মুখতার আস-ছাকাফীঃ- শিয়া ধর্মের ভণ্ড নবীর বৃত্তান্ত

{ইসলামের ইতিহাস গ্রন্থ ও শিয়া ধর্মগ্রন্থ হতে}

মুখতার ইবনে আবু উবায়দ আস-ছাকাফী। তায়েফের ছাকীফ গোত্রে জন্মগ্রহণকারী শিয়া ধর্মের অন্যতম প্রধান ব্যক্তি, যাকে পরম শ্রদ্ধার সাথে ধর্মীয় বীর ও মহান নেতা গণ্য করা সাবাঈ শিয়া ধর্মে।
ইহুদি আবদুল্লাহ ইবনে সাবা’র দ্বারা ইমামত আকিদার উৎপত্তির পরে প্রায় ২০০-৩০০ বছরের বেশি সময় লাগে বর্তমান ১২-ইমামী রাফেজী কাঠামো নিতে। এর মাঝে বহু রকম ইমাম দাবিদার, মাহদি দাবিদার গ্রুপের উত্থান-পতন ঘটতে থাকে। সেই যুগের গুরুত্বপূর্ণ এক খেলোয়াড় ছিল এই ভন্ডনবী মুখতার।
ধূর্ত, কপটচারী, পল্টিবাজ এবং মিথ্যাচারী চাপাবাজ হিসাবে মুখতার ছাকাফী নিজেকে শিয়া ধর্মাবলম্বীদের যোগ্য ব্যক্তি হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেছিল। সে আলী(রা)এর পুত্র মুহাম্মদ ইবনে হানাফিয়া(র)এর নামে চাপাবাজি করে কায়সানিয়া নামক শিয়া গ্রুপের ব্যানারে কাজকর্ম চালাত। শিয়া-রাফেজীদের সাহিত্যে এবং শিয়া যাজকদের বক্তব্যে তার ব্যাপক স্তুতি বন্দনা করা হয়।
চলুন, আমরা দেখে নেই ইসলামের ইতিহাস কিতাবে তার সম্পর্কে কি বর্ণনা আছেঃ-
♞ ♟ হাসান(রা)এর সাথে শিয়াদের কৃত বেঈমানীতে অংশ নেয়াঃ- ♛
৪০ হিজরি সালে আলী(রা)এর শাহাদাতের পরেই সেনাপতি কায়স বিন সাদ(রা) হাসান(রা)কে চাপ দিতে থাকেন সিরিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনার জন্য চাপাচাপি করতে থাকেন। হাসান(রা) তাঁকে বরখাস্ত করে উবায়দুল্লাহ ইবনে আব্বাস(রা)কে গভর্নর নিযুক্ত করেন। তবে অন্যদের জোরালো মতের প্রেক্ষিতে তিনি শামের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন মুয়াবিয়া(রা)এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে।
তিনি যখন মাদাইন এলাকার উপকণ্ঠে অবস্থান করছিলেন, তখন এক ব্যক্তি ঘোষণা দেয় সম্মুখের সেনাপতি নিহত হয়েছেন, এতে সবাই বিশৃঙ্খল হয়ে লুটপাট করতে শুরু করল। এমনকি তারা হাসান(রা)এর তাঁবুর সরঞ্জামাদিও খুলে নিতে লাগল। তিনি যে বিছানায় বসেছিলেন সেটিও নিয়ে যাবার জন্য টানাটানি শুরু করল। তিনি যখন সওয়ারীতে চড়েছিলেন তখন কেউ এসে বর্শা দিয়ে আঘাত করল।
হাসান(রা) তাঁর সমর্থকদের এমন অবস্থা দেখে তিনি মাসাইনের সুরক্ষিত “শ্বেত প্রাসাদ”এ আশ্রয় নিলেন আহত অবস্থায়। মাদাইনের গভর্নর ছিল তাঁর নিযুক্ত সাদ ইবন মাসঊদ ছাকাফি। মুখতার ইবনে আবু উবায়দ আস-ছাকাফী এসে তার চাচা সাদ ইবন মাসঊদকে বলল, ‘চাচা! আপনি কি ধন-সম্পদের অধিকারী হতে চান?’ সাদ বললেন, তা কিভাবে?
মুখতার বলল, ‘আপনি খলিফা হাসানকে বন্দী করে মুয়াবিয়ার নিকট পাঠিয়ে দিবেন’। উত্তরে চাচা বললেন, ‘ওহে দুর্ভাগা! আল্লাহ্‌ তোকে এবং তোর পরিকল্পনা ব্যর্থ করুন, আমি কি রাসূলুল্লাহ(সা)এর দৌহিত্রের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করব?’
[আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া পৃ ৪০/৮ম খণ্ড]

⚑ ⚐ দলবদল এবং ওহী আসার দাবির বৃত্তান্তঃ-
কারবালার মর্মান্তিক ঘটনার পরে, অল্প সময়ের মাঝেই ইয়াযিদ এবং তার পুত্র উভয়েই মারা যায়। এসময়ে ইরাকের লোকেরা ক্ষমতা নেয়ার ব্যাপারে ভাবল। শিয়াদের একাংশ হুসাইন(রা)-এর সাথে তাদের কৃত বেঈমানীর অনুশোচনায় দগ্ধ হয়ে হত্যার প্রতিশোধ যুদ্ধ করতে চাইল এবং সাহাবী সুলাইমান ইবন সুরাদ(রা)এর কাছে গেল। শিয়াদের আরেক অংশ মুখতার এর সাথে মিলিত হয়ে আলি(রা) এর পুত্র মুহাম্মদ ইবন হানাফিয়া(র)-এর ইমামত প্রতিষ্ঠায় সংগ্রামে নামল। উল্লেখ্য, মুহাম্মদ ইবন হানাফিয়া(র) এসব ইমামী দাবি থেকে নিজেকে মুক্ত রেখেছেন।
মুখতার শিয়াদেরকে সুলাইমান ইবন সুরাদ(রা) এর অনুসরণ করতে নিষেধ করতে থাকে। এরি মধ্যে তার বিদ্রোহী বাহিনীর খবর ছড়িয়ে পরলে ইবনে যিয়াদ তাকে আটক করে কারাগারে বন্দী করে। মুখতারের স্ত্রী ছিল আবদুল্লাহ ইবনে উমর(রা)-এর স্ত্রী। তাই আবদুল্লাহ ইবনে উমর(রা) সুপারিশ করে মুখতারের মুক্তির ব্যবস্থা করে দেন আত্নীয়তার খাতিরে।
মুক্ত হয়ে মুখতার এবার আবদুল্লাহ ইবনে যুবায়র(রা)এর বাহিনীতে গিয়ে মিশে। আবদুল্লাহ ইবনে যুবায়র(রা) বেশ আগে থেকেই নিজস্ব খিলাফত ঘোষণা করেছিল, হুসাইন(রা)এর শাহাদাতের পরে। মুখতার পাঁচ মাসের বেশি সময় ইবনে যুবায়র(রা)এর দলেই থাকে। এরপরে যখন দেখল যে, শামে অল্প সময়ের ব্যবধানে দুই জন খলিফা মারা গিয়েছে, তখন সে আবার ক্ষমতার ধান্দায় আলাদা হয়ে যায়। ঘটনা পরিক্রমায় সে আবারো কুফার নায়েবের হাতে বন্দী হয় এবং কারাগারে আটক থাকে।
[ আল বিদায়া, পৃ ৪৫১-৪৫৪/ খণ্ড ৮]

অপর বর্ণনায় আছে যে, মুখতার ইবনে যুবায়র(রা)এর সঙ্গে থাকাকালীন সময়ে সামনাসামনি প্রশংসা করত এবং পিছে পিছে গালিগালাজ করতে ইবনে যুবায়র(রা)কে। সে কুফা চলে যায় এবং হুসাইন(রা)এর হত্যার প্রতিশোধের কথা বলে ইরাকিদের সমর্থন নেয়, ইবনে যিয়াদের বাহিনীকে পরাজিত করে এবং হুসাইন(রা)এর হত্যাকারীদের অনেককে হত্যা করে তাদের মাথা মক্কায় ইবনে যুবায়র(রা)এর উদ্দেশ্যে পাঠিয়ে দেয়। ইবনে যুবায়র(রা)এর নির্দেশে সেগুলা মক্কা ও মদিনায় ঝুলিয়ে রাখা হয়।

মুখতার ভেবেছিল এভাবে সে একচ্ছত্র ক্ষমতা পেয়ে গিয়েছে। কিন্তু আবদুল্লাহ ইবনে যুবায়র(রা) যখন মুখতারের কুমতলব ও চক্রান্ত বুঝতে পারেন, তখন তিনি তাঁর ভাই মুসআব ইবন যুবায়রকে ইরাকের গভর্নর নিযুক্ত করে পাঠিয়ে দেন। যিনি বসরা থেকে সৈন্য সংগ্রহ করে গিয়ে মুখতারকে আক্রমণ করেন, হত্যা করে মাথা একজন দূত মারফত আব্দুল্লাহ(রা) এর কাছে পাঠিয়ে দেন।

ইমাম আহমদ(র) বলেন, রিফাআ বলেছেন- আমি মুখতারের নিকট গেলাম। সে আমাকে একখানা বিছানা বিছিয়ে দিয়ে বলল, আমার ভাই জিবরাঈল যদি এখান থেকে না উঠতেন, তাহলে আমি এটি আপনার জন্য ছেড়ে দিতাম। একথা শুনে রিফাআ তার গর্দান উড়িয়ে দিতে মনস্থ করলেন, পরে আবার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদিস স্মরণ করে ভাবলেন যে, কোন মু’মিন কারো জীবনের নিরাপত্তা দিয়ে আবার তাকে হত্যা করতে পারে না।
ইবন উমর(রা)কে বলা হয়েছিল, মুখতার মনে করে তার নিকট ওহী আসে। ইবন উমর(রা) বললেন, সে সত্য বলেছে। আল্লাহ্‌ তাআলা বলেন- “শয়তান তার বন্ধুর প্রতি (ওহী)প্রত্যাদেশ করে” [সূরা আনআমঃ ১২১]

ইবন আবু হাতিম বর্ণিত, ইকরিমা বলেন- আমি মুখতারের নিকট গেলাম। সে আমাকে তার কাছে থাকতে দিল, সে রাতে আমার খোজ-খবর নিত।
সে আমাকে বলল, আপনি বের হয়ে মানুষের সাথে কথাবার্তা বলুন। ইকরিমা বললেন, আমি তার কথা অনুযায়ী বের হলাম।
এক ব্যক্তি বলল, আপনি অহীর ব্যাপারে কি বলেন? আমি বললাম , ওহী দুই প্রকার, আল্লাহ্‌ তাআলা বলেন – “নিশ্চয়ই আমি তোমার নিকট উত্তম কাহিনী বর্ণনা করেছি, ওহীর মাধ্যমে তোমার নিকট এই কুরআন প্রেরণ করে।”
[সূরা ইউসুফঃ ৩]
“এরূপে আমি মানব ও জীনের মধ্যে শয়তানদেরকে প্রত্যেক নবীর শত্রু করেছি, প্রতারণার উদ্দেশ্যে তাদের একে অন্যকে চমকপ্রদ বাক্য দ্বারা প্ররোচিত করে।” [সূরা আনআমঃ ১১২]

ইকরিমা বলে, এভাবে বলার পরে তারা আমাকে মেরে ফেলতে চায়। তখন আমি বললাম, তোমার একই করছ? আমি তোমাদের মুফতি ও মেহমান। ফলে, তারা আমাকে ছেড়ে দেয়। ইকরিমা মুখতারের উপরে ওহী নাযিলের দাবিকে মিথ্যা প্রমাণ করতে গিয়ে তার সমর্থকদের দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিলেন।
যায়দ ইবন আরকাম(রা) এরকবার মুখতার ইবন আবু উবাইদ এর কাছে যান। তখন মুখতার তাঁকে বলে- ‘ হে আবূ আমির! আমি যদি জিবরাঈল এবং মিকাঈলকে দেখে ধন্য হতাম।’
জবাবে যায়দ তাকে বলেন, তুমি ব্যর্থ হও এবং ধ্বংস হও। তুমি আল্লাহ্‌র নিকট এর চেয়ে অনেক তুচ্ছ। তুমি মিথ্যাবাদী, আল্লাহ্‌ ও তাঁর রাসূলের প্রতি মিথ্যা আরোপকারী।
আসমা বিনত আবু বকর(রা) এর পুত্র ছিলেন আবদুল্লাহ ইবনে যুবায়র(রা)। তিনি হাজ্জাজ বিন ইউসুফের হাতে নিহত হবার পরে আসমা(রা) বলেন যে- হাদিসে ছাকীফ গোত্র থেকে একজন মিথ্যাবাদী বের হবে এবং একজন ধ্বংসকারী বের হবে বলা আছে। মিথ্যাবাদী হল মুখতার এবং ধ্বংসকারী হল হাজ্জাজ বিন ইউসুফ।
[আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, পৃ ৫১৫-৫১৯/খণ্ড ৮]

☞ হুসাইন(রা)এর পুত্রের বক্তব্যঃ-
আবু জাফর মুহাম্মদ বিন আলী বিন হুসেইন(র){ইমাম বাকির} থেকে বর্ণিতঃ আলী বিন হুসাইন(র) একবার কাবা ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে মুখতার বিন আবু উবাইদকে অভিশাপ দিচ্ছিলেন। তখন এক ব্যক্তি এসে জিজ্ঞাসা করল, হে আবুল হুসাইন, আপনি তাকে খারাপ বলছেন, অথচ সে আপনাদের জন্য নিজের জীবন কুরবানি করেছে? তিনি(বাকির) বললেন- নিশ্চয়ই সে মিথ্যাবাদি ছিল, আল্লাহ্‌ ও তাঁর রাসুলের নামে মিথ্যাচার করত।
[তাহযিবুল কামাল, ৩৯৬/২০]

⚔ সাহাবী আম্মার বিন ইয়াসির(রা)-এর পুত্র মুহাম্মদ বিন আম্মার(র)কে হত্যাঃ-
শিয়া কাফেররা নিজেদের কূটকৌশল এবং আহলে বাইতের নামে জালিয়াতি জারি রাখতে যেকোন স্তরে নিচে নামতে পারত। হত্যার মাধ্যমে ফেত্না সৃষ্টি তারা সেই ৩৪ হিজরি থেকেই করে আসছিল। তারই ধারাবাহিকতায়, অনেক সাহাবী ও তাবেঈন পরে যান। তার মধ্যে আম্মার(রা)এর পুত্রও অন্যতম।

➣ ‘মুহাম্মদ বিন আম্মার বিন ইয়াসিরকে মুখতার অন্যায়ভাবে হত্যা করে, কারণ তিনি তাঁর বাবা আম্মার এর নামে জাল হাদিস বানিয়ে প্রচার করতে মুখতারের নির্দেশ প্রত্যাখ্যান করেন।’ [আল ইসাবা,ইবন হাজার আস্কালানী- ২৭৬/৬]
➣ ‘মুখতার যাদের হত্যা করেছিল তাঁদের মধ্যে ছিল হাবিব বিন সাহবান আল আসাদী ও কুফায় মুহাম্মদ বিন আম্মার বিন ইয়াসির’ [তারিখুল ইসলাম, যাহাবী – ৫৭/৫; ছিকাহ ইবন হিব্বান ৫৩৭/৫]

✂ আলী(রা)এর পুত্র উবাইদুল্লাহ বিন আলী(র)কে হত্যাঃ
হাসান(রা)এর সাথে বেঈমানি, হুসাইন(রা)কে ডেকে এনে হত্যার পরে, আলি(রা) এর আরেক পুত্রকেও হত্যা করে শিয়া কাফেররা, তাদের নেতা মুখতার এর কারনামা-

➣ ‘উবায়দুল্লাহকে হত্যা করেছিল মুখতার..’ [তাবাকাত আল-কুবরা, ১৯/৩]
➣ মুখতার সর্বপ্রথম শিয়া ধর্মের বাদাআ আকিদার প্রবর্তন করে। মুখতারের বিরুদ্ধে মুসআব বিন যুবায়র যুদ্ধে বিজয় লাভ করেন। তাঁর কাছে উবায়দুল্লাহ বিন আলী(র)এর হত্যার খবর পৌঁছলে তিনি বলেন- তুমি কি জানতে চাও কে তাঁকে হত্যা করেছে? নিশ্চয়ই তারা হত্যা করেছে যারা তাঁর বাবা(আলী রা.) এর শিয়া দাবি করে নিজেদেরকে।
[আল কামিল ফি তারিখ, ইবনুল আছির- ২৪৬/২]

☫ শিয়া ধর্মগ্রন্থে মুখতারঃ- ☬
খ্রিস্টানদের বাইবেলের ন্যায় শিয়া কাফেরদের কিতাবেও ফাঁকেজোকে ভন্ডনবী মুখতাদের অপকর্ম এসে গিয়েছে রিজাল বৃত্তান্ত উল্লেখের সময়ে!
হাসান(রা) এর সাথে বেঈমানি এবং আহলে বাইতের দাবিকৃত ইমামদের নামে মিথ্যাচারঃ-
✘ ‘মুখতার তার চাচাকে এসে বলল, আমরা হাসান(রা)কে মুয়াবিয়া এর কাছে তুলে দেই, বিনিময়ে মুয়াবিয়া আমাদের ক্ষমতা দান করবে..’
[জিলা আল আ’ইয়ূন, পৃ ৪৩৩]
✘ ‘হাবিব আল খায়ছামী, আবু আব্দুল্লাহ(আ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- আলী বিন হুসাইন(আ)এর নামে মুখতার মিথ্যাচার করে বেড়াত’
[রিজাল আল কাশি ৩৪/১; মু’জাম আল রিজাল, সাইয়্যেদ খুয়েঈ- ৩০১/১৯]

✉ উমর বিন আলী বিন হুসাইন থেকে বর্ণিত-‘ শুরুর দিকে, মুখতার আমার বাবার কাছে ২০ হাজার দিনার পাঠাল, যা দিয়ে তিনি আক্কীল বিন আবি তালিব এর জন্য ঘর বানালেন এবং বনী উমাইয়্যার দ্বারা বনী হাশিমের যাদের বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তাদের জন্য। কিন্তু, মুখতার যখন মিথ্যা দ্বীন বানাল, তখন তার পাঠানো ৪০ হাজার দিরহাম আমার পিতা গ্রহণ করলেন না এবং ফেরত পাঠালেন ’
ইমাম বাকির(আ) হতে আরেকটি বিশ্বস্ত সূত্রে বর্ণিত- ‘মুখতার আমার বাবাকে একটি চিঠি লিখল ও সাথে কিছু উপহারও পাঠাল ইরাক থেকে। যখন বার্তাবাহক এসে ইমামের কাছে পৌঁছল এবন ভিতরে প্রবেশের অনুমতি চাইল, তখন যাইনুল আবিদীন বললেন- ফিরে যাও!আমি মিথ্যাবাদীদের থেকে উপহার নেই না এবং তাদের চিঠিও পড়ি না।’
[জিলা আল আ’ইয়ূন, পৃ ৮০৫; মা’রিফাতুর রিজাল-তুসি ৩৪১/১]

✉ ‘কিছু নির্ভরযোগ্য কিতাবে উল্লেখ, মুখতার ১ লক্ষ দিরহাম পাঠিয়েছিল ইমাম যাইনুব আবিদীন(আ) এর কাছে। ইমাম সেগুলা গ্রহণ করতে চাচ্ছিলেন না। কিন্তু প্রত্যাখ্যান করলে মুখতার সমস্যা সৃষ্টি করবে এই কারণে বাড়িতে রেখে দেন। যখন মুখতার নিহত হল, তখন তিনি খলিফা আব্দুল মালিককে চিঠি লিখলেন যে- এগুলা(দিরহাম) আপনার অধিকারে, নিয়ে যান। তিনি(ইমাম) মুখতারকে অভিশাপ দিতেন এবং বলতেন- সে আমাদের আহলে বাইতের নামে মিথ্যা বলে, সে দাবি করে তার কাছে আল্লাহ্‌র থেকে ওহী আসার দাবি করত ’
[জিলা আল আ’ইয়ূন, পৃ ৮০৬]

✂ আলী(রা) এর পুত্রকে হত্যাঃ
❖ ‘.. উবায়দুল্লাহ ইবন আলী(আ) বাচ্চাদের সাথে নিহত হননি, তিনি মুখতারের সময় পর্যন্ত ছিলেন, এরপরে মুসআব(বিন যুবায়র)কে বাইয়্যাত করেন এবং মুখতার তাকে হত্যা করে, তাঁর কবর মাযযারে সুপরিচিত’
[মু’জাম রিজাল আল হাদিস, সাইয়্যেদ খুয়েঈ ৮৯/১২]

❖ ‘মুখতার বলেছিল- উবায়দুল্লাহ(বিন আলী) তাঁর হত্যা বৈধ করল, কারণ সে নিজের ইমামত দাবি করল, অথচ মুহাম্মদ ইবন হানাফিয়্যা হল ইমাম। এরপরে তাকে তাঁর তাবু থেকে বের করে এনে গোলামসহ হত্যা করা হল এবং জানাযা পড়িয়ে মাযযারে দাফন করা হল।’
[হিদায়াত আল কুবরা, হুসাইন বিন হামাদান আল খাসিবী- ২১৯/১]

❖ ‘শায়খ মুফিদও তার কিতাবুল ইরশাদে উল্লেখ করেছেন যে, উবায়দুল্লাহ বিন আলী কারবালায় তাঁর ভাই হুসাইন আলাইহিস সালামের সাথে নিহত হয়েছেন – এটা ভুল মত। নিঃসন্দেহে, তিনি মুসআব বিন যুবায়র এর বাহিনীতে ছিলেন, মুখতার বিন আবু উবাইদ এর লোকেরা তাঁকে হত্যা করে মাযযারে, তাঁর কবর সেখানে প্রসিদ্ধ, এমন তথ্য মুতাওয়াতির’
[কিতাবুস সারায়ের- আবু জাফর আল হিল্লী, ৬৫৬/১]

~ The Rafidologist

মন্তব্যসমূহ

এই সপ্তাহে সর্বাধিক পঠিত

ডাউনলোড করুন মাকতাবায়ে শামেলা লেটেস্ট ভার্শন (মোবাইল এবং পিসির জন্য)

রুকইয়াহ আশ-শারইয়্যাহ (ডাউনলোড)

ইসতিখারার সুন্নত তরিকা + pdf