সাহাবায়ে কিরাম ও আহলে বাইতের সম্পর্ক (সন্তানের নামকরণ প্রসঙ্গ)
* সাহাবায়ে কিরামদের মধ্যে বিদ্বেষ-শত্রুতার কিচ্ছা শুনিয়ে ইহুদিজাত শিয়া-কাফেররা মুসলমানদের বিভ্রান্ত করে। এই মিথ্যাচার সরল মনে বিশ্বাস করে নেয়ার আগে কিছু বিষয় উপলব্ধি করবেন কি?_ **
নাম হচ্ছে নামকরণকৃত বস্তুর প্রতি ইঙ্গিত। এটা এমন এক শিরোনাম, যা একজনকে অন্যজন থেকে পৃথক করে। মানুষের স্বভাব নামকরণের কার্যক্রম চালু করেছে। নামের গুরুত্ব প্রত্যেক বিবেকবান মাত্রই সন্দেহাতীতভাবে স্বীকার করেন। কারণ, নামের মাধ্যমে শিশু পরিচিত হয়; তার ভাই ও অন্যান্যদের থেকে পৃথক হয় এবং তার জন্য ও পরবর্তী বংশধরের জন্য হয় নিশানা। মানুষ শেষ হয়ে যায় কিন্তু নাম অবশিষ্ট থাকে।
>> সম্মানিত মুসলিম ভাই-বোনেরা:
ব্যস্ত হবেন না, অবাক হবেন না, বরং আমার সাথে পাঠে ও প্রশ্ন-উত্তরে অংশগ্রহণ করুন:
- কেন আপনি আপনার সন্তানের নাম রাখবেন?
- আপনি কি আপনার সন্তানের জন্য এমন একটি নাম বাছাই করবেন, যা আপনার নিকট অথবা তার মা ও পরিবার-পরিজনের নিকট প্রিয় অর্থবোধক হবে?
- আপনি কি আপনার শত্রুদের নামে সন্তানের নাম রাখবেন?
সুবহানাল্লাহ!
আমরা আমাদের নিজেদের জন্য এমন নাম নির্বাচন করব, যা আমাদের নিকট তাৎপর্যপূর্ণ ও অর্থবহ। আর যারা ভাল মানুষের অন্তর্ভুক্ত, নামের ভাল-মন্দ বিচার করে আমারা কি তাদেরকে বর্জন করব? আমরা বলব: না। কারণ, তারা তাদের সন্তানদের নাম নির্বাচন করেছে সামাজিক ও রাজনৈতিক কারণ বা প্রেক্ষাপটকে সামনে রেখে!! নাম নির্বাচনটা তাদের নিকট কোন তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় ছিল না!!
জাতির পণ্ডিত ও নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ এবং বংশ ও ব্যক্তিত্বে সম্মানিত ব্যক্তিগণ এমন ব্যক্তিকে সম্মান করেন, যার মানবিক মূল্যবোধ বেশি। সুতরাং এটা তাদের প্রতি উদারতা নয় যে, তারা তাদের প্রিয় ব্যক্তিদের প্রতি ভালবাসা ও মর্যাদার স্বীকৃতি স্বরূপ তাদের নামে তাদের সন্তানদের নামকরণ করে থাকে; বরং তারা তাদের শত্রুদের নামেও তাদের কোন কোন সন্তানের নামকরণ করে!! আপনি এটা সমর্থন করেন কি?
নির্দিষ্ট নামের জন্য নামকরণের বিষয়টি কোন একক ব্যক্তির জন্য ক্ষণস্থায়ী ব্যাপার নয়, বরং সকল সন্তান-সন্ততির জন্যই এই নামকরণ। আর বহু যুগ পরে পারস্পরিক শত্রুতা ভুলে যাওয়ার পর নামকরণ-পদ্ধতি চালু হয়েছে, এ কথাও ঠিক নয়। বরং নামকরণ-পদ্ধতি চালু হয়েছে পারস্পরিক শত্রুতার চরম সময়ে। তারা (পণ্ডিতবর্গ) এরূপ ধারণাই পোষণ করেন। আমরা বলি, বরং ভালবাসার স্বর্ণযুগে নামকরণ-পদ্ধতি চালু হয়েছে। এটা একটি গুরুত্বপূর্ণ মাস‘আলা, যাকে গুরুত্ব দেয়ার পাশাপাশি আলোচনা-পর্যালোচনা খুবই জরুরী। কারণ, এর মধ্যে অনেক গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা রয়েছে; আছে বিভিন্ন উপকথা, কল্পকাহিনী ও মনগড়া কিচ্ছা-কাহিনীর জবাব; আরও আছে ব্যক্তিকে সম্বোধন ও আবেগের বিষয় এবং পণ্ডিতগণ কর্তৃক পণ্ডিতগণকে পরিতুষ্টকরণ। সুতরাং নামকরণের এ বিষয়কে প্রত্যাখ্যান করা বা ভিন্ন ব্যাখ্যা করা অসম্ভব ব্যাপার।
●এবার আপনার লক্ষ্য ঠিক করুন
#১-৩. সাইয়্যেদেনা আলী রা. ছিলেন এমন ব্যক্তি, যিনি খোলাফায়ে রাশেদীনের বাকি তিন খলিফাকে খুব ভালবাসতেন। তিনি তাঁদের নামে তাঁর কয়েকজন সন্তানের নাম রেখেছেন। তাঁরা হলেন:
- আবু বকর ইব্ন আলী ইব্ন আবি তালেব: তাঁর ভাই হোসাইনের সাথে কারবালায় শহীদ হন (তাঁদের উপর ও তাঁদের নানার উপর সর্বোত্তম সালাত ও সালাম)।
- ওমর ইব্ন আলী ইব্ন আবি তালেব: তাঁর ভাই হোসাইনের সাথে কারবালায় শহীদ হন (তাঁদের উপর ও তাঁদের নানার উপর সর্বোত্তম সালাত ও সালাম)।
- ওসমান ইব্ন আলী ইব্ন আবি তালেব: তাঁর ভাই হোসাইনের সাথে কারবালায় শহীদ হন (তাঁদের উপর ও তাঁদের নানার উপর সর্বোত্তম সালাত ও সালাম)।
#৪-৬. হাসান রা. তাঁর সন্তানদের নাম রেখেছেন আবু বকর ইব্ন হাসান, ওমর ইব্ন হাসান এবং তালহা ইব্ন হাসান। আর তাঁরা সকলেই তাঁদের চাচা হোসাইন (আ.)-এর সাথে কারবালায় শাহাদাত বরণ করেন।
৭. হোসাইন রা. তাঁর সন্তানের নাম রেখেছেন ওমর ইব্ন হোসাইন।
৮. ৯. তাবেয়ীদের সরদার চতুর্থ ইমাম আলী ইব্ন হোসাইন যাইনুল আবেদীন (আ.) তাঁর কন্যার নাম রাখেন ‘আয়েশা, আর ছেলের নাম রাখেন ওমর। তাঁর পরেও তাঁর বংশধর রয়েছে ।
অনুরূপভাবে আববাস ইব্ন আবদিল মুত্তালিব, জা‘ফর ইব্ন আবি তালেব, মুসলিম ইব্ন ‘উকাইলের বংশধরসহ আহলে বাইতের অপরাপর সদস্যগণও তাঁদের সন্তানদের নামকরণ করেছেন। এখানে ঐসব নাম অনুসন্ধানের অবকাশ নেই; বরং যা উল্লেখ করলে কাঙ্খিত বিষয়ের উপর ইঙ্গিত করে, তা উল্লেখ করাই উদ্দেশ্য। আর আলী, হাসান ও হোসাইন (আ.)-এর সন্তানদের কথা পূর্বে আলোচনা করা হয়েছে।
আলী (আ.) ও তাঁর পরিবার-পরিজন তাঁদের সন্তানদের এসব নামে নামকরণ করেছেন, শিয়াদের মধ্য থেকে কেউ কেউ তা অস্বীকার করে। এটা ঐ ব্যক্তির কাজ, নাম ও বংশ সম্পর্কে যার কোন জ্ঞান নেই এবং বই-পত্রের সাথে যার সম্পর্ক সীমিত। আর তারা সংখ্যায় নগণ্য। আল্লাহর জন্য সকল প্রশংসা।
অথচ এ শুধু আমাদের মুসলিমদের দাবি না, তার উপযুক্ত প্রমাণ শিয়া ধর্মের যাজক-পোপদের লিখিত কিতাবেও আছে!
গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, ইমামগণ কর্তৃক আবু বকর, ওমর, ওসমান, আয়েশা (রা.) প্রমূখ প্রখ্যাত সাহাবীদের নামে তাঁদের সন্তানদের নামকরণের মাস’আলাটি। আমরা এই মাস’আলার কোন পরিতুষ্টকারী সন্তোষজনক জবাব শিয়া সম্প্রদায়ের কাছে পাব না। আমাদের দ্বারা এ কথা বলা সম্ভব নয় যে, এসব নামের কোন অর্থ ও তাৎপর্য নেই। আবার মাসা’আলাটির ব্যাপারে এ কথাও বলা অসম্ভব যে, “এটি একটি ষড়যন্ত্র যা প্রকৃত মুসলিম তথা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত শিয়াদের কিতাবসমূহে সৃষ্টি করেছে!” কারণ, এ কথার অর্থ হল, তাদের কিতাবসমূহে বর্ণিত সকল রেওয়ায়েতকে প্রশ্নবিদ্ধ করা। সুতরাং প্রত্যেক রেওয়ায়েতর ক্ষেত্রেই শিয়াদের পক্ষে এ কথা বলা অসম্ভব নয় যে, এটি একটি চক্রান্ত!!
হাস্যকর ও বেদনাদায়ক দিক হল যখন বলা হয়: ইতঃপূর্বে যাঁদের আলোচনা হয়েছে, প্রখ্যাত সাহাবীদের নামে তাঁদের নামকরণ করা হয়েছে তাঁদেরকে গালিগালাজ ও তিরস্কার করার জন্য।
হায়! সুবহানাল্লাহ, আমাদের জন্য বৈধ হবে কি এ কথা বলা যে, ইমাম এমন অনেক কাজ করেন যার দ্বারা তাঁর সঙ্গী-সাথীগণ ও সাধারণ জনগণ প্রতারিত হয়?
এই জন্য কিভাবে ইমাম তাঁর বংশধরকে ক্ষতির মুখে ঠেলে দেবেন??
ইমামগণ যা প্রমাণ করলেন: আহলে বাইত কর্তৃক খোলাফায়ে রাশেদীন ও নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সকল সাহাবীর প্রতি সত্যিকার ভালবাসার শক্তিশালী দলীল ও বাস্তব উদাহরণ হলেন আলী (আ.) ও তাঁর সন্তানগণ। আর আপনি নিজেও এ বাস্তবতাকে স্বীকার করবেন। সুতরাং একে প্রত্যাখ্যান করার কোন সুযোগ নেই।
এই বাস্তবতাকে সমর্থন করে আল্লাহ তা‘আলার বাণী:
‘মুহাম্মদ আল্লাহর রাসূল; তার সহচরগণ কাফিরদের প্রতি কঠোর এবং নিজেদের মধ্যে পরস্পরের প্রতি সহানুভূতিশীল; আল্লাহর অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টি কামনায় তুমি তাদেরকে রুকূ‘ ও সিজদায় অবনত দেখবে। তাদের লক্ষণ তাদের মুখমন্ডলে সিজদার প্রভাব পরিস্ফুট থাকবে।’’ -(সূরা ফাতহ :২৯)
--------------------
__ মূলঃ শায়খ উসমান আল খামিস, শায়খ সালেহ বিন আব্দুল্লাহ-দারভিশ { সংকলিত ও সম্পাদিত }
~ The Rafidologist
নাম হচ্ছে নামকরণকৃত বস্তুর প্রতি ইঙ্গিত। এটা এমন এক শিরোনাম, যা একজনকে অন্যজন থেকে পৃথক করে। মানুষের স্বভাব নামকরণের কার্যক্রম চালু করেছে। নামের গুরুত্ব প্রত্যেক বিবেকবান মাত্রই সন্দেহাতীতভাবে স্বীকার করেন। কারণ, নামের মাধ্যমে শিশু পরিচিত হয়; তার ভাই ও অন্যান্যদের থেকে পৃথক হয় এবং তার জন্য ও পরবর্তী বংশধরের জন্য হয় নিশানা। মানুষ শেষ হয়ে যায় কিন্তু নাম অবশিষ্ট থাকে।
>> সম্মানিত মুসলিম ভাই-বোনেরা:
ব্যস্ত হবেন না, অবাক হবেন না, বরং আমার সাথে পাঠে ও প্রশ্ন-উত্তরে অংশগ্রহণ করুন:
- কেন আপনি আপনার সন্তানের নাম রাখবেন?
- আপনি কি আপনার সন্তানের জন্য এমন একটি নাম বাছাই করবেন, যা আপনার নিকট অথবা তার মা ও পরিবার-পরিজনের নিকট প্রিয় অর্থবোধক হবে?
- আপনি কি আপনার শত্রুদের নামে সন্তানের নাম রাখবেন?
সুবহানাল্লাহ!
আমরা আমাদের নিজেদের জন্য এমন নাম নির্বাচন করব, যা আমাদের নিকট তাৎপর্যপূর্ণ ও অর্থবহ। আর যারা ভাল মানুষের অন্তর্ভুক্ত, নামের ভাল-মন্দ বিচার করে আমারা কি তাদেরকে বর্জন করব? আমরা বলব: না। কারণ, তারা তাদের সন্তানদের নাম নির্বাচন করেছে সামাজিক ও রাজনৈতিক কারণ বা প্রেক্ষাপটকে সামনে রেখে!! নাম নির্বাচনটা তাদের নিকট কোন তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় ছিল না!!
জাতির পণ্ডিত ও নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ এবং বংশ ও ব্যক্তিত্বে সম্মানিত ব্যক্তিগণ এমন ব্যক্তিকে সম্মান করেন, যার মানবিক মূল্যবোধ বেশি। সুতরাং এটা তাদের প্রতি উদারতা নয় যে, তারা তাদের প্রিয় ব্যক্তিদের প্রতি ভালবাসা ও মর্যাদার স্বীকৃতি স্বরূপ তাদের নামে তাদের সন্তানদের নামকরণ করে থাকে; বরং তারা তাদের শত্রুদের নামেও তাদের কোন কোন সন্তানের নামকরণ করে!! আপনি এটা সমর্থন করেন কি?
নির্দিষ্ট নামের জন্য নামকরণের বিষয়টি কোন একক ব্যক্তির জন্য ক্ষণস্থায়ী ব্যাপার নয়, বরং সকল সন্তান-সন্ততির জন্যই এই নামকরণ। আর বহু যুগ পরে পারস্পরিক শত্রুতা ভুলে যাওয়ার পর নামকরণ-পদ্ধতি চালু হয়েছে, এ কথাও ঠিক নয়। বরং নামকরণ-পদ্ধতি চালু হয়েছে পারস্পরিক শত্রুতার চরম সময়ে। তারা (পণ্ডিতবর্গ) এরূপ ধারণাই পোষণ করেন। আমরা বলি, বরং ভালবাসার স্বর্ণযুগে নামকরণ-পদ্ধতি চালু হয়েছে। এটা একটি গুরুত্বপূর্ণ মাস‘আলা, যাকে গুরুত্ব দেয়ার পাশাপাশি আলোচনা-পর্যালোচনা খুবই জরুরী। কারণ, এর মধ্যে অনেক গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা রয়েছে; আছে বিভিন্ন উপকথা, কল্পকাহিনী ও মনগড়া কিচ্ছা-কাহিনীর জবাব; আরও আছে ব্যক্তিকে সম্বোধন ও আবেগের বিষয় এবং পণ্ডিতগণ কর্তৃক পণ্ডিতগণকে পরিতুষ্টকরণ। সুতরাং নামকরণের এ বিষয়কে প্রত্যাখ্যান করা বা ভিন্ন ব্যাখ্যা করা অসম্ভব ব্যাপার।
●এবার আপনার লক্ষ্য ঠিক করুন
#১-৩. সাইয়্যেদেনা আলী রা. ছিলেন এমন ব্যক্তি, যিনি খোলাফায়ে রাশেদীনের বাকি তিন খলিফাকে খুব ভালবাসতেন। তিনি তাঁদের নামে তাঁর কয়েকজন সন্তানের নাম রেখেছেন। তাঁরা হলেন:
- আবু বকর ইব্ন আলী ইব্ন আবি তালেব: তাঁর ভাই হোসাইনের সাথে কারবালায় শহীদ হন (তাঁদের উপর ও তাঁদের নানার উপর সর্বোত্তম সালাত ও সালাম)।
- ওমর ইব্ন আলী ইব্ন আবি তালেব: তাঁর ভাই হোসাইনের সাথে কারবালায় শহীদ হন (তাঁদের উপর ও তাঁদের নানার উপর সর্বোত্তম সালাত ও সালাম)।
- ওসমান ইব্ন আলী ইব্ন আবি তালেব: তাঁর ভাই হোসাইনের সাথে কারবালায় শহীদ হন (তাঁদের উপর ও তাঁদের নানার উপর সর্বোত্তম সালাত ও সালাম)।
#৪-৬. হাসান রা. তাঁর সন্তানদের নাম রেখেছেন আবু বকর ইব্ন হাসান, ওমর ইব্ন হাসান এবং তালহা ইব্ন হাসান। আর তাঁরা সকলেই তাঁদের চাচা হোসাইন (আ.)-এর সাথে কারবালায় শাহাদাত বরণ করেন।
৭. হোসাইন রা. তাঁর সন্তানের নাম রেখেছেন ওমর ইব্ন হোসাইন।
৮. ৯. তাবেয়ীদের সরদার চতুর্থ ইমাম আলী ইব্ন হোসাইন যাইনুল আবেদীন (আ.) তাঁর কন্যার নাম রাখেন ‘আয়েশা, আর ছেলের নাম রাখেন ওমর। তাঁর পরেও তাঁর বংশধর রয়েছে ।
অনুরূপভাবে আববাস ইব্ন আবদিল মুত্তালিব, জা‘ফর ইব্ন আবি তালেব, মুসলিম ইব্ন ‘উকাইলের বংশধরসহ আহলে বাইতের অপরাপর সদস্যগণও তাঁদের সন্তানদের নামকরণ করেছেন। এখানে ঐসব নাম অনুসন্ধানের অবকাশ নেই; বরং যা উল্লেখ করলে কাঙ্খিত বিষয়ের উপর ইঙ্গিত করে, তা উল্লেখ করাই উদ্দেশ্য। আর আলী, হাসান ও হোসাইন (আ.)-এর সন্তানদের কথা পূর্বে আলোচনা করা হয়েছে।
আলী (আ.) ও তাঁর পরিবার-পরিজন তাঁদের সন্তানদের এসব নামে নামকরণ করেছেন, শিয়াদের মধ্য থেকে কেউ কেউ তা অস্বীকার করে। এটা ঐ ব্যক্তির কাজ, নাম ও বংশ সম্পর্কে যার কোন জ্ঞান নেই এবং বই-পত্রের সাথে যার সম্পর্ক সীমিত। আর তারা সংখ্যায় নগণ্য। আল্লাহর জন্য সকল প্রশংসা।
অথচ এ শুধু আমাদের মুসলিমদের দাবি না, তার উপযুক্ত প্রমাণ শিয়া ধর্মের যাজক-পোপদের লিখিত কিতাবেও আছে!
গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, ইমামগণ কর্তৃক আবু বকর, ওমর, ওসমান, আয়েশা (রা.) প্রমূখ প্রখ্যাত সাহাবীদের নামে তাঁদের সন্তানদের নামকরণের মাস’আলাটি। আমরা এই মাস’আলার কোন পরিতুষ্টকারী সন্তোষজনক জবাব শিয়া সম্প্রদায়ের কাছে পাব না। আমাদের দ্বারা এ কথা বলা সম্ভব নয় যে, এসব নামের কোন অর্থ ও তাৎপর্য নেই। আবার মাসা’আলাটির ব্যাপারে এ কথাও বলা অসম্ভব যে, “এটি একটি ষড়যন্ত্র যা প্রকৃত মুসলিম তথা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত শিয়াদের কিতাবসমূহে সৃষ্টি করেছে!” কারণ, এ কথার অর্থ হল, তাদের কিতাবসমূহে বর্ণিত সকল রেওয়ায়েতকে প্রশ্নবিদ্ধ করা। সুতরাং প্রত্যেক রেওয়ায়েতর ক্ষেত্রেই শিয়াদের পক্ষে এ কথা বলা অসম্ভব নয় যে, এটি একটি চক্রান্ত!!
হাস্যকর ও বেদনাদায়ক দিক হল যখন বলা হয়: ইতঃপূর্বে যাঁদের আলোচনা হয়েছে, প্রখ্যাত সাহাবীদের নামে তাঁদের নামকরণ করা হয়েছে তাঁদেরকে গালিগালাজ ও তিরস্কার করার জন্য।
হায়! সুবহানাল্লাহ, আমাদের জন্য বৈধ হবে কি এ কথা বলা যে, ইমাম এমন অনেক কাজ করেন যার দ্বারা তাঁর সঙ্গী-সাথীগণ ও সাধারণ জনগণ প্রতারিত হয়?
এই জন্য কিভাবে ইমাম তাঁর বংশধরকে ক্ষতির মুখে ঠেলে দেবেন??
ইমামগণ যা প্রমাণ করলেন: আহলে বাইত কর্তৃক খোলাফায়ে রাশেদীন ও নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সকল সাহাবীর প্রতি সত্যিকার ভালবাসার শক্তিশালী দলীল ও বাস্তব উদাহরণ হলেন আলী (আ.) ও তাঁর সন্তানগণ। আর আপনি নিজেও এ বাস্তবতাকে স্বীকার করবেন। সুতরাং একে প্রত্যাখ্যান করার কোন সুযোগ নেই।
এই বাস্তবতাকে সমর্থন করে আল্লাহ তা‘আলার বাণী:
‘মুহাম্মদ আল্লাহর রাসূল; তার সহচরগণ কাফিরদের প্রতি কঠোর এবং নিজেদের মধ্যে পরস্পরের প্রতি সহানুভূতিশীল; আল্লাহর অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টি কামনায় তুমি তাদেরকে রুকূ‘ ও সিজদায় অবনত দেখবে। তাদের লক্ষণ তাদের মুখমন্ডলে সিজদার প্রভাব পরিস্ফুট থাকবে।’’ -(সূরা ফাতহ :২৯)
--------------------
__ মূলঃ শায়খ উসমান আল খামিস, শায়খ সালেহ বিন আব্দুল্লাহ-দারভিশ { সংকলিত ও সম্পাদিত }
~ The Rafidologist