হুরমতে মুসাহারাত–এর শরয়ি বিধান
মূল : মুফতি খাইরুল ইসলাম
সম্পাদনা : বুহুস - Buhus এডমিন প্যানেল
সমাজে এমন কিছু বিষয় প্রচলিত আছে যা আমাদের অজান্তেই দুনিয়া ও আখিরাত বরবাদ করে চলেছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে হুরমতে মুসাহারাত। পারিবারিক জীবনে এটি এমন এক ভুল, যার কোনো সংশোধন নেই।
মানুষের মাঝে সম্পর্ক এবং মাহরাম–আত্মীয়তা তিন ধরনের হয়ে থাকে :
১. নসব তথা বংশীয় সম্পর্ক
২. রিযাআত তথা দুধ সম্পর্ক
৩. মুসাহারাত তথা বৈবাহিক সম্পর্ক।
বিবাহের মাধ্যমে যে সম্পর্ক স্থাপিত হয় তাকে বলা হয় মুসাহারাত। যেমন : শ্বশুর-শাশুড়ি এবং তাদের উর্ধ্বতন-নিম্নতন অর্থাৎ তাদের পিতা-মাতা এবং স্ত্রীর কন্যা/স্বামীর ছেলে ইত্যাদি। এই আত্মীয়দের সাথে সম্পৃক্ত হুরমতকে ❝হুরমতে মুসাহারাত❞ বলা হয়ে থাকে।
আল্লাহ তাআলা বংশগত এবং বৈবাহিক উভয় প্রকারের আত্মীয়দের সম্মান করার হুকুম দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَهُوَ الَّذِي خَلَقَ مِنَ الْمَاءِ بَشَرًا فَجَعَلَهُ نَسَبًا وَصِهْرًا [الفرقان: 54]
❝আর তিনিই মানুষকে সৃষ্টি করেছেন পানি হতে ; তারপর তিনি তাকে বংশগত ও বৈবাহিক সম্পর্কশীল করেছেন।❞ (সুরা ফুরকান : ৫৪)
আর ❝হুরমতে মুসাহারাত❞ যেমনিভাবে বিবাহের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়, তেমনিভাবে ব্যভিচার দ্বারাও প্রমানিত হয়। এটাই হানাফি, হাম্বলি এবং এক বর্ণনা মতে মালিকি মাজহাবের মতামত। আর হানাফি মাজহাবে গ্রহণযোগ্য শর্তাবলি সহ দাওয়ায়ে যিনাহ তথা যা ব্যভিচারের দিকে আহ্বান করে, তা দ্বারাও ❝হুরমতে মুসাহারাত❞ সাব্যস্ত হয়ে যায়। আর এটাই অধিকাংশ সাহাবা ও বড় বড় তাবিয়িনের অভিমত এবং যার স্বপক্ষে কুরআন–সুন্নাহের প্রমাণাদিও রয়েছে।
এ কারণে কোনো ব্যক্তি যদি,
১. কোনো মহিলাকে বিবাহ করে ফেলে কিংবা,
২. তার সাথে সহবাস করে, চাই তা আকদে সহিহ অথবা আকদে ফাসিদের পরই হোক কিংবা,
৩. ব্যভিচার করে কিংবা,
৪. কোনো মহিলাকে কামভাবের সাথে কোনো প্রতিবন্ধকতা ব্যতিরেকে স্পর্শ করে কিংবা,
৫. কামভাবের সাথে তার লজ্জাস্থানের ভিতরাংশে নজর দেয় —
তাহলে ❝হুরমতে মুসাহারাত❞ সাব্যস্ত হয়ে যাবে। এবং ব্যভিচারী পুরুষ মহিলা উভয়ের উর্ধ্বতন–নিম্নতন উভয়দিকে এই হুরমতের বিস্তার ঘটব।
আল্লাহ তাআলা বলেন,
{وَلَا تَنْكِحُوا مَا نَكَحَ آبَاؤُكُمْ مِنَ النِّسَاءِ إِلَّا مَا قَدْ سَلَفَ إِنَّهُ كَانَ فَاحِشَةً وَمَقْتًا وَسَاءَ سَبِيلًا} [النساء: 22]
❝নারীদের মধ্যে তোমাদের পিতৃ পুরুষ যাদেরকে বিয়ে করেছে তোমরা তাদেরকে বিয়ে করো না ; তবে পূর্বে যা সংঘটিত হয়েছে (সেটা ক্ষমা করা হলো) নিশ্চয় তা ছিল অশ্লীল, মারাত্মক ঘৃণ্য ও নিকৃষ্ট পন্থা।❞ (সুরা নিসা : ২২)
আর এখানে বিবাহ দ্বারা ❝সহবাস করা❞ উদ্দেশ্য, চাই তা হালালভাবে করুক বা হারাম পন্থায়। কারণ, বিবাহের হাকিকি অর্থ হলো সহবাস, আর আকদে নিকাহ তার রূপক অর্থ। তাই আয়াতের উদ্দেশ্য হলো, যে মহিলার সাথে পিতা সহবাস করেছে তাকে ছেলে বিবাহ করতে পারবে না।
যেমনটা বর্ণনা করেছেন ইমাম আবু বকর জাসসাস রাহ.,
"فثبت بذلك أن اسم النكاح حقيقة للوطء، مجاز في العقد، فوجب إذا كان هذا على ما وصفنا أن يحمل قوله تعالى: {ولا تنكحوا ما نكح آباؤكم من النساء} على الوطء، فاقتضى ذلك تحريم من وطئها أبوه من النساء عليه؛ لأنه لما ثبت أن النكاح اسم للوطء لم يختص ذلك بالمباح منه دون المحظور، كالضرب والقتل والوطء نفسه لايختص عند الإطلاق بالمباح منه". (أحكام القرآن للجصاص (3/ 51) سورۂ نساء،آیت:22، ط:داراحیاء التراث العربي)
আল্লাহ তাআলা আরো বলেন,
{وَلَا تَقْرَبُوا الزِّنَا إِنَّهُ كَانَ فَاحِشَةً وَسَاءَ سَبِيلًا} [الإسراء: 32]
❝আর যিনার ধারে-কাছেও যেও না, নিশ্চয় তা অশ্লীল ও নিকৃষ্ট আচরণ।❞ (সুরা বনি ইসরাইল ৩২)
আবুল হাসান তাবারি রাহ. এই আয়াতের ব্যাখ্যায় লিখেন যে,আল্লাহ তাআলা ব্যভিচার ও যা ব্যভিচারের দিকে আহবান করে উভয়টা থেকে নিষেধ করেছেন এবং এর কারণ বর্ণনা করা হয়েছে অশ্লীলতা। আর যেখানে নিজের পিতার বিবাহিত স্ত্রীকে বিবাহ করতে নিষেধ করা হয়েছে সেখানেও একই কারণ উল্লেখ করা হয়েছে যে অশ্লীলতা। এর দ্বারা বোঝা যায়, উভয়টা হারামের দিক দিয়ে সমান সমান। যেমন তিনি বলেন,
"قوله تعالى: (وَلا تَقْرَبُوا الزِّنى إِنَّهُ كانَ فاحِشَةً) ، الآية/ 32 يدل على تحريم الزنا، وهو الذي تعرى عن نكاح وعن شبهة نكاح. ووصف الله تعالى نكاح امرأة الأب بما وصف الزنا به، فقال تعالى: (وَلا تَنْكِحُوا ما نَكَحَ آباؤُكُمْ مِنَ النِّساءِ إِلَّا ما قَدْ سَلَفَ إِنَّهُ كانَ فاحِشَةً وَمَقْتاً وَساءَ سَبِيلًا) وذلك يدل على مساواته في التحريم، وبينا ما يعترض به عليه".(أحكام القرآن للكيا الهراسي الشافعي(4/ 258)، ط:دارالکتب العلمیہ)
আবু হানি রা. থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি কোনো মহিলার লজ্জাস্থান দেখে তার জন্য সে মহিলার মা এবং কন্যা হারাম হয়ে যাবে।
"عن حجاج، عن أبي هانئ، قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «من نظر إلى فرج امرأة، لم تحل له أمها، ولا ابنتها»". (مصنف ابن أبي شيبة (3/ 480) کتاب النکاح، باب الرجل يقع على أم امرأته أو ابنة امرأته ما حال امرأته، برقم:16235، ط: مکتبة الرشد، ریاض)
এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করল, হে আল্লাহর রাসুল, জাহিলিয়াতের যুগে আমি এক নারীর সাথে ব্যভিচার করেছি, এখন কি আমি তার মেয়ের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে পারব ? তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জবাবে বললেন, আমি এটাকে বৈধ মনে করি না এবং এটাও বৈধ নয় যে তুমি এমন নারীকে বিবাহ করবে যার কন্যার শরীরের এমন স্পর্শকাতর জায়গা দেখেছো–যা সাধারণ স্ত্রীর বেলায় দেখে থাকো।
"عن أبي بكر بن عبد الرحمن بن أم الحكم، أنه قال: قال رجل: يا رسول الله، إني زنيت بامرأة في الجاهلية وابنتها، فقال النبي صلى الله عليه وسلم: " لا أرى ذلك، ولايصلح ذلك: أن تنكح امرأة تطلع من ابنتها على ما اطلعت عليه منها".
(مصنف عبد الرزاق الصنعانی (7/ 201) کتاب الطلاق، باب الرجل یزنی بأخت امرأتہ، برقم:12784، ط:المجلس العلمی، ہند)
এক ব্যক্তি নিজের শাশুড়ির সাথে ব্যভিচার করলে তার ব্যাপারে ইমরান ইবনু হুসাইন রা. বলেন, তার ওপর তার স্ত্রী হারাম হয়ে গিয়েছে।
"عن قتادة، عن عمران بن حصين في «الذي يزني بأم امرأته، قد حرمتا عليه جميعاً". (مصنف عبد الرزاق الصنعانی (7/ 200) کتاب الطلاق، باب الرجل يزني بأم امرأته، وابنتها، وأختها، برقم:12776، ط:المجلس العلمي، هند)
এমনিভাবে আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত আছে, যে ব্যক্তি কোনো নারীর লজ্জাস্থান দেখে এবং তার মেয়ের লজ্জাস্থানও দেখে তাহলে আল্লাহ তাআলা তার প্রতি কিয়ামতের দিন তাঁকাবেন না।
"عن علقمة، عن عبد الله، قال: «لاينظر الله إلى رجل نظر إلى فرج امرأة وابنتها".
(مصنف ابن أبي شيبة (3/ 480) کتاب النکاح، باب الرجل يقع على أم امرأته أو ابنة امرأته ما حال امرأته، برقم:16234، ط: مکتبة الرشد، ریاض)
এমনিভাবে মুসান্নাফু ইবনি আবি শাইবা ও মুসান্নাফু আবদুর রাজ্জাকে রয়েছে,
" عن قيس بن سعد، عن مجاهد، قال: «إذا قبلها أو لمسها أو نظر إلى فرجها حرمت عليه ابنتها»". (مصنف ابن أبی شيبۃ (4/ 10) کتاب النکاح، باب ما قالوا في الرجل يقبل المرأة، تحل له ابنتها،الخ، برقم:17266، ط: مکتبة الرشد، ریاض)
" عن معمر، عن ابن طاوس، عن أبيه قال: «إذا نظر الرجل في فرج امرأة من شهوة لا تحل لابنه ولا لأبيه» ۔۔۔ عن أبي حنيفة، عن حماد، عن إبراهيم قال: «إذا قبل الرجل المرأة من شهوة، أو مسها، أو نظر إلى فرجها لم تحل لأبيه، ولا لابنه»". (مصنف عبد الرزاق الصنعانی (6/ 278) کتاب النکاح، باب :وربائبکم، ، برقم:10831، ط:المجلس العلمی، ہند)
ফাতওয়ায়ে শামিতে রয়েছে,
" (قوله: مصاهرةً) كفروع نسائه المدخول بهن، وإن نزلن، وأمهات الزوجات وجداتهن بعقد صحيح، وإن علون، وإن لم يدخل بالزوجات وتحرم موطوءات آبائه وأجداده، وإن علوا ولو بزنى والمعقودات لهم عليهن بعقد صحيح، وموطوءات أبنائه وآباء أولاده، وإن سفلوا ولو بزنى والمعقودات لهم عليهن بعقد صحيح فتح، وكذا المقبلات أو الملموسات بشهوة لأصوله أو فروعه أو من قبل أو لمس أصولهن أو فروعهن". (حاشیہ ابن عابدین(3/ 28)، کتاب النکاح، فصل فی المحرمات، ط: سعید)
কুরআন-সুন্নাহ এবং ফুকাহায়ে কেরামের বক্তব্য দ্বারা প্রমাণিত হলো যে, ❝হুরমতে মুসাহারাত❞ বিবাহ, ব্যভিচার এবং কামভাবের সাথে স্পর্শ করা এবং কামভাবের সাথে লজ্জাস্থানের ভেতরের অংশ দেখার দ্বারা সাব্যস্ত হয়ে যায়।
হুরমতে মুসাহারাতের এই চার কারণের কিছু আছে এমন, যার ব্যাপারে সকল ইমামগণ ঐক্যমত্য পোষণ করেছেন, আর কিছুর ব্যাপারে মতভেদ রয়েছে।
১. সহিহ বিবাহ (Proper Marriage) ;
এরপর সর্বসম্মতিক্রমে হুরমতে মুসাহারাত সাব্যস্ত হয়ে যায়।
فحرمۃ المصاہرۃ تثبت بالعقدالصحیح بدون کلام(عبدالرحمن الجزیری ،الفقہ علی المذاہب الاربعۃ ،دارالکتب العلمیۃ ، بیروت ،طبع ثانی
২. স্ত্রী-সহবাস (Sexual Intercourse) ;
সহিহ বিবাহের পর স্ত্রী-সহবাসের মাধ্যমে হুরমত সাব্যস্ত হয়ে যায় এবং ব্যভিচারের মাধ্যমে সহবাসের দ্বারাও হানাফি, হাম্বলি এবং এক বর্ণনামতে ইমাম মালিকের নিকটও হুরমতে মুসাহারাত সাব্যস্ত হয়ে যায়। আর শাফিয়ি ও মালিকি মাজহাবের গ্রহণযোগ্য মতামত হলো, ব্যভিচার দ্বারা হুরমত সাব্যস্ত হয় না।
ہو:ومناط التحریم عند الحنفیۃ و الحنابلۃ الوطء حلالا کان او حراما(الموسوعۃ الفقہیۃ الکویتیۃ،وزارۃ الأوقاف والشؤن الأسلامیۃ الکویت،۱۴۲۷،۳۶/۲۱۴)۔
৩-৪. স্পর্শ ও নজর (Touch with lust & Watch genitals with lust) ;
কামভাবের সাথে স্পর্শ এবং কামভাবের সাথে লজ্জাস্থানের ভেতরের অংশ দেখার দ্বারা হানাফি মাজহাব অনুযায়ী হুরমতে মুসাহারাত সাব্যস্ত হয়ে যাবে।
تثبت حرمۃ المصاہرۃ بالزنا والمس والنظر بدون نکاح والملک وشبہتہ لان المس والنظرسبب داع الی الوطء فیقام مقامہ احتیاطا ( الفقہ الاسلامی و ادلتہ ۹/۶۶۳۰)
ক. সহিহ বিবাহ বা ফাসিদ (বাতিল) বিবাহের পর স্ত্রী-সহবাসের (Sexual Intercourse) মাধ্যমে সর্বসম্মতিক্রমে হুরমতে মুসাহারাত প্রমাণিত হয়ে যায়। তবে এর জন্য নিম্নোক্ত কয়েকটি শর্ত রয়েছে,
১. যার সাথে সহবাস করা হয়েছে, সেই নারী জীবিত হতে হবে।
২. যার সাথে সহবাস করা হয়েছে, সেই নারী কামভাবের অধিকারী/কামভাব জাগ্রত হয় তার–এমন হতে হবে বা তার বয়স কমপক্ষে ৯ বছর হতে হবে এবং বৃদ্ধা নারীগণও এ হুকুমের অন্তর্ভুক্ত।
৩. এমনিভাবে পুরুষও বালেগ হতে হবে অথবা সাবালেগ হতে হবে। গ্রহণযোগ্য মত অনুযায়ী তার বয়স কমপক্ষে ১২ বছর হতে হবে।
৪. স্ত্রী-সহবাস হতে হবে সামনের দিক দিয়ে, পিছন দিক দিয়ে নয়।
یشترط فی الوطء ثلاتۃ امور ،ان تکون الموطوء ۃحیۃ و ان تکون مشتہاۃ وہی من کان سنہا تسع سنین فاکثر و الشرط الثالث ان یکون الوطء فی القبل (عبدالرحمن الجزیری ،الفقہ علی المذاہب الاربعۃ ۴/۶۲)
খ. স্পর্শ করার দ্বারা (Touch with lust) হুরমতে মুসাহারাত সাব্যস্ত হওয়ার জন্য কয়েকটি শর্ত রয়েছে। শর্তগুলো হলো,
১. সরাসরি খালি গায়ে বা এমন কাপড়ের ওপর দিয়ে স্পর্শ করা, যা এতটাই পাতলা যে, শরীরের উষ্ণতা অনুভূত হয়।
যদি এমন মোটা কাপড় পরে থাকে যে, স্পর্শের মাধ্যমে শরীরের উষ্ণতা অনুভূত হয় না–তাহলে তা হুরমত সাব্যস্ত হওয়ার মতো শর্ত বলে গণ্য হবে না।
ﻓﻰ ﺍﻟﺪﺭ ﺍﻟﻤﺨﺘﺎﺭ - ﺃﻭ ﻟﻤﺲ ) ﻭﻟﻮ ﺑﺤﺎﺋﻞ ﻻ ﻳﻤﻨﻊ ﺍﻟﺤﺮﺍﺭﺓ
ﻭﻗﺎﻝ ﺍﺑﻦ ﻋﺒﺪﻳﻦ – ( ﻗﻮﻟﻪ : ﺑﺤﺎﺋﻞ ﻻ ﻳﻤﻨﻊ ﺍﻟﺤﺮﺍﺭﺓ ) ﺃﻱ ﻭﻟﻮ ﺑﺤﺎﺋﻞ ﺇﻟﺦ ، ﻓﻠﻮ ﻛﺎﻥ ﻣﺎﻧﻌﺎ ﻻ ﺗﺜﺒﺖ ﺍﻟﺤﺮﻣﺔ ، ﻛﺬﺍ ﻓﻲ ﺃﻛﺜﺮ ﺍﻟﻜﺘﺐ ( ﺍﻟﻔﺘﺎﻭﻯ ﺍﻟﺸﺎﻣﻴﺔ، ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﻨﻜﺎﺡ، ﻓﺼﻞ ﻓﻰ ﺍﻟﻤﺤﺮﻣﺎﺕ 108-107/3- )
২. আর যদি মাথার চুলের ওপর হাত লাগায় এবং মাথার উপরিভাগের চুল স্পর্শ করে (যার মাধ্যমে মাথার বা শরীরের উষ্ণতা অনুভূত হয়)।
আর যদি মাথা থেকে নিচে ঝুলে পড়া বা উপরে উঠে থাকা চুলে হাত লাগায় (যাতে মাথার বা শরীরের কোনো উষ্ণতাই অনুভূত হয় না)–তাহলে তা হুরমত সাব্যস্ত হওয়ার মতো শর্ত বলে গণ্য হবে না।
قال الشامی فی ردالمحتار ٩\٢٦٩
(قوله ولو لشعر علی الرأس) خرج به المسترسل؛ وظاهر ما فی الخانیة ترجیح ان مس الشعر غیر محرم وجزم فی المحیط بخلافه ورجحه فی البحر؛ وفصل فی الخلاصة فخص التحریم بما علی علی الرأس دون المسترسل..
৩. স্পর্শ করলে, পুরুষ বা নারী যেকোনো একজনের উত্তেজনা অনুভূত হওয়া। পুরুষের উত্তেজনা অনুভূত হওয়ার লক্ষণ হলো, গোপনাঙ্গ শক্ত হয়ে যাওয়া (Getting an erection of penis), আর যদি আগ থেকেই শক্ত হয়ে থাকলে, স্পর্শ করার পর উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়া।
যদি স্পর্শের সময় দুজনের কারও এরূপ অবস্থা না হয় কিংবা তা আকস্মিক (Accidental) হয়, তাহলে তা হুরমত সাব্যস্ত হওয়ার মতো শর্ত বলে গণ্য হবে না।
ﻭﻓﻰ ﺭﺩ ﺍﻟﻤﺤﺘﺎﺭ - ﻗﻮﻟﻪ ( ﺑﺸﻬﻮﺓ ) ﺍﻱ ﻭﻟﻮ ﻣﻦ ﺍﺣﺪﻫﻤﺎ ،
ﻭﻓﻰ ﺍﻟﺪﺭ ﺍﻟﻤﺨﺘﺎﺭ - ﻭﺣﺪﻫﺎ ﻓﻴﻬﻤﺎ ﺗﺤﺮﻙ ﺁﻟﺘﻪ ﺃﻭ ﺯﻳﺎﺩﺗﻪ ﺑﻪ ﻳﻔﺘﻰ
ﻭﻓﻲ ﺍﻣﺮﺃﺓ ﻭﻧﺤﻮ ﺷﻴﺦ ﻛﺒﻴﺮ ﺗﺤﺮﻙ ﻗﻠﺒﻪ ﺃﻭ ﺯﻳﺎﺩﺗﻪ ( ﺍﻟﻔﺘﺎﻭﻯ ﺍﻟﺸﺎﻣﻴﺔ، ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﻨﻜﺎﺡ، ﻓﺼﻞ ﻓﻰ ﺍﻟﻤﺤﺮﻣﺎﺕ 109-107/4- )
৪. স্পর্শ করার ঐ সময়টাতে উত্তেজিত হতে হবে (Must be aroused at that exact moment)।
যদি স্পর্শ করার সময় কেউ উত্তেজিত না হয়, তাহলেও তা হুরমত সাব্যস্ত হওয়ার মতো শর্ত বলে গণ্য হবে না। সেই সাথে স্পর্শ করার আগে বা শেষে, হাত ছেড়ে দেওয়ার আগে বা পরে যদি উত্তেজনা অনুভূত হয় তাহলেও হুরমত সাব্যস্ত হবে না।
ﻭﻓﻰ ﺍﻟﺪﺭ ﺍﻟﻤﺨﺘﺎﺭ - ﻭﺍﻟﻌﺒﺮﺓ ﻟﻠﺸﻬﻮﺓ ﻋﻨﺪ ﺍﻟﻤﺲ ﻭﺍﻟﻨﻈﺮ ﻻ ﺑﻌﺪﻫﻤﺎ
ﻭﻓﻰ ﺭﺩ ﺍﻟﻤﺤﺘﺎﺭ - ( ﻗﻮﻟﻪ : ﻭﺍﻟﻌﺒﺮﺓ ﺇﻟﺦ ) ﻗﺎﻝ ﻓﻲ ﺍﻟﻔﺘﺢ : ﻭﻗﻮﻟﻪ : ﺑﺸﻬﻮﺓ ﻓﻲ ﻣﻮﺿﻊ ﺍﻟﺤﺎﻝ ، ﻓﻴﻔﻴﺪ ﺍﺷﺘﺮﺍﻁ ﺍﻟﺸﻬﻮﺓ ﺣﺎﻝ ﺍﻟﻤﺲ ، ﻓﻠﻮ ﻣﺲ ﺑﻐﻴﺮ ﺷﻬﻮﺓ ، ﺛﻢ ﺍﺷﺘﻬﻰ ﻋﻦ ﺫﻟﻚ ﺍﻟﻤﺲ ﻻ ﺗﺤﺮﻡ ﻋﻠﻴﻪ ( ﺭﺩ ﺍﻟﻤﺤﺘﺎﺭ -ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﻨﻜﺎﺡ، ﻓﺼﻞ ﻓﻰ ﺍﻟﻤﺤﺮﻣﺎﺕ - 4/108 )
৫. স্পর্শ করার পর সৃষ্ট উত্তেজনা স্থির হওয়ার পূর্বেই বীর্যপাত না হতে হবে।
যদি উত্তেজনা হওয়ার সাথে সাথেই বীর্যপাত (Ejaculation) হয়ে যায়, তাহলেও তা হুরমত সাব্যস্ত হওয়ার মতো শর্ত বলে গণ্য হবে না।
ﻭﻓﻰ ﺍﻟﺪﺭ ﺍﻟﻤﺨﺘﺎﺭ - ﻫﺬﺍ ﺇﺫﺍ ﻟﻢ ﻳﻨﺰﻝ ﻓﻠﻮ ﺃﻧﺰﻝ ﻣﻊ ﻣﺲ ﺃﻭ ﻧﻈﺮ ﻓﻼ ﺣﺮﻣﺔ ﺑﻪ ﺑﻔﺘﻰ
ﻭﻓﻰ ﺭﺩ ﺍﻟﻤﺤﺘﺎﺭ - ﻗﻮﻟﻪ : ﻓﻼ ﺣﺮﻣﺔ ) ﻷﻧﻪ ﺑﺎﻹﻧﺰﺍﻝ ﺗﺒﻴﻦ ﺃﻧﻪ ﻏﻴﺮ ﻣﻔﺾ ﺇﻟﻰ ﺍﻟﻮﻁﺀ ﻫﺪﺍﻳﺔ .
ﻗﺎﻝ ﻓﻲ ﺍﻟﻌﻨﺎﻳﺔ : ﻭﻣﻌﻨﻰ ﻗﻮﻟﻬﻢ ﺇﻧﻪ ﻻ ﻳﻮﺟﺐ ﺍﻟﺤﺮﻣﺔ ﺑﺎﻹﻧﺰﺍﻝ ﺃﻥ ﺍﻟﺤﺮﻣﺔ ﻋﻨﺪ ﺍﺑﺘﺪﺍﺀ ﺍﻟﻤﺲ ﺑﺸﻬﻮﺓ ﻛﺎﻥ ﺣﻜﻤﻬﺎ ﻣﻮﻗﻮﻓﺎ ﺇﻟﻰ ﺃﻥ ﻳﺘﺒﻴﻦ ﺑﺎﻹﻧﺰﺍﻝ ، ﻓﺈﻥ ﺃﻧﺰﻝ ﻟﻢ ﺗﺜﺒﺖ ، ﻭﺇﻻ ﺛﺒﺖ ( ﺍﻟﻔﺘﺎﻭﻯ ﺍﻟﺸﺎﻣﻴﺔ، ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﻨﻜﺎﺡ، ﻓﺼﻞ ﻓﻰ ﺍﻟﻤﺤﺮﻣﺎﺕ - 4/109
৬. স্পর্শকারী যদি নারী হয়, আর স্পর্শের মাধ্যমে উত্তেজনা হওয়ার দাবি করে, আর তার স্বামীর এ ব্যাপারে প্রবল ধারণা হয় যে, স্ত্রী সত্য বলছে কিংবা স্পর্শকারী যদি পুরুষ হয় এবং স্পর্শের মাধ্যমে উত্তেজনা হওয়ার দাবি করে, তাহলেও তার সংবাদের ওপর (যাকে স্পর্শ করেছে সেই নারীর) স্বামীর প্রবল ধারণা হয় যে, লোকটি সত্য বলছে–তাহলে হুরমত সাব্যস্ত হবে নতুবা নয়।
কেননা অনেক সময় এমন হয় যে, স্ত্রী এরূপ দাবি করার মাধ্যমে স্বামীর সাথে আবদ্ধ সম্পর্ক থেকে রেহাই পেতে/বাঁচতে/অন্যত্র সম্পর্ক গড়তে চাচ্ছে, তাই স্বামীর সত্যায়ন জরুরি। তাছাড়া যদি দুই জন সাক্ষী সাক্ষ্য দেয় যে, স্পর্শ করার সময় উত্তেজনা ছিল তাহলে স্বামীর সত্যায়নের কোনো প্রয়োজন নেই। দেখুন, ইমদাদুল ফাতওয়া : ২/৩২০, হুরমতে মুসাহারাত : ১৯
৭. সেই নারীর বয়স ৯ বছর থেকে কম এবং আর পুরুষের বয়স ১২ বছর থেকে কম হওয়া যাবে না।
যদি দু'জনের কারও বয়স এরচেয়ে কম হয় তাহলেও তা হুরমত সাব্যস্ত হওয়ার মতো শর্ত বলে গণ্য হবে না।
ﻭﻛﺬﺍ ﺍﻟﻤﻘﺒﻼﺕ، ﺃﻭ ﺍﻟﻤﻤﺴﻮﺳﺎﺕ ﺑﺸﻬﻮﺓ ﻷﺻﻮﻟﻪ، ﺃﻭ ﻓﺮﻭﻋﻪ ( ﺭﺩ ﺍﻟﻤﺤﺘﺎﺭ - 4/100 )
ﻷﻥ ﺣﺮﻣﺔ ﺍﻟﻤﺼﺎﻫﺮﺓ ﺇﺫﺍ ﺛﺒﺘﺖ ﻻ ﺗﺴﻘﻂ ﺃﺑﺪﺍ ( ﺭﺩ ﺍﻟﻤﺤﺘﺎﺭ - 4/
109 //
৮. যার স্পর্শ করা হয়েছে, সেই নারী মহিলা জীবিত হতে হবে।
উপরিউক্ত ৮টি শর্ত পাওয়া গেলে হুরমতে মুসাহারাত সাব্যস্ত হয়ে যাবে এবং স্পর্শকারী পুরুষ ও মহিলা উভয়ের উর্ধতন-নিম্নতন উভয়দিকে এই হুরমতের বিস্তার ঘটবে।
গ. দৃষ্টিপাতের দ্বারা (Watch genitals with lust) হুরমতে মুসাহারাত প্রমাণিত হওয়ার জন্য নিম্নোক্ত শর্তগুলো প্রযোজ্য হবে। শর্তগুলো হলো,
১. দৃষ্টিপাত হতে হবে নারীর ক্ষেত্রে পুরুষের আর পুরুষের ক্ষেত্রে নারীর সরাসরি শরীরের দিকে। ছবি বা ভিডিও বা কারো অবয়বের পুতুল হলে হবে না।
২. দৃষ্টি নিবদ্ধ হতে হবে নারীর লজ্জাস্থানের খানিকটা ভেতরের অংশে। শুধু ওপরের অংশ দেখার দ্বারা হুরমত সাব্যস্ত হবে না। আর পুরুষের ক্ষেত্রে শুধু লজ্জাস্থান দেখার দ্বারাই হুরমত সাব্যস্ত হবে।
৩. দৃষ্টি নিবদ্ধের ঠিক নির্দিষ্ট ঐ সময়টাতেই শারীরিক উত্তেজনা অনুভূত হতে হবে ; পরে বা আগে অনুভূত হলে হবে না।
৪. যার লজ্জাস্থান দেখছে সে জীবিত হতে হবে ; মৃত হলে হুরমত সাব্যস্ত হবে না।
৫. দৃষ্টি নিবদ্ধের সাথে সাথেই বীর্যপাত না হতে হবে ; বীর্যপাত হয়ে গেলে হুরমত সাব্যস্ত হবে না।
৬. নারীর বয়স কমপক্ষে ৯ বছর আর পুরুষের বয়স কমপক্ষে ১২ বছর হতে হবে।
أخبرنا أبوحنیفة، عن حماد، عن إبراهیم، قال: إذا قبل الرجل أم أمرأته أو لمسها من شهوةٍ حرمت علیه امرأته، أخرجه محمد في الحجج ورجاله ثقات (إعلاء السنن: ۱۱/۱۳۱)
أخبرنا إسماعیل بن عیاض، حدثنا سعید بن أبی عروبة، من قیس بن سعید، عن مجاهد في الرجل یفجر بالمرأة قال: إذا نظر إلی فرجها فلا یحله له أمها ولا بنتها، أخرجه محمد في الحجج أیضًا ورجاله ثقات (إعلاء السنن: ۱۱/۱۳۲
(لا) تحرم (المنظور إلى فرجها الداخل) إذا رآه (من مرآة أو ماء) لأن المرئي مثاله (بالانعكاس) لا هو (هذا إذا كانت حية مشتهاة) ولو ماضيا (أما غيرها) يعني الميتة وصغيرة لم تشته (فلا) تثبت الحرمة بها أصلا كوطء دبر مطلقا وكما لو أفضاها لعدم تيقن كونه في الفرج ما لم تحبل منه بلا فرق بين زنا ونكاح.(رد المحتار-4/108-109
وفى الدر المختار- هذا إذا لم ينزل فلو أنزل مع مس أو نظر فلا حرمة به بفتى
وفى رد المحتار- قوله : فلا حرمة ) لأنه بالإنزال تبين أنه غير مفض إلى الوطء هداية .
قال في العناية : ومعنى قولهم إنه لا يوجب الحرمة بالإنزال أن الحرمة عند ابتداء المس بشهوة كان حكمها موقوفا إلى أن يتبين بالإنزال ، فإن أنزل لم تثبت ، وإلا ثبت (الفتاوى الشامية، كتاب النكاح، فصل فى المحرمات-4/109
উপরে উল্লিখিত ৬টি শর্ত পাওয়া গেলে দৃষ্টিপাতের দ্বারাও হুরমতে মুসাহারাত তথা দৃষ্টিপাতকারী পুরুষ ও মহিলার মাঝে ঊর্ধ্বতন-নিম্নতন সম্পর্কের মাঝে আজীবন বিবাহ হারাম হওয়ার নীতি কার্যকর হবে।
আর যদি কোনো একটি শর্ত পাওয়া না যায়, তাহলে হুরমতে মুসাহারাত সাব্যস্ত হবে না। তবে তা কবিরা গুনাহ থেকে মুক্ত নয়।
শরয়ি দৃষ্টিকোণে, কোনো ব্যক্তি যদি নিজ কন্যার সাথে যিনা করে বা কামভাব নিয়ে উত্তেজনার সাথে আবরণ ছাড়া স্পর্শ করে (যাতে তার শরীরের উষ্ণতা অনুভূত হয়) তাহলে নিজ স্ত্রী তথা ওই মেয়ের মায়ের সাথে স্পর্শকারীর বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায় এবং সেই নারী তার জন্য চিরতরে হারাম হয়ে যায়।
তিন তালাকের পর যেমন তালাকপ্রাপ্ত নারী তালাক দানকারী পুরুষ ব্যতীত অন্য যে কোনো মুসলিম পুরুষের সাথে (মাহরাম সম্পর্ক বহির্ভূত) বিয়ের পর সেই পুরুষ মৃত্যুবরণ করলে বা সেই নারীকে তালাক দিলে সেই নারীর পুনরায় প্রথম স্বামীর সাথে সংসার করার সুযোগ আছে, এক্ষেত্রে কিন্তু এরকম কোনো সুযোগ ইসলাম আজীবন আর রাখেনি। তাই বিষয়টি মারাত্মক সংবেদনশীল হওয়ার পাশাপাশি অধিক গুরুত্বের দাবিদার।
তাই কন্যা বালেগা হবার নিকটবর্তী বা ৯ বছর বয়সী হয়ে গেলে তাকে স্পর্শ করার ক্ষেত্রে পিতার এবং ছেলে বালেগ বা ১২ বছর বয়সী হয়ে গেলে তাকে স্পর্শ করার ক্ষেত্রে মায়ের খুবই সতর্ক থাকা উচিত।
আর একই কাজ যদি সন্তানের দিক থেকে হয় তবুও বাবা-মায়ের বিবাহ সম্পর্ক ভেঙে পরস্পর চিরতরে হারাম হয়ে যাবে। কাজেই মা-কে স্পর্শ করার ক্ষেত্রে পুত্রের ও বাবাকে স্পর্শ করার ক্ষেত্রে কন্যার খুব সতর্কতা অবলম্বন আবশ্যক।
উপরিউক্ত দুটি মাসআলার মতোই হুবহু শ্বশুর কর্তৃক পুত্রবধূকে এবং শাশুড়ি কর্তৃক মেয়ের জামাইকে স্পর্শ করার বিধান প্রযোজ্য। অর্থাৎ শর্তগুলি পাওয়া গেলে স্বামী–স্ত্রী পরস্পর চিরতরে হারাম হয়ে যাবে।
যদি কোনো পুরুষ কোনো নারীর সাথে ব্যভিচারে লিপ্ত হয় অথবা কামভাব নিয়ে আবরণহীন অবস্থায় তাকে স্পর্শ করে অথবা কামভাব সহকারে নারীর লজ্জাস্থানের খানিকটা ভেতরের অংশে দৃষ্টিপাত করে অথবা নারী, পুরুষের লজ্জাস্থানে দৃষ্টি দেয়–তাহলে ঐ পুরুষের জন্য সেই নারীর মা এবং মেয়ে সম্পূর্ণ হারাম হয়ে যায়। আর যদি সেই ব্যক্তি আগ থেকেই ঐ নারীর মেয়ের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ থাকে, তাহলে তার সেই স্ত্রী তার জন্য চিরতরে হারাম হয়ে যাবে।
হুরমতে মুসাহারাতের দ্বারা অটোমেটিক বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে স্বামী–স্ত্রী একে অন্যের জন্য চিরতরে হারাম হয়ে যায়। অর্থাৎ পুনরায় নঅতুন করে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়ে সংসার করার কোনো উপায় আর থাকে না।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা আমাদের সবাইকে এজাতীয় সংবেদনশীল পরিস্থিতি থেকে আজীবন বেঁচে থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন