আশুরার দিন ভাল খাবার সংক্রান্ত হাদীস: বিস্তারিত পর্যালোচনা
সাধারণ মানুষের কাছে আশুরার দিনে প্রসিদ্ধ একটি আমল হলো পরিবারের লোকদের
জন্য ভাল খাবারের ব্যবস্থা করা। এসম্পর্কে একটি হাদীসও লোকমুখে প্রসিদ্ধ
রয়েছে। হযরত জাবির রা. নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা
করেন যে তিনি বলেছেন-
হাদীসটি হযরত ইবনে মাসউদ রা. থেকে এভাবে বর্ণিত হয়েছে-
উক্ত হাদীসকে কেন্দ্র করে অনেকেই আশুরার দিনে পরিবারের পরিজনের জন্য ভাল খাবারের ব্যবস্থা করে থাকেন। বিভিন্ন বক্তাদের বয়ানেও এর প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিতে শুনা যায়। কিন্তু যে হাদীসকে কেন্দ্র করে এই আমলের প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয় সেই হাদীসটি সহীহ কি না, আমরা যাচাইয়ের চেষ্টা করি না। আসুন হাদীসটি সম্পর্কে মুহাদ্দিসগণ কি বলেছেন একটু জেনে নেই। কেননা হাদীস নির্ভরযোগ্য হওয়া না হওয়ার ক্ষেত্রে তাদের কথাই তো গ্রহণযোগ্য।
# ইমাম আহমদ রহ. বলেন, হাদীসটি সহীহ নয়। (আল-মানারুল মুনীফ, ইবনুল কায়্যিম, পৃ.১১২)
# উকাইলী রহ. বলেন, এবিষয়ে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে কোনো কিছুই প্রমাণিত নয়। হাঁ, ইবরাহীম বিন মুহাম্মদ বিন মুনতাশির থেকে কথাটি বর্ণিত হয়েছে। (আয-যুআফা, উকাইলী:৩/২৫২)
# ইবনে মাসউদ রা. এর হাদীস সম্পর্কে উকাইলী রহ. বলেন, আলী ইবনুল মুহাজির এবং হাইছাম (উক্ত হাদীসের দুই রাবী) মাজহুল (অর্থাৎ তারা নির্ভরযোগ্য না অনির্ভরযোগ্য তা জানা যায় নি) আর হাদীস সঠিক নয়। আয যুআফা, উকাইলী:৩/২৫২,
# আর হাফেয যাহাবী রহ. আলী ইবনে মুহাজির (হাদীসের রাবী) সম্পর্কে বলেন, তার পরিচয় পাওয়া যায় নি। আর খবরটি জাল। মীযানুল ইতেদাল:৫/১৯১)
# হযরত আবু হুরায়রা রা. এর হাদীস সম্পর্কে উকাইলী রহ. বলেন, সুলাইমান (হাদীসের রাবী) মাজহুল (অর্থাৎ তিনি নির্ভরযোগ্য না অনির্ভরযোগ্য তা জানা যায় নি) আর হাদীসটি সঠিক নয়। আর এই হাদীসটি নবীজী থেকে কোন মারফু হাদীসে বর্ণিত হয় নি। (আল-মওযুআত, ইবনুল জাওযী: ২/৫৭৩)
# আল্লামা ইবনে তাইমিয়া রহ. আশুরার দিনে ভাল খাবারের ব্যবস্থা করা, ফেযাব লাগানো, সুরমা লাগানো ইত্যাদির কথা উল্লেখ করে বলেন, এগুলো নবীজীর নামে মিথ্যারোপ করা হয়েছে। আশুরার দিনে রোযা রাখার বিষয়টি ছাড়া কোনো কিছুই সহীহভাবে প্রমাণিত হয় নি। (মিনহাজুস সুন্নাহ: ৭/৩৯; মাজমূউ ফাতাওয়া ইবনে তাইমিয়াহ:২৫/১৬৮)
তিনি বলেন, সর্বোচ্চ এতটুকু বলা যায় যে, এটা ইবরাহী ইবনুল মুনতাশির-এর বক্তব্য (আয যুআফা, উকাইলী: ৩/২৫২;মাজমূউল ফাতাওয়া, ইবনে তাইময়া:২৫/১৬৮)
# যারকাশী রহ. বলেন, এটা প্রমাণিত নয়। এটা তো মুহাম্মদ বিন মুনতাশির এর বক্তব্য। (আল আসরারুল মারফূআহ, মুল্লা আলী কারী রহ. ৩৪৫; কাশফুল খাফা, আজলূনী: ২/৩৩৭ পৃ.)
# আল্লামা ইবনে রাজাব হাম্বলী রহ. লাতাইফুল মাআরিফ গ্রন্থে, পৃ.১১৩ বলেন, এর সনদ সহীহ নয়। হাদীসটি বিভিন্ন সূত্রে বর্ণিত হয়েছে, তবে কোনোটিই সহীহ নয়।
# হাফেয ইবনে হাজার রহ. মুনকারুন জিদ্দান (খুবই অাপত্তিজনক) বলেছেন ( লিসানুল মীযান:৬/৩৩৮, অারো দেখুন, ৮/৩৬৬, ৮/৫৩৯
মুহাদ্দিসীনে কেরামের উপরোক্ত বক্তব্যগুলো থেকে বুঝা যায় উক্ত হাদীসটি ভিত্তিহীন। কিন্তু এর বিপরিত অনেক মুহাদ্দিসের বক্তব্য পাওয়া যায় যারা হাদীসটিকে যয়ীফ মনে করেন; হাদীসটি জাল একথা মানতে তাঁরা রাজি নন। যেমন সাখাভী রহ. আল-মাকাসিদুল হাসানাহ গ্রন্থে, (পৃ. ৪৩১) সুয়ুতী রহ. তার আত তাআক্কুবাত এবং আল-লায়ালিল মাসনুআহ গ্রন্থে (২/১১১-১১৪) ইবনে আররাক রহ. তাঁর তানযীহুশ শরীয়াহ গ্রন্থে (২/১৫৭-১৫৮) মুল্লা আলী ক্বারী রহ. তাঁর আল-আসরারুল মারফূআহ গ্রন্থে পৃ. ৩৪৫; মুনাভী রহ. ফায়যুল কদীর গ্রন্থে (৬/২৩৫) আজলূনী রহ. কাশফুল খাফা গ্রন্থে (২/৩৩৭-৩৩৮) লাখনৌভী রহ. আল-আছারুল মারফূআহ গ্রন্থে (পৃ.১০০) এবিষয়ে বিস্তারিত অালোচনা করেছেন। তাদের অালোচনার সারাংশ হলো হাদীসটি দুর্বল জাল নয়।
সুফিয়ান বিন উয়াইনাহ রহ. বলেন, ষাট বছর যাবত পরিক্ষা করে (অর্থাৎ ষাট বছর আশুরার দিন ভাল খাবারের ব্যবস্তা করে) এটাকে সঠিক পেয়েছি। (মাজমূউ ফাতাওয়া ইবনে তাইমিয়া: ২৫/১৬৮)
বাইহাকী রহ. উক্ত হাদীসকে বিভিন্ন সূত্রে উল্লেখ করে বলেন, যদিও সনদগুলো যয়ীফ কিন্তু যেহেতু হাদীসটি বিভিন্ন সূত্রে বর্ণিত হয়েছে তাই একটি অপরটিকে শক্তিশালী করছে। (শুআবুল ঈমান:৫/৩৩৩)
আল্লামা সুয়ূতী রহ. তাঁর আত-তাআক্কুবাত গ্রন্থে যারা হাদীসকে ভিত্তিহীন বলেছেন তাদের বক্তব্যকে প্রত্যাখ্যান করে বলেন, কখনো নয়, বরং হাদীসটি সহীহ, প্রমাণিত। (কাশফুল খাফা, আজলূনী:২/৩৩৭; আল-আসরারুল মারফূআহ, পৃ. ৩৪৫)
শায়খ আব্দুল ফাত্তাহ আবু গুদ্দাহ রহ. মুহাদ্দিসদের বক্তব্যগুলো সামনে রেখে এই সিদ্ধান্তে উপনিত হয়েছেন যে হাদীসটি জাল নয় বরং যয়ীফ। একারণেই তিনি আল-মানারুল মুনীফ গ্রন্থের শেষে উক্ত গ্রন্থে উল্লেখিত হাদীসগুলোকে দু’ভাগে ভাগ করেছেন। ১-যেগুলো জাল নয়। ২-জাল। আর উক্ত হাদীসকে প্রথম প্রকারে উল্লেখ করেছেন।
আমাদের করণীয়:
যেহেতু অনেক মুহাদ্দিস উক্ত হাদীসকে ভিত্তিহীন এবং খুবই অাপত্তিজনক বলেছেন অার তাদের কথাই সম্ভবত বেশি সঠিক তাই উক্ত আমলটির প্রতি বিশেষ গুরুত্ব না দেয়াই উচিৎ এবং উক্ত হাদীসের প্রচার-প্রসার না করাই উচিৎ। কিন্তু যেহেতু অনেক মুহাদ্দিস উক্ত হাদীসকে ভিত্তিহীন মানতে নারাজ বরং তাদের মতে হাদীসটি অনেক সনদের কারণে অন্তত আমলযোগ্য যয়ীফ, তাই কেউ যদি উক্ত হাদীসের উপর আমল করে বা এর প্রচার-প্রসার করে তাহলে এনিয়ে ঝগড়া বিবাদ করা কোনো ক্রমেই উচিৎ নয়।
-------
তাহকিকঃ শাইখ Mahbubul Hasan Arife
" مَنْ وَسَّعَ عَلَى عِيَالِهِ يَوْمَ عَاشُورَاءَ وَسَّعَ اللَّهُ عَلَيْهِ فِي سَائِرِ سَنَتِهِ
যে ব্যক্তি আশুরার দিন তার পরিবার পরিজনের জন্য সচ্ছলতার (ভাল খাবারের)
ব্যবস্থা করবে আল্লাহপাক পূর্ণ বৎসর তাকে সচ্ছলতার সাথে রাখবেন। (তাবারানী
কবীর, ১০/৯৪, হাদীস নং-১০০০৭; বাইহাকী, শুআবুল ঈমান :৫/৩৩১, হাদীস নং-৩৫১২)হাদীসটি হযরত ইবনে মাসউদ রা. থেকে এভাবে বর্ণিত হয়েছে-
مَنْ وَسَّعَ عَلَى عِيَالِهِ يَوْمَ عَاشُورَاءَ لَمْ يَزَلْ فِي سَعَةٍ سَائِرَ سَنَتِهِ
(বাইহাকী, শুআবুল ঈমান:৫/৩৩১, হাদীস নং-৩৫১৩) এছাড়াও হাদীসটি হযরত আবু
হুরায়রা রা. এবং আবু সাঈদ খুদরী রা. থেকেও বর্ণিত হয়েছে। দেখুন, (বাইহাকী,
শুআবুল ঈমান: ৫/৩৩৩, হাদীস নং-৩৫১৪-৩৫১৫)উক্ত হাদীসকে কেন্দ্র করে অনেকেই আশুরার দিনে পরিবারের পরিজনের জন্য ভাল খাবারের ব্যবস্থা করে থাকেন। বিভিন্ন বক্তাদের বয়ানেও এর প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিতে শুনা যায়। কিন্তু যে হাদীসকে কেন্দ্র করে এই আমলের প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয় সেই হাদীসটি সহীহ কি না, আমরা যাচাইয়ের চেষ্টা করি না। আসুন হাদীসটি সম্পর্কে মুহাদ্দিসগণ কি বলেছেন একটু জেনে নেই। কেননা হাদীস নির্ভরযোগ্য হওয়া না হওয়ার ক্ষেত্রে তাদের কথাই তো গ্রহণযোগ্য।
# ইমাম আহমদ রহ. বলেন, হাদীসটি সহীহ নয়। (আল-মানারুল মুনীফ, ইবনুল কায়্যিম, পৃ.১১২)
# উকাইলী রহ. বলেন, এবিষয়ে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে কোনো কিছুই প্রমাণিত নয়। হাঁ, ইবরাহীম বিন মুহাম্মদ বিন মুনতাশির থেকে কথাটি বর্ণিত হয়েছে। (আয-যুআফা, উকাইলী:৩/২৫২)
# ইবনে মাসউদ রা. এর হাদীস সম্পর্কে উকাইলী রহ. বলেন, আলী ইবনুল মুহাজির এবং হাইছাম (উক্ত হাদীসের দুই রাবী) মাজহুল (অর্থাৎ তারা নির্ভরযোগ্য না অনির্ভরযোগ্য তা জানা যায় নি) আর হাদীস সঠিক নয়। আয যুআফা, উকাইলী:৩/২৫২,
# আর হাফেয যাহাবী রহ. আলী ইবনে মুহাজির (হাদীসের রাবী) সম্পর্কে বলেন, তার পরিচয় পাওয়া যায় নি। আর খবরটি জাল। মীযানুল ইতেদাল:৫/১৯১)
# হযরত আবু হুরায়রা রা. এর হাদীস সম্পর্কে উকাইলী রহ. বলেন, সুলাইমান (হাদীসের রাবী) মাজহুল (অর্থাৎ তিনি নির্ভরযোগ্য না অনির্ভরযোগ্য তা জানা যায় নি) আর হাদীসটি সঠিক নয়। আর এই হাদীসটি নবীজী থেকে কোন মারফু হাদীসে বর্ণিত হয় নি। (আল-মওযুআত, ইবনুল জাওযী: ২/৫৭৩)
# আল্লামা ইবনে তাইমিয়া রহ. আশুরার দিনে ভাল খাবারের ব্যবস্থা করা, ফেযাব লাগানো, সুরমা লাগানো ইত্যাদির কথা উল্লেখ করে বলেন, এগুলো নবীজীর নামে মিথ্যারোপ করা হয়েছে। আশুরার দিনে রোযা রাখার বিষয়টি ছাড়া কোনো কিছুই সহীহভাবে প্রমাণিত হয় নি। (মিনহাজুস সুন্নাহ: ৭/৩৯; মাজমূউ ফাতাওয়া ইবনে তাইমিয়াহ:২৫/১৬৮)
তিনি বলেন, সর্বোচ্চ এতটুকু বলা যায় যে, এটা ইবরাহী ইবনুল মুনতাশির-এর বক্তব্য (আয যুআফা, উকাইলী: ৩/২৫২;মাজমূউল ফাতাওয়া, ইবনে তাইময়া:২৫/১৬৮)
# যারকাশী রহ. বলেন, এটা প্রমাণিত নয়। এটা তো মুহাম্মদ বিন মুনতাশির এর বক্তব্য। (আল আসরারুল মারফূআহ, মুল্লা আলী কারী রহ. ৩৪৫; কাশফুল খাফা, আজলূনী: ২/৩৩৭ পৃ.)
# আল্লামা ইবনে রাজাব হাম্বলী রহ. লাতাইফুল মাআরিফ গ্রন্থে, পৃ.১১৩ বলেন, এর সনদ সহীহ নয়। হাদীসটি বিভিন্ন সূত্রে বর্ণিত হয়েছে, তবে কোনোটিই সহীহ নয়।
# হাফেয ইবনে হাজার রহ. মুনকারুন জিদ্দান (খুবই অাপত্তিজনক) বলেছেন ( লিসানুল মীযান:৬/৩৩৮, অারো দেখুন, ৮/৩৬৬, ৮/৫৩৯
মুহাদ্দিসীনে কেরামের উপরোক্ত বক্তব্যগুলো থেকে বুঝা যায় উক্ত হাদীসটি ভিত্তিহীন। কিন্তু এর বিপরিত অনেক মুহাদ্দিসের বক্তব্য পাওয়া যায় যারা হাদীসটিকে যয়ীফ মনে করেন; হাদীসটি জাল একথা মানতে তাঁরা রাজি নন। যেমন সাখাভী রহ. আল-মাকাসিদুল হাসানাহ গ্রন্থে, (পৃ. ৪৩১) সুয়ুতী রহ. তার আত তাআক্কুবাত এবং আল-লায়ালিল মাসনুআহ গ্রন্থে (২/১১১-১১৪) ইবনে আররাক রহ. তাঁর তানযীহুশ শরীয়াহ গ্রন্থে (২/১৫৭-১৫৮) মুল্লা আলী ক্বারী রহ. তাঁর আল-আসরারুল মারফূআহ গ্রন্থে পৃ. ৩৪৫; মুনাভী রহ. ফায়যুল কদীর গ্রন্থে (৬/২৩৫) আজলূনী রহ. কাশফুল খাফা গ্রন্থে (২/৩৩৭-৩৩৮) লাখনৌভী রহ. আল-আছারুল মারফূআহ গ্রন্থে (পৃ.১০০) এবিষয়ে বিস্তারিত অালোচনা করেছেন। তাদের অালোচনার সারাংশ হলো হাদীসটি দুর্বল জাল নয়।
সুফিয়ান বিন উয়াইনাহ রহ. বলেন, ষাট বছর যাবত পরিক্ষা করে (অর্থাৎ ষাট বছর আশুরার দিন ভাল খাবারের ব্যবস্তা করে) এটাকে সঠিক পেয়েছি। (মাজমূউ ফাতাওয়া ইবনে তাইমিয়া: ২৫/১৬৮)
বাইহাকী রহ. উক্ত হাদীসকে বিভিন্ন সূত্রে উল্লেখ করে বলেন, যদিও সনদগুলো যয়ীফ কিন্তু যেহেতু হাদীসটি বিভিন্ন সূত্রে বর্ণিত হয়েছে তাই একটি অপরটিকে শক্তিশালী করছে। (শুআবুল ঈমান:৫/৩৩৩)
আল্লামা সুয়ূতী রহ. তাঁর আত-তাআক্কুবাত গ্রন্থে যারা হাদীসকে ভিত্তিহীন বলেছেন তাদের বক্তব্যকে প্রত্যাখ্যান করে বলেন, কখনো নয়, বরং হাদীসটি সহীহ, প্রমাণিত। (কাশফুল খাফা, আজলূনী:২/৩৩৭; আল-আসরারুল মারফূআহ, পৃ. ৩৪৫)
শায়খ আব্দুল ফাত্তাহ আবু গুদ্দাহ রহ. মুহাদ্দিসদের বক্তব্যগুলো সামনে রেখে এই সিদ্ধান্তে উপনিত হয়েছেন যে হাদীসটি জাল নয় বরং যয়ীফ। একারণেই তিনি আল-মানারুল মুনীফ গ্রন্থের শেষে উক্ত গ্রন্থে উল্লেখিত হাদীসগুলোকে দু’ভাগে ভাগ করেছেন। ১-যেগুলো জাল নয়। ২-জাল। আর উক্ত হাদীসকে প্রথম প্রকারে উল্লেখ করেছেন।
আমাদের করণীয়:
যেহেতু অনেক মুহাদ্দিস উক্ত হাদীসকে ভিত্তিহীন এবং খুবই অাপত্তিজনক বলেছেন অার তাদের কথাই সম্ভবত বেশি সঠিক তাই উক্ত আমলটির প্রতি বিশেষ গুরুত্ব না দেয়াই উচিৎ এবং উক্ত হাদীসের প্রচার-প্রসার না করাই উচিৎ। কিন্তু যেহেতু অনেক মুহাদ্দিস উক্ত হাদীসকে ভিত্তিহীন মানতে নারাজ বরং তাদের মতে হাদীসটি অনেক সনদের কারণে অন্তত আমলযোগ্য যয়ীফ, তাই কেউ যদি উক্ত হাদীসের উপর আমল করে বা এর প্রচার-প্রসার করে তাহলে এনিয়ে ঝগড়া বিবাদ করা কোনো ক্রমেই উচিৎ নয়।
-------
তাহকিকঃ শাইখ Mahbubul Hasan Arife