সহিহ আকাইদ কণিকা! (অধ্যায়ঃ আল্লাহকে স্বপ্নে দেখা)

আল্লাহকে স্বপ্নে দেখা ও কিছু প্রশ্ন

------------
রাক্বাবাহ বিন মাসকালাহ (রহঃ) বলেন-
আমি স্বপ্নে আল্লাহকে দেখলাম ও তাঁর সাথে কথা বললাম।। আল্লাহ আমাকে বললেন- আমার ইজ্জত ও জালালিয়তের কসম আমি ইব্রাহিম তায়িমী (রহঃ) এর স্বাগতম করবো।।
সূত্রঃ মু'জামুল আওসাত- ৩য় খণ্ড ৩৭৯ পৃষ্ঠা, হাদিস-২৪৫৪।।
লেখকঃ ঈমাম তাবারানী (রহঃ)।।



_____________
গায়রে মুকাল্লিদ পীরদের কাছে প্রশ্নঃ
১.ঈমাম তাবারানী (রহঃ) এর এই কাহিনী বর্ণনা করার পর কি আক্বীদা সহিহ আছে??
২. কোন সাহাবী থেকে আল্লাহকে স্বপ্নে দেখার বর্ণনা পাওয়া যায় না।। তাহলে জনৈক 'রাক্বাবাহ বিন মাসকালাহ' কিভাবে দেখলো?? নাকি ঈমাম তাবারানী (রহঃ) এই ভাবে ভেবে দেখেন নি!!
৩. আল্লাহর রাসূল (সঃ) তো কোন সাহাবীর জন্য এভাবে বলেন নি 'আল্লাহ তাকে স্বাগতম করবে' তাহলে জনৈক 'ইব্রাহিম তায়িমি' কি সাহাবী থেকে বেশি মর্যাদাবান হয়ে গেলেন?? নাকি ঈমাম তাবারানি (রহঃ) এভাবে চিন্তা করেন নি!!
৪. কোরআন বা সহিহ হাসান/মারফু মাওকুফ হাদিসের কোথা থেকে এই মূলনীতি বের করা হয়েছে যে কারামাত বা অলৌকিক অদ্ভুত ঘটনা দ্বারা কারো মর্যাদার তুলনামূলক পার্থক্য বোঝায়??
সম্পূরক প্রশ্নঃ ৪.১ যদি কোরআন বা সহিহ হাদিস থেকে ৪নং প্রশ্নের উত্তর দেওয়া না যায় তাহলে কেন গায়রে মুকাল্লিদরা যখন ই কোন উম্মত থেকে কোন কারামাতের বর্ণনা পাওয়া যায় আপনারা কেন "কই এরকম কিছু তো কোন নবি,সাহাবী থেকে ঘটেনি!! তাহলে কি অমুককে আপনারা নবি বা সাহাবি থেকে বেশি মর্যাদার মনে করেন??" এই মুতাযিলা মার্কা প্রশ্নটি করেন?!

আরো কিছু ঘটনা শোনা যাক...

স্বপ্নে আল্লাহকে জিজ্ঞাসা করা

--------------
আব্দুল্লাহ বিন আহমদ বিন হাম্বল (রহঃ) [ঈমাম আহমদ বিন হাম্বল (রহঃ) এর ছেলে] বলেন-
আমি আমার পিতা ঈমাম আহমদ বিন হাম্বল (রহঃ) কে বলতে শুনলাম "আমি ( আহমদ বিন হাম্বল) যখন স্বপ্নে আমার রবের সাথে সাক্ষাৎ করলাম তখন জিজ্ঞেস করলাম - ও আমার রব!! কি এমন কাজ আছে যা দ্বারা আমি তোমার নৈকট্য অর্জন করতে পারি??"
উত্তর পেলাম - হে আহমদ!! আমার কালাম।।
আমি আবার প্রশ্ন করলাম- ইয়া রব!! বুঝে পড়লে নাকি না বুঝে পড়লে??
উত্তর পেলাম- বুঝে পড়লেও অথবা না বুঝে পড়লেও।।
________________
সূত্রঃ সিয়ারু আ'লামিন নুবালা- ১১ খণ্ড ৩৪৭ পৃষ্ঠা
লেখকঃ ঈমাম শামসুদ্দিন আয যাহাবী (রহঃ)


স্বপ্নে আল্লাহর কাছে চাওয়া

------------
ঈমাম আওযায়ী (রহঃ) বলেন-
আমি যখন স্বপ্নে আল্লাহকে দেখলাম তখন আমাকে আল্লাহ প্রশ্ন করলেন- "তুমিই তো সে যে ভালো কাজের আদেশ এবং খারাপ কাজের নিষেধ করে থাকো?? "
ঈমাম আওযায়ী (রহঃ) বললেন "হে আমার রব!! সব আপনার দয়া।।"
এরপর আমি বললাম- " হে আমার রব!! আমাকে ইসলামের উপর মৃত্যু দিয়েন।।"
তখন আমাকে আল্লাহ বললেন- "এবং সুন্নাতের উপরেও।।"
সূত্রঃ আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া- ১৩ খণ্ড ৪৪৭ পৃষ্ঠা
লেখকঃ ঈমাম ইবনে কাসির (রহঃ)


------
উপসংহারঃ আমরা এসব ঘটনা থেকে বুঝতে পারছি, সালাফে সালেহিনের নিকট 'কোনো মুত্তাকী পরহেজগার বান্দা আল্লাহকে স্বপ্নে দেখেছেন' এটা স্বাভাবিক ব্যাপার ছিল, এব্যাপারে তারা আপত্তি করেননি বরং হাদিস ও সিরাতের বড়বড় ইমামরা এসব ঘটনা স্বাভাবিকভাবেই বর্ণনা করেছেন। সালাফের কিতাবে এমন ঘটনা আরো বহুত পাওয়া যাবে।
আসলে আল্লাহ যদি চায়, অমুক বান্দা আমাকে স্বপ্নে দেখবে; তাহলে (নাউযুবিল্লাহ) আপনি-আমি আপত্তি করার কে? আল্লাহ তা'আলা বা রাসুল স. তো কোথাও এরকম বলেননি যে, কেউ আল্লাহকে স্বপ্নে দেখতে পারবেনা, তাহলে কিছু ভাই কেন এমন ঘটনা শুনলেই হাউকাউ করে উঠেন? সালাফের মাঝে বড় ইমামরা এসব ঘটনা বর্ণনা করছেন, সেখানে তাদের কেন এসবে গা জ্বলে? তারা কি হাফেয ইবনে কাসির, ইমাম তাবারানী, ইমাম যাহাবি রহ.-দের চেয়েও বেশি জ্ঞানী আর সচেতন হয়ে গেছেন? নাকি খালি কলসি বাজে বেশি?
 .
---------------
সোর্সঃ [১], [২], [৩]

এই সপ্তাহে সর্বাধিক পঠিত

ডাউনলোড করুন মাকতাবায়ে শামেলা লেটেস্ট ভার্শন (মোবাইল এবং পিসির জন্য)

রুকইয়াহ আশ-শারইয়্যাহ (ডাউনলোড)

ইসতিখারার সুন্নত তরিকা + pdf