শিয়া ধর্মের লক্ষ্য-উদ্দেশ্যঃ সাহাবা (রা) প্রসঙ্গ
সাহাবারা কুরআন মুখস্থ করেছেন এবং তার উপরে আমল করেছেন, পরস্পর সংশোধন,উপদেশ,মতবিনিময়ের মাধ্যমে রাসূল(ﷺ)এর আমলকে শরিয়াত হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
কাফের মুশরিক,ইহুদি-নাসারাগণ সামনাসামনি ইসলামের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে সাহস না পেয়ে কিংবা ইসলামকে যুক্তি-দলিলে পরাভূত করতে ব্যর্থ হয়ে অন্য রাস্তা বেছে নেয়- তা হল, ইসলাম কায়েম ও উম্মতের কাছে পৌঁছাবার মাধ্যম সাহাবাদের অপবাদ দেয়া ও তাঁদের জামাআতকে বিতর্কিত করে দেয়া।
এই ব্যাপারে ইমাম আবু যুরআ আল-রাযী(র) বলেন- “যখন তুমি কোনো ব্যক্তিকে আল্লাহর রাসূল(ﷺ)এর সাহাবীগণের মধ্য থেকে কারও মর্যাদাহানি করতে দেখবে তখন তুমি জেনে রাখবে যে, সে হলো যিন্দীক। আর এটা এ জন্য যে, আমাদের নিকট রাসূল(ﷺ) সত্য এবং আল-কুরআন সত্য; আর এ কুরআন ও সুন্নাহ আমাদের নিকট আল্লাহর রাসূল(ﷺ)এর সাহাবীগণকে (শ্রেষ্ঠ মানুষ) হিসেবে পরিচিতি দান করেছে। আর তারা চাচ্ছে আমাদের সাক্ষীদেরকে (সাহাবীগণকে) বিতর্কিত করতে, যাতে তারা কুরআন ও সুন্নাহকে বাতিল করতে পারে। আর এ লক্ষ্যে তাদের জন্য উত্তম কৌশল হলো দূর্নাম রটনার মাধ্যমে তাদেরকে বিতর্কিত করা। সুতরাং তারা হলো যিন্দীক।” [আল কিফায়া ফি উলুম আল-রিওয়ায়াত,পৃ ৪৯]
ইসলামের শত্রুদের এই কুচক্রী চিন্তাধারায় জন্ম দেয়া হয়েছিল সাবাঈ শিয়া ধর্মের। তারাই প্রাণপণ উপস্থাপন করার চেষ্টা করে আসছে যে- ইসলাম রাসূল(ﷺ)এর ওফাতের পরেই দুর্বল হয়ে গেছিল, ক্ষমতালোভীদের পাল্লায় পরেছিল, কোণঠাসা হয়ে পরেছিল খারাপ লোকদের হাতে, ইসলামের শরিয়াত বিকৃতি প্রাথমিক যুগেই ঘটেছিল- ইত্যাদি। এমনকি পবিত্র কুরআনের দিকেও আঙ্গুল তোলা হয়েছে এই শিয়া ধর্মের মারফতে!
মোট কথা রাসূলুল্লাহ(ﷺ)কে “ব্যর্থ নবী” এবং ইসলামকে “খারাপের পাল্লায় পরে নষ্ট” দ্বীন হিসাবে কলঙ্ক দিতেই ইহুদিজাত শিয়া কাফেররা সাহাবাদের ব্যাপারে কুৎসা,অপবাদ,মিথ্যাচার ইত্যাদি করে থাকে।
যেসব ব্যক্তি সাহাবীগণকে গালি দেয়, ইমাম মালেক (র) তাদের সম্পর্কে বলেন, “তারা এমন সম্প্রদায়, যারা নবী(ﷺ)এর চরিত্রের মধ্যে কালিমা লেপন করতে চেয়েছে; কিন্তু তারা তাতে সক্ষম হয় নি। অতঃপর তারা তাঁর সাহাবীগণের ব্যাপারে দূর্নাম করে শেষ পর্যন্ত তাঁকে মন্দ ব্যক্তি বলে আখ্যায়িত করতে চেয়েছে, তারা চায় এটা বলতে যে, সে যদি সৎব্যক্তি হত, তবে তাঁর সাহাবীগণও সৎ হতেন। [আস সারিমুল মাসলুল, পৃ ৫৮০]
অনেক সময় শিয়া-রাফেজী ও অন্যান্য কাফের-মুশরিকরা চালাকি করে বলে থাকে যে, তারা শুধু “দোষী সাহাবী”দের খারাপ বলে থাকে; কিন্তু বাস্তবতা হল, তারা মুয়াবিয়া(রা)কে দিয়ে শুরু করে সকল সাহাবীদের ব্যাপারে খারাপ কথা বলে- এর কোন ব্যতিক্রম ঘটে না!
ইমাম নাসাঈ(র)কে মুয়াবিয়া(রা) সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে বলেন- “নিশ্চয়ই ইসলাম একটি ঘর,যার দরজা রয়েছে। ইসলামের দরজা হল সাহাবাগণ।যে ব্যক্তি সাহাবাদের আঘাত করলে সে ইসলামকে আক্রমণ করার ইচ্ছা করল; যেমন দরজা ভেঙ্গে ঘরে ঢোকার চেষ্টা করা হয়। যে ব্যক্তি মুয়াবিয়ার দিকে হাত বাড়াল যে যেন বাকি সাহাবাদের ব্যাপারে দুঃসাহস করল” [মুখতাসার তারিখে দামিশক- ইবন মুনযুর ২০৫/২; তাহযিবুল কামাল ৩৩৯/১; বুগিয়্যাত আল-রাগিব ১২৯পৃ]
আমরা মুসলিমরা সাহাবীদেরকে আল্লাহর স্থানে বসিয়ে শিরক করি না, কিংবা নবী-রাসূলদের মত ভুলত্রুটিহীন দাবি করে কুফর করি না। তাঁরা ছিলেন রক্ত-মাংসের মানুষ যাদের অনেকের মাঝেমধ্যে ভুলত্রুটি হয়েছিল; দ্বীনের স্বার্থেই তাঁরা আবেগ,ক্ষোভ,মতবিরোধ ইত্যাদি করেছেন। ব্যক্তিগত দ্বন্দকে তাঁরা কক্ষনোই দ্বীনের ভিতরে আসতে দেননি। বরং এমন হয়েছে যে, ইসলামপূর্ব যুগে কারো সাথে ঝগড়া থাকলে পরবর্তী সময়ে তার ব্যাপারে ফয়সালা দেয়ার থেকে বিরত থেকেছেন, যাতে ব্যক্তিগত বিরোধ ছাপ না ফেলার ন্যুণতম সম্ভাবনাও না থাকে।
ইমাম আহমদ ইবন হাম্বল(র) উদ্ধৃত করেছেনঃ তারিক বিন শিহাব বর্ণিত, একবার খালিদ ইবন ওয়ালিদ(রা) ও সা’দ বিন আবি ওয়াক্কাস(রা)’র মধ্যে সমস্যা হল; তখন এক ব্যক্তি এসে সা’দ(রা)’র পক্ষ হয়ে খালিদ(রা)’র সমালোচনা করতে লাগল। তা শুনে সা’দ ইবন আবি ওয়াক্কাস(রা) বললেন- আমাদের(সাহাবা) মধ্যে যা হয় তা দ্বীনে প্রভাব ফেলে না। [ফাযায়েলে সাহাবা- ১৩১১ ]
শিয়া কাফেররা আলী(রা)’র পক্ষ নিয়ে ইমামভিত্তিক ধর্মের জন্ম দেয় তার কারণ হল, যখন দুই পক্ষে দ্বন্দ চলে তখন যেকোন এক পক্ষে ভিরে গিয়ে দ্বন্দ বাড়িয়ে দেয়া এবং বিভক্তি সৃষ্টীর কাজ সহজ হয়। এরপরে থেকে তারা সাহাবাদের মানবোচিত রাগ,অভিমানের উক্তিগুলোকে কাটছাট,জালিয়াতি কিংবা বিকৃতি করে কুৎসিত ঘৃণা হিসাবে উপস্থাপন করে আসছে।
ইরাকের কুফা শহরের মুসলিম মুহাদ্দিস, বিখ্যাত তাবেয়ী সুলায়মান আল আ’মাশ(র) বলেন- “ আমরা তাদেরকে মুহাম্মদ(ﷺ)এর রাগের ব্যাপারে বর্ণনা করেছি, কিন্তু তারা(ইসলামবিরোধী) এটাকে দ্বীন বানিয়ে নিয়েছে।” [সিয়ার আ’লামিন নুবালা ৩৯৪/২]
কুকুরের ঘেউঘেউতে চাঁদের কিছু হয় না; ইহুদি-খ্রিস্টান,শিয়া-কাদিয়ানিদের ইসলামের হাদিস-ইতিহাস এর রিওয়ায়াত থেকে অপমানের চেষ্টাও তেমনি বৃথা।
-----------------
~ The Rafidologist: এসো শিয়া চিনি
~ The Rafidologist: এসো শিয়া চিনি
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন