খুতবার সময় দুই রাকাত তাহিয়্যাতুল মসজিদ পড়া নিষেধ
ইমাম সাহেব জুমআর খুতবাহ দেয়াকালীন কেউ যদি মসজিদে প্রবেশ করে,তাহলে তার কর্তব্য হল সে যে কোন ধরনের নামায না পড়ে চুপচাপ বসে খুতবাহ শ্রবণ করবে।আর এটিই কুরআন ও সুন্নাহ ভিত্তিক প্রমাণীত আমল।
১. পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে-
যখন কুরআন পড়া হয়,তখন চুপ থেকে মনোযোগ সহকারে শ্রবণ কর।
উক্ত আয়াতে কুরআন পড়ার সময় নিশ্চুপে একাগ্রতার সাথে শ্রবণ করার নির্দেশ এসেছে।আর ইমাম সাহেব যখন খুতবাহ পাঠ করেন,তাতে কুরআনের আয়াতও থাকে।তাই নিশ্চুপ হয়ে একাগ্রতার সাথে খুতবাহ শ্রবণ ওয়াজিব।ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহঃ বলেন,সবার ঐক্যমতে উক্ত আয়াত নামায ও খুতবার ব্যাপারে অবর্তীর্ণ হয়েছে।
২. হযরত ইবনে উমর রাঃ থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,আমি রাসুলুল্লাহ সাঃ কে বলতে শুনেছি,ইমাম খুতবাহ দেয়াকালীন সময় কেউ মসজিদে প্রবেশ করলে সে ইমামের খুতবাহ শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত কোন ধরনের নামাযও পড়বেনা এবং কথাও বলবেনা। (বাইহাকী,ফতহুল বারী-২:৪১০/মাজমাউয যাওয়ায়িদ-২:১৮৪)
৩. নুবাইশাতুল হুজালী রাঃ হতে বর্ণিত,তিনি বলেন,রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন,যখন কোন মুসলমান জুমআর দিনে গোসল করে কাউকে কোন ধরনের কষ্ট দেয়া ছাড়া মসজিদে গেল এবং ইমামের খুতবাহ দেয়ার আগে যতটুকু সম্ভব (নফল-সুন্নত)নামায পড়ল এবং খুতবাহ দেয়াকালীন সময়ে নিশ্চুপে একাগ্রতার সাথে খুতবাহ শ্রবণ করল, অতঃপর জুমআর নামায পড়ল। আল্লাহ তায়ালা তার পূর্বের জুমআ থেকে নিয়ে এ জুমআ পর্যন্ত সমস্ত গুনাহ মাফ করে দিবেন।
৪. হযরত সালমাম ফারসী রাঃ,হযরত আবু হুরাইরা রাঃ ও আবু আইয়্যুব আনসারী রাঃ থেকেও অনুরূপ হাদীস বর্ণিত হয়েছে।(মাজমাউয যাওয়ায়িদ-২:১৭১/মুসলিম শরীফ-১:২৮৩,নাসায়ী শরীফ-১:১৫৭/তাহাবী শরীফ-১:২৫২/বুখারী শরীফ-১:১২৪)
৫. হযরত উকবা ইবনে আমের রাঃ হতে বর্ণিত,তিনি ইমাম খুতবাহ দেয়াকালীন সময়ে কথা বলা,নামায পড়াকে মাকরূহ মনে করতেন।(তাহাবী শরীফ-১:২৫৩)
৬. সমস্ত সাহাবায়ে কিরাম বিশেষ করে খুলাফায়ে রাশিদীন এবং তাবেইন ও মদীনার সমস্ত ফকীহগণ খুতবাহ দেয়াকালীন সময়ে কোন ধরনের কথা বা নামায পড়া নিষিদ্ধ হওয়ার ব্যাপারে ঐক্যমত পোষণ করেছেন।(মা'আরিফুসসুনান-৪:৩৮৮)
৭. এছাড়াও খুতবাহ চলাকালীন হাঁটা-চলা বা নামায না পড়ার প্রমাণ পাওয়া যায়-(আবু দাউদ-১:১৫৬,যুজাজাতুল মাসাবীহ-১:৩৯১,নাসায়ী-১:১৫৭/আবু দাউদ-১:১৫/তাহাবী-১:২৫১,)প্রভৃতি বর্ণনায়।
প্রতিপক্ষের দলীলের জবাব-
অভিযোগকারীগণ যে হাদীসের ভিত্তিতে অভিযোগ উত্থাপন করেন,তাদের সে দলিল সম্পর্কে আমাদের জবাব এই যে-
রাসূল সাঃ একদা জুমআর খুতবাহ দিচ্ছিলেন এমন সময় সুলাইফে গাতফান নামক এক গরীব সাহাবী ছেড়া কাপড় পরিধান করে মসজিদে প্রবেশ করলেন।রাসূলুল্লাহ সাঃ তার এই গরীবী হালত দেখে বললেন,তুমি দুরাকাত নামায পড়।অপর দিকে রাসূলুল্লাহ সাঃ খুতবাহ বন্ধ করে দিয়ে মানুষকে দান খাইরাতে উদ্বুদ্ধ করতে লাগলেন।তখন সাহাবায়ে কেরাম তার দৈন্যতা দেখে কাপড় চোপড় ও আর্থিক ভাবে তাকে সাহায্য করলেন।এরপর দ্বিতীয় জুমআয় যখন তিনি ভাল কাপড় পরিধান করে মসজিদে আসলেন,তখন রাসূলুল্লাহ সাঃ শুধু তাকেই পুনরায় নির্দেশ দিলেন দুরাকাত নামায পড়ার জন্য।যাতে উপস্থিত সবাই তাদের বদান্যতার বহিঃপ্রকাশ প্রত্যক্ষ করতে পারে।(নাসায়ী শরীফ-১:১৫৮)
- উক্ত হাদীস থেকে স্পষ্ট বুঝে আসে যে,খুতবাহর সময় নামায পড়াটা ঐ সাহাবীর জন্য খাছ ছিল এবং তা এক বিশেষ উদ্দেশ্যে ছিল।তাছাড়া হাদীসের বিবরণ অনুযায়ী বুঝা যায়,রাসূলুল্লাহ সাঃ খুতবাহর সময় খুতবাহ বন্ধ করে সুলাইফে গাতফান রাঃ কে নামায পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন আর এটাতো দ্বিমতের কোন ব্যাপার নয়।কারণ হানাফিরা বলেন যে,খতিবের এ অধিকার আছে যে,তিনি খুতবাহর মধ্যখানে খুতবাহ দেয়া বন্ধ করে কাউকে দুরাকাত নামায পড়ার বা অন্য কোন ভাল কাজের নির্দেশ দিতে পারেন বা খুতবাহর গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বুঝিয়ে দিতে পারেন।
কিন্তু অভিযোগকারীরা হাদীসের কোথাও একথা প্রমাণ করতে পারবেননা যে,রাসূলুল্লাহ সাঃ খুতবাহ দেয়াকালীন কোন সাহাবী রাসুল সাঃ এর সতন্ত্র নির্দেশ ব্যাতিত কোন ধরনের নামায পড়েছেন।(ইলাউস সুনান-৮:৮১)
আরো মনে রাখা দরকার-
রাসূলুল্লাহ সাঃ খুতবাহ দেয়াকালীন সময়ে নতুন আগন্তুককে দুরাকাত নামায পড়তে বলেছেন, তা খুতবাহর সময় নামায নিষিদ্ধ হবার পূর্বের ঘটনা। তাই এদিক দিয়েও উক্ত হাদীস হানাফিদের বিপরীত কোন দলিল হতে পারেনা।(আবু দাউদ-১:১৫৯/নাসায়ী-১:৫৭)
- Umme Muhammad
১. পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে-
যখন কুরআন পড়া হয়,তখন চুপ থেকে মনোযোগ সহকারে শ্রবণ কর।
উক্ত আয়াতে কুরআন পড়ার সময় নিশ্চুপে একাগ্রতার সাথে শ্রবণ করার নির্দেশ এসেছে।আর ইমাম সাহেব যখন খুতবাহ পাঠ করেন,তাতে কুরআনের আয়াতও থাকে।তাই নিশ্চুপ হয়ে একাগ্রতার সাথে খুতবাহ শ্রবণ ওয়াজিব।ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহঃ বলেন,সবার ঐক্যমতে উক্ত আয়াত নামায ও খুতবার ব্যাপারে অবর্তীর্ণ হয়েছে।
২. হযরত ইবনে উমর রাঃ থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,আমি রাসুলুল্লাহ সাঃ কে বলতে শুনেছি,ইমাম খুতবাহ দেয়াকালীন সময় কেউ মসজিদে প্রবেশ করলে সে ইমামের খুতবাহ শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত কোন ধরনের নামাযও পড়বেনা এবং কথাও বলবেনা। (বাইহাকী,ফতহুল বারী-২:৪১০/মাজমাউয যাওয়ায়িদ-২:১৮৪)
৩. নুবাইশাতুল হুজালী রাঃ হতে বর্ণিত,তিনি বলেন,রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন,যখন কোন মুসলমান জুমআর দিনে গোসল করে কাউকে কোন ধরনের কষ্ট দেয়া ছাড়া মসজিদে গেল এবং ইমামের খুতবাহ দেয়ার আগে যতটুকু সম্ভব (নফল-সুন্নত)নামায পড়ল এবং খুতবাহ দেয়াকালীন সময়ে নিশ্চুপে একাগ্রতার সাথে খুতবাহ শ্রবণ করল, অতঃপর জুমআর নামায পড়ল। আল্লাহ তায়ালা তার পূর্বের জুমআ থেকে নিয়ে এ জুমআ পর্যন্ত সমস্ত গুনাহ মাফ করে দিবেন।
৪. হযরত সালমাম ফারসী রাঃ,হযরত আবু হুরাইরা রাঃ ও আবু আইয়্যুব আনসারী রাঃ থেকেও অনুরূপ হাদীস বর্ণিত হয়েছে।(মাজমাউয যাওয়ায়িদ-২:১৭১/মুসলিম শরীফ-১:২৮৩,নাসায়ী শরীফ-১:১৫৭/তাহাবী শরীফ-১:২৫২/বুখারী শরীফ-১:১২৪)
৫. হযরত উকবা ইবনে আমের রাঃ হতে বর্ণিত,তিনি ইমাম খুতবাহ দেয়াকালীন সময়ে কথা বলা,নামায পড়াকে মাকরূহ মনে করতেন।(তাহাবী শরীফ-১:২৫৩)
৬. সমস্ত সাহাবায়ে কিরাম বিশেষ করে খুলাফায়ে রাশিদীন এবং তাবেইন ও মদীনার সমস্ত ফকীহগণ খুতবাহ দেয়াকালীন সময়ে কোন ধরনের কথা বা নামায পড়া নিষিদ্ধ হওয়ার ব্যাপারে ঐক্যমত পোষণ করেছেন।(মা'আরিফুসসুনান-৪:৩৮৮)
৭. এছাড়াও খুতবাহ চলাকালীন হাঁটা-চলা বা নামায না পড়ার প্রমাণ পাওয়া যায়-(আবু দাউদ-১:১৫৬,যুজাজাতুল মাসাবীহ-১:৩৯১,নাসায়ী-১:১৫৭/আবু দাউদ-১:১৫/তাহাবী-১:২৫১,)প্রভৃতি বর্ণনায়।
প্রতিপক্ষের দলীলের জবাব-
অভিযোগকারীগণ যে হাদীসের ভিত্তিতে অভিযোগ উত্থাপন করেন,তাদের সে দলিল সম্পর্কে আমাদের জবাব এই যে-
রাসূল সাঃ একদা জুমআর খুতবাহ দিচ্ছিলেন এমন সময় সুলাইফে গাতফান নামক এক গরীব সাহাবী ছেড়া কাপড় পরিধান করে মসজিদে প্রবেশ করলেন।রাসূলুল্লাহ সাঃ তার এই গরীবী হালত দেখে বললেন,তুমি দুরাকাত নামায পড়।অপর দিকে রাসূলুল্লাহ সাঃ খুতবাহ বন্ধ করে দিয়ে মানুষকে দান খাইরাতে উদ্বুদ্ধ করতে লাগলেন।তখন সাহাবায়ে কেরাম তার দৈন্যতা দেখে কাপড় চোপড় ও আর্থিক ভাবে তাকে সাহায্য করলেন।এরপর দ্বিতীয় জুমআয় যখন তিনি ভাল কাপড় পরিধান করে মসজিদে আসলেন,তখন রাসূলুল্লাহ সাঃ শুধু তাকেই পুনরায় নির্দেশ দিলেন দুরাকাত নামায পড়ার জন্য।যাতে উপস্থিত সবাই তাদের বদান্যতার বহিঃপ্রকাশ প্রত্যক্ষ করতে পারে।(নাসায়ী শরীফ-১:১৫৮)
- উক্ত হাদীস থেকে স্পষ্ট বুঝে আসে যে,খুতবাহর সময় নামায পড়াটা ঐ সাহাবীর জন্য খাছ ছিল এবং তা এক বিশেষ উদ্দেশ্যে ছিল।তাছাড়া হাদীসের বিবরণ অনুযায়ী বুঝা যায়,রাসূলুল্লাহ সাঃ খুতবাহর সময় খুতবাহ বন্ধ করে সুলাইফে গাতফান রাঃ কে নামায পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন আর এটাতো দ্বিমতের কোন ব্যাপার নয়।কারণ হানাফিরা বলেন যে,খতিবের এ অধিকার আছে যে,তিনি খুতবাহর মধ্যখানে খুতবাহ দেয়া বন্ধ করে কাউকে দুরাকাত নামায পড়ার বা অন্য কোন ভাল কাজের নির্দেশ দিতে পারেন বা খুতবাহর গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বুঝিয়ে দিতে পারেন।
কিন্তু অভিযোগকারীরা হাদীসের কোথাও একথা প্রমাণ করতে পারবেননা যে,রাসূলুল্লাহ সাঃ খুতবাহ দেয়াকালীন কোন সাহাবী রাসুল সাঃ এর সতন্ত্র নির্দেশ ব্যাতিত কোন ধরনের নামায পড়েছেন।(ইলাউস সুনান-৮:৮১)
আরো মনে রাখা দরকার-
রাসূলুল্লাহ সাঃ খুতবাহ দেয়াকালীন সময়ে নতুন আগন্তুককে দুরাকাত নামায পড়তে বলেছেন, তা খুতবাহর সময় নামায নিষিদ্ধ হবার পূর্বের ঘটনা। তাই এদিক দিয়েও উক্ত হাদীস হানাফিদের বিপরীত কোন দলিল হতে পারেনা।(আবু দাউদ-১:১৫৯/নাসায়ী-১:৫৭)
- Umme Muhammad
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন