আমরা কি সুখে আছি?
কিছু বিক্ষিপ্ত চিন্তা মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। এলোমেলো চিন্তাগুলো গুছিয়ে বলার তেমন ইচ্ছে নেই। তবে সংক্ষেপে দু'একটা বলি।
অধিকাংশ মানুষ আজ ধর্ম থেকে বিমুখ কেন? ধর্ম কী তার আবেদন হারিয়ে ফেলেছে না কি মানুষগুলো ধর্ম ছাড়াই ভালো আছে? মানুষ কি আসলেই ভালো আছে?
কয়জন মানুষ ভালো আছে? ভালোর সংজ্ঞাটা যদিও একেক জনের কাছে একেক রকম, কিন্ত এরপরেও কয়জন ভালো আছে, সেটা ভাবার বিষয়। প্রাচুর্য, সামাজিক স্ট্যাটাসের প্রতিযোগিতা, যান্ত্রিক জীবন, অন্ত:সারহীন বিনোদন, উদ্দেশ্যহীন জীবন যাপনে সুখি মানুষের সংখ্যা খুব বেশি বলে মনে হয় না। অাত্মিক শূন্যতা সবাইকে কুরে কুরে খাচ্ছে। এই শূন্যতা ভুলে থাকার জন্য বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করছে সবাই। কেউ সারা দিন হেডফোন কানে লাগিয়ে অন্তরের শূন্যতা পূরণ করার চেষ্টা করছে। কেউ আরেক ধাপ এগিয়ে লালন-রবীন্দ্রের মর্মী গানে ঝুকছে। কেউ সিনেমা, সিরিয়ালকে জীবনের লক্ষ্য বানিয়েছে।
নিজেকে খুব সুখি হিসেবে পেশ করার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো তো আছেই। নিজের ভালো গাড়িটা সহজে হাজারও মানুষকে দেখানো যায়। নতুন ফ্ল্যাটের বারান্দায় বসে তোলা ছবিগুলো প্রমাণ করে যে, তার সারা জীবনের পরিশ্রম সার্থক হয়েছে। এগুলোকেই অধিকাংশ মানুষ জীবনের উদ্দেশ্য বানিয়েছে। এগুলো অর্জিত হওয়ার পরে তার অন্তরের শূন্যতার সমাধান কে দিবে? প্রতি মুহূর্ত যেই শূন্যতা তাকে আরও ব্যতিব্যস্ত করে রাখে।
জীবনের ছোট ছোট ঘটনাতে আসলে জীবনের ছোট ছোট আনন্দ লুকিয়ে আছে। ছোট্র ছেলের সুন্দর হাসি পিতার হৃদয়কে আন্দোলিত করে। ছেলের মুখে এক টুকরো হাসি ফোটানোর জন্য মুখ বুজে বছরের পর বছর বাবারা কষ্ট করে যেতে পারে। পরিবারের সদস্যদের একটু সুখের মাঝেই হয়তো মায়েরা জীবনের মানে খুঁজে পায়।
সব কিছুর পরেও সবার অন্তরে একটা হাহাকার থাকে। সেটা থেকে কেউ মুক্ত হতে পারে না। পারার কথা নয়। সেটা যে আল্লাহ তায়ালা প্রত্যেকের মাঝেই দিয়ে রেখেছেন। রুহকে কতকাল সে ক্ষুধার্ত রাখবে?
অনেককে দেখেছি। রুহের সামান্য খোরাক পেয়েছে। আবেগে চোখে অশ্রুর বন্যা বইছে।এতো দিন এই সুখ থেকে আমি বঞ্চিত ছিলাম! এই অাফসোসেও আবার অশ্রু ঝরাতে থাকে।
জীবনকে নিয়ে ভাবা উচিত। জীবনের উদ্দেশ্য নিয়ে ভাবা উচিত। জীবনের গন্তব্য নিয়ে চিন্তা করা উচিত। আমি কেন? কোথায় আছি? কোথায় যাচ্ছি?
সারা দিন হেডফোন কানে লাগিয়ে অন্তরের প্রকৃত সুখ কি আমি পাচ্ছি? সারা দিন সিনেমা দেখে আমার সেই কাংখিত ভালো লাগা কি অর্জিত হচ্ছে? লালনের গানগুলো কি আমাকে প্রকৃত সুখের সন্ধান দিচ্ছে? এগুলোর উত্তর আমার জানা থাকা উচিত। জানার চেষ্টা থাকা উচিত।
মানুষ আসলে ভালো নেই। পুরো মানবজাতির অধিকাংশ ভালো নেই। ভেতর-বাহির সব দিক থেকেই মানুষ ভয়ংকর সময় পার করছে। একটু চিন্তার ফুরসত পেলে নিজেকে নিয়ে ভাবুন। জীবনকে নিয়ে ভাবুন। জীবনের উদ্দেশ্য ও গন্তব্য নিয়ে ভাবুন। মানুষ ও মানবতাকে নিয়ে ভাবুন। যান্ত্রিক জীবনের ছক থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করুন। হয়তো জীবনকে নতুনভাবে সাজানোর সুযোগ পাবেন। জীবনের শূন্যতা ও হাহাকার থেকে মুক্তির রাস্তা খুজে পাবেন। পঞ্চাশ-ষাট বছর কিন্তু কিছুই না। আবার এটাই সব। যা করার এর মধ্যেই করতে হবে। নিজেকে একটু সময় দিন। হয়তো খুজে পাবেন জীবনের মানে।
------------------
লিখেছেনঃ শাইখ মুফতি Ijharul Islam Al-kawsary
অধিকাংশ মানুষ আজ ধর্ম থেকে বিমুখ কেন? ধর্ম কী তার আবেদন হারিয়ে ফেলেছে না কি মানুষগুলো ধর্ম ছাড়াই ভালো আছে? মানুষ কি আসলেই ভালো আছে?
কয়জন মানুষ ভালো আছে? ভালোর সংজ্ঞাটা যদিও একেক জনের কাছে একেক রকম, কিন্ত এরপরেও কয়জন ভালো আছে, সেটা ভাবার বিষয়। প্রাচুর্য, সামাজিক স্ট্যাটাসের প্রতিযোগিতা, যান্ত্রিক জীবন, অন্ত:সারহীন বিনোদন, উদ্দেশ্যহীন জীবন যাপনে সুখি মানুষের সংখ্যা খুব বেশি বলে মনে হয় না। অাত্মিক শূন্যতা সবাইকে কুরে কুরে খাচ্ছে। এই শূন্যতা ভুলে থাকার জন্য বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করছে সবাই। কেউ সারা দিন হেডফোন কানে লাগিয়ে অন্তরের শূন্যতা পূরণ করার চেষ্টা করছে। কেউ আরেক ধাপ এগিয়ে লালন-রবীন্দ্রের মর্মী গানে ঝুকছে। কেউ সিনেমা, সিরিয়ালকে জীবনের লক্ষ্য বানিয়েছে।
নিজেকে খুব সুখি হিসেবে পেশ করার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো তো আছেই। নিজের ভালো গাড়িটা সহজে হাজারও মানুষকে দেখানো যায়। নতুন ফ্ল্যাটের বারান্দায় বসে তোলা ছবিগুলো প্রমাণ করে যে, তার সারা জীবনের পরিশ্রম সার্থক হয়েছে। এগুলোকেই অধিকাংশ মানুষ জীবনের উদ্দেশ্য বানিয়েছে। এগুলো অর্জিত হওয়ার পরে তার অন্তরের শূন্যতার সমাধান কে দিবে? প্রতি মুহূর্ত যেই শূন্যতা তাকে আরও ব্যতিব্যস্ত করে রাখে।
জীবনের ছোট ছোট ঘটনাতে আসলে জীবনের ছোট ছোট আনন্দ লুকিয়ে আছে। ছোট্র ছেলের সুন্দর হাসি পিতার হৃদয়কে আন্দোলিত করে। ছেলের মুখে এক টুকরো হাসি ফোটানোর জন্য মুখ বুজে বছরের পর বছর বাবারা কষ্ট করে যেতে পারে। পরিবারের সদস্যদের একটু সুখের মাঝেই হয়তো মায়েরা জীবনের মানে খুঁজে পায়।
সব কিছুর পরেও সবার অন্তরে একটা হাহাকার থাকে। সেটা থেকে কেউ মুক্ত হতে পারে না। পারার কথা নয়। সেটা যে আল্লাহ তায়ালা প্রত্যেকের মাঝেই দিয়ে রেখেছেন। রুহকে কতকাল সে ক্ষুধার্ত রাখবে?
অনেককে দেখেছি। রুহের সামান্য খোরাক পেয়েছে। আবেগে চোখে অশ্রুর বন্যা বইছে।এতো দিন এই সুখ থেকে আমি বঞ্চিত ছিলাম! এই অাফসোসেও আবার অশ্রু ঝরাতে থাকে।
জীবনকে নিয়ে ভাবা উচিত। জীবনের উদ্দেশ্য নিয়ে ভাবা উচিত। জীবনের গন্তব্য নিয়ে চিন্তা করা উচিত। আমি কেন? কোথায় আছি? কোথায় যাচ্ছি?
সারা দিন হেডফোন কানে লাগিয়ে অন্তরের প্রকৃত সুখ কি আমি পাচ্ছি? সারা দিন সিনেমা দেখে আমার সেই কাংখিত ভালো লাগা কি অর্জিত হচ্ছে? লালনের গানগুলো কি আমাকে প্রকৃত সুখের সন্ধান দিচ্ছে? এগুলোর উত্তর আমার জানা থাকা উচিত। জানার চেষ্টা থাকা উচিত।
মানুষ আসলে ভালো নেই। পুরো মানবজাতির অধিকাংশ ভালো নেই। ভেতর-বাহির সব দিক থেকেই মানুষ ভয়ংকর সময় পার করছে। একটু চিন্তার ফুরসত পেলে নিজেকে নিয়ে ভাবুন। জীবনকে নিয়ে ভাবুন। জীবনের উদ্দেশ্য ও গন্তব্য নিয়ে ভাবুন। মানুষ ও মানবতাকে নিয়ে ভাবুন। যান্ত্রিক জীবনের ছক থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করুন। হয়তো জীবনকে নতুনভাবে সাজানোর সুযোগ পাবেন। জীবনের শূন্যতা ও হাহাকার থেকে মুক্তির রাস্তা খুজে পাবেন। পঞ্চাশ-ষাট বছর কিন্তু কিছুই না। আবার এটাই সব। যা করার এর মধ্যেই করতে হবে। নিজেকে একটু সময় দিন। হয়তো খুজে পাবেন জীবনের মানে।
------------------
লিখেছেনঃ শাইখ মুফতি Ijharul Islam Al-kawsary
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন