শিয়া ধর্মের তুরবা সমাচার
আমরা দেখে থাকি যে, ইসলামের ভিতরে মিশে থাকা সাবাঈ ইহুদিজাত শিয়া ধর্মাবলম্বীরা নামাজে সিজদা করার জন্য এক প্রকারের মাটির চাকা ব্যবহার করে। শিয়া-কাফেররা বলে যে, এই মাটিতে সিজদা না করলে নামাজ হবে না,তাই তারা ঐ মাটির ঢিলার উপরে সিজদা করে। আবার ওদিকে সেটা মানতে গিয়ে যে মেঝেতে কিছু না বিছিয়ে সরাসরি নামাজ পরবে তাও করে না! টাইলস/কার্পেট ব্যবহার করে তার উপরে মাটির চাক্কা রেখে তাতে কপাল লাগিয়ে পরে।
শিয়াধর্মগ্রন্থ অচল, তাই তারা আমাদের মুসলিমদের কিতাব থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে দাবি করতে চায় যে,আমাদের কিতাবেও আছে যে মাটি ছাড়া অন্য কিছুতে সিজদা করা যাবে না। আসুন মুসলমানদের কিতাবের হাদিস থেকে দেখে নেই বাস্তবতা-
❁ প্রথমত, নামাজে সিজদা করতে নির্দেশ করা হয়েছে সাত অঙ্গ দ্বারা-
وَلاَ يَكُفَّ شَعَرًا وَلاَ ثَوْبًا الْجَبْهَةِ وَالْيَدَيْنِ وَالرُّكْبَتَيْنِ وَالرِّجْلَيْن ِ أَنْ يَسْجُدَ عَلَى سَبْعَةِ أَعْضَاءٍ
ইবন আব্বাস(রা) সূত্রে- রাসূলুল্লাহ(ﷺ) নামাজে চুল ও কাপড় না গুটাতে এবং সাতটি অংগ- কপাল, দুই হাত,দুই হাঁটু এবং দুই পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলি মাটিতে স্পর্শ করে সিজদা করতে আদিষ্ট হয়েছেন। [বুখারী ৭৭২,৭৭৩ ] অর্থাৎ কপাল ভূমিতে না লাগালে সিজদা হবেনা। জমিনে কপাল লাগাতে হবে।
শিয়া-কাফেররা মাটিতে কপাল লাগানোর হাদিস থেকে দাবি করতে চায় যে, “মাটি”তে কপাল লাগানো উদ্দেশ্য। অথচ মূল উদ্দেশ্য হল যেসব অঙ্গ ভূমিতে বা জমিনে লাগাতে হবে সেগুলার উল্লেখ করা! যেমন অন্যান্য হাদিসে দু হাতের তালু স্পর্শ না করালে সিজদা হবে না এরকম বলা আছে!
[الْجَبْهَة] শব্দ দ্বারা চেহারা বা সম্মুখভাগ বুঝানো হয়। কপালের সাথে নাকের অগ্রভাগ মাটিতে স্পর্শ করানোর আবশ্যকতাও হাদিস থেকে আসে। এই ব্যাপারটী অপর একটি হাদিস থেকে পরিষ্কার হয়। সহি মুসলিম এর সিয়াম অধ্যায়ের লাইলাতুল কদর বিষয়ক হাদিসগুলোতে, যার একটিতে, আবু সাঈদ খুদরি(রা) রাসূলুল্লাহ(ﷺ)কে ইতিকাফের ইবাদতের পরে দেখেছেন-
তাঁর কপাল ও নাকের ডগা ভিজা ও কাদা লেগে ছিল (رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حِينَ انْصَرَفَ وَعَلَى جَبْهَتِهِ وَأَرْنَبَتِهِ أَثَرُ الطِّينِ) [মুসলিম- ২৬৪২]
❁ দ্বিতীয়ত, রাসূলুল্লাহ(ﷺ) যে জমিন বলতে শুধু মাটিতেই সিজদা করেছেন তা কিন্তু নয়! তিনি আরো অন্যান্য জিনিসের উপরে সিজদাহ করেছেন, স্বাভাবিকভাবেই ; এমনটা আমরা দেখতে পাই ইসলামের হাদিস কিতাবেঃ-
❉ মায়মূনা(রা) থেকে বর্ণিত বুখারীর হাদিসে দেখি যে, রাসূলুল্লাহ(ﷺ) খুমরাহ/ الْخُمْرَةِ (খেজুর পাতার ছোট মাদুর যা দিয়ে শুধু মুখের অংশ হয়) এর উপরে নামাজ আদায় করেছেন। [বুখারী ৩৭৪]
❉ আবু সাঈদ খুদরি(রা) বর্ণিত হাদিসে, তিনি রাসূলুল্লাহ(ﷺ) কে দেখেছেন হাসির/ حَصِيرٍ (পাতলা চাটাই) এর উপরে সিজদা করতে। [মুসলিম ১৩৭৪; ইবন মাজাহ ১০৮২]
❉ এছাড়া রাসূলুল্লাহ(ﷺ) যখন ঘরে থাকতেন তখন তাঁর খেজুর পাতার তৈরি বিছানায় নামাজ করতেন, সাহাবী আনাস বিন মালিক(রা) ও অন্যান্যদের নিয়ে। [মুসলিম ১৩৭৫]
❉ ইবন আব্বাস(রা) সূত্রে হাদিস- তিনি দুই হাতের মাঝে কাপড় রেখে সিজদা করতেন [মুসনাদ আহমদ ২২৯৩]
❉ ইবন আব্বাস(রা) বলেছেন যে, রাসূলুল্লাহ(ﷺ) বিসাত (بساط) বা মাদুরের উপরে সালাত আদায় করতেন। [ইবন মাজাহ ১০৩০]
❉ এছাড়া রাসূলুল্লাহ(ﷺ) বিভিন্ন সময়ে তাঁর পাগড়ি,কাপড়ের উপরে সিজদা করে নামাজ আদায় করেছেন। [মুসান্নাফে আবি শায়বা ২৬৬২; সুনানুল কুবরা-বায়হাকী ২৪৪৩]
লাবিদ, তানাফসা- ইত্যাদি বিভিন্ন শব্দে কাপড়,মাদুড়,চামড়ার উপরে সিজদা করে সালাত আদায়ের দৃষ্টান্ত আছে রাসূলুল্লাহ(ﷺ) এর জীবনে। আছে গরমে কাপড় বিছিয়ে সালাত আদায়ের হাদিস।
► তুরবা- ব্যবহারের উদ্দেশ্য কি?
এই মাটির চাকতির উপরে সিজদা করার উদ্দেশ্য দুইটি-
☠ প্রথমত, ইসলামের বাইরে ব্যতিক্রম কিছু করে মুসলিমদের থেকে আলাদা হওয়া। নব্য আবিষ্কারের মাধ্যমে নিজেদের প্রকৃত মুসলিমদের থেকে আলাদা করে নেয় ইহুদ ইবনে সাবা’র ঔরসজাত শিয়া ধর্মের অনুসারীরা।
☠ দ্বিতীয়ত, শিরক এর নতুন এক মাধ্যম এই তুরবা। তুরবা নামক এই মাটীর ঢিলে তৈরি হয় মূলত কারবালার কাদামাটি থেকে। শিয়া কাফেররা তাদের ধর্মের তীর্থস্থান কারবালার মাটিকে সর্বশ্রেষ্ঠ মর্যাদার অধিকারী মনে করে। হুসাইন(রা)এর অনুমানকৃত কবরকে কেন্দ্র করে মাজারের পূজা দুনিয়ার সর্বত্র বসে করা সম্ভব, যদি সাথে থাকে এই তুরবা- যাকে শিয়া মালাঊনরা সিজদা করে থাকে!
এছারা এই তুরবা নামক মাটির চাক্কায় নানা প্রকার শিরকি ডাক, আহলে বাইতের মধ্যে থেকে শিয়াদের গৃহীত উপাস্যের নাম ইত্যাদি থাকে- যেমন ইয়া হুসাইন,ইমাম রেযা, ইয়া ফাতিমা যাহ্রা ইত্যাদি। ইহুদিদের খামাসার অনুসরণে সৃষ্ট পাঞ্জাতনও অঙ্কিত থাকে তুরবায়; অথবা হুসাইন(রা)এর কাটা মস্তকের প্রতিকৃতি ইত্যাদি- যাতে সিজদা করার মাহ্যমে নামাজের মধ্যেও শিরক জারি রাখে শিয়া-কাফেররা!
-
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন