তাকিয়াঃ শিয়া ধর্মের মুখোশ...
তাকিয়া হল ইহুদিজাত শিয়া ধর্মের অন্যতম ভিত্তি। তাকিয়া(التقية) অর্থ ভয় পাওয়া,সতর্ক হয়ে নিজের পরিচয় গোপন করা। শিয়া ধর্মে তাকিয়া বলতে বুঝায় মুসলিমদের সামনে নিজের মনোভাব/মতাদর্শ গোপন করে বাইরে তার বিপরীত প্রদর্শন করা,অর্থাৎ মিথ্যা অভিনয় করা।
যেমনটা শিয়া ধর্মগ্রন্থে লেখা- “আবু জাফর(আ) বলেন- বাইরে তাদের সাথে মিশে থাক,কিন্তু ভিতরে ভিতরে তাদের বিরোধিতা কর” [আল কাফি,তাকিয়া অধ্যায়,রি-২০;১৩৫/২]
শিয়া ধর্মাবলম্বীরা নানা ছুতায় দাবি করে যে, ভয় পেয়ে নিরাপত্তার জন্যই তাকিয়া, এবং তারা কুরআনের কিছু আয়াতের হাস্যকর অপব্যাখ্যা করেও তাকিয়ার ধর্মীয় আবশ্যকতা দাবি করে;যদিও বাস্তবে শিয়া ধর্মে তাকিয়ার অবস্থান,প্রয়োগে তা খাটে না। সেগুলার হাকীকত দেখার আগে, আসুন আমরা দেখে নেই, এই ‘তাকিয়া’কে কিভাবে মৌলিক উপাদান বানিয়ে ফেলা হয়েছে-
‘তাকিয়া আল্লাহ্র দ্বীন এবং যার তাকিয়া নেই তার দ্বীন নেই।তাকিয়া না থাকলে আল্লাহ্র ইবাদত হত না।‘ [মুসতাদরাক আল-ওয়াসায়েল ২৫২,২৫৩/১২]
☠ আবু জাফর(আ) বলেন- ‘তাকিয়া আমার এবং আবার পূর্বপুরুষের ধর্ম,যার তাকিয়া নেই, তার দ্বীন নেই’ [আল কাফি, ১৩৫/২,বা’ব ৯৭; বিহারুল আনওয়ার ১০৩/৬৭; মিরাত আল-উকুল ১৮০/৯]
☠ আবু আবদুল্লাহ(আ) বলেন-‘তাকিয়া দ্বীনের ১০ ভাগের ৯ ভাগ’[আল কাফি,১৩৩/২]
☠ ‘তাকিয়া ছেড়ে দিলে সে কাফের’ [ফিকহ আল-রেযা পৃ ৩৩৮; মুস্তাদরাক সাফিনাতুল বিহার ৪১৭/১০ ]
☠ শীর্ষ শিয়া ধর্মগুরু শায়খ সাদুক বলে- ‘যে তাকিয়া ছেড়ে দিল সে যেন সালাত ছেড়ে দিল’ [আল ই’তিকাদাত,পৃ ১০৭] মালাঊন রুহুল্লাত খোমেনীও অনুরূপ সায় দিয়েছে তার কিতাবে(মাকাসিব আল-মুহাররামাহ, ১৩৪/২)
☠ আলী বিন হুসাইন(আ) বলেন- ‘আল্লাহ্ আখিরাতে সব পাপ মাফ করবেন, শুধু তাকিয়া ত্যাগ করা ও ভাইয়ের হক্ক নষ্ট করা ব্যতীত’ [ওয়াসায়েল আশ-শিয়া ২২৩/১৬]
☠ আমিরুল মু’মিনীন(আ) বলেন- ‘তাকিয়া মু’মিনের সবচেয়ে উত্তম আমল’ [তাফসিরে আসকারী পৃ ৩২০-বর্ণনা ১৬৩]
☠ হাসান বিন আলী(আ) বলেন- “তাকিয়ার মাধ্যমে উম্মতকে আল্লাহ সংশোধন করেন। তাকিয়াকারী তাদের আমলের অনুরুপ সওয়াব পাবে। তাকিয়া ছেড়ে দিলে উম্মতকে ধংস করে দেয়ার সম্ভাবনা আছে। তাকিয়া তরককারী উম্মত ধংসকারীদের অন্তর্ভুক্ত হবে” [তাফসিরে আসকারী পৃ ৩২০-বর্ণনা ১৬৪ ; জামিউল আখবার পৃ ২৫২]
☠ জাফর সাদিক(আ) বলেন-‘বিচার দিবসে আমাদের শিয়াদের থেকে এমন একজনকে আনা হবে যে আমলে অবহেলাকারী ছিল; কিন্তু বেলায়েতে বিশ্বাস রাখত, তাকিয়া করত আর অপর ভাইয়ের হক্ক রক্ষা করত।এরপরে আল্লাহ্ তার সামনে এক লক্ষ নাসিবী(উদ্দেশ্যঃ শিয়া নয়) কে আনা হবে আর বলা হবে- তোমার জায়গায় তারা জাহান্নামে যাবে।’ [তাফসিরে আসকারী পৃ ২৪২(বর্ণনা ১১৯); বিহারুল আনওয়ার ৪৪/৮]
☠ হিশাম বিন সালিম বলেন,“ আমি আবু আবদুল্লাহ(আ) কে বলতে শুনেছি-আল্লাহ্র কাছে বান্দার খবা(লুকানো/গোপন করা) সবচেয়ে প্রিয়।জিজ্ঞেস করা হল, খবা কি? তিনি বললেন-তাকিয়া” [মাআনিল আখবার, পৃ ১৬২; ওয়াসায়েল আশ-শিয়া ২১৯/১৬]
☠ আবু আব্দুল্লাহ(আ) বলেন- ‘হে সুলায়মান। তোমরা এমন এক ধর্মের অনুসারী, যে তোমরা যদি তা লুকিয়ে রাখো, তাহলে আল্লাহ্ তোমাদের মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন; আর যদি একে প্রকাশ কর, তাহলে অপদস্থ হবে’ [আল কাফি, ১৩৬/২,অধ্যায় ৯৮(কিতমান), রি-৩; বিহারুল আনওয়ার ৩৯৭/৭৫] মালাঊন রুহুল্লাত খোমেনীও তার কিতাবে অনুরূপ উদ্ধৃত করেছে- [আল রাসায়েল ১৮৫/২]
পরবর্তীতে পারস্যের অগ্নিপূজক-মুশরিকদের হাতে শিয়া ধর্ম লালিত-পালিত হয়ে বেড়ে উঠবার পরে শিয়া ধর্মের জন্য তাকিয়া আরো আবশ্যক হয়ে পরে, আহলে বাইতের ইতিহাস-কাজকর্মের সাথে শিয়া-ধর্মের সামঞ্জস্য,বৈধতা রচনা করার জন্য- আহলে বাইতকে কপটচারী,অভিনেতা বানানোর মাধ্যমে!
যেমন-
আলী(রা) কেন প্রথম তিন খলিফার সময়ে ‘অন্যায়-অবিচার, দ্বীন বিকৃতি’ সব চুপচাপ মেনে তাঁদের আনুগত্য করেছেন? নিজের স্ত্রীর হত্যা,ভূমি দখল সয়েছেন, নিজের মেয়েকে উমরের সাথে বিয়ে দিয়েছেন?- তাকিয়া করে।
হাসান(রা) কেন মুয়াবিয়া(রা) এর হাতে খিলাফত তুলে দিলেন? কেনইবা হাসান(রা),হুসাইন(রা) মুয়াবিয়া(রা)এর খিলাফতে শান্ত থাকলেন,হাদিয়া নিয়ে গেলেন?-তাকিয়ার কারণে! এভাবে পরবর্তীদের ক্ষেত্রেও চলতে থাকে।
অর্থাৎ যেখানেই সত্য প্রকাশ পাবে, আহলে বাইতের ইসলামসম্মত কাজ সামনে আসবে, শিয়া ধর্মের সাথে বিরোধিতা প্রতিষ্ঠিত দেখা যাচ্ছে- তখনি সেটাকে আহলে বাইতের অভিনয়,দ্বীন গোপন করে বাতিলের সাথে আপোষ করেছেন,তাকিয়া করে গেছেন- এই দাবি আনা হবে শিয়া কাফেদের পক্ষ থেকে। সাবাঈ শিয়া ধর্মের মৌলিক দাবিগুলাকে যখন বাহানা দিয়ে টিকিয়ে রাখা মুশকিল হবে তখন বলা হবে আহলে বাইতের বংশধররা সারা জীবন তাকিয়া করে গেছেন- শিয়াদের কিতাবে হাজারো রিওয়ায়াতের প্রে বলে দেয়া “ইমামরা তাকিয়া করে এটা বলেছেন” !
☠ শিয়া যাজক হুসাইন জাফরি লিখেছে- “তাকিয়া না হলে শিয়া মতবাদ এত প্রসার পেত না” [তারিখুশ শিয়া, পৃ ২৩০]
আসলেই, এই বিষাক্ত সাবাঈ মতবাদ তো ছদ্মবেশ ধরেই প্রসার পেয়েছে!
☠ তাকিয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে মালাঊন রুহুল্লাত খোমেনী লিখে- “এটা হল আমাদের বিরোধীদের(মুসলিম-আহলে সুন্নাহ) প্রতি ভালবাসা দেখানো এবং তাদের কাছে টানা; কোন প্রকার ক্ষয়ক্ষতির আশংকা ছাড়াই, যেমনটা ভয়ের জন্য তাকিয়ার ক্ষেত্রে।” [আল রাসায়েল,১৭৪/২]
‘তাকিয়া তাদের সঙ্গে ওয়াজিব, যারা আমাদের বিরোধিতা করে(প্রকৃত মুসলিম,আহলে সুন্নাহ) যদিও নিরাপত্তা থাকে এবং নিজের বা অন্য কারো ক্ষতির ভয় না থাকে’ [আল রাসায়েল, ২০১/২]
অর্থাৎ মুসলিমদের সাথে অভিনয় চালু রেখে কাছে টানা,ধোঁকা দেয়া এরপরে পিঠ থেকে ছুরি মারা।
☠ শিয়া যাজক- আয়াতুল্লাহ মুহাসান খাযায়ী বলে- ‘ভয় বা ক্ষতি ছাড়াও তাকিয়া খুব পছন্দনীয়, যাতে সাধারণ(মুসলিমদের)এর স্নেহ-ভালবাসা আকর্ষণ করা যায় এবং তাদের ও আমাদের(শিয়া ধর্মাবলম্বী) মধ্যে ভালবাসা স্থাপন করা যায়’ [বিদায়াতুল মা’আরিফুল ইলাহিয়া, ৪৩০পৃ; আল-হাওয়ারিব ওয়াত-তাকারিব ২০৩ পৃ]
☠ ইমাম সাদিক(আ)- ‘তোমরা তাকিয়ার উপরে থাক। কারণ সে আমাদের মধ্য হতে না ,যে- এটাকে তার প্রতীক ও আবরণ বানিয়ে নিলনা তার আশপাশের লোকেদের কাছে; যাতে পরবর্তীতে সে যাদেরকে ভয় পায় তাদের উপরে এটাকে ব্যবহার করতে পারে’ [মুসতাদরাক সাফিনাতুল বিহার ৪১৫/১০; ওয়াসায়েল আশ-শিয়া ৪৬৬/১১]
মোটকথা, তাকিয়ার উদ্দেশ্য বুঝা যাচ্ছে, যে – নিজেদের শিরক,কুফর মুসলিমদের থেকে লুকিয়ে রাখা, এরপরে আস্তে আস্তে তাদের ভিতরে মিশে গিয়ে কুফরি আকিদা ছড়িয়ে দেয়া, এবং শক্তি অর্জন করে তাদের ক্ষতি করা।
ইসলামের প্রাথমিক শতাব্দী থেকেই গুপ্তঘাতকের ন্যায় মুসলিমদের মাঝে তাকিয়ার দ্বারাই বিস্তার করে আছে শিয়া-রাফেজীরা।
» যেমন হয়ত বলবে, নুসাইরিদের আমরা শিয়া মনে করিনা। কিন্তু নুসাইরি শিয়াদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ঠিকই মুসলিম হত্যায় অংশ নিবে।
☠ শিয়াদের আকিদা-গুরু শায়খ সাদুক লিখে- ‘তাকিয়া বাধ্যতামূলক; ক্কঈম(আ) বের না হওয়া পর্যন্ত তাকিয়া তুলে নেয়ার অনুমতি নেই। যে তাঁর বের হবার আগেই তাকিয়া ত্যাগ করল সে আল্লাহ্র দ্বীন ও ইমামি শিয়া ধর্ম থেকে বেরিয়ে গেল এবং আল্লাহ্,তাঁর রাসূল ও ইমামদের বিরুদ্ধাচরণ করল’ [আল-ই’তিকাদাত পৃষ্ঠা ১০৮]
☠ ইমাম(আ) বলেন- ‘যার আল্লাহ্ ও আখিরাতের প্রতি ঈমান আছে সে জালিম শাসনের(ইসলামি খিলাফত) অধীনে তাকিয়া ছাড়া কথা বলবে না।আর যে তা ছেড়ে দিল সে ইমামি শিয়া ধর্ম ছেড়ে দিল এবং বিচ্যুত হল’ [জামিউল আখবার পৃ২৫৪; বিহার ৪১২/৭৫]
☠ সকল মুতাওয়াতির(প্রসিদ্ধ) বর্ণনা থেকে পরিষ্কার যে, ক্কঈম(১২ত্ম ইমাম) না আসা পর্যন্ত তাকিয়া স্থায়ী হবে। [মিরাত আল-আনওয়ার পৃ৩৩৭; হাওয়ার আততাকারিব ২০১]
☠ ইমাম রেযা(আ)- যে আমাদের ক্কঈম(মেহদি) আসার আগে তাকিয়া ত্যাগ করল সে আমাদের মধ্য থেকে না। [কামাল আদ-দ্বীন ৩৪৬/২; মুন্তাখাব আল-আছার ২২৮]
☠ সূরা ফুসসিলাতঃআয়াত ৩৪ এর ব্যাখ্যায় শিয়া ধর্মের তাফসিরে লেখা- “যখন ক্কঈম(মেহদি) বের হবে তখন তাকিয়া বন্ধ হবে এবং তলোয়ার খোলা হবে।” [ আল বুরহান ৫৭/৭ তাওয়িল আল-আয়াত ৫৩০/২; বিহারুল আনওয়ার ৪৭/২৪]
☠ ‘তাকিয়ার কারণে মেহদির নাম নেয়াও নিষেধ’ [ক্কাওয়ায়েদ আল-ফিক্কহিয়া পৃষ্ঠা ৪৬৭-৪৯৯]
☠ আবু আবদুল্লাহ(আ) বলেন- ‘সাহেব(মেহদি)কে কাফের ছাড়া কেউ নাম ধরে ডাকবে না’ [ওয়াসায়েল আশ-শিয়া ২৩৭/১৬]
শিয়া-কাফেররা যতবারই তাকিয়া ছেড়ে তাদের আসল রূপ প্রকাশ করেছে ততবারই তাওহীদ,রিসালাত এর কুৎসিত অবমাননা হয়েছে, ইসলামের উপরে নগ্ন হামলা হয়েছে। ঝোপ বুঝে কোপ মেরে মুসলিমদের রক্তপাত করা হয়েছে, সেই কারামাতি-ফাতিমি থেকে বাগদাদ ধ্বংস,সাফাভিদের পারস্য দখল.. প্রতিবারই। আর তারা শেষবারে অপেক্ষায় আছে গর্তবাসী ভুয়া মেহদির আগমনের পরে রক্তপাত ঘটানোর। ৭৯’তে ইরানে খোমেনীর ফ্রেঞ্চ-বিপ্লবের পরে শিয়া-কাফেররা জোট বেঁধে মুসলিমদের সাথে শত্রুতার রং দেখানো শুরু করে দিয়েছেই।
» কুরআনের দুশমন শিয়া-কাফেররা সর্বাগ্রে কুরআনের যেই আয়াত দিয়ে তাকিয়াকে দ্বীনের শর্ত বানাতে চায় তা হল, সূরা আলে ইমরানঃ আয়াত ২৮ এ- (إِلَّا أَن تَتَّقُوا مِنْهُمْ تُقَاةً ۗ وَيُحَذِّرُكُمُ اللَّهُ نَفْسَهُ) অর্থাৎ, (তবে যদি তোমরা তাদের পক্ষ থেকে কোন অনিষ্টের আশঙ্কা কর, তবে তাদের সাথে সাবধানতার সাথে থাকবে আল্লাহ তা’আলা তাঁর সম্পর্কে তোমাদের সতর্ক করেছেন) । আয়াতের এই অংশে শুধুমাত্র অনিষ্ট থেকে বেঁচে থাকার জন্য কাফেরদেরকে বন্ধু হিসাবে গ্রহণ করার অনুমতি দেয়া হয়েছে। চিরস্থায়ীভাবে অভিনয় অথবা যখন ইচ্ছা রংবদল করা নয়! বুখারিতে আবু দারদা(রা) এর বক্তব্য- ‘কিছু কওমের প্রতি ঘৃণা হলেও প্রশস্ত মুখ করি’ এই অধ্যায়ে হাদিসে আমরা দেখি- রাসূলুল্লাহ(ﷺ) কাউকে কথার দ্বারা কষ্ট দিয়ে ফিরিয়ে দিতে চাননি, অসভ্য বেদুইনের সাথেও হাসিমুখে কথা বলেছেন[বুখারী,কিতাবুল আদাব-৬১৩১]
» এরপরে শিয়া-মালাঊনরা সূরা আ’রাফঃ আয়াত ১৫০ এর ঐ অংশকে তাকিয়ার দলিল দাবি করে যেখানে, মূসা(আ) তাঁর জাতির কাছে ফিরে এসে শিরকে লিপ্ত দেখতে পেয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত ভাই হারুন(আ) এর উপরে রাগ হয়ে তাঁর দাঁড়ি ধরলে তিনি বলেন –{ ابْنَ أُمَّ إِنَّ الْقَوْمَ اسْتَضْعَفُونِي وَكَادُوا يَقْتُلُونَنِي } অর্থাৎ- (হে আমার মাতার পুত্র, এই লোকেরা আমাকে পরাভূত করে ফেলেছিল এবং আমাকে প্রায় মেরে ফেলেছিল) । এখানে এমন না যে, হারুন(আ) তাকিয়া/ভয় পেয়ে বনী ইসরাইলের সাথে শিরকে মৌনতা অবলম্বন করেছেন! তিনি প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করেছেন ফলে একলা হারুন(আ)কে তারা দুর্বল প্রতিপন্ন করল এবং মেরে ফেলার অবস্থা করল। লুকোচুরির কিছু নেই!
» শিয়া-কাফেররা সূরা নাহলঃআয়াত ১০৬ এর এই কথা- {مَن كَفَرَ بِاللَّهِ مِن بَعْدِ إِيمَانِهِ إِلَّا مَنْ أُكْرِهَ وَقَلْبُهُ مُطْمَئِنٌّ بِالْإِيمَانِ} অর্থ-(কেউ ঈমান আনার পরে আল্লাহ্কে অস্বীকার করলে.. সে ব্যতীত,যাকে কুফরির জন্য বাধ্য করা হয়েছে কিন্তু তার অন্তর ঈমানে অবিচলিত) – দিয়ে তাকিয়ার বিধানের দলিল দাবি করে। প্রথমত, এটা মাক্কী জীবনে আম্মার বিন ইয়াসির(রা)এর উপরে মুশরিকদের অত্যাচারের প্রেক্ষিতে নাযিলকৃত আয়াত। কুরাইশদের অত্যাচারের তীব্র পর্যায়ে তিনি তাদের কথায় সমর্থন জানিয়ে মুক্তি পেয়ে এসেছিলেন। কিন্তু মুশরিকদের কথায় সম্মতির অবস্থায় থাকেন নি,২-১ মুহূর্তে চাপের মুখে ব্যতীত। এরপরে হিজরতের আয়াত নাযিল হয়, জিহাদের আয়াত নাযিল হয়, মুশরিকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ও পাল্টা আক্রমণের হুকুম আসে!
সবচেয়ে বড় কথা, এই ভয়ের কারণে মুশরিকদের কথায় সম্মতি দেয়ার জন্য গ্রেফতার,তীব্র অত্যাচার,প্রায় মৃত্যুর অবস্থার শর্ত থাকতে হবে, যেটা শিয়া ধর্মাবলম্বীরা আহলে বাইতের বংশধর ও শিয়া দাবিকারীদের ক্ষেত্রে শতাব্দীর পর শতাব্দী ‘তাকিয়া’ ফরজ রাখার হাস্যকর দাবির ক্ষেত্রে আনতে ব্যর্থ।
আমরা তো ইসলামের ইতিহাসে ঈমান আনার পরে তার জন্য বিলাল(রা),খুবাইব(রা),সুমাইয়া(রা), আব্দুল্লাহ(রা)এর মত অসংখ্য সাহাবাদের নির্মম অত্যাচার ভোগের পরেও ঈমানের বাক্যে অটল থাকা ও জীবনদানের প্রমাণ পাই!
» শিয়া-রাফেজীরা আরও দলিল আনার চেষ্টা করে সূরা গাফিরঃআয়াত ২৮ দিয়ে, যেখানে ফিরাউনের দরবারে মূসা(আ)কে হত্যার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদকারী ব্যক্তির ব্যাপারে বলা হয়েছে- ‘ফিরাউন বংশের এক ব্যক্তি মু’মিন ছিল যে নিজের ঈমান গোপন রাখত’, আয়াতে আমরা দেখি সে ফিরাউনের মুখের উপরে মূসা(আ)এর পক্ষ নেয় এবং আল্লাহ্র দ্বীনের পক্ষ নেয়। সুতরাং, সে ঈমান আনার পরেও বলে বেড়াত না, তা থেকে এই অর্থ নেয়া অসম্ভব যে, সে ফিরাউনের ভয়ে আজীবন চুপ থাকল,ফিরাউনের কুফরিতে সমর্থন দেয়া তো দূরের কথা; যেরকমতা শিয়াদের তাকিয়ার মাসআলা দাবিতে হয়!
»» শিয়াদের তাকিয়ার উদ্দেশ্য প্রয়োগ আমরা দেখতে পাই আমাদের মুসলিমদের সাথে। অথচ কুরআনে যে জানের ভয়ের কারণে নিজের মতের বিপরীতে বলার কথা আছে, সেটার উদ্দেশ্য শুধুই কাফেরদের চরম অত্যাচারের মুখে। একে তো শিয়া-মালাঊনদের কাছে জবাব নেই যে তাদের এই ফরজ বিধান তাকিয়া তারা ইতিহাসে কবে ছেড়েছিল,অথবা এখন কিভাবে করছে! শিয়াদের তাকিয়ার প্রয়োগের ব্যাপারটি কুরআনের এই আয়াতের সাথে মিলে যায়-
“এবং যখন তারা মু’মিনদের সাথে মিলিত হয় তখন তারা বলে আমরা ঈমান এনেছি; যখন তারা শয়তানদের সাথে মিলিত হয়, তখন বলে আমরা তোমাদের সাথেই আছি, আমরা তো শুধু ঠাট্টা-বিদ্রুপ করে থাকি(ঈমানদারদের সাথে)” [সূরা বাকারাঃ আয়াত ১৪]
-----------
~ The Rafidologist: এসো শিয়া চিনি
যেমনটা শিয়া ধর্মগ্রন্থে লেখা- “আবু জাফর(আ) বলেন- বাইরে তাদের সাথে মিশে থাক,কিন্তু ভিতরে ভিতরে তাদের বিরোধিতা কর” [আল কাফি,তাকিয়া অধ্যায়,রি-২০;১৩৫/২]
শিয়া ধর্মাবলম্বীরা নানা ছুতায় দাবি করে যে, ভয় পেয়ে নিরাপত্তার জন্যই তাকিয়া, এবং তারা কুরআনের কিছু আয়াতের হাস্যকর অপব্যাখ্যা করেও তাকিয়ার ধর্মীয় আবশ্যকতা দাবি করে;যদিও বাস্তবে শিয়া ধর্মে তাকিয়ার অবস্থান,প্রয়োগে তা খাটে না। সেগুলার হাকীকত দেখার আগে, আসুন আমরা দেখে নেই, এই ‘তাকিয়া’কে কিভাবে মৌলিক উপাদান বানিয়ে ফেলা হয়েছে-
➤ শিয়া-ধর্মে তাকিয়া ফরজঃ
☠ আলী(আ) বলেন- ‘তাকিয়া আমার এবং আমার আহলে বাইতের ধর্ম’‘তাকিয়া আল্লাহ্র দ্বীন এবং যার তাকিয়া নেই তার দ্বীন নেই।তাকিয়া না থাকলে আল্লাহ্র ইবাদত হত না।‘ [মুসতাদরাক আল-ওয়াসায়েল ২৫২,২৫৩/১২]
☠ আবু জাফর(আ) বলেন- ‘তাকিয়া আমার এবং আবার পূর্বপুরুষের ধর্ম,যার তাকিয়া নেই, তার দ্বীন নেই’ [আল কাফি, ১৩৫/২,বা’ব ৯৭; বিহারুল আনওয়ার ১০৩/৬৭; মিরাত আল-উকুল ১৮০/৯]
☠ আবু আবদুল্লাহ(আ) বলেন-‘তাকিয়া দ্বীনের ১০ ভাগের ৯ ভাগ’[আল কাফি,১৩৩/২]
☠ ‘তাকিয়া ছেড়ে দিলে সে কাফের’ [ফিকহ আল-রেযা পৃ ৩৩৮; মুস্তাদরাক সাফিনাতুল বিহার ৪১৭/১০ ]
☠ শীর্ষ শিয়া ধর্মগুরু শায়খ সাদুক বলে- ‘যে তাকিয়া ছেড়ে দিল সে যেন সালাত ছেড়ে দিল’ [আল ই’তিকাদাত,পৃ ১০৭] মালাঊন রুহুল্লাত খোমেনীও অনুরূপ সায় দিয়েছে তার কিতাবে(মাকাসিব আল-মুহাররামাহ, ১৩৪/২)
☠ আলী বিন হুসাইন(আ) বলেন- ‘আল্লাহ্ আখিরাতে সব পাপ মাফ করবেন, শুধু তাকিয়া ত্যাগ করা ও ভাইয়ের হক্ক নষ্ট করা ব্যতীত’ [ওয়াসায়েল আশ-শিয়া ২২৩/১৬]
☠ আমিরুল মু’মিনীন(আ) বলেন- ‘তাকিয়া মু’মিনের সবচেয়ে উত্তম আমল’ [তাফসিরে আসকারী পৃ ৩২০-বর্ণনা ১৬৩]
☠ হাসান বিন আলী(আ) বলেন- “তাকিয়ার মাধ্যমে উম্মতকে আল্লাহ সংশোধন করেন। তাকিয়াকারী তাদের আমলের অনুরুপ সওয়াব পাবে। তাকিয়া ছেড়ে দিলে উম্মতকে ধংস করে দেয়ার সম্ভাবনা আছে। তাকিয়া তরককারী উম্মত ধংসকারীদের অন্তর্ভুক্ত হবে” [তাফসিরে আসকারী পৃ ৩২০-বর্ণনা ১৬৪ ; জামিউল আখবার পৃ ২৫২]
☠ জাফর সাদিক(আ) বলেন-‘বিচার দিবসে আমাদের শিয়াদের থেকে এমন একজনকে আনা হবে যে আমলে অবহেলাকারী ছিল; কিন্তু বেলায়েতে বিশ্বাস রাখত, তাকিয়া করত আর অপর ভাইয়ের হক্ক রক্ষা করত।এরপরে আল্লাহ্ তার সামনে এক লক্ষ নাসিবী(উদ্দেশ্যঃ শিয়া নয়) কে আনা হবে আর বলা হবে- তোমার জায়গায় তারা জাহান্নামে যাবে।’ [তাফসিরে আসকারী পৃ ২৪২(বর্ণনা ১১৯); বিহারুল আনওয়ার ৪৪/৮]
☠ হিশাম বিন সালিম বলেন,“ আমি আবু আবদুল্লাহ(আ) কে বলতে শুনেছি-আল্লাহ্র কাছে বান্দার খবা(লুকানো/গোপন করা) সবচেয়ে প্রিয়।জিজ্ঞেস করা হল, খবা কি? তিনি বললেন-তাকিয়া” [মাআনিল আখবার, পৃ ১৬২; ওয়াসায়েল আশ-শিয়া ২১৯/১৬]
☠ আবু আব্দুল্লাহ(আ) বলেন- ‘হে সুলায়মান। তোমরা এমন এক ধর্মের অনুসারী, যে তোমরা যদি তা লুকিয়ে রাখো, তাহলে আল্লাহ্ তোমাদের মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন; আর যদি একে প্রকাশ কর, তাহলে অপদস্থ হবে’ [আল কাফি, ১৩৬/২,অধ্যায় ৯৮(কিতমান), রি-৩; বিহারুল আনওয়ার ৩৯৭/৭৫] মালাঊন রুহুল্লাত খোমেনীও তার কিতাবে অনুরূপ উদ্ধৃত করেছে- [আল রাসায়েল ১৮৫/২]
➤ তাকিয়ার অবতারণাঃ
ইহুদি ইবনে সাবার হাতে শিয়া-ধর্ম সৃষ্টির পরপরই তাকিয়া জরুরি হয়ে পড়ে,কারণ মুসলিমদের মাঝে অবস্থান করে জঘন্য শিরক-কুফর চর্চা করা,প্রকাশ করা বিপজ্জনক ছিল; যেহেতু স্বয়ং আলী(রা)ই সাবাঈদের জ্বালিয়ে মেরেছেন।পরবর্তীতে পারস্যের অগ্নিপূজক-মুশরিকদের হাতে শিয়া ধর্ম লালিত-পালিত হয়ে বেড়ে উঠবার পরে শিয়া ধর্মের জন্য তাকিয়া আরো আবশ্যক হয়ে পরে, আহলে বাইতের ইতিহাস-কাজকর্মের সাথে শিয়া-ধর্মের সামঞ্জস্য,বৈধতা রচনা করার জন্য- আহলে বাইতকে কপটচারী,অভিনেতা বানানোর মাধ্যমে!
যেমন-
আলী(রা) কেন প্রথম তিন খলিফার সময়ে ‘অন্যায়-অবিচার, দ্বীন বিকৃতি’ সব চুপচাপ মেনে তাঁদের আনুগত্য করেছেন? নিজের স্ত্রীর হত্যা,ভূমি দখল সয়েছেন, নিজের মেয়েকে উমরের সাথে বিয়ে দিয়েছেন?- তাকিয়া করে।
হাসান(রা) কেন মুয়াবিয়া(রা) এর হাতে খিলাফত তুলে দিলেন? কেনইবা হাসান(রা),হুসাইন(রা) মুয়াবিয়া(রা)এর খিলাফতে শান্ত থাকলেন,হাদিয়া নিয়ে গেলেন?-তাকিয়ার কারণে! এভাবে পরবর্তীদের ক্ষেত্রেও চলতে থাকে।
অর্থাৎ যেখানেই সত্য প্রকাশ পাবে, আহলে বাইতের ইসলামসম্মত কাজ সামনে আসবে, শিয়া ধর্মের সাথে বিরোধিতা প্রতিষ্ঠিত দেখা যাচ্ছে- তখনি সেটাকে আহলে বাইতের অভিনয়,দ্বীন গোপন করে বাতিলের সাথে আপোষ করেছেন,তাকিয়া করে গেছেন- এই দাবি আনা হবে শিয়া কাফেদের পক্ষ থেকে। সাবাঈ শিয়া ধর্মের মৌলিক দাবিগুলাকে যখন বাহানা দিয়ে টিকিয়ে রাখা মুশকিল হবে তখন বলা হবে আহলে বাইতের বংশধররা সারা জীবন তাকিয়া করে গেছেন- শিয়াদের কিতাবে হাজারো রিওয়ায়াতের প্রে বলে দেয়া “ইমামরা তাকিয়া করে এটা বলেছেন” !
➤ উদ্দেশ্য:-
তাকিয়ার মৌলিক উদ্দেশ্য হল সাবাঈ কুফরি আকিদা মুসলিমদের সামনে লুকিয়ে রাখা,অন্তরে লালন করা, যতদিন না সময় সুযোগ না আসে।☠ শিয়া যাজক হুসাইন জাফরি লিখেছে- “তাকিয়া না হলে শিয়া মতবাদ এত প্রসার পেত না” [তারিখুশ শিয়া, পৃ ২৩০]
আসলেই, এই বিষাক্ত সাবাঈ মতবাদ তো ছদ্মবেশ ধরেই প্রসার পেয়েছে!
☠ তাকিয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে মালাঊন রুহুল্লাত খোমেনী লিখে- “এটা হল আমাদের বিরোধীদের(মুসলিম-আহলে সুন্নাহ) প্রতি ভালবাসা দেখানো এবং তাদের কাছে টানা; কোন প্রকার ক্ষয়ক্ষতির আশংকা ছাড়াই, যেমনটা ভয়ের জন্য তাকিয়ার ক্ষেত্রে।” [আল রাসায়েল,১৭৪/২]
‘তাকিয়া তাদের সঙ্গে ওয়াজিব, যারা আমাদের বিরোধিতা করে(প্রকৃত মুসলিম,আহলে সুন্নাহ) যদিও নিরাপত্তা থাকে এবং নিজের বা অন্য কারো ক্ষতির ভয় না থাকে’ [আল রাসায়েল, ২০১/২]
অর্থাৎ মুসলিমদের সাথে অভিনয় চালু রেখে কাছে টানা,ধোঁকা দেয়া এরপরে পিঠ থেকে ছুরি মারা।
☠ শিয়া যাজক- আয়াতুল্লাহ মুহাসান খাযায়ী বলে- ‘ভয় বা ক্ষতি ছাড়াও তাকিয়া খুব পছন্দনীয়, যাতে সাধারণ(মুসলিমদের)এর স্নেহ-ভালবাসা আকর্ষণ করা যায় এবং তাদের ও আমাদের(শিয়া ধর্মাবলম্বী) মধ্যে ভালবাসা স্থাপন করা যায়’ [বিদায়াতুল মা’আরিফুল ইলাহিয়া, ৪৩০পৃ; আল-হাওয়ারিব ওয়াত-তাকারিব ২০৩ পৃ]
☠ ইমাম সাদিক(আ)- ‘তোমরা তাকিয়ার উপরে থাক। কারণ সে আমাদের মধ্য হতে না ,যে- এটাকে তার প্রতীক ও আবরণ বানিয়ে নিলনা তার আশপাশের লোকেদের কাছে; যাতে পরবর্তীতে সে যাদেরকে ভয় পায় তাদের উপরে এটাকে ব্যবহার করতে পারে’ [মুসতাদরাক সাফিনাতুল বিহার ৪১৫/১০; ওয়াসায়েল আশ-শিয়া ৪৬৬/১১]
মোটকথা, তাকিয়ার উদ্দেশ্য বুঝা যাচ্ছে, যে – নিজেদের শিরক,কুফর মুসলিমদের থেকে লুকিয়ে রাখা, এরপরে আস্তে আস্তে তাদের ভিতরে মিশে গিয়ে কুফরি আকিদা ছড়িয়ে দেয়া, এবং শক্তি অর্জন করে তাদের ক্ষতি করা।
ইসলামের প্রাথমিক শতাব্দী থেকেই গুপ্তঘাতকের ন্যায় মুসলিমদের মাঝে তাকিয়ার দ্বারাই বিস্তার করে আছে শিয়া-রাফেজীরা।
তাকিয়ার প্রয়োগ-
» যখন শিরক-কুফর প্রকাশ পাবে বা এ নিয়ে জিজ্ঞাসা করা হবে, তখন বলবে ‘আমরা তো আসলে এগুলা মানি না’ । শিয়া ধর্মের কিতাব,শিয়া যাজকদের লেকচার ইত্যাদি থেকে শিরক-কুফর নিয়ে তলব করা হলে পাক্কা অস্বীকার করবে এবং ক্ষেত্রবিশেষ বলবে অমুক-অমুক শিয়ারা ব্যতিক্রম, যদিও শেষ বেলায় গলায় গলায় মিলবে। যারা তাকিয়া কম করে তারা প্রকাশ্যে ঈমানবিধ্বংসী আকিদা,মতবাদ প্রচার করে। আর যারা কট্টর তাকিয়া করে তারা একই মতবাদ একটু ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে,পরোক্ষ বক্তব্যে প্রচার করে।» যেমন হয়ত বলবে, নুসাইরিদের আমরা শিয়া মনে করিনা। কিন্তু নুসাইরি শিয়াদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ঠিকই মুসলিম হত্যায় অংশ নিবে।
➤ তাকিয়া কবে পর্যন্ত?-
শিয়াধর্মের বিশ্বাস অনুযায়ী কল্পিত ১২তম ইমাম মাহদি(ভুয়া মেহদি) ১২০০ বছর ধরে গুহায় লুকিয়ে সব নিয়ন্ত্রণ করছে, যাকে ইমাম কঈম,সাহেবুজ্জামান ইত্যাদি নামে ডাকা হয়। এই পলাতক সম্ভাব্য দাজ্জাল এর আগমনের আগ পর্যন্ত শিয়া ধর্মাবলম্বীরা তাকিয়া করতে বাধ্যঃ-☠ শিয়াদের আকিদা-গুরু শায়খ সাদুক লিখে- ‘তাকিয়া বাধ্যতামূলক; ক্কঈম(আ) বের না হওয়া পর্যন্ত তাকিয়া তুলে নেয়ার অনুমতি নেই। যে তাঁর বের হবার আগেই তাকিয়া ত্যাগ করল সে আল্লাহ্র দ্বীন ও ইমামি শিয়া ধর্ম থেকে বেরিয়ে গেল এবং আল্লাহ্,তাঁর রাসূল ও ইমামদের বিরুদ্ধাচরণ করল’ [আল-ই’তিকাদাত পৃষ্ঠা ১০৮]
☠ ইমাম(আ) বলেন- ‘যার আল্লাহ্ ও আখিরাতের প্রতি ঈমান আছে সে জালিম শাসনের(ইসলামি খিলাফত) অধীনে তাকিয়া ছাড়া কথা বলবে না।আর যে তা ছেড়ে দিল সে ইমামি শিয়া ধর্ম ছেড়ে দিল এবং বিচ্যুত হল’ [জামিউল আখবার পৃ২৫৪; বিহার ৪১২/৭৫]
☠ সকল মুতাওয়াতির(প্রসিদ্ধ) বর্ণনা থেকে পরিষ্কার যে, ক্কঈম(১২ত্ম ইমাম) না আসা পর্যন্ত তাকিয়া স্থায়ী হবে। [মিরাত আল-আনওয়ার পৃ৩৩৭; হাওয়ার আততাকারিব ২০১]
☠ ইমাম রেযা(আ)- যে আমাদের ক্কঈম(মেহদি) আসার আগে তাকিয়া ত্যাগ করল সে আমাদের মধ্য থেকে না। [কামাল আদ-দ্বীন ৩৪৬/২; মুন্তাখাব আল-আছার ২২৮]
☠ সূরা ফুসসিলাতঃআয়াত ৩৪ এর ব্যাখ্যায় শিয়া ধর্মের তাফসিরে লেখা- “যখন ক্কঈম(মেহদি) বের হবে তখন তাকিয়া বন্ধ হবে এবং তলোয়ার খোলা হবে।” [ আল বুরহান ৫৭/৭ তাওয়িল আল-আয়াত ৫৩০/২; বিহারুল আনওয়ার ৪৭/২৪]
☠ ‘তাকিয়ার কারণে মেহদির নাম নেয়াও নিষেধ’ [ক্কাওয়ায়েদ আল-ফিক্কহিয়া পৃষ্ঠা ৪৬৭-৪৯৯]
☠ আবু আবদুল্লাহ(আ) বলেন- ‘সাহেব(মেহদি)কে কাফের ছাড়া কেউ নাম ধরে ডাকবে না’ [ওয়াসায়েল আশ-শিয়া ২৩৭/১৬]
শিয়া-কাফেররা যতবারই তাকিয়া ছেড়ে তাদের আসল রূপ প্রকাশ করেছে ততবারই তাওহীদ,রিসালাত এর কুৎসিত অবমাননা হয়েছে, ইসলামের উপরে নগ্ন হামলা হয়েছে। ঝোপ বুঝে কোপ মেরে মুসলিমদের রক্তপাত করা হয়েছে, সেই কারামাতি-ফাতিমি থেকে বাগদাদ ধ্বংস,সাফাভিদের পারস্য দখল.. প্রতিবারই। আর তারা শেষবারে অপেক্ষায় আছে গর্তবাসী ভুয়া মেহদির আগমনের পরে রক্তপাত ঘটানোর। ৭৯’তে ইরানে খোমেনীর ফ্রেঞ্চ-বিপ্লবের পরে শিয়া-কাফেররা জোট বেঁধে মুসলিমদের সাথে শত্রুতার রং দেখানো শুরু করে দিয়েছেই।
➤ ইসলামের দৃষ্টিতে ‘তাকিয়া’:
ইসলামে আল্লাহ্র ভয়কে মাখলুকের ভয়ের উপরে স্থান দেয়া হয়েছে এবং বিরল কিছু পরিস্থিতিতে কাফেরদের ভয়ে বশ্যতা স্বীকারের অনুমতি দেয়া হয়েছে; এটা কোন ফরজ বিধান না বরং দুরবস্থা। আখলাক দিয়ে কাফেরদের দাওয়াত দেয়া ,তবে সরাসরি কাফের,জাহান্নামী ইত্যাদি বলে নেয়া, আকিদার সাথে সম্মতি নয়!» কুরআনের দুশমন শিয়া-কাফেররা সর্বাগ্রে কুরআনের যেই আয়াত দিয়ে তাকিয়াকে দ্বীনের শর্ত বানাতে চায় তা হল, সূরা আলে ইমরানঃ আয়াত ২৮ এ- (إِلَّا أَن تَتَّقُوا مِنْهُمْ تُقَاةً ۗ وَيُحَذِّرُكُمُ اللَّهُ نَفْسَهُ) অর্থাৎ, (তবে যদি তোমরা তাদের পক্ষ থেকে কোন অনিষ্টের আশঙ্কা কর, তবে তাদের সাথে সাবধানতার সাথে থাকবে আল্লাহ তা’আলা তাঁর সম্পর্কে তোমাদের সতর্ক করেছেন) । আয়াতের এই অংশে শুধুমাত্র অনিষ্ট থেকে বেঁচে থাকার জন্য কাফেরদেরকে বন্ধু হিসাবে গ্রহণ করার অনুমতি দেয়া হয়েছে। চিরস্থায়ীভাবে অভিনয় অথবা যখন ইচ্ছা রংবদল করা নয়! বুখারিতে আবু দারদা(রা) এর বক্তব্য- ‘কিছু কওমের প্রতি ঘৃণা হলেও প্রশস্ত মুখ করি’ এই অধ্যায়ে হাদিসে আমরা দেখি- রাসূলুল্লাহ(ﷺ) কাউকে কথার দ্বারা কষ্ট দিয়ে ফিরিয়ে দিতে চাননি, অসভ্য বেদুইনের সাথেও হাসিমুখে কথা বলেছেন[বুখারী,কিতাবুল আদাব-৬১৩১]
» এরপরে শিয়া-মালাঊনরা সূরা আ’রাফঃ আয়াত ১৫০ এর ঐ অংশকে তাকিয়ার দলিল দাবি করে যেখানে, মূসা(আ) তাঁর জাতির কাছে ফিরে এসে শিরকে লিপ্ত দেখতে পেয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত ভাই হারুন(আ) এর উপরে রাগ হয়ে তাঁর দাঁড়ি ধরলে তিনি বলেন –{ ابْنَ أُمَّ إِنَّ الْقَوْمَ اسْتَضْعَفُونِي وَكَادُوا يَقْتُلُونَنِي } অর্থাৎ- (হে আমার মাতার পুত্র, এই লোকেরা আমাকে পরাভূত করে ফেলেছিল এবং আমাকে প্রায় মেরে ফেলেছিল) । এখানে এমন না যে, হারুন(আ) তাকিয়া/ভয় পেয়ে বনী ইসরাইলের সাথে শিরকে মৌনতা অবলম্বন করেছেন! তিনি প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করেছেন ফলে একলা হারুন(আ)কে তারা দুর্বল প্রতিপন্ন করল এবং মেরে ফেলার অবস্থা করল। লুকোচুরির কিছু নেই!
» শিয়া-কাফেররা সূরা নাহলঃআয়াত ১০৬ এর এই কথা- {مَن كَفَرَ بِاللَّهِ مِن بَعْدِ إِيمَانِهِ إِلَّا مَنْ أُكْرِهَ وَقَلْبُهُ مُطْمَئِنٌّ بِالْإِيمَانِ} অর্থ-(কেউ ঈমান আনার পরে আল্লাহ্কে অস্বীকার করলে.. সে ব্যতীত,যাকে কুফরির জন্য বাধ্য করা হয়েছে কিন্তু তার অন্তর ঈমানে অবিচলিত) – দিয়ে তাকিয়ার বিধানের দলিল দাবি করে। প্রথমত, এটা মাক্কী জীবনে আম্মার বিন ইয়াসির(রা)এর উপরে মুশরিকদের অত্যাচারের প্রেক্ষিতে নাযিলকৃত আয়াত। কুরাইশদের অত্যাচারের তীব্র পর্যায়ে তিনি তাদের কথায় সমর্থন জানিয়ে মুক্তি পেয়ে এসেছিলেন। কিন্তু মুশরিকদের কথায় সম্মতির অবস্থায় থাকেন নি,২-১ মুহূর্তে চাপের মুখে ব্যতীত। এরপরে হিজরতের আয়াত নাযিল হয়, জিহাদের আয়াত নাযিল হয়, মুশরিকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ও পাল্টা আক্রমণের হুকুম আসে!
সবচেয়ে বড় কথা, এই ভয়ের কারণে মুশরিকদের কথায় সম্মতি দেয়ার জন্য গ্রেফতার,তীব্র অত্যাচার,প্রায় মৃত্যুর অবস্থার শর্ত থাকতে হবে, যেটা শিয়া ধর্মাবলম্বীরা আহলে বাইতের বংশধর ও শিয়া দাবিকারীদের ক্ষেত্রে শতাব্দীর পর শতাব্দী ‘তাকিয়া’ ফরজ রাখার হাস্যকর দাবির ক্ষেত্রে আনতে ব্যর্থ।
আমরা তো ইসলামের ইতিহাসে ঈমান আনার পরে তার জন্য বিলাল(রা),খুবাইব(রা),সুমাইয়া(রা), আব্দুল্লাহ(রা)এর মত অসংখ্য সাহাবাদের নির্মম অত্যাচার ভোগের পরেও ঈমানের বাক্যে অটল থাকা ও জীবনদানের প্রমাণ পাই!
» শিয়া-রাফেজীরা আরও দলিল আনার চেষ্টা করে সূরা গাফিরঃআয়াত ২৮ দিয়ে, যেখানে ফিরাউনের দরবারে মূসা(আ)কে হত্যার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদকারী ব্যক্তির ব্যাপারে বলা হয়েছে- ‘ফিরাউন বংশের এক ব্যক্তি মু’মিন ছিল যে নিজের ঈমান গোপন রাখত’, আয়াতে আমরা দেখি সে ফিরাউনের মুখের উপরে মূসা(আ)এর পক্ষ নেয় এবং আল্লাহ্র দ্বীনের পক্ষ নেয়। সুতরাং, সে ঈমান আনার পরেও বলে বেড়াত না, তা থেকে এই অর্থ নেয়া অসম্ভব যে, সে ফিরাউনের ভয়ে আজীবন চুপ থাকল,ফিরাউনের কুফরিতে সমর্থন দেয়া তো দূরের কথা; যেরকমতা শিয়াদের তাকিয়ার মাসআলা দাবিতে হয়!
»» শিয়াদের তাকিয়ার উদ্দেশ্য প্রয়োগ আমরা দেখতে পাই আমাদের মুসলিমদের সাথে। অথচ কুরআনে যে জানের ভয়ের কারণে নিজের মতের বিপরীতে বলার কথা আছে, সেটার উদ্দেশ্য শুধুই কাফেরদের চরম অত্যাচারের মুখে। একে তো শিয়া-মালাঊনদের কাছে জবাব নেই যে তাদের এই ফরজ বিধান তাকিয়া তারা ইতিহাসে কবে ছেড়েছিল,অথবা এখন কিভাবে করছে! শিয়াদের তাকিয়ার প্রয়োগের ব্যাপারটি কুরআনের এই আয়াতের সাথে মিলে যায়-
“এবং যখন তারা মু’মিনদের সাথে মিলিত হয় তখন তারা বলে আমরা ঈমান এনেছি; যখন তারা শয়তানদের সাথে মিলিত হয়, তখন বলে আমরা তোমাদের সাথেই আছি, আমরা তো শুধু ঠাট্টা-বিদ্রুপ করে থাকি(ঈমানদারদের সাথে)” [সূরা বাকারাঃ আয়াত ১৪]
-----------
~ The Rafidologist: এসো শিয়া চিনি