খতম সংস্কৃতির অবসান হোক
আমাদের সমাজে মৃত ব্যাক্তির জন্য সওয়াব রেসানির উদ্দেশ্যে হুজুরদের ডেকে এনে টাকার বিনিময়ে খতম পড়ানোর একটা প্রথা দীর্ঘদিন যাবৎ প্রচলিত হয়ে আছে। সেই সুবাদে পাঞ্জাবি-টুপিধারী মানুষের একটা শ্রেণীও তৈরি হয়েছে। মানুষ তাদের আলেম মনে করে তাদের লেবাসের কারণে। যদিও বাস্তবতা সম্পূর্ণ উল্টা। এদের অনেকে ঠিকমত শুদ্ধ করে কুরআনও পড়তে পারে না। তাদের মূল কাজই হল মানুষের বাড়ি ঘুরে ঘুরে খতম পড়া। এটা তাদের আয় রোজগারের বড় একটা মাধ্যমও বটে।
ছোট কালে এদের সাথে অনেক খতম পড়ার দুর্ভাগ্য আমার হয়েছে। পূর্ণ আমানতদারীর সাথে বলছি, তাদেরকে কোন দিনও পুরা কোরআন শেষ করতে দেখিনি। কিভাবে করবে? আমি হাফেজ মানুষ। থ্রিজি স্পিডে দুই পারা পড়ে শেষ করার আগেই তাদের সবার পড়া শেষ হয়ে যায়। তবু বিষয়টা আরও নিশ্চিত হওয়ার জন্য আমি অনেকবার পাশের জনের প্রতি লক্ষ্য রেখেছি। দেখলাম, আমার তিন চার পৃষ্ঠা পড়তে যে সময় লাগে তার এক পৃষ্ঠা পড়তে সে সময় লাগে। তারপরও আমার আগে তার পড়া শেষ। আসলে নির্দিষ্ট একটা সময় পার হওয়ার পর তাঁরা পড়া বন্ধ করে দেয়। চাই বাকি থাকুক বা নয়া থাকুক। কারণ তাদের অন্য বাড়ি যেতে হবে। একজায়গায় যদি এত সময় ব্যয় করে তাহলে তো কুলানো যাবে না। বিষয়টা সবাই জানে। এবং যারা খতম পড়ে স্বাভাবিক ভাবে তাঁরা সবাই এই নিয়মে অভ্যস্ত। সবাই যেখানে চোর, সেখানে পুলিশ আর কে হবে?
এটা হল প্রফেশনালি যারা খতম পড়ে তাদের কথা। অনেকে অবশ্য আমানতদারীর সাথে পুরাটাই পড়ে। কিন্তু প্রশ্ন হল টাকার বিনিময়ে খতম পড়লে তার সওয়াব মৃত ব্যাক্তি পায়? কক্ষনও নয়। কারণ সওয়াব মুদি দোকানের সদাইয়ের মত বেচা-কেনার জিনিস না। হ্যা, কেউ বিনামূল্যে পড়লে তার সওয়াব অবশ্য মৃত পাবে বলে আমরা আশা করি।
এই মাসআলাগুলো নিয়ে গতকাল আমি মসজিদে আলোচনা করেছি। আমাদের গ্রামের ‘খতম-হুজুরেরা’ শুনে আমার উপর চটেছেন। পারলে এক হাত দেখে নিবেন অবস্থা। অবশ্য আমার সামনে কিছুই বলে নাই। তাঁরা নিজেদের মধ্যে এই নিয়ে জোর আলোচনা-সমালোচনা করেছেন।
আমি দেখেছি, হুজুরেরা যখন দল বেঁধে গ্রামের পথে হেঁটে হেঁটে খতমে যায় মানুষ দেখে হাসে। আর মন্তব্যের তো শেষ নেই। মানুষের চোখে আলেম উলামাদের মর্যাদা দিন দিন কেন কমে যাচ্ছে এটা আশা করি ব্যাখ্যা করে বুঝিয়ে বলতে হবে। “আল আকিলু তাকফিহিল ইশারা”। জ্ঞানীর জন্য ইশারাই যথেষ্ট।
মানুষকে আমরা কিভাবে ধোঁকা দিয়ে টাকা নিচ্ছি বিষয়টা বিবেচনার অনুরোধ রইল সেসব ভাইয়ের প্রতি। সবশেষে রাসুলের একটা হাদিস বলে ইতি টানছি।
আবু হুরাইরা রা; বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, যে ব্যাক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য অর্জনীয় ইলমকে দুনিয়া কামাইয়ের উদ্দেশ্যে শিখবে সে কিয়ামতের দিন জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না। {আহমাদ, আবু দাউদ ও ইবনে মাজাহ।}
------------------
লিখেছেনঃ Abdullah Al Masud
ছোট কালে এদের সাথে অনেক খতম পড়ার দুর্ভাগ্য আমার হয়েছে। পূর্ণ আমানতদারীর সাথে বলছি, তাদেরকে কোন দিনও পুরা কোরআন শেষ করতে দেখিনি। কিভাবে করবে? আমি হাফেজ মানুষ। থ্রিজি স্পিডে দুই পারা পড়ে শেষ করার আগেই তাদের সবার পড়া শেষ হয়ে যায়। তবু বিষয়টা আরও নিশ্চিত হওয়ার জন্য আমি অনেকবার পাশের জনের প্রতি লক্ষ্য রেখেছি। দেখলাম, আমার তিন চার পৃষ্ঠা পড়তে যে সময় লাগে তার এক পৃষ্ঠা পড়তে সে সময় লাগে। তারপরও আমার আগে তার পড়া শেষ। আসলে নির্দিষ্ট একটা সময় পার হওয়ার পর তাঁরা পড়া বন্ধ করে দেয়। চাই বাকি থাকুক বা নয়া থাকুক। কারণ তাদের অন্য বাড়ি যেতে হবে। একজায়গায় যদি এত সময় ব্যয় করে তাহলে তো কুলানো যাবে না। বিষয়টা সবাই জানে। এবং যারা খতম পড়ে স্বাভাবিক ভাবে তাঁরা সবাই এই নিয়মে অভ্যস্ত। সবাই যেখানে চোর, সেখানে পুলিশ আর কে হবে?
এটা হল প্রফেশনালি যারা খতম পড়ে তাদের কথা। অনেকে অবশ্য আমানতদারীর সাথে পুরাটাই পড়ে। কিন্তু প্রশ্ন হল টাকার বিনিময়ে খতম পড়লে তার সওয়াব মৃত ব্যাক্তি পায়? কক্ষনও নয়। কারণ সওয়াব মুদি দোকানের সদাইয়ের মত বেচা-কেনার জিনিস না। হ্যা, কেউ বিনামূল্যে পড়লে তার সওয়াব অবশ্য মৃত পাবে বলে আমরা আশা করি।
এই মাসআলাগুলো নিয়ে গতকাল আমি মসজিদে আলোচনা করেছি। আমাদের গ্রামের ‘খতম-হুজুরেরা’ শুনে আমার উপর চটেছেন। পারলে এক হাত দেখে নিবেন অবস্থা। অবশ্য আমার সামনে কিছুই বলে নাই। তাঁরা নিজেদের মধ্যে এই নিয়ে জোর আলোচনা-সমালোচনা করেছেন।
আমি দেখেছি, হুজুরেরা যখন দল বেঁধে গ্রামের পথে হেঁটে হেঁটে খতমে যায় মানুষ দেখে হাসে। আর মন্তব্যের তো শেষ নেই। মানুষের চোখে আলেম উলামাদের মর্যাদা দিন দিন কেন কমে যাচ্ছে এটা আশা করি ব্যাখ্যা করে বুঝিয়ে বলতে হবে। “আল আকিলু তাকফিহিল ইশারা”। জ্ঞানীর জন্য ইশারাই যথেষ্ট।
মানুষকে আমরা কিভাবে ধোঁকা দিয়ে টাকা নিচ্ছি বিষয়টা বিবেচনার অনুরোধ রইল সেসব ভাইয়ের প্রতি। সবশেষে রাসুলের একটা হাদিস বলে ইতি টানছি।
আবু হুরাইরা রা; বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, যে ব্যাক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য অর্জনীয় ইলমকে দুনিয়া কামাইয়ের উদ্দেশ্যে শিখবে সে কিয়ামতের দিন জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না। {আহমাদ, আবু দাউদ ও ইবনে মাজাহ।}
------------------
লিখেছেনঃ Abdullah Al Masud
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন