ব্যাংকে জব বিষয়ে আরও কিছু প্রশ্নোত্তর...


১। প্রশ্নঃ
আমরা জানি সুদী ব্যাংকে চাকরি করা হারাম... কোন ইঞ্জিনিয়ার যদি ব্যাংকে চাকরি করা কারো বাড়ি বানিয়ে দেয়া বা নকশা করে দেবার বিনিময়ে ব্যাংকারের কাছ থেকে পারিশ্রমিক গ্রহন করে তাহলে সেটাও কি হারাম হবে ??

উত্তরঃ
সুদের কারবার বা সুদ থেকে উপার্জনকারীর সাথে লেনদেনে সতর্ক হওয়া উচিত। এক্ষেত্রে মূলনীতি হচ্ছে, যদি জানা থাকে যে উক্ত ব্যাক্তি যে টাকা প্রদান করছে তা ব্যাংক থেকে উপার্জিত, অথবা ব্যাংকে চাকুরী ছাড়া তার কোন আয়ের উৎস নেই। তাহলে তার দেয়া বিনিময় বা হাদিয়া কোনটাই গ্রহণ করা জায়িজ নয়।
সুতরাং ব্যাংকার বাড়ি বানাতে গিয়ে যে অর্থ খরচ করেছে, তার বেশিরভাগ বা পুরোটাই যদি ব্যাংক থেকে উপার্জিত হয় , আর এটা নিশ্চিতভাবে জানা থাকে তাহলে সেটা নেয়া জায়েজ নয়।
আলআশবাহ ওয়ান নাযাইর ৩/২৩৪; আদ্দুররুল মুখতার ৫/৯৮; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৪০০; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৬/৩৬০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩৪২; ইতরুল হিদায়া ৬৮; আহসানুল ফাতওয়া ৭/২২ ফাতওয়ায়ে মাহমুদিয়া ৪/২৪২

২। প্রশ্নঃ
আমার দুলাভাই একটি সরকারি ব্যাংকে চাকরি করেন, যা অবশ্যই সুদ সংশ্লিষ্ট। উনাকে অনেকবার বোঝানোর চেষ্টা করেছি, উনি চেয়েছেন অন্য কোথাও চাকরি করা যায় কিনা, তবে সিরিয়াস ছিলেন না। আমি আমার বোন এবং ভাগ্নেকে নিয়ে অনেক চিন্তিত থাকি যে তাদেরকে সুদ এর হারাম অর্থে জীবনযাপন করতে হবে, যার ফলাফল ইহকাল এবং পরকালে ধ্বংসাত্মক হতে পারে আমি কি দুলাভাইয়ের দেয়া যে কোন কিছু গ্রহণ থেকে বিরত থাকবো? আর আমার বোন এবং ভাগ্নের কি কোন রকম ইবাদত কবুল হবে না? তাদেরকি করা উচিত?

উত্তরঃ
যদি দুলাভাইয়ের অধিকাংশ ইনকাম হারাম হয়, অথবা পুরোটাই। অথবা বেশিরভাগই হালাল, কিন্তু তিনি যে বস্তু/টাকা আপনাকে দিচ্ছেন সেটা হারাম অর্থ থেকে হয়, তাহলে সেটা গ্রহণ করা জায়িজ নয়।
যদি নিয়ে থাকেন, সেটা গরীবদেরকে সওয়াবের আশা ছাড়া দিয়ে দিতে হবে।
আপনি আপনার দুলাভাইকে ভালোভাবে বুঝিয়ে বলুন। সুদ এর ভয়াবহতা নিয়ে এই গ্রুপে পোস্ট আসছে শিঘ্রই ইনশাআল্লাহ ।
আপনার দুলাভাই এর উচিত, এস্তেগফার করতে থাকা। পাশাপাশি হালাল ইনকামের সন্ধান করা। আপনার বোন ভাগ্নে ও দুলাভাই, ব্যাংক থেকে প্রাপ্ত অর্থ থেকে একেবারে যা না হলেই নয় পরিমাণ নিতে পারবে।
অনেকে বলেন, কারো থেকে ঋণ নিয়ে খাবার ক্রয় করা। তারপর তাকে হালাল উৎস থেকে ঋণ পরিশোধ করা।
হালাল উপার্জন শুরু হলে, তারা যে অর্থ ব্যাংক থেকে খরচ করেছেন, সেটা গরীবদেরকে সওয়াব এর নিয়ত ছাড়া দান করে দিবেন। একদিনে না পারলে ধীরেধীরে।


৩। প্রশ্নঃ
ব্যাংকে জব করে এমন কারো বাচ্চাকে পড়ানো যাবে?

উত্তরঃ
ওয়ালাইকুমুস সালাম!
আপনার স্টুডেন্ট এর অভিভাবক যদি মুসলিম হয়ে থাকেন, আর তাদের উপার্জন সুদ/ব্যাংকে চাকুরি বা হারাম না হয়। তাহলে তাদের দেয়া খাবার খেতে পারেন।
আর যদি খেতে না চান, তাহলে তাদেরকে খোলাখুলি বলুন যে আপনাকে খাবার না দিলে ভালো হয়। আপনি স্টুডেন্টদের বাসায় খান না, এটাই আপনার নীতি।
অথবা এর চেয়ে উত্তমভাবে বুঝিয়ে খাবার দিতে মানা করুন। আর যদি নিশ্চিত হন, স্টুডেন্ট এর টাকার উৎস হারাম বা ব্যাংক থেকে প্রাপ্ত সেলারি। তাহলে খাওয়া তো বটেই, এমনকি উক্ত টাকা থেকে আপনার বেতন নেয়াও জায়েজ হবে না।


৪। প্রশ্নঃ
আসসালামু আলাইকুম মেয়ের পিতা ব্যাংকে জব করে এরকম কোন মেয়ে কে বিবাহ করা যাবে কিনা ?

উত্তরঃ
ওয়ালাইকুমুস সালাম। ব্যাংকে চাকরি কারীর মেয়েকে নিকাহ করা জায়েয। তবে নিকাহের পর বা আগে মেয়ের বাপের বাড়িতে ততক্ষন পর্যন্ত খাবার খেতে পারবেনা বা কোন হাদিয়া নিতে পারবেনা যতক্ষন সে নিশ্চিত নাহয় যে উক্ত খাবার ও হাদিয়া হালাল টাকায় খরিদ কৃত। আল্লাহু আ'লামু বিস সাওয়াব।

৫। প্রশ্নঃ
আসসালামু আলাইকুম। মুহতারাম,সুদখোরের কাছ থেকে অথবা সুদী ব্যাংকে চাকুরীরত ব্যাক্তির কাছ থেকে কি টাকা ঋণ নেয়া যাবে যদি সুদ না দেয়া হয়?

উত্তরঃ
সুদে ব্যাংকের চাকুরীরত ব্যক্তি থেকে টাকা লোন নেয়া জায়েজ নেই।
তবে যদি পরিপূর্ণ নিশ্চিত হওয়া যায় যে, উক্ত ব্যক্তি তার ব্যাংক এর ইনকাম থেকে নয়, বরং অন্য হালাল খাত থেকে দিয়েছে। তাহলে সেটা গ্রহণ করা যাবে।

৬। প্রশ্নঃ
ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক যে ব্যাংকগুলো চলে সেখানে চাকুরীর টাকা কি হালাল হবে???
 
উত্তরঃ
এটার উত্তর গ্রুপে দেয়া হয়েছে।
কোন ব্যাংক শরীয়াহ মোতাবেক চলে না। সুতরাং চাকুরীর টাকাও হালাল হবে না।
যারা দাবী করেন, তাদের দাবীটা মুখে আর কাগজে থাকে। বাস্তবতা ভিন্ন। এ জন্যে তাদের গাফলতি দায়ী। চাইলেই সহীহভাবে তারা কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারতেন।


----------
উত্তর দিয়েছেন - শাইখ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ এবং শাইখ আব্দুল্লাহ আল মামুন।
সোর্সঃ [১], [২], [৩], [৪], [৫], [৬]

এই সপ্তাহে সর্বাধিক পঠিত

ডাউনলোড করুন মাকতাবায়ে শামেলা লেটেস্ট ভার্শন (মোবাইল এবং পিসির জন্য)

রুকইয়াহ আশ-শারইয়্যাহ (ডাউনলোড)

ইসতিখারার সুন্নত তরিকা + pdf