পোস্টগুলি

ফেব্রুয়ারী, ২০২২ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

মাহরাম ছাড়া নারীদের ভ্রমণ করার শরঈ বিধান

ছবি
পর্ব - ১ মূল বিষয়ে আলোচনার পূর্বে ভূমিকাস্বরূপ কিছু কথা বলা প্রয়োজন। মানুষের সাধ্যের বাইরে আল্লাহ তায়ালা কোন বিধান আরোপ করেন না। এ সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা কুরআনে পাকে বলেন; لَا يُكَلِّفُ الله نَفسًا إِلَّا وُسعَهَا “অর্থাৎ সাধ্যের বাহিরে আল্লাহ তায়ালা কোন বিষয় কারো উপর চাপিয়ে দেন না।” (সুরা বাকারা, ২৮৬) সুতরাং যেকোনো বিধান সামনে আসলেই এই কথাটি মাথায় রাখতে হবে যে, এটা আমাদের সাধ্যের মধ্যেই রয়েছে। অন্যথায় আল্লাহ তায়ালা এই বিধান অবতীর্ণ করতেন না। ইসলাম কোন বিষয়ের উপকার অর্জনের পূর্বে সেই বিষয়ের ক্ষতিকে দূর করার প্রতি মনযোগ দিয়েছে। এইজন্য মদের মধ্যে বাহ্যিক কিছু উপকার থাকলেও তার ক্ষতির দিকটি প্রাধান্য পাওয়ায় ইসলাম মদকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। এ সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেন, يَسـألُونَكَ عَنِ الخَمرِ والمَيسِر، قُل فِيهِمَا إِثم كَبِير وَمَنافِعُ لِلنَّاسِ وَإِثمُهُمَا أَكبَرُ مِن نَّفعِهِمَا “তারা আপনাকে মদ এবং জুয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করছে, আপনি বলুন উভয়ের মধ্যে রয়েছে অনেক ক্ষতি এবং মানুষের জন্য বহু উপকার। তবে উপকারের চেয়ে ক্ষতিটা বেশি।” (সুরা বাকারা, ২১৯) এক্ষেত্রে ফিকহী একটি মূলন

বই পর্যালোচনাঃ ব্যাংক : ভুল প্রশ্নের ভুল উত্তর

ছবি
ইসলামী ব্যাংক নিয়ে বিতর্ক অনেক পুরাতন ইস্যু। এই প্রসঙ্গে সম্প্রতি পড়ে শেষ করলাম যাহিদ সিদ্দিক মুঘলের লেখা 'ব্যাংক : ভুল প্রশ্নের ভুল উত্তর' বইটি। আমার ব্যক্তিগত পাঠ-মূল্যায়ন তুলে ধরছি।  ইসলামি ব্যাংকিং নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে লেখালেখি অনেক দিন ধরেই চলে আসছে। বিপক্ষে যারা লেখছেন তাদের লেখাগুলো আবার দুই ধরনের। ফিকহী ও নযরী। আলোচ্য বইটি দ্বিতীয় শ্রেণির। মানে এতে ব্যাংকিং ব্যবস্থার নযরীয়াতি সমালোচনা করা হয়েছে। এবং এক্ষেত্রে লেখক যত্নের সাথে কিছু বিষয় তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। যথা : পুঁজিবাদের ইসলামীকরণ, ব্যাংক কি আদৌ ইসলামী হতে পারে? ব্যাংকিংয়ের ইসলামীকরণের উপর পর্যালোচনা ইত্যাদি।  এই বইয়ের একটি বিশেষ অংশ উপমহাদেশে ইসলামী ব্যাংকিংয়ের প্রাণপুরুষ মাওলানা তাকি উসমানী সাহেবের দৃষ্টিভঙ্গিকে খণ্ডণ করার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। সেখানে লেখক তকি সাহেবের উদ্ভাবিত পদ্ধতিসমূহের বিশুদ্ধতা পর্যালোচনা করার পরিবর্তে তার দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েই পুরোটা আলোচনা করেছেন।  প্রথমে আমি লেখকের ব্যাপারে সংক্ষিপ্তাকারে কিছু মূল্যায়ণ পেশ করব। তারপর পয়েন্ট ধরে ধরে কিছু ব্যাপারের উপর আলোকপাত করব। সর্বশেষ যেসব বিষয় ভালো লেগেছে

আল্লাহর যাত ও সিফাতের অবস্থার পরিবর্তনের ব্যাপারে সঠিক আক্বীদাহ

আল্লাহর যাত (সত্ত্বা) ও সিফাতের (গুণাবলির) ক্ষেত্রে স্থানান্তর, নড়াচড়া, কোথাও স্থির হওয়া ও অবস্থার পরিবর্তনের আক্বীদাহ বনাম আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের আক্বীদাহঃ আল্লাহ তা'আলা বলেন, وَّ جَآءَ رَبُّكَ وَ الۡمَلَكُ صَفًّا صَفًّا. কিয়ামতের দিন আপনার রব (পালনকর্তা)  ও ফেরেশতারা সারিবদ্ধ হয়ে আসবেন (উপস্থিত হবেন)। [সূরা ফজর: ২২] এই আয়াত প্রসঙ্গে ইমাম ইবনু আব্দিল বার আল মালেকী রহ. বলেন, (কুরআন ও হাদীসের বিভিন্ন স্থানে আল্লাহ তা'আলার আগমনের কথা বলা হয়েছে) আল্লাহ তা'আলার এই আগমন হরকত, যাওয়াল কিংবা ইনতেক্বাল নয় (অর্থাৎ নড়াচড়া করা, আপন অবস্থান থেকে সরে যাওয়া ও স্থানান্তর হওয়া নয়)। কেননা আগমনকারী যখন কোন জিসম (দেহ বিশিষ্ট) এবং জাওহার (কোন উপাদান বিশিষ্ট পদার্থ) হয় তখন আগমনের ক্ষেত্রে হরকত, যাওয়াল ও ইনতেকাল এসব গুণের অধিকারী হতে হয়। সুতরাং যেহেতু একথা প্রমাণিত হয়েছে যে, আল্লাহর তা'আলা জিসম ও জাওহার (তথা দেহ বিশিষ্ট ও উপাদান বিশিষ্ট পদার্থ) নয়, তাই তাঁর আগমনের জন্য  নড়াচড়া করা কিংবা স্থানান্তর হওয়া জরুরী নয়। ليس مجيئه تعالى حركةً ولا زوالًا ولا انتقالًا؛ لأن ذلك إنما يكون إذا كان ال

উসূলুত তাকফীর : নাক্বেদুল ইমান ২

নাক্বেদুল ঈমান বা ঈমান ভঙ্গের কারণ - (২) (দাড়ি,টুপি,পর্দা, আযান ও জিহাদ নিয়ে ঠাট্টা বিদ্রুপ ও কটুক্তি করলে কি ঈমান থাকবে?) ইসলামের কোন মৌলিক ও অকাট্য বিধানকে অথবা ইসলামের কোন শি'আর  নিয়ে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যতা করা এবং হাসি-তামাশার পাত্র বানানোর যেকোনো কাজ কুফুরী। যেমনঃ দাড়ি, পুরুষদের টাখনুর উপরে কাপড় পরিধান করা,ইসলামের সুমহান ও অকাট্য বিধান জিহাদকে বিভিন্ন শব্দে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা, নামাজ-রোজা,হজ্জ, যাকাত,কালিমা,মেয়েদের পর্দা,আযান সহ বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়ে হাসি মজা ও ঠাট্টা ও কটুক্তি করা স্পষ্ট কুফুরি। এতে ঈমান চলে যাবে। এবং বিবাহিত হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিবাহ ভেঙ্গে যাবে! মহান আল্লাহ তা'আলা বলেন-  وَلَئِن سَأَلْتَهُمْ لَيَقُولُنَّ إِنَّمَا كُنَّا نَخُوضُ وَنَلْعَبُ ۚ قُلْ أَبِاللَّهِ وَآيَاتِهِ وَرَسُولِهِ كُنتُمْ تَسْتَهْزِئُونَ   لاَ تَعْتَذِرُواْ قَدْ كَفَرْتُم بَعْدَ إِيمَانِكُمْ "আর যদি তুমি তাদের কাছে জিজ্ঞেস কর, তবে তারা বলবে, আমরা তো কথার কথা বলছিলাম এবং কৌতুক-ঠাট্টা করেছিলাম। আপনি বলুন, তোমরা কি আল্লাহর সাথে, তাঁর হুকুম আহকামের সাথে এবং তাঁর রসূলের সাথে ঠাট্টা করছিলে? ত

উসূলুত তাকফীর : তাকফীরের প্রতিবন্ধকতা

উসূলুত তাকফীর ও মাওয়ানিউত তাকফীর তথা তাকফীরের মূলনীতি ও তাকফীরের প্রতিবন্ধকতা: আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাতের সকল ইমামদের ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত হচ্ছে- কবীরাহ গুনাহের কারণে কোন মুসলিমকে আমরা কাফের বলিনা। ইমাম ত্বহাবী রহিমাহুল্লাহ'র ভাষায়- ولا نكفرأحداً من أهل القبلة بذنب ، ما لم يستحله. 'আমরা (আমাদের) কিবলাপন্থি কোন ব্যক্তিকে গুনাহের কারণে কাফের বলিনা, যতক্ষণ না সে ঐ(অকাট্য) গুনাহকে (গুনাহ না মনে করে) হালাল পোষণ করে থাকে।' ইমাম ইবনে তাইমিয়া রহ. বলেন- يجب الاحتراز من تكفير المسلمين بالذنوب والخطايا فإنه أول بدعة ظهرت في الإسلام فكفر أهلها المسلمين واستحلوا دماءهم وأموالهم. 'গুনাহ ও নাফরমানির ভিত্তিতে মুসলিমদের তাকফির করা থেকে সাবধান থাকা জরুরি। কারণ, এটিই ইসলামের ইতিহাসে দেখা দেয়া সর্বপ্রথম বিদআত। ফলশ্রুতিতে তারা (খারেজীরা) মুসলিমদের তাকফির করেছে এবং জান-মাল বৈধ গণ্য করেছে।' [মাজমূউল ফাতাওয়া ১৩/৩১] রাসূলুল্লাহ ﷺ থেকে বর্ণিত - أيما رجل قال لأخيه: يا كافر فقد باء بها أحدهما 'কোন ব্যক্তি যখন তার (মুসলমান) ভাইকে 'হে কাফের' বলে সম্বোধন করে তখন দুইজনের যেকোন একজনের উ

পাঠ সমালোচনা – কিতাবুত তাওহীদ (অসমাপ্ত)

পাঠ সমালোচনা – ১০ (প্রথম পর্ব)  বই পরিচয় বইয়ের নাম : কিতাবুত তাওহীদ লেখক : ইমামুদ দাওয়াহ মুহাম্মাদ বিন আবদুল ওয়াহহাব নজদি রহ. অনুবাদক : মাওলানা এনামুল হক মাসউদ প্রকাশনী : আর-রিহাব পাবলিকেশন মুদ্রিত মূল্য : ৭০০ ৳ পৃষ্ঠাসংখ্যা : ৪৭৮  বইটির মূল (আরবি) যে সংস্করণটি আমার কাছে রয়েছে, তাতে মূল পাঠ হলো সর্বমোট ১৫৬ পৃষ্ঠা। ভূমিকা, সূচিপত্র, এমনকি প্রচ্ছদ পৃষ্ঠাসহকারে সর্বমোট ১৬৮ পৃষ্ঠা। অবশ্য বইটি আরবি থেকে অনূদিত হয়েছে নাকি উর্দু থেকে, তা আমার সামনে স্পষ্ট নয়। ভূমিকায় এ সম্পর্কিত কোনো আলোচনা আমার চোখে পড়েনি। মূল বইয়ের সঙ্গে অনুবাদের পৃষ্ঠাসংখ্যার এত তফাৎ হওয়ার অন্যতম কারণ হলো এর অতিরিক্ত সংযোজন। বইটির প্রথম ১৫ পৃষ্ঠা ব্যয়িত হয়েছে অনুবাদকের কথা, সম্পাদকের কথা ইত্যাদিতে। এরপর এর ভূমিকা দীর্ঘ হয়েছে ৫৭ পৃষ্ঠা পর্যন্ত। সর্বশেষে একটি পরিশিষ্ট যোগ করা হয়েছে ৪০৪ থেকে ৪৭৭ অর্থাৎ দীর্ঘ ৭৩ পৃষ্ঠাব্যাপী। মাঝে মূল বই হচ্ছে ৫৮ থেকে ৪০৩ পৃষ্ঠা পর্যন্ত সর্বমোট ৩৪৫ পৃষ্ঠা। এর প্রায় প্রতিটি পৃষ্ঠায়ও ছোট-বড় টীকা রয়েছে। যার কারণে মূল ও অনুবাদগ্রন্থের পৃষ্ঠাসংখ্যার এই তফাৎটা যৌক্তিক। বইটির আরও একাধিক অনুবাদ বাংলা