সহিহ আকিদার ক্যালকুলেটর; আহলে হাদিস ভাইদের সমীপে...
ক্যালকুলেটর সিরিজ-১
-------ভাই, আমাদের উচিত ফরয নামাযের পাশাপাশি নফল নামাযের অভ্যাস করা।। কিতাবে আছে ঈমাম আহমদ বিন হাম্বল (রহঃ) প্রতিদিন ৩০০ রাকাত নফল নামায পড়তেন।
আ.হা ভাইঃ এসব কি গাজাখুরি কথা বলছেন!! জর্দা খাইছেন নাকি!! জাহাজওয়ালা পীরের কথায় বাঁশের আগায় উঠছেন নাকি!! প্রতি ১ রাকাত নামায যদি খুশু খুযুর সাথে পড়ে কমসে কম ২.৫ মিনিট তো লাগার কথা, ৩০০ রাকাত নামায পড়তে সে হিসেবে কমসে কম ১২ ঘন্টা তো লাগবেই। বাকি ১২ ঘন্টার ৬ ঘন্টা ঘুম বাদ দিলে আর থাকে ৬ ঘন্টা!!
ঈমাম আহমদ বিন হাম্বল (রহঃ) এই ৬ ঘন্টায় খাওয়া, টয়লেট,গোসল বাদ দিলে আর থাকে ৩ ঘন্টা। তিনি পড়তেন, পড়াতেন, হাদিস সংগ্রহ করতেন, সফর করতেন, হাদিস লিখতেন, রিজাল লিখতেন, ফতোয়া দিতেন!! উনি যে এত বড় বড় কিতাব লিখেছেন সেটা লিখতেও তো প্রতিদিন ৩ ঘন্টা যথেষ্ট না।
এজন্য-ই বলি তাক্বলিদ, মায্হাব এগুলো ছাড়ুন, বাপ-দাদার ধর্ম ত্যাগ করে সহিহ পথে আসুন!! এটা নিশ্চয় ইলিয়াসি তাবলীগের বিদাতী ফাযায়েলে আমাল থেকে বলেছেন। ওখানেই এসব কিচ্ছা থাকে!!
চৌকস ভাইঃ ভাই অনেক তো ক্যালকুলেটর চালাইলেন!! আমি তো এত ভাবি নাই। আমি ভাবছি আল্লাহ ঈমাম আহমদ বিন হাম্বল (রহঃ) এর কাজে সময়ে বরকত দিয়েছেন এজন্য উনি অল্প সময়ে বেশি বেশি ভাল কাজ করতে পারতেন। আর এই গাজাখুরি বা জর্দাখাওয়া বা বিদাতি কিচ্ছা কাহিনী যেই বই থেকে নিয়েছি তার সংকলক নিজেও আহলে হাদিস, তাহক্বীক করে সহিহ বলেছে সেও পাকিস্তানের জাঁদরেল আহলে হাদিস আলেম যুবায়ের আলী যাঈ (গুফিরালাহু), প্রকাশনিও আহলে হাদিসদের ই হওয়ার কথা।
যাক!! ভালো হল ফাতোয়া আপনি আগেই বই সংকলক এবং মুহাক্কিক এর জন্য দিয়ে দিয়েছেন।
আ.হা ভাইঃ না মানে ইয়ে.... আসলে..... ওয়া ইযা সাহহাল.......
চৌকস ভাইঃ ভাই ভাই প্রেশার নিয়েন না!! প্রেশার নিয়েন না!! খুল ডাউন।
[বইয়ের স্ন্যাপশট]
বড় সাইজে দেখতে পিকচারের ওপর ক্লিক করুন |
ক্যালকুলেটর সিরিজ-২
-----------ঈমাম নববী (রহঃ) লিখেন-
হযরত আবু বকর আইয়্যাশ (রহঃ) একবার তার ছেলেকে ডেকে বললেন- "তুমি এই জানালার কাছে কখনো পাপ কাজ করার কথা চিন্তাও করবে না। কেননা আমি এখানে ১২০০০ বার কোরআন খতম করেছি!!"
আর যখন তাঁর মৃত্যুর সময় উপস্থিত হল সে তার ছেলেকে ডেকে বললো - "আমি ঘরের ঐ স্থানে বসে ২৪০০০ বার কোরআন খতম করেছি।"
এরপর ঈমাম নববী (রহঃ) লেখেন-
এইসব বুজুর্গদের এরকম আমলের কথা অবিশ্বাস করা ঠিক না।। কেননা এরা আল্লাহর ঐরকম বান্দা যারা আল্লাহর যিকরে লিপ্ত হলে রহমত নাযিল হত। যারা এইসব বুজুর্গদের এমন আশ্চর্য আমলগুলো বিশ্বাস করে না তারা কখনোই সফলকামদের পথের (আদর্শ) উপর প্রতিষ্ঠিত নয়।
[সহিহ মুসলিম শরহে নববী - ১ম খন্ড ৭৯ পৃষ্ঠা]
[বইয়ের স্ন্যাপশট]
বড় সাইজে দেখতে পিকচারের ওপর ক্লিক করুন |
_________________
ক্যালকুলেটর মুফতিদের কাছে প্রশ্ন, মনে করুন একজন মানুষের বয়স ৮০ বছর, এই সময়ের মধ্যে যদি ১২ হাজার বার কোরআন খতম করতে হয়, তাহলে প্রতি বছর তাকে ১৫০ বার কোরআন খতম করতে হবে। অর্থাৎ প্রতি ২ দিনের কিছু বেশি সময়ে তাকে ১ বার পুরো কোরআন খতম করতে হবে, এবং সেটা তার প্রসব হওয়ার পর মুহুর্ত থেকেই!!
ক্যালকুলেটর মুফতিরা উত্তর দিবেন- এটা কীভাবে সম্ভব?? এরপর হিসাব মিলাইতে হবে ৮০ বছরে ২৪ হাজারবার কোরআন খতমের!!
আর যদি তারা ক্যালকুলেটর দিয়ে হিসাব মিলাইতে না পারেন তাহলে যেসব ঠাট্টা বিদ্রুপ আপনারা ফাযায়েলে আমালের এরকম ঘটনার জন্য করে থাকেন- যেমন: লেখকের মাথায় সমস্যা, গাঁজাখোর কয় কি, জর্দাখোরদের গালগল্প, বিদাতীদের কিচ্ছা, ইত্যাদি সেগুলো ঈমাম নববী (রহঃ) এর উপরেও করবেন।
ক্যালকুলেটর সিরিজ-৩
----------------আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, সুলাইমান (‘আঃ) একবার বলেছিলেন যে, অবশ্যই আজ রাতে আমি নব্বইজন স্ত্রীর সাথে মিলিত হব। তারা প্রত্যেকেই পুত্র সন্তান দিবে যারা আল্লাহ্র রাস্তায় জিহাদ করবে। তখন তার সাথী (রাবী সুফিয়ান সাথী দ্বারা ফেরেশতা বুঝিয়েছেন) তাকে বলল, আপনি ইন্শাআল্লাহ্ বলুন। কিন্তু তিনি তা ভুলে গেলেন এবং স্ত্রীদের সঙ্গে মিলিত হলেন। কিন্ত একজন ছাড়া অন্য কোন স্ত্রীর কোন সন্তান হল না; আর সেটাও ছিল অপূর্ণাঙ্গ। আবূ হুরায়রা (রাঃ) এ ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন যে, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তিনি কসমের মাঝে ইনশা আল্লাহ্ বললে তাঁর কসমও ভঙ্গ হত না, আর উদ্দেশ্যও পূর্ণ হত। একবার আবূ হুরায়রা (রাঃ) এরূপ বর্ণনা করলেন যে, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তিনি যদি ‘ইস্তিসনা’ করতেন (অর্থাৎ ইনশা আল্লাহ্ বলতেন)। আবূ যিনাদ আ’রাজের সূত্রে আবূ হুরায়রা (রাঃ) বর্ণিত হাদীসের মত বর্ণনা করেছেন। (সহিহ বুখারী, হাদিস নং ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৬৩, আধুনিক প্রকাশনী- ৬২৫৩, তাওহীদ পাব. ৬৭২০)
_______________
ক্যালকুলেটর মুফতিদের কাছে প্রশ্ন, তারা কি সহিহ বুখারীর এই হাদিসে ক্যালকুলেটর ব্যবহার করেছে!! যদি একদম কম করে (৯০x১০ মিনিট) করেও ধরা হয় তাহলে হয় প্রায় ১৫ ঘন্টা।। সুলাইমান (আঃ) যে অঞ্চলে ছিলেন সেখানে তো ১৫ ঘন্টায় রাত হতো না!!
ক্যালকুলেটর মুফতিরা কি কোন জবাব দিবে??
যারা আল্লাহর দেয়া বরকতকে অস্বীকার করে তারা পারলে এই সহিহ হাদিসটি ক্যালকুলেটর দিয়ে প্রমান করুক।
ক্যালকুলেটর সিরিজ -৪
--------------------তাবেঈ জয়নুল আবেদীন রহ. [আলী বিন হুসাইন বিন আলী রা.] প্রতিদিন ১০০০ রাকাত নফল নামায পড়তেন।
সূত্রঃ তাহযীবুত তাহযীব, ৭ম খণ্ড ৩০৬ পৃষ্ঠা
লেখকঃ হাফেয ইবনে হাজার আসকালানী (রহঃ)
_____________
ক্যালকুলেটর মুফতিরা কি একটু ফতোয়া দিবেন!!
প্রতি রাকাত নামায পড়তে যদি একদম কম করে ২ মিনিট লাগে তাইলে ১০০০ রাকাত পড়তে ৩৩ ঘন্টা লাগে!! ভাই একদিন তো মাত্র ২৪ ঘন্টা।। বাকি ঘন্টা গুলোর হিসাব একটু ক্যালকুলেটরে মিলায় দেন!!
আর যদি সেটা না পারেন তাহলে হাফেয ইবনে হাজার আসকালানী (রহঃ) কেও ঐ গালিটা দেন যেটা আপনারা অন্য একটি কিতাবের লেখক কি দিয়ে থাকেন!! বলুন - "গাঁজাখোর কয় কি", পারবেন??
এ কেমন বিচার!!
[স্ক্যান]
আরেকটি অংকক্যালকুলেটর মুফতিরা কি একটু ফতোয়া দিবেন!!
প্রতি রাকাত নামায পড়তে যদি একদম কম করে ২ মিনিট লাগে তাইলে ১০০০ রাকাত পড়তে ৩৩ ঘন্টা লাগে!! ভাই একদিন তো মাত্র ২৪ ঘন্টা।। বাকি ঘন্টা গুলোর হিসাব একটু ক্যালকুলেটরে মিলায় দেন!!
আর যদি সেটা না পারেন তাহলে হাফেয ইবনে হাজার আসকালানী (রহঃ) কেও ঐ গালিটা দেন যেটা আপনারা অন্য একটি কিতাবের লেখক কি দিয়ে থাকেন!! বলুন - "গাঁজাখোর কয় কি", পারবেন??
এ কেমন বিচার!!
[স্ক্যান]
|
-----------------
ঈমাম বোখারী (রহঃ) রামাদান মাসে সারাদিন কোরআন তিলাওয়াত করতেন।। প্রতিদিন একবার কোরআন খতম করতেন।।
তিনি বলতেন- "প্রতিটি খতম শেষে একটি করে দোয়া কবুল হয়।।"
হাদয়ূস সারী; হাফেয ইবনে হাজার আসকালানী (রহঃ),পৃষ্ঠা- ৪৮১।।
------------
লিখেছেন- ভাই মাকসুদুল হাকিম
সোর্সঃ [১], [২], [৩], [৪], [৫]