হানাফি মাযহাবের অনুসারীর অন্য মাজহাব অধ্যুষিত অঞ্চলে আসরের নামাজ পড়া প্রসঙ্গে

প্রশ্ন
শায়েখ, আসরের ওয়াক্ত নিয়ে আমার একটা প্রশ্ন আছে। Affan Bin Sharfuddin হাফিজ্বাহুল্লাহ এক প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, আসরের সময়ে আহলে হাদিস মসজিদে না যেতে কিংবা তাদের সঙ্গে জামায়াতে শরীক না হতে। আসরের সালাতের ওয়াক্ত নির্ধারণ তো ফিকহী ইখতিলাফি বিষয়। আমার জানামতে এই ব্যাপারে বাকি তিন মাজহাবের সঙ্গে হানাফি মাজহাবের ইখতিলাফ রয়েছে। সেক্ষেত্রে সেই ওয়াক্ত (বাকি তিন মাজহাব) অনুযায়ী সালাত পড়লে তো সালাত হয়ে যাওয়ার কথা। হারামাইনে হাম্বলি মাজহাব অনুসারে আসরের ওয়াক্ত নির্ধারণ হয়। আল্লাহ চাহে তো যদি কখনো হারামাইনে আসরের সালাত আদায় করার সৌভাগ্য হয় তখন আমরা কি জামায়াতে আদায় করবো না?

উত্তর
বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম।
মক্কা মদিনাতে থাকা অবস্থায় আপনাকে সেখানকার সময় অনুযায়ীই জামাতে শরীক হতে হবে। কারন যখন একাধিক মাযহাবের মতামত সামনে থাকে এবং নিজ মাযহাব অনুসরণের সুযোগ থাকে তখন মুকাল্লিদ পর্যায়ের মানুষদের জন্য নিজের মাযহাবের মতের উপরেই আমল করতে হবে। কিন্তু যেখানে নিজ মাযহাবের মতের উপরে আমল করা সম্ভব না বরং ভিন্ন মাযহাবের উপরে আমল করাই একমাত্র অপশন ও উত্তম হয়ে পড়ে তখন ভিন্ন মাযহাবের উপরে আমল করতে হবে। তাই দেশে থাকা অবস্থায় চাইলেই হানাফী মাযহাব মোতাবেক আসরের ওয়াক্ত হওয়ার পরে জামাত করা বা ভিন্ন মসজিদে গিয়ে আসরের নামায পড়া সম্ভব। এতে কোন ক্ষতি বৃদ্ধি হবেনা। কিন্তু মক্কাতে এটা সম্ভব না। কারন আপনি যদি মক্কা মদিনার জামাত ছেড়ে ভিন্ন মসজিদে যেতে চান তাহলে দুটি সমস্যা দেখা দিবে। প্রথমত হারামাইনে নামায পড়ার বিপুল পরিমাণ সওয়াব থেকে বঞ্চিত হবেন (এই ভয়াবহ ক্ষতির কোন মাশুল নেই) দ্বিতীয়ত আশপাশের মসজিদগুলোতেও সাধারণত হানাফী মাযহাব ফলো করা হয়না তাই নিজেদের মাযহাবের সময় অনুযায়ী জামাতে অংশগ্রহণের সুযোগ পাবেননা বললেই চলে। আরো একটা বিষয় না বললেই নয়। তা হলো, ওখানে মেজরিটি হচ্ছে গাইরে হানাফী। তাই আপনি যখন ওখানে অবস্থান করবেন তখন এ ধরণের ক্রিটিক্যাল অবস্থাগুলোতে (নিজেদের মাযহাবের উপরে আমলের সমশ্রেণীয় ও এভেইলেবল বিকল্প সুযোগ না থাকা সত্ত্বেও) জোর করে হানাফী মাযহাবের ব্যাপারে কঠোরতা করবেন তখন ফিতনা তৈরী হবে। এ ধরনের ইজতিমায়ী বিষয়গুলোতে ওখানে আপনাকে স্থানীয় ওলামাদের মতামতই অনুসরণ করতে হবে। তাই বাইতুল্লাহ ও মসজিদে নববীর অবস্থার সাথে দেশের অবস্থা মেলানো সম্ভব না। দুটোর অবস্থা যেমন ভিন্ন তেমনি বিধান ও কর্মপদ্ধতিও ভিন্ন হবে।
আল্লাহু আ'লামু বিসসাওয়াব।

------------------ 
সহকারী পরিচালক ও মুফতী, জামিয়া উসমান রাঃ, খিলখেত, ঢাকা।
ভাইস চেয়ারম্যান, জাবালে রহমত ফাউণ্ডেশন, বাংলাদেশ।

মন্তব্যসমূহ

এই সপ্তাহে সর্বাধিক পঠিত

ডাউনলোড করুন মাকতাবায়ে শামেলা লেটেস্ট ভার্শন (মোবাইল এবং পিসির জন্য)

রুকইয়াহ আশ-শারইয়্যাহ (ডাউনলোড)

ইসতিখারার সুন্নত তরিকা + pdf