبُ مِنْ هَذَا قَوْلُهُ: وَلَمْ يَذْكُرْهُ الشَّافِعِيُّ وَلَا جُمْهُورُ الْأَصْحَابِ، وَإِنَّمَا قَالَهُ ابْنُ الْقَاصِّ وَطَائِفَةٌ يَسِيرَةٌ فَإِنَّهُ قَالَ الرُّويَانِيُّ مِنْ أَصْحَابِ الشَّافِعِيِّ فِي كِتَابِهِ الْمَعْرُوفِ بِالْبَحْرِ مَا لَفْظُهُ: قَالَ أَصْحَابُنَا: وَهُوَ سُنَّةٌ، وَتَعَقَّبَ النَّوَوِيُّ أَيْضًا ابْنَ الرِّفْعَةِ بِأَنَّ الْبَغَوِيّ وَهُوَ مِنْ أَئِمَّةِ الْحَدِيثِ قَدْ قَالَ بِاسْتِحْبَابِهِ، قَالَ: وَلَا مَأْخَذَ لِاسْتِحْبَابِهِ إلَّا خَبَرٌ أَوْ أَثَرٌ لِأَنَّ هَذَا لَا مَجَالَ لِلْقِيَاسِ فِيهِ (نيل الاوطار-١/۲۰۷)
অনুবাদ : এসব কিছু থেকে জানা যায় যে, ‘গর্দান মাসেহ করা বিদআত এবং এ ব্যাপারে বর্ণিত হাদীসগুলো মাউযু বা বানোয়াট’ বলে ইমাম নববী রহ. যে মন্তব্য করেছেন তা মনগড়া। আরও আশ্চর্যের বিষয় হলো তাঁর এ মন্তব্য যে, ‘ইমাম শাফেঈ এবং তাঁর অনুসারীগণ কেউ গর্দান মাসেহ করার কথা বলেননি’। অথচ ইবনুল কাছ এবং সল্প সংখ্যক একটি দল গর্দান মাসেহ করার কথা বলেছেন। শাফেঈ মাজহাবের ইমাম রুইয়ানী আল বাহ্র নামক কিতাবে বলেন, আমাদর সাথীগণ বলেন, গর্দান মাসেহ করা সুন্নাত।
ইমাম শাওকানী আরও বলেন, ইবনুর রফআহ রহ.ও এ বিষয়ে ইমাম নববীর পিছু ধাওয়া করে বলেন, হাদীসের প্রসিদ্ধ ইমাম বাগাবী রহ. গর্দান মাসেহ করা মুস্তাহাব বলেছেন। আর এ কথার ভিত্তি হতে পারে কেবল হাদীস বা আছার। কারণ এরকম বিষয়ে বিবেক খাটিয়ে কিছু বলা যায় না। (নাইলুল আওতার-১/২০৭)
মোল্লা আলী কারী রহ.
----------------------
حَدِيثُ مَسْحُ الرَّقَبَةِ أَمَانٌ مِنَ الْغُلِّ : قَالَ النَّوَوِيُّ فِي شَرْحِ الْمُهَذَّبِ إِنَّهُ مَوْضُوعٌ : قُلْتُ لَكِنْ رَوَاهُ أَبُو عُبَيْدِ الْقَاسِمِ عَنِ الْقَاسِمِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ مُوسَى بْنِ طَلْحَةَ قَالَ مَنْ مَسَحَ قَفَاهُ مَعَ رَأْسِهِ وُقِيَ مِنَ الْغُلِّ وَالْحَدِيثُ مَوْقُوفٌ إِلَّا أَنَّهُ فِي الْحُكْمِ مَرْفُوعٌ لِأَنَّ مِثْلَهُ لَا يُقَالُ بِالرَّأْيِ وَيُقَوِّيهِ مَا رُوِيَ مَرْفُوعًا مِنْ مُسْنَدِ الْفُرْدَوْسِ مِنْ حَدِيثِ ابْنِ عُمَرَ لَكِنَّ بِسَنَدٍ ضَعِيفٍ وَالضَّعِيفُ يُعْمَلُ بِهِ فِي فَضَائِلِ الْأَعْمَالِ اتِّفَاقًا وَلَذَا قَالَ أَئِمَّتُنَا إِنَّ مَسْحَ الرَّقَبَةِ مُسْتَحَبٌّ أَوْ سُنَّةٌ
অনুবাদ : গর্দান মাসেহ করা বেড়ী থেকে নিরাপদ (হাদীস)। ইমাম নববী শরহুল মুহাজ্জাবে বলেন, এটা মাউযু’। (মুল্লা আলী কারী রহ.) বলেন, আবু উবায়েদ কাসেম সূত্রে মুসা বিন তলহা থেকে বর্ননা করেন, যে ব্যক্তি মাথার সাথে তার গর্দান মাসেহ করবে সে কিয়ামতের দিন (গলায়) বেড়ী পরানো থেকে রেহাই পাবে। হাদীসটি যদিও মাউকুফ তবে মারফু’-এর শ্রেণীভুক্ত। কারণ এরকম বিষয়ে বিবেক খাটিয়ে কিছু বলা যায় না। এ হাদীসটিকে আরও শক্তিশালী করে মুসনাদে ফিরদাউসে ইবনে উমর থেকে জঈফ সনদে বর্ণিত মারফু’ হাদীস। আর ফজিলতের ক্ষেত্রে জঈফ হাদীস সর্বসম্মতিক্রমে গ্রহণযোগ্য। এ কারণে আমাদের ইমামগণ বলেন, গর্দান মাসেহ করা সুন্নাত বা মুস্তাহাব। (আল মাউযুআতুল কুবরা-৪৩৪)। এ বর্ণনা দ্বারা মুল্যা আলী কারী রহঃ ইমাম নববী রহ.-এর কথা প্রত্যাখ্যান করে গর্দান মাসেহ করার আমলকে কমপক্ষে মুস্তাহাব প্রমাণ করেছেন।
----------------------
حَدِيثُ مَسْحُ الرَّقَبَةِ أَمَانٌ مِنَ الْغُلِّ : قَالَ النَّوَوِيُّ فِي شَرْحِ الْمُهَذَّبِ إِنَّهُ مَوْضُوعٌ : قُلْتُ لَكِنْ رَوَاهُ أَبُو عُبَيْدِ الْقَاسِمِ عَنِ الْقَاسِمِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ مُوسَى بْنِ طَلْحَةَ قَالَ مَنْ مَسَحَ قَفَاهُ مَعَ رَأْسِهِ وُقِيَ مِنَ الْغُلِّ وَالْحَدِيثُ مَوْقُوفٌ إِلَّا أَنَّهُ فِي الْحُكْمِ مَرْفُوعٌ لِأَنَّ مِثْلَهُ لَا يُقَالُ بِالرَّأْيِ وَيُقَوِّيهِ مَا رُوِيَ مَرْفُوعًا مِنْ مُسْنَدِ الْفُرْدَوْسِ مِنْ حَدِيثِ ابْنِ عُمَرَ لَكِنَّ بِسَنَدٍ ضَعِيفٍ وَالضَّعِيفُ يُعْمَلُ بِهِ فِي فَضَائِلِ الْأَعْمَالِ اتِّفَاقًا وَلَذَا قَالَ أَئِمَّتُنَا إِنَّ مَسْحَ الرَّقَبَةِ مُسْتَحَبٌّ أَوْ سُنَّةٌ
অনুবাদ : গর্দান মাসেহ করা বেড়ী থেকে নিরাপদ (হাদীস)। ইমাম নববী শরহুল মুহাজ্জাবে বলেন, এটা মাউযু’। (মুল্লা আলী কারী রহ.) বলেন, আবু উবায়েদ কাসেম সূত্রে মুসা বিন তলহা থেকে বর্ননা করেন, যে ব্যক্তি মাথার সাথে তার গর্দান মাসেহ করবে সে কিয়ামতের দিন (গলায়) বেড়ী পরানো থেকে রেহাই পাবে। হাদীসটি যদিও মাউকুফ তবে মারফু’-এর শ্রেণীভুক্ত। কারণ এরকম বিষয়ে বিবেক খাটিয়ে কিছু বলা যায় না। এ হাদীসটিকে আরও শক্তিশালী করে মুসনাদে ফিরদাউসে ইবনে উমর থেকে জঈফ সনদে বর্ণিত মারফু’ হাদীস। আর ফজিলতের ক্ষেত্রে জঈফ হাদীস সর্বসম্মতিক্রমে গ্রহণযোগ্য। এ কারণে আমাদের ইমামগণ বলেন, গর্দান মাসেহ করা সুন্নাত বা মুস্তাহাব। (আল মাউযুআতুল কুবরা-৪৩৪)। এ বর্ণনা দ্বারা মুল্যা আলী কারী রহঃ ইমাম নববী রহ.-এর কথা প্রত্যাখ্যান করে গর্দান মাসেহ করার আমলকে কমপক্ষে মুস্তাহাব প্রমাণ করেছেন।
ইমাম আহমাদ রহ.-এর আমল
------------------------------
وَذَكَرَ الْقَاضِي وَغَيْرُهُ أَنَّ فِيهِ رِوَايَةً أُخْرَى: أَنَّهُ مُسْتَحَبٌّ. وَاحْتَجَّ بَعْضُهُمْ أَنَّ فِي خَبَرِ ابْنِ عَبَّاسٍ: ্রامْسَحُوا أَعْنَاقَكُمْ مَخَافَةَ الْغُلِّগ্ধ . وَاَلَّذِي وَقَفْت عَلَيْهِ عَنْ أَحْمَدَ فِي هَذَا، أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ قَالَ: رَأَيْت أَبِي إذَا مَسَحَ رَأْسَهُ وَأُذُنَيْهِ فِي الْوُضُوءِ مَسَحَ قَفَاهُ. [فَصْل مَا يُسْتَحَبّ فِي الْوُضُوء]
অনুবাদ : কাজী আবু ইয়া’লা রহ.সহ অন্যান্য মনিষিগণ বলেন, গর্দান মাসেহ করা মুসতাহাব মর্মে আরও একটি বর্ণনা রয়েছে। আবার কেউ কেউ দলীল পেশ করেছে যে, ইবনে আব্বাস রা.-এর হাদীসে রয়েছে যে, বেড়ী পরানোর আশংকায় তোমরা গর্দান মাসেহ কর। এ ব্যাপারে ইমাম আহমাদ থেকে আমি যা জানতে পেরেছি তা এই যে, ইমাম আহমাদ রহ.-এর ছেলে আব্দুল্লাহ বলেন, আমি আমার পিতাকে দেখেছি অযুতে যখন তিনি মাথা এবং কান মাসেহ করতেন তখন গর্দানও মাসেহ করতেন। (আল মুগনী লিইবনে কুদামা, অযুর মুস্তাহাব অধ্যায়)।
------------------------------
وَذَكَرَ الْقَاضِي وَغَيْرُهُ أَنَّ فِيهِ رِوَايَةً أُخْرَى: أَنَّهُ مُسْتَحَبٌّ. وَاحْتَجَّ بَعْضُهُمْ أَنَّ فِي خَبَرِ ابْنِ عَبَّاسٍ: ্রامْسَحُوا أَعْنَاقَكُمْ مَخَافَةَ الْغُلِّগ্ধ . وَاَلَّذِي وَقَفْت عَلَيْهِ عَنْ أَحْمَدَ فِي هَذَا، أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ قَالَ: رَأَيْت أَبِي إذَا مَسَحَ رَأْسَهُ وَأُذُنَيْهِ فِي الْوُضُوءِ مَسَحَ قَفَاهُ. [فَصْل مَا يُسْتَحَبّ فِي الْوُضُوء]
অনুবাদ : কাজী আবু ইয়া’লা রহ.সহ অন্যান্য মনিষিগণ বলেন, গর্দান মাসেহ করা মুসতাহাব মর্মে আরও একটি বর্ণনা রয়েছে। আবার কেউ কেউ দলীল পেশ করেছে যে, ইবনে আব্বাস রা.-এর হাদীসে রয়েছে যে, বেড়ী পরানোর আশংকায় তোমরা গর্দান মাসেহ কর। এ ব্যাপারে ইমাম আহমাদ থেকে আমি যা জানতে পেরেছি তা এই যে, ইমাম আহমাদ রহ.-এর ছেলে আব্দুল্লাহ বলেন, আমি আমার পিতাকে দেখেছি অযুতে যখন তিনি মাথা এবং কান মাসেহ করতেন তখন গর্দানও মাসেহ করতেন। (আল মুগনী লিইবনে কুদামা, অযুর মুস্তাহাব অধ্যায়)।
---------------------------------------
শেষ কথা হল-
হযরত ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত মারফু’ হাদীস (তারীখে আসফাহান, মুসনাদে ফেরদাউস), হযরত ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত মাউকুফ হাদীস (সুনানে বাইহাকী, ইবনুল ফারেস), বিশিষ্ট তাবিঈ হযরত মুসা বিন তলহার আছার (কিতাবুত তুহুর লিআবি উবায়েদ), শাফেঈ মাজহাবের ইমামগণের মধ্যে আল্লামা বাগাবী (রাফেঈ আল কাবীর), রুয়ানী (রাফেঈ আল কাবীর), ইবনে হাজার আসকালানী (তালখীছুল হাবীর), হানাফী মাজহাবের ইমামগণ থেকে আল্লামা আইনী (আল বিনায়াহ), মুল্লা আলী কারী, (আল মাউযুআতুল কুবরা) হাম্বলী মাজহাবের ইমাম হযরত আহমাদ বিন হাম্বল, (মুগনী লিইবনে কুদামা), বিশিষ্ট গায়রে মুকাল্লিদ আলেম আল্লামা শাওকানী (নাইলুল আওতার) প্রমুখসহ অসংখ্য মুহাদ্দিসীনে কিরাম গর্দান মাসেহ করার আমল গ্রহণ করেছেন। আমার অনুসন্ধানে ইমাম নববী রহ. ব্যতীত কোন মুহাদ্দিস এটাকে ভিত্তিহীন বলেননি।
ভাবতে বড়ই আশ্চর্য লাগে! কিছু মানুষ উম্মাতে মুসলিমার আমল এবং হাদীস গ্রহণের নীতিমালাকে জলাঞ্জলি দিয়ে নতুন কিছু বলা বা করার নেশায় বিভোর হয়ে পড়ছে। সহীহ হাদীস না পাওয়ার অযুহাতে গর্দান মাসেহ’র ফজিতকে অস্বীকার করে বসছে। এটাকে বিদআত বলে সমাজে অপপ্রচার চালাচ্ছে। অথচ এতসব যুগশ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিসগণসহ উম্মাতে মুসলিমার বিরাট অংশ এটাকে গ্রহণ করেছে। কেবল ইমাম নববী রহ.-এর দলীল বিহীন উক্তি ব্যতীত এর বিপরীতে পেশ করার মত তেমন কিছু নেই। এতএব, পূর্ববর্তী বিষয়ের আলোকে নিরাপেক্ষ পর্যালোচনা পূর্বক সকলের প্রতি সত্য গ্রহণের বিনীত অনুরোধ রাখছি।
শেষ কথা হল-
হযরত ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত মারফু’ হাদীস (তারীখে আসফাহান, মুসনাদে ফেরদাউস), হযরত ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত মাউকুফ হাদীস (সুনানে বাইহাকী, ইবনুল ফারেস), বিশিষ্ট তাবিঈ হযরত মুসা বিন তলহার আছার (কিতাবুত তুহুর লিআবি উবায়েদ), শাফেঈ মাজহাবের ইমামগণের মধ্যে আল্লামা বাগাবী (রাফেঈ আল কাবীর), রুয়ানী (রাফেঈ আল কাবীর), ইবনে হাজার আসকালানী (তালখীছুল হাবীর), হানাফী মাজহাবের ইমামগণ থেকে আল্লামা আইনী (আল বিনায়াহ), মুল্লা আলী কারী, (আল মাউযুআতুল কুবরা) হাম্বলী মাজহাবের ইমাম হযরত আহমাদ বিন হাম্বল, (মুগনী লিইবনে কুদামা), বিশিষ্ট গায়রে মুকাল্লিদ আলেম আল্লামা শাওকানী (নাইলুল আওতার) প্রমুখসহ অসংখ্য মুহাদ্দিসীনে কিরাম গর্দান মাসেহ করার আমল গ্রহণ করেছেন। আমার অনুসন্ধানে ইমাম নববী রহ. ব্যতীত কোন মুহাদ্দিস এটাকে ভিত্তিহীন বলেননি।
ভাবতে বড়ই আশ্চর্য লাগে! কিছু মানুষ উম্মাতে মুসলিমার আমল এবং হাদীস গ্রহণের নীতিমালাকে জলাঞ্জলি দিয়ে নতুন কিছু বলা বা করার নেশায় বিভোর হয়ে পড়ছে। সহীহ হাদীস না পাওয়ার অযুহাতে গর্দান মাসেহ’র ফজিতকে অস্বীকার করে বসছে। এটাকে বিদআত বলে সমাজে অপপ্রচার চালাচ্ছে। অথচ এতসব যুগশ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিসগণসহ উম্মাতে মুসলিমার বিরাট অংশ এটাকে গ্রহণ করেছে। কেবল ইমাম নববী রহ.-এর দলীল বিহীন উক্তি ব্যতীত এর বিপরীতে পেশ করার মত তেমন কিছু নেই। এতএব, পূর্ববর্তী বিষয়ের আলোকে নিরাপেক্ষ পর্যালোচনা পূর্বক সকলের প্রতি সত্য গ্রহণের বিনীত অনুরোধ রাখছি।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন